ঢাকা ০৪:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

করোনায় চুল পড়ায় দুশ্চিন্তা নয়

লাইফস্টাইল ডেস্কঃ

করোনার সাথে লড়াই করে যাচ্ছে প্রতিটি মানুষ। পৃথিবীজুড়ে করোনা তার ভয়াল সংক্রমণ ছড়িয়ে দিয়েছে। নানান বিধিনিষেধ মেনে চলার পরেও কোভিডের মুখোমুখি হচ্ছেন অগণিত মানুষ। লড়াই করে সুস্থ হওয়ার পরেও শরীরে থেকে যাচ্ছে বিভিন্ন জটিলতা। তার মধ্যে অন্যতম চুল পড়ার সমস্যা।

বেশ কয়েকদিন অসুস্থ থাকার পর কিছু চুল ঝরে যাওয়াটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু স্বাভাবিক বিষয়টি তখনি চিন্তার কারণ হয় যখন মাত্রাটি অস্বাভাবিক হয় পড়ে। কোভিড থেকে সেরে উঠার পরও তার রেশ শরীরে নানান ভাবে থেকে যায় অন্তত ৩ থেকে ৪ মাস। সাধারণত, কোভিডের পর সর্তক থাকতে হবে। নিয়মিত শরীরচর্চা, মনের য্ত্ন এবং খাওয়া-দাওয়ায় পরিবর্তন আনতে হবে।

করোনায় চুল পড়ায় দুশ্চিন্তা নয় 

করোনা সংক্রমণের পর থেকে দুই মাস চুল পড়তেই পারে। এটাকে বলা হয় টেলোজেন এফ্লুভিয়াম। চুলের স্বাভাবিক বেড়ে উঠা বা ঝরে পড়ার প্রক্রিয়াটাতে ব্যাঘাত ঘটায়, অন্য রকম করে দেয়। ফলস্বরূপ চুল পড়তে থাকে আর উদ্বিগ্ন হতে থাকি আমরা। চলুন জেনে নেওয়া যাক কেন চুল পড়ে এবং এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায়।

করোনায় চুল পড়ায় দুশ্চিন্তা নয় 

প্রথমেই একটি বিষয় জেনে রাখা ভালো। আমাদের চুলের কোষ বা ফলিক্লগুলোর তিনটি পর্যায় আছে। চুল সুস্থ থাকলে অ্যানাজেন, বৃদ্ধি কমে গেলে টেলোজেন এবং চুল পড়ার পর্যায়টাকে বলে ক্যাটাজেন। সাধারণত সুস্থ যে কারোর মাথার চুলের ৮০ শতাংশ অ্যানাজেন, ১৭ বা ১৮ শতাংশ টেলোজেন এবং ২ থেকে ৩ শতাংশ থাকে ক্যাটাজেন পর্যায়। কিন্তু জটিল কোনো অসুখ হলে প্রাকৃতিক এই হিসাবে গন্ডগোল বেধে যায়। ক্যাটাজেন শতাংশ বেড়ে ৮ বা ১০ শতাংশ হয়। কখনোবা তারও বেশি।

যেকোনো অসুস্থতার প্রভাব চেহারায় ছায়া হয়ে দেখা দেয়। তখন মানুষ বিব্রত হন। সেই স্ট্রেস থেকেও চুল পড়া বেড়ে যায়। তখন অসুস্থতা থেকে সেরে উঠা ব্যক্তিকে কাউন্সিলিং করতে হবে। বুঝাতে হবে তার চুল ঝরার বিষয়টি সাময়িক। ক’দিন পর ঠিক হয়ে যাবে। যদি স্ট্রেস বাড়তেই থাকে তাহলে চুলও পড়তে থাকবে। এজন্য বলা হয়, যত দুশ্চিন্তা তত চুল পড়ে।

করোনায় চুল পড়ায় দুশ্চিন্তা নয় 

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খাওয়া-দাওয়া ও নিয়মিত শরীর চর্চা, সময় মতো ঘুমালে, জাঙ্ক ফুড জাতীয় খাবার কমালে এই সমস্যা অনেকটা মিটে যায়। কোভিডের পর শরীরে প্রোটিন, ভিটামিন, ক্যালশিয়াম কমে যায়। চিকিৎসকরা তখন কিছু মাল্টি ভিটামিন ওষুধ ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে বলেন।

করোনায় চুল পড়ায় দুশ্চিন্তা নয় 

চুলের জন্য প্রোটিন, আয়রন ও ক্যালশিয়াম খুব দরকারি। কোভিডের পর শরীরে ভিটামিন ডি কমে যায়, তাই নির্দিষ্ট সময় রোদে থাকাতে পারেন। সেটা বাড়ির ছাদ বা বারান্দা দুইটাই হতে পারে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মাল্টি ভিটমিন ও প্রোবায়োটিকের কিছু ওষুধ খেতে পারেন। এসময় ব্যালেন্সড ডায়েট খুব জুরুরি। কম তেল-মশলা দেওয়া খাবার কোভিড সেরে যাওয়ার পরও খেতে হবে প্রায় এক মাস। বেশি বেশি করে ফল, সবজি, পনির, ছানা জাতীয় খাবার খেতে পারেন।

চুল যদি বেশি মাত্রায় পড়তে থাকে তাহলে কোনো ডার্মাটোলজিস্টের শরাণাপন্ন হতে পারেন। মাথার তালুর প্রকৃত অবস্থা কোভিড হওয়ার পর ঠিক কোন পর্যায়ে আছে তা বোঝার জন্য সম্ভব হলে ট্রাইকোস্কোপিক পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন।

করোনায় চুল পড়ায় দুশ্চিন্তা নয় 

কোভিড থেকে সেরে উঠর পর অতিরিক্ত স্ট্রেস নেওয়া যাবে না। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এমনকি চিকেন পক্সের পরেও চুল পড়ে থাকে। সবসময় মনে রাখতে হবে বিষয়টি সাময়িক। আর কোবিডের সাথে লড়াই করে যে জয়ী হতে পারে তার কি অযথা দুশ্চিন্তা করা মানায়! তাই সুস্থ থাকতে ভেঙে পড়া চলবে না। কারণ, কোভিডকে পরাজিত করে এগিয়ে যাওয়ার নামই তো জীবন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

করোনায় চুল পড়ায় দুশ্চিন্তা নয়

আপডেট সময় ০৫:৫২:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুন ২০২১

লাইফস্টাইল ডেস্কঃ

করোনার সাথে লড়াই করে যাচ্ছে প্রতিটি মানুষ। পৃথিবীজুড়ে করোনা তার ভয়াল সংক্রমণ ছড়িয়ে দিয়েছে। নানান বিধিনিষেধ মেনে চলার পরেও কোভিডের মুখোমুখি হচ্ছেন অগণিত মানুষ। লড়াই করে সুস্থ হওয়ার পরেও শরীরে থেকে যাচ্ছে বিভিন্ন জটিলতা। তার মধ্যে অন্যতম চুল পড়ার সমস্যা।

বেশ কয়েকদিন অসুস্থ থাকার পর কিছু চুল ঝরে যাওয়াটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু স্বাভাবিক বিষয়টি তখনি চিন্তার কারণ হয় যখন মাত্রাটি অস্বাভাবিক হয় পড়ে। কোভিড থেকে সেরে উঠার পরও তার রেশ শরীরে নানান ভাবে থেকে যায় অন্তত ৩ থেকে ৪ মাস। সাধারণত, কোভিডের পর সর্তক থাকতে হবে। নিয়মিত শরীরচর্চা, মনের য্ত্ন এবং খাওয়া-দাওয়ায় পরিবর্তন আনতে হবে।

করোনায় চুল পড়ায় দুশ্চিন্তা নয় 

করোনা সংক্রমণের পর থেকে দুই মাস চুল পড়তেই পারে। এটাকে বলা হয় টেলোজেন এফ্লুভিয়াম। চুলের স্বাভাবিক বেড়ে উঠা বা ঝরে পড়ার প্রক্রিয়াটাতে ব্যাঘাত ঘটায়, অন্য রকম করে দেয়। ফলস্বরূপ চুল পড়তে থাকে আর উদ্বিগ্ন হতে থাকি আমরা। চলুন জেনে নেওয়া যাক কেন চুল পড়ে এবং এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায়।

করোনায় চুল পড়ায় দুশ্চিন্তা নয় 

প্রথমেই একটি বিষয় জেনে রাখা ভালো। আমাদের চুলের কোষ বা ফলিক্লগুলোর তিনটি পর্যায় আছে। চুল সুস্থ থাকলে অ্যানাজেন, বৃদ্ধি কমে গেলে টেলোজেন এবং চুল পড়ার পর্যায়টাকে বলে ক্যাটাজেন। সাধারণত সুস্থ যে কারোর মাথার চুলের ৮০ শতাংশ অ্যানাজেন, ১৭ বা ১৮ শতাংশ টেলোজেন এবং ২ থেকে ৩ শতাংশ থাকে ক্যাটাজেন পর্যায়। কিন্তু জটিল কোনো অসুখ হলে প্রাকৃতিক এই হিসাবে গন্ডগোল বেধে যায়। ক্যাটাজেন শতাংশ বেড়ে ৮ বা ১০ শতাংশ হয়। কখনোবা তারও বেশি।

যেকোনো অসুস্থতার প্রভাব চেহারায় ছায়া হয়ে দেখা দেয়। তখন মানুষ বিব্রত হন। সেই স্ট্রেস থেকেও চুল পড়া বেড়ে যায়। তখন অসুস্থতা থেকে সেরে উঠা ব্যক্তিকে কাউন্সিলিং করতে হবে। বুঝাতে হবে তার চুল ঝরার বিষয়টি সাময়িক। ক’দিন পর ঠিক হয়ে যাবে। যদি স্ট্রেস বাড়তেই থাকে তাহলে চুলও পড়তে থাকবে। এজন্য বলা হয়, যত দুশ্চিন্তা তত চুল পড়ে।

করোনায় চুল পড়ায় দুশ্চিন্তা নয় 

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খাওয়া-দাওয়া ও নিয়মিত শরীর চর্চা, সময় মতো ঘুমালে, জাঙ্ক ফুড জাতীয় খাবার কমালে এই সমস্যা অনেকটা মিটে যায়। কোভিডের পর শরীরে প্রোটিন, ভিটামিন, ক্যালশিয়াম কমে যায়। চিকিৎসকরা তখন কিছু মাল্টি ভিটামিন ওষুধ ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে বলেন।

করোনায় চুল পড়ায় দুশ্চিন্তা নয় 

চুলের জন্য প্রোটিন, আয়রন ও ক্যালশিয়াম খুব দরকারি। কোভিডের পর শরীরে ভিটামিন ডি কমে যায়, তাই নির্দিষ্ট সময় রোদে থাকাতে পারেন। সেটা বাড়ির ছাদ বা বারান্দা দুইটাই হতে পারে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মাল্টি ভিটমিন ও প্রোবায়োটিকের কিছু ওষুধ খেতে পারেন। এসময় ব্যালেন্সড ডায়েট খুব জুরুরি। কম তেল-মশলা দেওয়া খাবার কোভিড সেরে যাওয়ার পরও খেতে হবে প্রায় এক মাস। বেশি বেশি করে ফল, সবজি, পনির, ছানা জাতীয় খাবার খেতে পারেন।

চুল যদি বেশি মাত্রায় পড়তে থাকে তাহলে কোনো ডার্মাটোলজিস্টের শরাণাপন্ন হতে পারেন। মাথার তালুর প্রকৃত অবস্থা কোভিড হওয়ার পর ঠিক কোন পর্যায়ে আছে তা বোঝার জন্য সম্ভব হলে ট্রাইকোস্কোপিক পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন।

করোনায় চুল পড়ায় দুশ্চিন্তা নয় 

কোভিড থেকে সেরে উঠর পর অতিরিক্ত স্ট্রেস নেওয়া যাবে না। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এমনকি চিকেন পক্সের পরেও চুল পড়ে থাকে। সবসময় মনে রাখতে হবে বিষয়টি সাময়িক। আর কোবিডের সাথে লড়াই করে যে জয়ী হতে পারে তার কি অযথা দুশ্চিন্তা করা মানায়! তাই সুস্থ থাকতে ভেঙে পড়া চলবে না। কারণ, কোভিডকে পরাজিত করে এগিয়ে যাওয়ার নামই তো জীবন।