ঢাকা ১১:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

খালেদা দরজায় থামবেন না এবার

khalada_03মুরাদনগর বার্তা ডেস্ক (৪জানুয়ারী২০১৫)

৫ জানুয়ারি সমাবেশের অনুমতি না দিলেও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার গুলশান বাসা থেকে এবার বের হচ্ছেনই। দরজায় এবার আর তাকে আটকে দেওয়া যাবে না।

দায়িত্বশীল দলীয় সূত্র জানিয়েছে, ঠিক এমনই কঠোর মনোভাব খালেদা জিয়ার। নেতা-কর্মীদের পাশে গিয়ে দাঁড়াবেন তিনি।

ওই দিন সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী  উদ্যান, নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং মতিঝিল শাপলা চত্বরে জড়ো হওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে বিএনপি।

এই স্পটগুলোতে নিজেই উপস্থিত থাকতে চান খালেদা জিয়া। এর বাইরেও নেতা-কর্মীরা ঢাকার যে কোনো স্পটে জড়ো হয়ে তার উপস্থিতি কামনা করলে সেখানেই ছুটে যাবেন বিএনপি নেত্রী। পথসভার আদলে তাৎক্ষণিক সমাবেশেও বক্তব্য রাখবেন তিনি, জানায় সূত্রটি।

খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় এবং বাসায় দায়িত্বপালন করছেন এমন একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে সরকার হার্ডলাইনে গেলে নিজের করণীয় সম্পর্কেও ভেবে রেখেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা।

সূত্র জানায়, গত বছর ২৯ ডিসেম্বরের মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’র মতো তাকে বাড়ির গেটে আটকে দেওয়া হলে তা  উপেক্ষা করে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করবেন তিনি।

৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় জনসভা করার অনুমোদন চেয়ে বেশ কয়েকদিন আগে ডিএমপিকে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। অথচ সমাবেশের দুই দিনমাত্র বাকি থাকলেও এখনো অনুমতি মেলেনি।

শুক্রবার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নাশকতার আশঙ্কা থাকলে বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।

বিএনপির হাইকমান্ড ধরেই নিয়েছে নানা অজুহাত দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত সমাবেশের অনুমতি দেবে না সরকার।

এ পরিস্থিতিতে দলের প্রধান হয়ে ঘরে বসে থাকলে বিএনপিকে নিয়ে নেতা-কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ জনগণের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হবে।

সম্প্রতি বকশিবাজারে ছাত্রলীগের কাছে পরাস্ত হওয়া এবং ছাত্রলীগের প্রতিরোধের মুখে গাজীপুর থেকে ফিরে আসার ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিএনপি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার জন্ম হয়েছে।

সূত্র মতে, এসব কিছু মাথায় রেখেই একটা ‘অঘটন’ ঘটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন খালেদা জিয়া। এবার তিনি এসপার ওসপার কিছু একটা করতে চান।

সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস, স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত রুহুল কবীর রিজভী বক্তব্যেও এর আভাস মিলেছে।

সর্বশেষ শুক্রবার জিয়ার মাজারে ফুল দিতে গিয়ে ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ৫ জানুয়ারি সমাবেশের অনুমতি না পেলেও মাঠে থাকবে বিএনপি।

এমনকি বুধবার গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নিজেই মাঠে নামার ইঙ্গিত দেন খালেদা জিয়া।

সূত্র জানায়, নানাভাবে চেষ্টা করেও ঢাকা মহানগরের নেতা-কর্মীদের মাঠে নামাতে পারেন নি বিএনপি চেয়ারপারসন। খোকার জায়গায় মির্জা আব্বাসকে বসিয়েও কোনো ফল হয়নি। নতুন কমিটি দেওয়ার পর ২২ সেপ্টেম্বর ও ২৯ ডিসেম্বর ডাকা হরতালে আগের চিত্রই দেখা গেছে ঢাকা মহানগরে।

এমন পরিস্থিতিতে এবার নিজেই মাঠে নামছেন খালেদা জিয়া। আর মোক্ষম সময় হিসেবে বেছে নিয়েছেন ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনটিকে।

তবে এ ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি নন বিএনপির কোনো নেতা। শুক্রবার দুপুরে দলটির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বললেও কেউ চান না তার নামসহ মন্তব্য প্রকাশ হোক।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, ধরে নিন ‘ম্যাডাম’ ওই দিন বের হবেন। তবে  বের হবার ধরনটা কেমন হবে তা নির্ভর করবে সরকারের আচরণের ওপর। সরকার যদি সমাবেশের অনুমোদন দেন-তাহলে স্বাভাবিক নিয়মেই তিনি বের হবেন। আর যদি অনুমোদন না দেন তাহলে বের হওয়ার ধরনটা স্বাভাবিক থাকবে না।

ট্যাগস

খালেদা দরজায় থামবেন না এবার

আপডেট সময় ০৩:০৬:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ জানুয়ারী ২০১৫

khalada_03মুরাদনগর বার্তা ডেস্ক (৪জানুয়ারী২০১৫)

৫ জানুয়ারি সমাবেশের অনুমতি না দিলেও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার গুলশান বাসা থেকে এবার বের হচ্ছেনই। দরজায় এবার আর তাকে আটকে দেওয়া যাবে না।

দায়িত্বশীল দলীয় সূত্র জানিয়েছে, ঠিক এমনই কঠোর মনোভাব খালেদা জিয়ার। নেতা-কর্মীদের পাশে গিয়ে দাঁড়াবেন তিনি।

ওই দিন সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী  উদ্যান, নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং মতিঝিল শাপলা চত্বরে জড়ো হওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে বিএনপি।

এই স্পটগুলোতে নিজেই উপস্থিত থাকতে চান খালেদা জিয়া। এর বাইরেও নেতা-কর্মীরা ঢাকার যে কোনো স্পটে জড়ো হয়ে তার উপস্থিতি কামনা করলে সেখানেই ছুটে যাবেন বিএনপি নেত্রী। পথসভার আদলে তাৎক্ষণিক সমাবেশেও বক্তব্য রাখবেন তিনি, জানায় সূত্রটি।

খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় এবং বাসায় দায়িত্বপালন করছেন এমন একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে সরকার হার্ডলাইনে গেলে নিজের করণীয় সম্পর্কেও ভেবে রেখেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা।

সূত্র জানায়, গত বছর ২৯ ডিসেম্বরের মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’র মতো তাকে বাড়ির গেটে আটকে দেওয়া হলে তা  উপেক্ষা করে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করবেন তিনি।

৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় জনসভা করার অনুমোদন চেয়ে বেশ কয়েকদিন আগে ডিএমপিকে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। অথচ সমাবেশের দুই দিনমাত্র বাকি থাকলেও এখনো অনুমতি মেলেনি।

শুক্রবার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নাশকতার আশঙ্কা থাকলে বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।

বিএনপির হাইকমান্ড ধরেই নিয়েছে নানা অজুহাত দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত সমাবেশের অনুমতি দেবে না সরকার।

এ পরিস্থিতিতে দলের প্রধান হয়ে ঘরে বসে থাকলে বিএনপিকে নিয়ে নেতা-কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ জনগণের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হবে।

সম্প্রতি বকশিবাজারে ছাত্রলীগের কাছে পরাস্ত হওয়া এবং ছাত্রলীগের প্রতিরোধের মুখে গাজীপুর থেকে ফিরে আসার ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিএনপি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার জন্ম হয়েছে।

সূত্র মতে, এসব কিছু মাথায় রেখেই একটা ‘অঘটন’ ঘটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন খালেদা জিয়া। এবার তিনি এসপার ওসপার কিছু একটা করতে চান।

সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস, স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত রুহুল কবীর রিজভী বক্তব্যেও এর আভাস মিলেছে।

সর্বশেষ শুক্রবার জিয়ার মাজারে ফুল দিতে গিয়ে ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ৫ জানুয়ারি সমাবেশের অনুমতি না পেলেও মাঠে থাকবে বিএনপি।

এমনকি বুধবার গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নিজেই মাঠে নামার ইঙ্গিত দেন খালেদা জিয়া।

সূত্র জানায়, নানাভাবে চেষ্টা করেও ঢাকা মহানগরের নেতা-কর্মীদের মাঠে নামাতে পারেন নি বিএনপি চেয়ারপারসন। খোকার জায়গায় মির্জা আব্বাসকে বসিয়েও কোনো ফল হয়নি। নতুন কমিটি দেওয়ার পর ২২ সেপ্টেম্বর ও ২৯ ডিসেম্বর ডাকা হরতালে আগের চিত্রই দেখা গেছে ঢাকা মহানগরে।

এমন পরিস্থিতিতে এবার নিজেই মাঠে নামছেন খালেদা জিয়া। আর মোক্ষম সময় হিসেবে বেছে নিয়েছেন ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনটিকে।

তবে এ ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি নন বিএনপির কোনো নেতা। শুক্রবার দুপুরে দলটির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বললেও কেউ চান না তার নামসহ মন্তব্য প্রকাশ হোক।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, ধরে নিন ‘ম্যাডাম’ ওই দিন বের হবেন। তবে  বের হবার ধরনটা কেমন হবে তা নির্ভর করবে সরকারের আচরণের ওপর। সরকার যদি সমাবেশের অনুমোদন দেন-তাহলে স্বাভাবিক নিয়মেই তিনি বের হবেন। আর যদি অনুমোদন না দেন তাহলে বের হওয়ার ধরনটা স্বাভাবিক থাকবে না।