ঢাকা ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতীয় বেতন কমিশনের রিপোর্টে যা আছে

 
index_62259
২৩ ডিসেম্বর (মুরাদনগর বার্তা ডেস্ক):
সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা সুপারিশ করা হলেও, এই প্রথম স্কেলে বেতন ভাতাসহ অর্থের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ৪২ হাজার ৮৩৩ টাকা। একইভাবে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল ৮ হাজার ২০০ টাকা সুপারিশ করা হলেও সব মিলে দাঁড়াবে ১৭ হাজার ৪৫০ টাকা। প্রথম স্কেলে বাড়ি ভাড়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে মূল বেতনের ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৪০ হাজার টাকা। এর পাশাপাশি চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা, ডোমেস্টিক এইড ভাতা ৩ হাজার টাকা, উৎসব ভাতা ১৩ হাজার ৩৩ টাকা, আপ্যায়ন ভাতা ৩ হাজার টাকা ও শিক্ষা ভাতা ২ হাজার টাকা। একইভাবে সর্বনিম্ন স্কেলের বাড়ি ভাড়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা, চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ৩০০ টাকা, সন্তানের শিক্ষা ভাতা ২ হাজার টাকা, ধোলাই ভাতা ১৫০ টাকা ও টিফিন ভাতা ৩০০ টাকা। প্রায় ১৮৩ পৃষ্ঠায় বেতন ও চাকুরি কমিশনের রিপোর্টে এসব সুপারিশ করা হয়েছে।

সুপারিশে দ্বিতীয় স্কেলটির মূল বেতন ৭০ হাজার টাকা হলেও, ইনক্রিমেন্টের ধাপ হচ্ছে ৭২ হাজার ৮০০ টাকা, ৭৫ হাজার ৭২০ টাকা ও ৭৮ হাজার ৭৫০ টাকা। তৃতীয় স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৬০ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্টের ধাপ হচ্ছে পর্যায়ক্রমে ৬২ হাজার ৪০০ টাকা, ৬৪ হাজার ৯০০ টাকা ও ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা, ৭০ হাজার ২০০ টাকা, ৭৩ হাজার ১০ টাকা ও ৭৫ হাজার ৯৪০ টাকা। চতুর্থ স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৫২ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্টের ধাপ হচ্ছে পর্যায়ক্রমে ৫৪ হাজার ৮০ টাকা, ৫৬ হাজার ২৫০ টাকা, ৫৮ হাজার ৫০০ টাকা, ৬০ হাজার ৮৪০ টাকা, ৬৩ হাজার ২৮০ টাকা, ৬৫ হাজার ৮২০ টাকা, ৬৮ হাজার ৪৬০ টাকা, ৭১ হাজার ২০০ টাকা ও ৭৪ হাজার ৫০ টাকা। পঞ্চম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৪৫ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্টের ধাপ হচ্ছে পর্যায়ক্রমে ৪৭ হাজার ২৫০ টাকা, ৪৯ হাজার ৬২০ টাকা, ৫২ হাজার ১১০ টাকা, ৫৪ হাজার ৭২০ টাকা, ৫৭ হাজার ৪৬০ টাকা, ৬০ হাজার ৩৪০ টাকা, ৬৩ হাজার ৩৬০ টাকা, ৬৬ হাজার ৫৩০ টাকা, ৬৯ হাজার ৮৬০ টাকা ও ৭৩ হাজার ৩৬০ টাকা। ষষ্ঠ স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৩৭ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্টের ধাপ হচ্ছে পর্যায়ক্রমে ৩৮ হাজার ৮৫০ টাকা, ৪০ হাজার ৮০০ টাকা, ৪২ হাজার ৮৪০ টাকা, ৪৪ হাজার ৯৯০ টাকা, ৪৭ হাজার ২৪০ টাকা, ৪৯ হাজার ৬১০ টাকা, ৫২ হাজার ১০০ টাকা, ৫৪ হাজার ৭১০ টাকা, ৫৭ হাজার ৪৫০ টাকা, ৬০ হাজার ৩৩০ টাকা, ৬৩ হাজার ৩৫০ টাকা, ৬৬ হাজার ৫২০ টাকা, ৬৯ হাজার ৮৫০ টাকা ও ৭৩ হাজার ৩৫০ টাকা। সপ্তম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৩২ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ৬৬ হাজার ৬২০ টাকা। অষ্টম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ২৫ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ৫২ হাজার ৩০ টাকা। নবম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ১৭ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ৪৫ হাজার ২৬০ টাকা। ১০ম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ১৩ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ৪৪ হাজার ৬৯০ টাকা। ১১তম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ১১ হাজার ৫০০ টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ৩০ হাজার ৬৯০ টাকা। ১২তম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ১০ হাজার ৫০০ টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ২৮ হাজার ১০ টাকা। ১৩তম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ১০ হাজার সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ২৬ হাজার ৬৭৮ টাকা। ১৪তম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৯ হাজার ৫০০ টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ২৫ হাজার ৩৪০ টাকা। ১৫তম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৯ হাজার সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ২৪ হাজার ৪০ টাকা। ১৬তম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৮ হাজার সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ২১ হাজার ৯০০ টাকা।

বিভিন্ন ভাতা ও সুবিধা

বাড়ি ভাড়া-৪৫ হাজার টাকা ও এর উর্ধ্বে ঢাকা মেট্টোপলিটন এলাকার জন্য মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ২৮ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কক্সবাজার ও সাভার এলাকার জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ২৩ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার টাকা। জেলা শহরের জন্য মূল বেতনের ৪০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ২১ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ৩২ হাজার টাকা। অন্যান্য স্থানের জন্য মূল বেতনের ৩৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১৯ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ২৮ হাজার টাকা।

মূল বেতনের ২৫ হাজার টাকা থেকে ৪৪ হাজার ৯৯৯ টাকা পর্যন্ত ঢাকা মেট্টোপলিটন এলাকার জন্য ৬০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা। চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কক্সবাজার ও সাভার এলাকার মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১৬ হাজার টাকা। জেলা শহরের জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১৩ হাজার টাকা। অন্যান্য স্থানের জন্য মূল বেতনের ৪০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১১ হাজার ৫০০ টাকা।

১৩ হাজার টাকা থেকে ২৪ হাজার ৯৯৯ পর্যন্ত ঢাকা মেট্টোপলিটন এলাকার জন্য মূল বেতনের ৬৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা। চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কক্সবাজার ও সাভার এলাকার মূল বেতনের ৫৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৮ হাজার ৫০০ টাকা। জেলা শহরের জন্য মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৮ হাজার টাকা। অন্যান্য ¯’ানের জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৭ হাজার ২০০ টাকা।

১২ হাজার ৯৯৯ পর্যন্ত ঢাকা মেট্টোপলিটন এলাকার জন্য মূল বেতনের ৭০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৬ হাজার ৫০০ টাকা। চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কক্সবাজার ও সাভার এলাকার মূল বেতনের ৬৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৬ হাজার। জেলা শহরের জন্য মূল বেতনের ৬০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৫ হাজার ৫০০ টাকা। অন্যান্য স্থানের জন্য মূল বেতনের ৫৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৫ হাজার।

চিকিৎসা ভাতা

মাসে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০ টাকা। অবসরভোগীদের ক্ষেত্রে ৬৫ বছরের কম বয়স্কদের জন্য মাসিক ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা। ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকা। এর পাশাপাশি সরকার প্রদত্ত ৪০০ টাকা স্বাস্থ্য ও দূর্ঘটনা বীমা এবং জীবন বীমাসহ সরকারি চাকুরিজীবীর জন্য বীমা স্কিম চালু করা।

যাতায়াত ভাতা

দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কর্মরত চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ১০ নাম্বার থেকে ১৬ নাম্বার গ্রেডে চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে যাতায়াত ভাতা মাসে ৩৬০ টাকা সুপারিশ করা হয়েছে।

গাড়ির সুবিধা

সার্বক্ষণিক গাড়ির সেবার জন্য প্রাধিকারভুক্ত কর্মকর্তাদের জন্য নগদায়নের বিষয়টি চালু রাখা। একই সঙ্গে পরীক্ষামূলকভাবে ৩ নাম্বার গ্রেড এর উপরের কর্মকর্তাদের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪র্থ গ্রেডের কর্মকর্তাদের গাড়ি কেনার বিষয়টি বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

শিক্ষা সহায়ক ভাতা

সকল শ্রেণির চাকরিজীবীদের সন্তান প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা, ২ সন্তানের জন্য ২ হাজার টাকা শিক্ষা সহায়ক ভাতার সুপারিশ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীর সন্তানদের ভর্তির জন্য সরকারি অর্থে পরিচালিত সকল প্রতিষ্ঠানে একটি নির্দিষ্ট কোটা নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে বুয়েট কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এ সুপারিশ প্রযোজ্য হবে না।

টিফিন ভাতা

মাসে টিফিন ভাতা ৩০০ টাকা। তবে যে সব চাকরিজীবী তাদের প্রতিষ্ঠান দুপুরের খাবার পান কিংবা দুপুরের খাবারের ভাতা পান তাদের জন্য এ টিফিন ভাতা প্রযোজ্য হবে না।

উৎসব ভাতা

সকল চাকরিজীবীদের জন্য প্রতি বছরে ২ মাসের মূল বেতনের সমপরিমান অর্থ উৎসব ভাতা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে একজন অবসরভোগির জন্য তার মাসিক নীট পেনশনের দ্বিগুণ হারে বছরে ২টি উৎসব ভাতা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা

সকল শ্রেণির চাকরিজীবীকে বর্তমান প্রচলিত প্রতি তিন বছরের স্থলে ২ বছর অন্তর ১৫ দিনের গড় বেতনে অর্জিত ছুটিসহ ১ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা হিসাবে সুপারিশ করা হয়েছে।

ধোলাই ভাতা

৪র্থ শ্রেণির চাকরিজীবীদের জন্য ধোলাই ভাতা মাসে ১৫০ টাকার সুপারিশ করা হয়েছে।

কার্যভার ভাতা

কার্যভার ভাতার শতকরা হার অপরিবর্তিত রেখে সর্বোচ্চ সীমা মাসে ২ হাজার ৫০ টাকা উন্নীত করা।

গৃহকর্মী ভাতা

গৃহকর্মী ভাতা বর্তমানে যা রয়েছে তাই থাকবে।

পোশাক পরিচ্ছদ সুবিধা

প্রচলিত নিয়মে পোশাক-পরিচ্ছদ প্রদানের সুবিধা চালু রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।

পাহাড়ি ও দুর্গম ভাতা

পার্বত্য এলাকায় কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পাহাড়ি  ভাতা পুণঃ নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে হাওড়-বাওড়, দুর্গম দ্বীপ অঞ্চলে উপকূলীয় ভাতা।

আপ্যায়ন ভাতা

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মূখ্য সচিব ৩ হাজার টাকা, সচিব ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তা ২ হাজার ৫০০ টাকা, অতিরিক্ত সচিব ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তা ২ হাজার টাকা, যুগ্ম সচিব ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ১ হাজার ৫০০ টাকা সুপারিশ করা হয়েছে।

ভ্রমণ ভাতা

বদলিজনিত ভ্রমণ ভাতা এককালীন সড়ক পথে ১০০ কিঃমিঃ পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা, ১০১ থেকে ২০০ কিঃমিঃ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৫০০ টাকা, ২০১ থেকে এর বেশি কিঃমিঃ হলে ২০ হাজার টাকা ভ্রমণ ভাতার সুপারিশ করা হয়েছে।

বিশেষ ভাতা

বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এসএসএফ ইত্যাদি বিভিন্ন সার্ভিসের জন্য বিশেষভাতা বেতন কাঠামোর পরিপ্রেক্ষিতে সমন্বয় করা যেতে পারে।

অবসর ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা

পেনশনযোগ্য চাকরিকাল প্রথম গ্রেড থেকে ১৬ গ্রেড পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে পেনশনযোগ্য চাকুরিকাল ৫ বছর থেকে শুরু করে ২৫ বছর পর্যন্ত পেনশনের হার গ্রেড অনুযায়ী ২০ শতাংশ থেকে গ্রেড অনুযায়ী ৯০ শতাংশ সুপারিশ করা হয়েছে। বাধ্যতামূলক সমর্পিত ৫০ শতাংশ পেনশনের ক্ষেত্রে আনুতোষিকের হার ৫ বছর থেকে শুরু করে ২০ বছর পর্যন্ত প্রতি ১ টাকায় ২৭৫ টাকা থেকে শুরু করে ২৩০ টাকা সুপারিশ করা হয়েছে। চাকুরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণের ক্ষেত্রে চাকুরিকাল ২৫ বছর থেকে ২০ বছরে পুণঃ নির্ধারনের সুপারিশ করা হয়েছে।

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য জীবন, স্বাস্থ্য ও দুর্ঘটনা বীমা প্রবর্তন। সরকারি চাকুরিজীবীদের জন্য পে-কমিশনে এ বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

আবাসন ও গৃহ নির্মাণ ঋণ

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ঋণের পরিমান গ্রেড অনুযায়ী ১২ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা গৃহ ঋণ দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সুদের হার হবে ব্যাংক রেটে ৫ শতাংশ। এর পাশাপাশি জেলা পর্যায়ে খাস জমি চিহ্নিত করে সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসনের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা। ৮ম থেকে ১ম গ্রেড স্কেলের কর্মকর্তাদের ২০ জনের জন্য ১০ কাঠা ও অন্যান্য চাকরিজীবী প্রতি ২০ জনের জন্য ৮ কাঠা প্লট দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

সমৃদ্ধ সোপান ব্যাংক স্থাপন

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সমৃদ্ধ সোপান ব্যাংক স্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ঢাকা মহানগরীতে বসবাসরত সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য মৃত্যুর পর দাফনের জন্য বেশ কয়েকটি স্থানে কবরস্থান নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে।

আর্থিক সংশ্লেষ

বেতন কমিশনের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রস্তাবিত বাড়ি ভাড়ার জন্য আগামী অর্থ বছরে অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রয়োজন হবে ৪৯ কোটি ৪০ লাখ ১১ হাজার টাকা। চিকিৎসার জন্য ৯৯৮ কোটি টাকা, শিক্ষা সহায়ক ভাতার জন্য ১ হাজার ২৫০ কোটি ৪২ লাখ, যাতায়াত ভাতার জন্য ৩৭ কোটি ৬৯ লাখ, উৎসব ভাতার জন্য ১৭ কোটি ১৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, শ্রান্তি বিনোদনের জন্য ৫৭১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, টিফিন ভাতা ১৫৪ কোটি টাকা, দুর্গম ভাতা ৮৩ কোটি ৭৯ কোটি টাকা, পেনশনাদির জন্য ৩৭ কোটি ৮৯ লাখ ৭২ হাজার টাকা, অবসরভোগি চিকিৎসা ভাতার জন্য ৬৪৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ১৭ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে।

প্রতিবেদনে কর রাজস্ব বাড়ানোর বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- বিলাসবহুল পণ্য, বিভিন্ন ধরনের পানীয় দ্রব্যের উপর ক্রয়হার বাড়ানো। একই সঙ্গে বিড়ি, সিগারেট ও তামাকের উপর বর্ধিতহারে কর বাড়ানো। এছাড়াও আয়করের আওতা সম্প্রসারণ করা ও কর ফাঁকি দেয়ার বিষয়টি কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।

প্রতিবেদনে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী ও বিশেষায়িত চাকুরিধারীদের জন্য বেতন কাঠামো সুপারিশ করা হয়েছে। লোকসানি প্রতিষ্ঠান লাভজনক না হলে সেগুলো বিরাষ্ট্রীয়করণের ব্যবস্থা করা। বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য পৃথক বেতন কাঠামো ও ব্যাংক বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক বেতন কাঠামো তৈরির সুপারিশ করা হয়েছে। তবে গ্রেডের সংখ্যা জাতীয় বেতন পে-কমিশনের প্রস্তাবিত ১৬টি’র কম বা বেশি না হওয়াই ভাল বলে মনে করে কমিশন। গবেষণা কাজে নিয়োজিত বিশেষায়িত চাকরিজীবীদের জন্য বেতন কাঠামো আলাদা রাখা।

মূল্যস্ফীতি ও ভোক্তা সম্পর্কে কমিশন দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায় রাখার জন্য প্রাইস কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে। কমিশন তাদের প্রতিবেদনে বর্তমান জনপ্রশাসনের ক্লান্তিকাল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যে কারণে দ্রুত পদোন্নতি, উপযুক্ত পদায়ন, স্বাভাবিক বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ও সংস্কার কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে। প্রতিবেদনে সরকারি চাকরিজীবীদের আয়কর প্রদানের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করে বলা হয়, সকল চাকরিজীবীদের বাৎসরিক মূল বেতনের পরিমান করযোগ্য আয়ের কমপক্ষে সীমা অতিক্রম করলে তাদের মূল বেতনের সঙ্গে অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের বিষয়টি সুপারিশ করেছে। এছাড়াও চাকরি সংক্রান্ত সমস্যা নিয়েও বিভিন্ন দপ্তরের চিত্র তুলে ধরে তা সুপারিশ করা হয়েছে।

ট্যাগস

মুরাদনগর ভয়াবহ আগুন কয়ক কাটি টাকার ক্ষতি 

জাতীয় বেতন কমিশনের রিপোর্টে যা আছে

আপডেট সময় ০২:৪০:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪
 
index_62259
২৩ ডিসেম্বর (মুরাদনগর বার্তা ডেস্ক):
সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা সুপারিশ করা হলেও, এই প্রথম স্কেলে বেতন ভাতাসহ অর্থের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ৪২ হাজার ৮৩৩ টাকা। একইভাবে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল ৮ হাজার ২০০ টাকা সুপারিশ করা হলেও সব মিলে দাঁড়াবে ১৭ হাজার ৪৫০ টাকা। প্রথম স্কেলে বাড়ি ভাড়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে মূল বেতনের ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৪০ হাজার টাকা। এর পাশাপাশি চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা, ডোমেস্টিক এইড ভাতা ৩ হাজার টাকা, উৎসব ভাতা ১৩ হাজার ৩৩ টাকা, আপ্যায়ন ভাতা ৩ হাজার টাকা ও শিক্ষা ভাতা ২ হাজার টাকা। একইভাবে সর্বনিম্ন স্কেলের বাড়ি ভাড়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা, চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা, যাতায়াত ভাতা ৩০০ টাকা, সন্তানের শিক্ষা ভাতা ২ হাজার টাকা, ধোলাই ভাতা ১৫০ টাকা ও টিফিন ভাতা ৩০০ টাকা। প্রায় ১৮৩ পৃষ্ঠায় বেতন ও চাকুরি কমিশনের রিপোর্টে এসব সুপারিশ করা হয়েছে।

সুপারিশে দ্বিতীয় স্কেলটির মূল বেতন ৭০ হাজার টাকা হলেও, ইনক্রিমেন্টের ধাপ হচ্ছে ৭২ হাজার ৮০০ টাকা, ৭৫ হাজার ৭২০ টাকা ও ৭৮ হাজার ৭৫০ টাকা। তৃতীয় স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৬০ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্টের ধাপ হচ্ছে পর্যায়ক্রমে ৬২ হাজার ৪০০ টাকা, ৬৪ হাজার ৯০০ টাকা ও ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা, ৭০ হাজার ২০০ টাকা, ৭৩ হাজার ১০ টাকা ও ৭৫ হাজার ৯৪০ টাকা। চতুর্থ স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৫২ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্টের ধাপ হচ্ছে পর্যায়ক্রমে ৫৪ হাজার ৮০ টাকা, ৫৬ হাজার ২৫০ টাকা, ৫৮ হাজার ৫০০ টাকা, ৬০ হাজার ৮৪০ টাকা, ৬৩ হাজার ২৮০ টাকা, ৬৫ হাজার ৮২০ টাকা, ৬৮ হাজার ৪৬০ টাকা, ৭১ হাজার ২০০ টাকা ও ৭৪ হাজার ৫০ টাকা। পঞ্চম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৪৫ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্টের ধাপ হচ্ছে পর্যায়ক্রমে ৪৭ হাজার ২৫০ টাকা, ৪৯ হাজার ৬২০ টাকা, ৫২ হাজার ১১০ টাকা, ৫৪ হাজার ৭২০ টাকা, ৫৭ হাজার ৪৬০ টাকা, ৬০ হাজার ৩৪০ টাকা, ৬৩ হাজার ৩৬০ টাকা, ৬৬ হাজার ৫৩০ টাকা, ৬৯ হাজার ৮৬০ টাকা ও ৭৩ হাজার ৩৬০ টাকা। ষষ্ঠ স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৩৭ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্টের ধাপ হচ্ছে পর্যায়ক্রমে ৩৮ হাজার ৮৫০ টাকা, ৪০ হাজার ৮০০ টাকা, ৪২ হাজার ৮৪০ টাকা, ৪৪ হাজার ৯৯০ টাকা, ৪৭ হাজার ২৪০ টাকা, ৪৯ হাজার ৬১০ টাকা, ৫২ হাজার ১০০ টাকা, ৫৪ হাজার ৭১০ টাকা, ৫৭ হাজার ৪৫০ টাকা, ৬০ হাজার ৩৩০ টাকা, ৬৩ হাজার ৩৫০ টাকা, ৬৬ হাজার ৫২০ টাকা, ৬৯ হাজার ৮৫০ টাকা ও ৭৩ হাজার ৩৫০ টাকা। সপ্তম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৩২ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ৬৬ হাজার ৬২০ টাকা। অষ্টম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ২৫ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ৫২ হাজার ৩০ টাকা। নবম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ১৭ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ৪৫ হাজার ২৬০ টাকা। ১০ম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ১৩ হাজার টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ৪৪ হাজার ৬৯০ টাকা। ১১তম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ১১ হাজার ৫০০ টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ৩০ হাজার ৬৯০ টাকা। ১২তম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ১০ হাজার ৫০০ টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ২৮ হাজার ১০ টাকা। ১৩তম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ১০ হাজার সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ২৬ হাজার ৬৭৮ টাকা। ১৪তম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৯ হাজার ৫০০ টাকা সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ২৫ হাজার ৩৪০ টাকা। ১৫তম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৯ হাজার সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ২৪ হাজার ৪০ টাকা। ১৬তম স্কেলটির জন্য মূল বেতন ৮ হাজার সুপারিশ করা  হলেও, ইনক্রিমেন্ট শেষে দাঁড়াবে ২১ হাজার ৯০০ টাকা।

বিভিন্ন ভাতা ও সুবিধা

বাড়ি ভাড়া-৪৫ হাজার টাকা ও এর উর্ধ্বে ঢাকা মেট্টোপলিটন এলাকার জন্য মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ২৮ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কক্সবাজার ও সাভার এলাকার জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ২৩ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার টাকা। জেলা শহরের জন্য মূল বেতনের ৪০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ২১ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ৩২ হাজার টাকা। অন্যান্য স্থানের জন্য মূল বেতনের ৩৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১৯ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ২৮ হাজার টাকা।

মূল বেতনের ২৫ হাজার টাকা থেকে ৪৪ হাজার ৯৯৯ টাকা পর্যন্ত ঢাকা মেট্টোপলিটন এলাকার জন্য ৬০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা। চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কক্সবাজার ও সাভার এলাকার মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১৬ হাজার টাকা। জেলা শহরের জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১৩ হাজার টাকা। অন্যান্য স্থানের জন্য মূল বেতনের ৪০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১১ হাজার ৫০০ টাকা।

১৩ হাজার টাকা থেকে ২৪ হাজার ৯৯৯ পর্যন্ত ঢাকা মেট্টোপলিটন এলাকার জন্য মূল বেতনের ৬৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা। চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কক্সবাজার ও সাভার এলাকার মূল বেতনের ৫৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৮ হাজার ৫০০ টাকা। জেলা শহরের জন্য মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৮ হাজার টাকা। অন্যান্য ¯’ানের জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৭ হাজার ২০০ টাকা।

১২ হাজার ৯৯৯ পর্যন্ত ঢাকা মেট্টোপলিটন এলাকার জন্য মূল বেতনের ৭০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৬ হাজার ৫০০ টাকা। চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কক্সবাজার ও সাভার এলাকার মূল বেতনের ৬৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৬ হাজার। জেলা শহরের জন্য মূল বেতনের ৬০ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৫ হাজার ৫০০ টাকা। অন্যান্য স্থানের জন্য মূল বেতনের ৫৫ শতাংশ হারে কমপক্ষে ৫ হাজার।

চিকিৎসা ভাতা

মাসে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০ টাকা। অবসরভোগীদের ক্ষেত্রে ৬৫ বছরের কম বয়স্কদের জন্য মাসিক ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা। ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকা। এর পাশাপাশি সরকার প্রদত্ত ৪০০ টাকা স্বাস্থ্য ও দূর্ঘটনা বীমা এবং জীবন বীমাসহ সরকারি চাকুরিজীবীর জন্য বীমা স্কিম চালু করা।

যাতায়াত ভাতা

দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কর্মরত চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ১০ নাম্বার থেকে ১৬ নাম্বার গ্রেডে চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে যাতায়াত ভাতা মাসে ৩৬০ টাকা সুপারিশ করা হয়েছে।

গাড়ির সুবিধা

সার্বক্ষণিক গাড়ির সেবার জন্য প্রাধিকারভুক্ত কর্মকর্তাদের জন্য নগদায়নের বিষয়টি চালু রাখা। একই সঙ্গে পরীক্ষামূলকভাবে ৩ নাম্বার গ্রেড এর উপরের কর্মকর্তাদের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪র্থ গ্রেডের কর্মকর্তাদের গাড়ি কেনার বিষয়টি বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

শিক্ষা সহায়ক ভাতা

সকল শ্রেণির চাকরিজীবীদের সন্তান প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা, ২ সন্তানের জন্য ২ হাজার টাকা শিক্ষা সহায়ক ভাতার সুপারিশ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীর সন্তানদের ভর্তির জন্য সরকারি অর্থে পরিচালিত সকল প্রতিষ্ঠানে একটি নির্দিষ্ট কোটা নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে বুয়েট কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এ সুপারিশ প্রযোজ্য হবে না।

টিফিন ভাতা

মাসে টিফিন ভাতা ৩০০ টাকা। তবে যে সব চাকরিজীবী তাদের প্রতিষ্ঠান দুপুরের খাবার পান কিংবা দুপুরের খাবারের ভাতা পান তাদের জন্য এ টিফিন ভাতা প্রযোজ্য হবে না।

উৎসব ভাতা

সকল চাকরিজীবীদের জন্য প্রতি বছরে ২ মাসের মূল বেতনের সমপরিমান অর্থ উৎসব ভাতা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে একজন অবসরভোগির জন্য তার মাসিক নীট পেনশনের দ্বিগুণ হারে বছরে ২টি উৎসব ভাতা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা

সকল শ্রেণির চাকরিজীবীকে বর্তমান প্রচলিত প্রতি তিন বছরের স্থলে ২ বছর অন্তর ১৫ দিনের গড় বেতনে অর্জিত ছুটিসহ ১ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা হিসাবে সুপারিশ করা হয়েছে।

ধোলাই ভাতা

৪র্থ শ্রেণির চাকরিজীবীদের জন্য ধোলাই ভাতা মাসে ১৫০ টাকার সুপারিশ করা হয়েছে।

কার্যভার ভাতা

কার্যভার ভাতার শতকরা হার অপরিবর্তিত রেখে সর্বোচ্চ সীমা মাসে ২ হাজার ৫০ টাকা উন্নীত করা।

গৃহকর্মী ভাতা

গৃহকর্মী ভাতা বর্তমানে যা রয়েছে তাই থাকবে।

পোশাক পরিচ্ছদ সুবিধা

প্রচলিত নিয়মে পোশাক-পরিচ্ছদ প্রদানের সুবিধা চালু রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।

পাহাড়ি ও দুর্গম ভাতা

পার্বত্য এলাকায় কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পাহাড়ি  ভাতা পুণঃ নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে হাওড়-বাওড়, দুর্গম দ্বীপ অঞ্চলে উপকূলীয় ভাতা।

আপ্যায়ন ভাতা

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মূখ্য সচিব ৩ হাজার টাকা, সচিব ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তা ২ হাজার ৫০০ টাকা, অতিরিক্ত সচিব ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তা ২ হাজার টাকা, যুগ্ম সচিব ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ১ হাজার ৫০০ টাকা সুপারিশ করা হয়েছে।

ভ্রমণ ভাতা

বদলিজনিত ভ্রমণ ভাতা এককালীন সড়ক পথে ১০০ কিঃমিঃ পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা, ১০১ থেকে ২০০ কিঃমিঃ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৫০০ টাকা, ২০১ থেকে এর বেশি কিঃমিঃ হলে ২০ হাজার টাকা ভ্রমণ ভাতার সুপারিশ করা হয়েছে।

বিশেষ ভাতা

বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এসএসএফ ইত্যাদি বিভিন্ন সার্ভিসের জন্য বিশেষভাতা বেতন কাঠামোর পরিপ্রেক্ষিতে সমন্বয় করা যেতে পারে।

অবসর ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা

পেনশনযোগ্য চাকরিকাল প্রথম গ্রেড থেকে ১৬ গ্রেড পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে পেনশনযোগ্য চাকুরিকাল ৫ বছর থেকে শুরু করে ২৫ বছর পর্যন্ত পেনশনের হার গ্রেড অনুযায়ী ২০ শতাংশ থেকে গ্রেড অনুযায়ী ৯০ শতাংশ সুপারিশ করা হয়েছে। বাধ্যতামূলক সমর্পিত ৫০ শতাংশ পেনশনের ক্ষেত্রে আনুতোষিকের হার ৫ বছর থেকে শুরু করে ২০ বছর পর্যন্ত প্রতি ১ টাকায় ২৭৫ টাকা থেকে শুরু করে ২৩০ টাকা সুপারিশ করা হয়েছে। চাকুরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণের ক্ষেত্রে চাকুরিকাল ২৫ বছর থেকে ২০ বছরে পুণঃ নির্ধারনের সুপারিশ করা হয়েছে।

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য জীবন, স্বাস্থ্য ও দুর্ঘটনা বীমা প্রবর্তন। সরকারি চাকুরিজীবীদের জন্য পে-কমিশনে এ বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

আবাসন ও গৃহ নির্মাণ ঋণ

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ঋণের পরিমান গ্রেড অনুযায়ী ১২ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা গৃহ ঋণ দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সুদের হার হবে ব্যাংক রেটে ৫ শতাংশ। এর পাশাপাশি জেলা পর্যায়ে খাস জমি চিহ্নিত করে সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসনের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা। ৮ম থেকে ১ম গ্রেড স্কেলের কর্মকর্তাদের ২০ জনের জন্য ১০ কাঠা ও অন্যান্য চাকরিজীবী প্রতি ২০ জনের জন্য ৮ কাঠা প্লট দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

সমৃদ্ধ সোপান ব্যাংক স্থাপন

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সমৃদ্ধ সোপান ব্যাংক স্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ঢাকা মহানগরীতে বসবাসরত সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য মৃত্যুর পর দাফনের জন্য বেশ কয়েকটি স্থানে কবরস্থান নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে।

আর্থিক সংশ্লেষ

বেতন কমিশনের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রস্তাবিত বাড়ি ভাড়ার জন্য আগামী অর্থ বছরে অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রয়োজন হবে ৪৯ কোটি ৪০ লাখ ১১ হাজার টাকা। চিকিৎসার জন্য ৯৯৮ কোটি টাকা, শিক্ষা সহায়ক ভাতার জন্য ১ হাজার ২৫০ কোটি ৪২ লাখ, যাতায়াত ভাতার জন্য ৩৭ কোটি ৬৯ লাখ, উৎসব ভাতার জন্য ১৭ কোটি ১৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, শ্রান্তি বিনোদনের জন্য ৫৭১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, টিফিন ভাতা ১৫৪ কোটি টাকা, দুর্গম ভাতা ৮৩ কোটি ৭৯ কোটি টাকা, পেনশনাদির জন্য ৩৭ কোটি ৮৯ লাখ ৭২ হাজার টাকা, অবসরভোগি চিকিৎসা ভাতার জন্য ৬৪৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ১৭ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে।

প্রতিবেদনে কর রাজস্ব বাড়ানোর বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- বিলাসবহুল পণ্য, বিভিন্ন ধরনের পানীয় দ্রব্যের উপর ক্রয়হার বাড়ানো। একই সঙ্গে বিড়ি, সিগারেট ও তামাকের উপর বর্ধিতহারে কর বাড়ানো। এছাড়াও আয়করের আওতা সম্প্রসারণ করা ও কর ফাঁকি দেয়ার বিষয়টি কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।

প্রতিবেদনে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী ও বিশেষায়িত চাকুরিধারীদের জন্য বেতন কাঠামো সুপারিশ করা হয়েছে। লোকসানি প্রতিষ্ঠান লাভজনক না হলে সেগুলো বিরাষ্ট্রীয়করণের ব্যবস্থা করা। বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য পৃথক বেতন কাঠামো ও ব্যাংক বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক বেতন কাঠামো তৈরির সুপারিশ করা হয়েছে। তবে গ্রেডের সংখ্যা জাতীয় বেতন পে-কমিশনের প্রস্তাবিত ১৬টি’র কম বা বেশি না হওয়াই ভাল বলে মনে করে কমিশন। গবেষণা কাজে নিয়োজিত বিশেষায়িত চাকরিজীবীদের জন্য বেতন কাঠামো আলাদা রাখা।

মূল্যস্ফীতি ও ভোক্তা সম্পর্কে কমিশন দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায় রাখার জন্য প্রাইস কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে। কমিশন তাদের প্রতিবেদনে বর্তমান জনপ্রশাসনের ক্লান্তিকাল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যে কারণে দ্রুত পদোন্নতি, উপযুক্ত পদায়ন, স্বাভাবিক বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ও সংস্কার কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে। প্রতিবেদনে সরকারি চাকরিজীবীদের আয়কর প্রদানের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করে বলা হয়, সকল চাকরিজীবীদের বাৎসরিক মূল বেতনের পরিমান করযোগ্য আয়ের কমপক্ষে সীমা অতিক্রম করলে তাদের মূল বেতনের সঙ্গে অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের বিষয়টি সুপারিশ করেছে। এছাড়াও চাকরি সংক্রান্ত সমস্যা নিয়েও বিভিন্ন দপ্তরের চিত্র তুলে ধরে তা সুপারিশ করা হয়েছে।