ঢাকা ০৭:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

তনুর প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে হতাশ পরিবার

মুরাদনগর বার্তা ডেস্কঃ

রাদনগর বার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকমঃ সেহাগী জাহান তনুর প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ধর্ষনের কোন আলামত না পাওয়া ও তার মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কোন কারন না পাওয়ায় ক্ষোভের সাথে হতাশা ব্যক্ত করেন তার পরিবার। এমনকি তনুর লাশ সুরতহালে মাথায় আঘাতের কথা উল্লেখ করা হলেও ময়নাতদন্তে কোন আঘাত পাওয়া যায়নি। এ প্রতিবেদনকে রহস্যময় মনে করছেন তার বাবা ইয়ার হোসেন।

তনুর বাবা ইয়ার হোসেন জানান, ‘আমার মেয়ের জন্য মিথ্যা কথা বলব! আমি তো বাবা। আমাকে বহুত কথা বলেছে। এইটা দেখাইছে, ওইটা দেখাইছে। আমি কোনো প্রলোভনে পা দিইনি। আমি শুধু আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’ ক্ষুব্ধ অথচ বিষণ্ণ কণ্ঠে কথাগুলো বলেন ইয়ার হোসেন, চোখে তার জমাট অশ্রু। মেয়ের লাশ উদ্ধারকালের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, তার (তনু) দুই কানে ও নাকে ছিল জমাট রক্ত। মাথার পেছনের দিক ফোলা-ফোলা। তনুর কোমরের দুপাশে এবং বুকের ওপরের অংশে জামা ছিল ছেঁড়া। ধস্তাধস্তির কারণে ছিঁড়ে গেছে বোঝা যাচ্ছিল। লজ্জায়-ঘৃণায় মাথা তার নুয়ে পড়ে। সুরতহাল শুরু থেকে এ ঘটনাকে রস্যময় মনে করছেন বলে তিনি জানান। কেননা সুরতহাল প্রতিবেদনে পুলিশের উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বুকের দিকে জামা ছেঁড়ার বিষয়টি উল্লেখ করেননি।

তিনি আরও বলেন, আজকে ১০-১২ দিন হয়ে গেল আমার মেয়ে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে কোনো ক্লু বের করা গেল না। এখন প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ নেই যার কাছে বিচারের জন্য যাওয়া যায়। তার কাছেই বিচার চাই।

ইয়ার হোসেনের বুকের ভেতর থেকে দীর্ঘশ্বাসের সঙ্গে যেন বেরিয়ে আসে এক আকাশ হাহাকার।

ইয়ার হোসেন বলেন, কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকলে গাড়ি পাঠিয়ে তনুকে নিয়ে যাওয়া হতো। তিনি বলেন, পাশাপাশি দুটি বাসাতে তনু পড়াত। ওইদিন সর্বশেষ জানা যায়, সেনাসদস্য জাহিদের বাসা থেকে ৭টার দিকে সে বেরিয়ে গিয়েছিল টিউশনি শেষে। ইয়ার হোসেন জানান, সেনা কল্যাণ সংস্থা আর জাহিদের বাসা কাছাকাছি। তার পাশেই আবার সৈনিক ক্লাব। তারপর রাস্তা। ওই রাস্তার দুপাশে দুটি সিসি ক্যামেরা আছে। ওই রাস্তা ছাড়া ঘটনাস্থলে যাওয়া সম্ভব নয়।

এদিকে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন এই কথা প্রসঙ্গে আরও বলেন, পঞ্চম শ্রেণি থেকে তনু সেনানিবাসের এই বাসায় থাকতেন। ইয়ার হোসেন ৩১ বছর ধরে এই চাকরি করছেন বলে জানান।

উল্লেখ, প্রথম দফা ময়নাতদন্তের বিষষ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তনুর লাশ তোলা হয়। দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের জন্য তিন সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকার ভেতরে একটি কালভার্টের নিচের ঝোপ থেকে ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। তনু থিয়েটার কর্মী ছিলেন।

ট্যাগস

তনুর প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে হতাশ পরিবার

আপডেট সময় ০৩:১৭:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল ২০১৬

মুরাদনগর বার্তা ডেস্কঃ

রাদনগর বার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকমঃ সেহাগী জাহান তনুর প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ধর্ষনের কোন আলামত না পাওয়া ও তার মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কোন কারন না পাওয়ায় ক্ষোভের সাথে হতাশা ব্যক্ত করেন তার পরিবার। এমনকি তনুর লাশ সুরতহালে মাথায় আঘাতের কথা উল্লেখ করা হলেও ময়নাতদন্তে কোন আঘাত পাওয়া যায়নি। এ প্রতিবেদনকে রহস্যময় মনে করছেন তার বাবা ইয়ার হোসেন।

তনুর বাবা ইয়ার হোসেন জানান, ‘আমার মেয়ের জন্য মিথ্যা কথা বলব! আমি তো বাবা। আমাকে বহুত কথা বলেছে। এইটা দেখাইছে, ওইটা দেখাইছে। আমি কোনো প্রলোভনে পা দিইনি। আমি শুধু আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’ ক্ষুব্ধ অথচ বিষণ্ণ কণ্ঠে কথাগুলো বলেন ইয়ার হোসেন, চোখে তার জমাট অশ্রু। মেয়ের লাশ উদ্ধারকালের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, তার (তনু) দুই কানে ও নাকে ছিল জমাট রক্ত। মাথার পেছনের দিক ফোলা-ফোলা। তনুর কোমরের দুপাশে এবং বুকের ওপরের অংশে জামা ছিল ছেঁড়া। ধস্তাধস্তির কারণে ছিঁড়ে গেছে বোঝা যাচ্ছিল। লজ্জায়-ঘৃণায় মাথা তার নুয়ে পড়ে। সুরতহাল শুরু থেকে এ ঘটনাকে রস্যময় মনে করছেন বলে তিনি জানান। কেননা সুরতহাল প্রতিবেদনে পুলিশের উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বুকের দিকে জামা ছেঁড়ার বিষয়টি উল্লেখ করেননি।

তিনি আরও বলেন, আজকে ১০-১২ দিন হয়ে গেল আমার মেয়ে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে কোনো ক্লু বের করা গেল না। এখন প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ নেই যার কাছে বিচারের জন্য যাওয়া যায়। তার কাছেই বিচার চাই।

ইয়ার হোসেনের বুকের ভেতর থেকে দীর্ঘশ্বাসের সঙ্গে যেন বেরিয়ে আসে এক আকাশ হাহাকার।

ইয়ার হোসেন বলেন, কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকলে গাড়ি পাঠিয়ে তনুকে নিয়ে যাওয়া হতো। তিনি বলেন, পাশাপাশি দুটি বাসাতে তনু পড়াত। ওইদিন সর্বশেষ জানা যায়, সেনাসদস্য জাহিদের বাসা থেকে ৭টার দিকে সে বেরিয়ে গিয়েছিল টিউশনি শেষে। ইয়ার হোসেন জানান, সেনা কল্যাণ সংস্থা আর জাহিদের বাসা কাছাকাছি। তার পাশেই আবার সৈনিক ক্লাব। তারপর রাস্তা। ওই রাস্তার দুপাশে দুটি সিসি ক্যামেরা আছে। ওই রাস্তা ছাড়া ঘটনাস্থলে যাওয়া সম্ভব নয়।

এদিকে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন এই কথা প্রসঙ্গে আরও বলেন, পঞ্চম শ্রেণি থেকে তনু সেনানিবাসের এই বাসায় থাকতেন। ইয়ার হোসেন ৩১ বছর ধরে এই চাকরি করছেন বলে জানান।

উল্লেখ, প্রথম দফা ময়নাতদন্তের বিষষ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তনুর লাশ তোলা হয়। দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের জন্য তিন সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকার ভেতরে একটি কালভার্টের নিচের ঝোপ থেকে ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। তনু থিয়েটার কর্মী ছিলেন।