ঢাকা ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

প্রিয় নবী (সা.) এর দান-সদকা

ধর্ম ও জীবন ডেস্কঃ

প্রিয় নবী (সা.)-এর চারিত্রিক গুণ যথাযথভাবে উপস্থাপন করার সাধ্য কারো নেই। তাঁর চারিত্রিক সনদ দিয়েছেন মহান রাব্বুল আলামিন। পবিত্র কোরআনে তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে বেশি স্মরণ করে, তাদের জন্য রাসুলুল্লাহর (চরিত্রের) মধ্যে আছে উত্তম আদর্শ। ’ (সুরা আহজাব, আয়াত : ২১)

তাই মুমিনের উচিত রাসুল (সা.)-এর আদর্শ আঁকড়ে ধরা। রাসুল (সা.)-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল দানশীলতা। তিনি এতটাই দানশীল ছিলেন যে কেউ তাঁর কাছে কিছু চাইলে তিনি তাকে ফিরিয়ে দিতে পারতেন না। তার নজির বিভিন্ন হাদিসে পাওয়া যায়। এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, সাহল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, এক নারী নবী (সা.)-এর কাছে একটি ‘বুরদাহ’ নিয়ে এলেন। সাহল (রা.) লোকজনকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা কি জানেন ‘বুরদাহ’ কী? তাঁরা বলেন, তা চাদর। সাহল (রা.) বলেন, এটি এমন চাদর যা ঝালরসহ বোনা। এরপর ওই নারী জিজ্ঞাসা করেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমি আপনাকে এটি পরার জন্য দিলাম। নবী (সা.) চাদরখানা এমনভাবে গ্রহণ করেন, যেন তাঁর এটির দরকার ছিল। এরপর তিনি এটি পরলেন। এরপর সাহাবিদের মধ্যে এক ব্যক্তি সেটি তাঁর দেহে দেখে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, এটা কতই না সুন্দর! আপনি এটি আমাকে দিয়ে দিন। নবী (সা.) বলেন, ‘হ্যাঁ’ (দিয়ে দেব)। নবী (সা.) উঠে চলে গেলে অন্য সহাবিরা তাঁকে দোষারোপ করে বলেন, তুমি ভালো কাজ করোনি। যখন তুমি দেখলে যে এটি তাঁর প্রয়োজন ছিল বলেই তিনি চাদরখানা এমনভাবে গ্রহণ করেছেন। এর পরও তুমি সেটা চাইলে। অথচ তুমি অবশ্যই জানো যে তাঁর কাছে কোনো জিনিস চাওয়া হলে তিনি কাউকে কখনো বিমুখ করেন না। তখন সেই ব্যক্তি বলল, যখন নবী (সা.) এটি পরেছেন, তখন তাঁর বরকত লাভের জন্যই আমি এ কাজ করেছি, যাতে এ চাদরে আমার কাফন হয়। (বুখারি, হাদিস : ৬০৩৬)

ওপরের হাদিসের ভাষ্য দ্বারা বোঝা যায়, চাদরটি রাসুল (সা.)-এর খুবই পছন্দ হয়েছিল এবং তা তাঁর প্রয়োজনও ছিল। কিন্তু তার পরও তিনি তা ওই সাহাবিকে দিয়ে দিয়েছেন। তাঁর দান-সদকার হাত এতটাই লম্বা ছিল যে তা যে কাউকেই বিস্মিত করত। আনাস (রা.) বলেন, জনৈক লোক নবী (সা.)-এর কাছে এলো। তিনি তাকে এত বেশি ছাগল দিলেন, যাতে দুই উপত্যকার মাঝামাঝি স্থান পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। এরপর ওই ব্যক্তি তার গোত্রের কাছে গিয়ে তাদের বলল, হে আমার জাতি ভাইয়েরা, তোমরা ইসলাম গ্রহণ করো। কারণ মুহাম্মদ (সা.) অভাবের আশঙ্কা না করে দান করতেই থাকেন। (মুসলিম, হাদিস : ৫৯১৪)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আনাস (রা.) বলেন, নবী (সা.)-এর কাছে বাহরাইন থেকে কিছু সম্পদ এলো। তিনি বলেন, এগুলো মসজিদে রেখে দাও। আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে এ যাবৎ যত সম্পদ আনা হয়েছে তার মধ্যে এ সম্পদই ছিল পরিমাণে সবচেয়ে বেশি। অতঃপর আল্লাহর রাসুল (সা.) নামাজে চলে গেলেন এবং এর দিকে দৃষ্টি দিলেন না। নামাজ শেষ করে তিনি এসে সম্পদের কাছে গিয়ে বসলেন। তিনি যাকেই দেখলেন, কিছু সম্পদ দিয়ে দিলেন। এরই মধ্যে আব্বাস (রা.) এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমাকেও কিছু দিন। কারণ আমি নিজের ও আকিলের (এ দুজন বদরের যুদ্ধে মুসলমানদের কয়েদি ছিলেন) পক্ষ হতে মুক্তিপণ দিয়েছি। আল্লাহর রাসুল (সা.) তাকে বলেন, নিয়ে যান। তিনি তা কাপড়ে ভরে নিলেন। অতঃপর তা উঠাতে চেষ্টা করলেন; কিন্তু পারলেন না। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, কাউকে বলুন, যেন আমাকে এটি উঠিয়ে দেয়। তিনি বলেন, না। আব্বাস (রা.) বলেন, তাহলে আপনি নিজেই তুলে দিন। তিনি বলেন, না। আব্বাস (রা.) তা থেকে কিছু সম্পদ রেখে দিলেন। অতঃপর পুনরায় তা তুলতে চেষ্টা করেন। (এবারও তুলতে না পেরে) তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, কাউকে আদেশ করুন যেন আমাকে তুলে দেয়। তিনি বলেন, না। অতঃপর আব্বাস (রা.) বলেন, তাহলে আপনিই আমাকে তুলে দিন। তিনি বলেন, না। অতঃপর আব্বাস (রা.) আরো কিছু সম্পদ নামিয়ে রাখলেন। এবার তিনি উঠতে পারলেন এবং তা নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে বেরিয়ে গেলেন। …আল্লাহর রাসুল (সা.) সেখানে একটি দিরহাম অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত উঠলেন না। (বুখারি, হাদিস : ৪২১)

সুবহানাল্লাহ! আল্লাহর রাসুলের দান-সদকার প্রতি কতটা আগ্রহ ছিল, তাঁর একটি হাদিস দ্বারা এর কিঞ্চিৎ ধারণা পাওয়া যায়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, আমার কাছে যদি উহুদ পাহাড়ের সমান সোনা থাকত, তাহলেও আমার পছন্দ নয় যে তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর তার কিছু অংশ আমার কাছে থাকুক। তবে এতটুকু পরিমাণ ছাড়া, যা আমি ঋণ পরিশোধ করার জন্য রেখে দিই। (বুখারি, হাদিস : ২৩৮৯)

অনেকের ধারণা হতে পারে, এটা হয়তো রাসুল (সা.) মানুষকে সদকার প্রতি উদ্বুদ্ধ করার জন্য বলেছেন; কিন্তু না, রাসুল (সা.) বাস্তবেই এমন মনোভাব পোষণ করতেন। এবং মুষ্টিভর্তি সোনার অলংকার দান করে দেওয়ার নজির তাঁর জীবনে আছে। রুবাইয়্যি বিনতে মুআওভভিজ ইবনে আফরা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি এক পাত্র খেজুর এবং কিছু হালকা-পাতলা শসা নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমতে উপস্থিত হলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে এক মুষ্ঠি অলংকার ও স্বর্ণ দান করেন। (শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস : ২৭৩)

আল্লাহু আকবার! রাসুল (সা.)-এর দানশীলতা নিয়ে গবেষণা করলে এমন অসংখ্য হাদিসে পাওয়া যাবে, সেসব হাদিসে প্রিয় নবীর অকাতরে দান করার চিত্র সামান্য কিছু উঠে এসেছে।

উল্লেখ্য, এগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের দানের কথা। আর পবিত্র রমজান এলে রাসুল (সা.)-এর দানের মাত্রা আরো বহু গুণ বেড়ে যেত। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) সর্বাপেক্ষা বেশি দানশীল ছিলেন। তাঁর দানশীলতা বহু গুণ বর্ধিত হতো রমজানের পবিত্র দিনে, যখন জিবরাইল (আ.) তাঁর সঙ্গে দেখা করতেন। জিবরাইল (আ.) রমজানের প্রতি রাতে তাঁর সঙ্গে দেখা করে কোরআন শুনতেন ও শোনাতেন। নবী (সা.) কল্যাণ বণ্টনে (দান-সদকায়) প্রবাহিত বাতাসের চেয়েও বেশি দানশীল ছিলেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৫৫৪)

তাই যারা প্রিয় নবীকে ভালোবাসে, তাদের উচিত সাধ্যমতো দান-সদকায় আত্মনিয়োগ করা। ইনশাআল্লাহ, মহান আল্লাহ এর বিনিময়ে উভয় জাহানের সফলতা দান করবেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

প্রিয় নবী (সা.) এর দান-সদকা

আপডেট সময় ০৭:৪৩:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১

ধর্ম ও জীবন ডেস্কঃ

প্রিয় নবী (সা.)-এর চারিত্রিক গুণ যথাযথভাবে উপস্থাপন করার সাধ্য কারো নেই। তাঁর চারিত্রিক সনদ দিয়েছেন মহান রাব্বুল আলামিন। পবিত্র কোরআনে তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে বেশি স্মরণ করে, তাদের জন্য রাসুলুল্লাহর (চরিত্রের) মধ্যে আছে উত্তম আদর্শ। ’ (সুরা আহজাব, আয়াত : ২১)

তাই মুমিনের উচিত রাসুল (সা.)-এর আদর্শ আঁকড়ে ধরা। রাসুল (সা.)-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল দানশীলতা। তিনি এতটাই দানশীল ছিলেন যে কেউ তাঁর কাছে কিছু চাইলে তিনি তাকে ফিরিয়ে দিতে পারতেন না। তার নজির বিভিন্ন হাদিসে পাওয়া যায়। এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, সাহল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, এক নারী নবী (সা.)-এর কাছে একটি ‘বুরদাহ’ নিয়ে এলেন। সাহল (রা.) লোকজনকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা কি জানেন ‘বুরদাহ’ কী? তাঁরা বলেন, তা চাদর। সাহল (রা.) বলেন, এটি এমন চাদর যা ঝালরসহ বোনা। এরপর ওই নারী জিজ্ঞাসা করেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমি আপনাকে এটি পরার জন্য দিলাম। নবী (সা.) চাদরখানা এমনভাবে গ্রহণ করেন, যেন তাঁর এটির দরকার ছিল। এরপর তিনি এটি পরলেন। এরপর সাহাবিদের মধ্যে এক ব্যক্তি সেটি তাঁর দেহে দেখে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, এটা কতই না সুন্দর! আপনি এটি আমাকে দিয়ে দিন। নবী (সা.) বলেন, ‘হ্যাঁ’ (দিয়ে দেব)। নবী (সা.) উঠে চলে গেলে অন্য সহাবিরা তাঁকে দোষারোপ করে বলেন, তুমি ভালো কাজ করোনি। যখন তুমি দেখলে যে এটি তাঁর প্রয়োজন ছিল বলেই তিনি চাদরখানা এমনভাবে গ্রহণ করেছেন। এর পরও তুমি সেটা চাইলে। অথচ তুমি অবশ্যই জানো যে তাঁর কাছে কোনো জিনিস চাওয়া হলে তিনি কাউকে কখনো বিমুখ করেন না। তখন সেই ব্যক্তি বলল, যখন নবী (সা.) এটি পরেছেন, তখন তাঁর বরকত লাভের জন্যই আমি এ কাজ করেছি, যাতে এ চাদরে আমার কাফন হয়। (বুখারি, হাদিস : ৬০৩৬)

ওপরের হাদিসের ভাষ্য দ্বারা বোঝা যায়, চাদরটি রাসুল (সা.)-এর খুবই পছন্দ হয়েছিল এবং তা তাঁর প্রয়োজনও ছিল। কিন্তু তার পরও তিনি তা ওই সাহাবিকে দিয়ে দিয়েছেন। তাঁর দান-সদকার হাত এতটাই লম্বা ছিল যে তা যে কাউকেই বিস্মিত করত। আনাস (রা.) বলেন, জনৈক লোক নবী (সা.)-এর কাছে এলো। তিনি তাকে এত বেশি ছাগল দিলেন, যাতে দুই উপত্যকার মাঝামাঝি স্থান পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। এরপর ওই ব্যক্তি তার গোত্রের কাছে গিয়ে তাদের বলল, হে আমার জাতি ভাইয়েরা, তোমরা ইসলাম গ্রহণ করো। কারণ মুহাম্মদ (সা.) অভাবের আশঙ্কা না করে দান করতেই থাকেন। (মুসলিম, হাদিস : ৫৯১৪)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আনাস (রা.) বলেন, নবী (সা.)-এর কাছে বাহরাইন থেকে কিছু সম্পদ এলো। তিনি বলেন, এগুলো মসজিদে রেখে দাও। আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে এ যাবৎ যত সম্পদ আনা হয়েছে তার মধ্যে এ সম্পদই ছিল পরিমাণে সবচেয়ে বেশি। অতঃপর আল্লাহর রাসুল (সা.) নামাজে চলে গেলেন এবং এর দিকে দৃষ্টি দিলেন না। নামাজ শেষ করে তিনি এসে সম্পদের কাছে গিয়ে বসলেন। তিনি যাকেই দেখলেন, কিছু সম্পদ দিয়ে দিলেন। এরই মধ্যে আব্বাস (রা.) এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমাকেও কিছু দিন। কারণ আমি নিজের ও আকিলের (এ দুজন বদরের যুদ্ধে মুসলমানদের কয়েদি ছিলেন) পক্ষ হতে মুক্তিপণ দিয়েছি। আল্লাহর রাসুল (সা.) তাকে বলেন, নিয়ে যান। তিনি তা কাপড়ে ভরে নিলেন। অতঃপর তা উঠাতে চেষ্টা করলেন; কিন্তু পারলেন না। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, কাউকে বলুন, যেন আমাকে এটি উঠিয়ে দেয়। তিনি বলেন, না। আব্বাস (রা.) বলেন, তাহলে আপনি নিজেই তুলে দিন। তিনি বলেন, না। আব্বাস (রা.) তা থেকে কিছু সম্পদ রেখে দিলেন। অতঃপর পুনরায় তা তুলতে চেষ্টা করেন। (এবারও তুলতে না পেরে) তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, কাউকে আদেশ করুন যেন আমাকে তুলে দেয়। তিনি বলেন, না। অতঃপর আব্বাস (রা.) বলেন, তাহলে আপনিই আমাকে তুলে দিন। তিনি বলেন, না। অতঃপর আব্বাস (রা.) আরো কিছু সম্পদ নামিয়ে রাখলেন। এবার তিনি উঠতে পারলেন এবং তা নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে বেরিয়ে গেলেন। …আল্লাহর রাসুল (সা.) সেখানে একটি দিরহাম অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত উঠলেন না। (বুখারি, হাদিস : ৪২১)

সুবহানাল্লাহ! আল্লাহর রাসুলের দান-সদকার প্রতি কতটা আগ্রহ ছিল, তাঁর একটি হাদিস দ্বারা এর কিঞ্চিৎ ধারণা পাওয়া যায়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, আমার কাছে যদি উহুদ পাহাড়ের সমান সোনা থাকত, তাহলেও আমার পছন্দ নয় যে তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর তার কিছু অংশ আমার কাছে থাকুক। তবে এতটুকু পরিমাণ ছাড়া, যা আমি ঋণ পরিশোধ করার জন্য রেখে দিই। (বুখারি, হাদিস : ২৩৮৯)

অনেকের ধারণা হতে পারে, এটা হয়তো রাসুল (সা.) মানুষকে সদকার প্রতি উদ্বুদ্ধ করার জন্য বলেছেন; কিন্তু না, রাসুল (সা.) বাস্তবেই এমন মনোভাব পোষণ করতেন। এবং মুষ্টিভর্তি সোনার অলংকার দান করে দেওয়ার নজির তাঁর জীবনে আছে। রুবাইয়্যি বিনতে মুআওভভিজ ইবনে আফরা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি এক পাত্র খেজুর এবং কিছু হালকা-পাতলা শসা নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমতে উপস্থিত হলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে এক মুষ্ঠি অলংকার ও স্বর্ণ দান করেন। (শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস : ২৭৩)

আল্লাহু আকবার! রাসুল (সা.)-এর দানশীলতা নিয়ে গবেষণা করলে এমন অসংখ্য হাদিসে পাওয়া যাবে, সেসব হাদিসে প্রিয় নবীর অকাতরে দান করার চিত্র সামান্য কিছু উঠে এসেছে।

উল্লেখ্য, এগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের দানের কথা। আর পবিত্র রমজান এলে রাসুল (সা.)-এর দানের মাত্রা আরো বহু গুণ বেড়ে যেত। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) সর্বাপেক্ষা বেশি দানশীল ছিলেন। তাঁর দানশীলতা বহু গুণ বর্ধিত হতো রমজানের পবিত্র দিনে, যখন জিবরাইল (আ.) তাঁর সঙ্গে দেখা করতেন। জিবরাইল (আ.) রমজানের প্রতি রাতে তাঁর সঙ্গে দেখা করে কোরআন শুনতেন ও শোনাতেন। নবী (সা.) কল্যাণ বণ্টনে (দান-সদকায়) প্রবাহিত বাতাসের চেয়েও বেশি দানশীল ছিলেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৫৫৪)

তাই যারা প্রিয় নবীকে ভালোবাসে, তাদের উচিত সাধ্যমতো দান-সদকায় আত্মনিয়োগ করা। ইনশাআল্লাহ, মহান আল্লাহ এর বিনিময়ে উভয় জাহানের সফলতা দান করবেন।