ঢাকা ০৭:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরের ইউপি নির্বাচনে আচরনবিধি না মেনেই চালাচ্ছেন প্রচারণা

সুমন সরকার, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ষষ্ঠ ধাপে আগামী ৩১ জানুয়ারী ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। তবে নির্বাচনী আচরন বিধি লঙ্ঘন করে অনেক প্রার্থীই প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে।

নির্বাচন আচরণবিধি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের গাছে পেরেক বিদ্ধ করে রঙ্গিন ফেষ্টুন, দেয়াল ও যানবাহনে পোস্টার প্রচারপত্র সাঁটানো যাবে না। বেলা দুইটার আগে ও রাত আটটার পর মাইকিং করা যাবে না। কিন্তু এসবের কোনো কিছুকে তোয়াক্কা না করে কিছু কিছু প্রার্থীরা সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পযর্ন্ত চালাচ্ছেন প্রচারণা। করছেন মোটরসাইকেল শোডাউন। বাসাবাড়ির দেয়ালে সাঁটানো হয়েছে পোস্টার। তাছাড়াও একাধিক প্রার্থীকে লেমেনিটিং পোস্টার টানাতেও দেখা গেছে। হোটেল-রেস্তোরাঁয় চলছে ভোটারদের খাওয়ানো।

রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নে আ’লীগের মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিকুল ইসলাম নৌকা মার্কা প্রতিক ব্যাবহার করে রঙ্গীন ফেষ্ঠুন গাছে পেরেক বিদ্ধ বরে সাঁটানো হয়েছে। কামাল্লা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রার্থী আবুল বাশার খাঁনের সমর্থকরা সকাল থেকে মাইকিং করছেন বেলা ১২টায় তার মাইকিংয়ের অটোরিক্সটি পাওয়া এ ইউনিয়নের কামাল্লা বাজারে। অপরদিকে একই সময়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মনোনীত হাতপাখা প্রার্থী ময়নাল হোসেনের মাইক দিয়ে অটোক্সিাযোগে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন রামচন্দ্রপুর-মুরাদনগর সড়কের নেয়ামতপুর এলাকায়।
জাহাপুর ইউনিয়নের সতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকের হুমায়ন কবিরের সমর্থকরা অটোরিক্সাযোগে মাইক দিয়ে সকাল ১০টায় প্রচারণা করছেন সাতমোড়া এলাকায়। এ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ফুটবল প্রতিকের ইউপি সদস্য প্রার্থী জহিরুল হক জহিরের সমর্থকরা বেলা ১০টায় অটোরিক্সাযোগে মাইক দিয়ে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন বাখরাবাদ কাউন্টার এলাকায়। একই ইউপির ৫নং ওয়ার্ডে বেলা ১০টায় আপেল প্রতিকের মাইক দিয়ে অটোরিকশাযোগে প্রচারনা চালাচ্ছেন মো: সালাউদ্দিনের সমর্থকরা। ধামঘর ইউনিয়নে শনিবার রাত ৮টার পরে মাইক দিয়ে প্রচারনা চালাতে দেখা গেছে ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী টিওবওয়েল প্রতিকের জালাল উদ্দিনকে, মোরগ প্রতিকের মোর্শেদ খাঁনকে।

এ বিষয়ে নৌকা প্রার্থী আবুল বাশার খাঁন বলেন, সকাল থেকে মাইক দিয়ে প্রচারনা আমার সমর্থকরা একা করছে না এ ইউনিয়নের সকল প্রার্থীরাই করছে। আচরন বিধির বাহিরে গিয়েই কিছুই করছি না। সবাই করছে বলে আমি করছি।

জাহাপুর ২নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী জহিরুল হক জহির বলেন, আসলে মাইকিংয়ের নির্ধারিত সময়ের বিষয়টি আমার মনে ছিলো না। এখন থেকে বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকিং করব।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদ আলম সিকদার বলেন, যেসকল প্রার্থীরা আচরনবিধি মানছে না তাদেরকে ম্যাজিস্ট্রেট জরিমানা করে যাচ্ছে। তাছাড়া কেহ সু-নির্দিষ্ট অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।

এ বিষয়ে এ বিষয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার সুমাইয়া মমিন বলেন, প্রতিক বরাদ্ধের পর থেকে নিয়মিত ম্যাজিস্ট্রেটগন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছেন। গাছে পেরেক লাগিয়ে ফেষ্টুন লাগানো কোন নিয়ম নেই, বিষয়টি দেখে প্রয়োজুিনয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, যে প্রার্থী অচরন ভঙ্ঘ করছে তাদেরকে জরিমানা করা হচ্ছে। অভিযোগ পাওয়া বিষয় গুলো খোজঁ-খবর নিয়ে প্রয়োজনিয় ব্যাবস্থা গ্রন করা হবে।

প্রসঙ্গতঃ ষষ্ঠ ধাপে আগামী ৩১ জানুয়ারি এ উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের মধ্যে ২১টি ইউনিয়নে ইভিএমের মাধ্যমে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারনে মুরাদনগর সদর ইউনিয়নে আপাতত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এ ২১টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন ১৫৭জন প্রার্থী, সদস্য পদে রয়েছে ৭৯৫জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে রয়েছে ২১৬জন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরের ইউপি নির্বাচনে আচরনবিধি না মেনেই চালাচ্ছেন প্রচারণা

আপডেট সময় ০১:১৬:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২

সুমন সরকার, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ষষ্ঠ ধাপে আগামী ৩১ জানুয়ারী ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। তবে নির্বাচনী আচরন বিধি লঙ্ঘন করে অনেক প্রার্থীই প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে।

নির্বাচন আচরণবিধি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের গাছে পেরেক বিদ্ধ করে রঙ্গিন ফেষ্টুন, দেয়াল ও যানবাহনে পোস্টার প্রচারপত্র সাঁটানো যাবে না। বেলা দুইটার আগে ও রাত আটটার পর মাইকিং করা যাবে না। কিন্তু এসবের কোনো কিছুকে তোয়াক্কা না করে কিছু কিছু প্রার্থীরা সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পযর্ন্ত চালাচ্ছেন প্রচারণা। করছেন মোটরসাইকেল শোডাউন। বাসাবাড়ির দেয়ালে সাঁটানো হয়েছে পোস্টার। তাছাড়াও একাধিক প্রার্থীকে লেমেনিটিং পোস্টার টানাতেও দেখা গেছে। হোটেল-রেস্তোরাঁয় চলছে ভোটারদের খাওয়ানো।

রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নে আ’লীগের মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিকুল ইসলাম নৌকা মার্কা প্রতিক ব্যাবহার করে রঙ্গীন ফেষ্ঠুন গাছে পেরেক বিদ্ধ বরে সাঁটানো হয়েছে। কামাল্লা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রার্থী আবুল বাশার খাঁনের সমর্থকরা সকাল থেকে মাইকিং করছেন বেলা ১২টায় তার মাইকিংয়ের অটোরিক্সটি পাওয়া এ ইউনিয়নের কামাল্লা বাজারে। অপরদিকে একই সময়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মনোনীত হাতপাখা প্রার্থী ময়নাল হোসেনের মাইক দিয়ে অটোক্সিাযোগে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন রামচন্দ্রপুর-মুরাদনগর সড়কের নেয়ামতপুর এলাকায়।
জাহাপুর ইউনিয়নের সতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকের হুমায়ন কবিরের সমর্থকরা অটোরিক্সাযোগে মাইক দিয়ে সকাল ১০টায় প্রচারণা করছেন সাতমোড়া এলাকায়। এ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ফুটবল প্রতিকের ইউপি সদস্য প্রার্থী জহিরুল হক জহিরের সমর্থকরা বেলা ১০টায় অটোরিক্সাযোগে মাইক দিয়ে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন বাখরাবাদ কাউন্টার এলাকায়। একই ইউপির ৫নং ওয়ার্ডে বেলা ১০টায় আপেল প্রতিকের মাইক দিয়ে অটোরিকশাযোগে প্রচারনা চালাচ্ছেন মো: সালাউদ্দিনের সমর্থকরা। ধামঘর ইউনিয়নে শনিবার রাত ৮টার পরে মাইক দিয়ে প্রচারনা চালাতে দেখা গেছে ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী টিওবওয়েল প্রতিকের জালাল উদ্দিনকে, মোরগ প্রতিকের মোর্শেদ খাঁনকে।

এ বিষয়ে নৌকা প্রার্থী আবুল বাশার খাঁন বলেন, সকাল থেকে মাইক দিয়ে প্রচারনা আমার সমর্থকরা একা করছে না এ ইউনিয়নের সকল প্রার্থীরাই করছে। আচরন বিধির বাহিরে গিয়েই কিছুই করছি না। সবাই করছে বলে আমি করছি।

জাহাপুর ২নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী জহিরুল হক জহির বলেন, আসলে মাইকিংয়ের নির্ধারিত সময়ের বিষয়টি আমার মনে ছিলো না। এখন থেকে বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকিং করব।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদ আলম সিকদার বলেন, যেসকল প্রার্থীরা আচরনবিধি মানছে না তাদেরকে ম্যাজিস্ট্রেট জরিমানা করে যাচ্ছে। তাছাড়া কেহ সু-নির্দিষ্ট অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।

এ বিষয়ে এ বিষয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার সুমাইয়া মমিন বলেন, প্রতিক বরাদ্ধের পর থেকে নিয়মিত ম্যাজিস্ট্রেটগন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছেন। গাছে পেরেক লাগিয়ে ফেষ্টুন লাগানো কোন নিয়ম নেই, বিষয়টি দেখে প্রয়োজুিনয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, যে প্রার্থী অচরন ভঙ্ঘ করছে তাদেরকে জরিমানা করা হচ্ছে। অভিযোগ পাওয়া বিষয় গুলো খোজঁ-খবর নিয়ে প্রয়োজনিয় ব্যাবস্থা গ্রন করা হবে।

প্রসঙ্গতঃ ষষ্ঠ ধাপে আগামী ৩১ জানুয়ারি এ উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের মধ্যে ২১টি ইউনিয়নে ইভিএমের মাধ্যমে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারনে মুরাদনগর সদর ইউনিয়নে আপাতত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এ ২১টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন ১৫৭জন প্রার্থী, সদস্য পদে রয়েছে ৭৯৫জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে রয়েছে ২১৬জন।