ঢাকা ০৫:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে অপহৃত সেই কলেজছাত্রী চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার

সুমন সরকার, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগরে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে অপহরন করা সেই কলেজ ছাত্রী (১৭) কে চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করেছে মুরাদনগর থানা পুলিশ। সোমবার রাতে মুরাদনগর থানার এসআই হামিদুল ইসলামের নেতেৃত্বে একদল পুলিশ চট্টগ্রাম জেলার বাকলিয়া থানার চাক্তাই এলাকার একটি বাসা থেকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে।

মঙ্গলবার দুপুরে মুরাদনগর থানায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাশিম।

মুরাদনগর থানা পুলিশ অপহৃতাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা কোর্টে প্রেরন করে। আদালত অপহৃতাকে মেডিকেল টেষ্ট করার ও জবানবন্দি গ্রহন শেষে তাকে মায়ের সাথে থাকার নির্দেশ প্রদান করেন।

মঙ্গলবার দুপুরে মুরাদনগর থানা পুলিশ অপহৃতাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা কোর্টে প্রেরন করে। আদালত অপহৃতাকে মেডিকেল টেষ্ট করার ও জবানবন্দি গ্রহন শেষে তাকে মায়ের সাথে থাকার নির্দেশ প্রদান করেন।

তবে অস্ত্রধারী অপহরণকারী চক্রের কোন সদস্যকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে অপহৃত ওই ছাত্রীর মায়ের ভাষ্যমতে পিস্তল ঠেকিয়ে তার মেয়েকে অপহরণ করা হলেও মামলার এজাহারে তা উল্লেখ করেনি পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পিস্তলের কোন সত্যতা পওয়া যায়নি বলে দাবি পুলিশের।

তবে অপহরণের রহস্য ও অস্ত্রের বিষয়টি উদঘাটনের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে বলে জানান থানার ওসি আবুল হাশিম। তিনি জানান, এ ঘটনায় সোমবার রাতে অপহৃতার মা আবিদা সুলতানা বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্ল্যেখ সহ মোট ৭ জনকে আসামী করে মুরাদনগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

অভিযুক্ত আসামীরা হলো- মুরাদনগর সদর ইউনিয়নের করিমপুর গ্রামের মৃত. মতিউর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান সানি (২১), মুরাদনগর মধ্যপাড়ার মো: তকদির এর ছেলে রাব্বি (২৮), মুরাদনগর উত্তর পাড়ার মো: কামরুল ও হাবিবুর রহমান সানির বড় ভাই আজিজুর রহমান রনি।

এসময় মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাশিম আরো বলেন, প্রাথমিক ভাবে জানা যায় ওই ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো হাবিবুর রহমান সানির। এরই সুত্র ধরে সোমবার সকালে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে বিয়ে করেন হাবিবুর রহমান সানি। বিয়ের পর তারা দুজন চট্টগ্রামে চলে যায়। এবং সেখানে স্বামী স্ত্রী পারিচয় দিয়ে একটি ভাড়া বাসায় ওঠে। বাসায় উঠার পর সানি স্ত্রীকে কোনকিছু না বলে তাকে বাসায় রেখে চলে যায়। পরে রাতে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সে বাসায় অভিযান চালিয়ে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। মঙ্গলবার সকালে ওই ছাত্রীর জবানবন্দি প্রদানের জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এদিকে আলোচিত এ অপহরণের ঘটনায় জড়িতরা এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ায় জনমনে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। অবিলম্বে এ ঘটনায় জড়িত আসামীদেরকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার। অন্যথায় সমাজে অপরাধ প্রবণতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাবে। এদিকে ভিকটিম ওই কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করা হলেও অপহরণের ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেফতার হয়নি। অথবা তাদেরকে গ্রেপ্তার না করার পেছনে অন্য কোন রহস্য আছে কিনা এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সচেতন মহলে।

উল্লেখ্য. সোমবার দুপুরে মুরাদনগর উপজেলা সদরের মাস্টার পাড়া এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে পিস্তল ঠেকিয়ে (১৭) নামে এক কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ওই ছাত্রী মাস্টারপাড়ার প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে এবং উপজেলা সদরের কাজী নোমান আহমেদ ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণীর প্রথম বর্ষের ছাত্রী।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগর ভয়াবহ আগুন কয়ক কাটি টাকার ক্ষতি 

মুরাদনগরে অপহৃত সেই কলেজছাত্রী চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার

আপডেট সময় ০১:৩৪:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ মে ২০২২

সুমন সরকার, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগরে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে অপহরন করা সেই কলেজ ছাত্রী (১৭) কে চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করেছে মুরাদনগর থানা পুলিশ। সোমবার রাতে মুরাদনগর থানার এসআই হামিদুল ইসলামের নেতেৃত্বে একদল পুলিশ চট্টগ্রাম জেলার বাকলিয়া থানার চাক্তাই এলাকার একটি বাসা থেকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে।

মঙ্গলবার দুপুরে মুরাদনগর থানায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাশিম।

মুরাদনগর থানা পুলিশ অপহৃতাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা কোর্টে প্রেরন করে। আদালত অপহৃতাকে মেডিকেল টেষ্ট করার ও জবানবন্দি গ্রহন শেষে তাকে মায়ের সাথে থাকার নির্দেশ প্রদান করেন।

মঙ্গলবার দুপুরে মুরাদনগর থানা পুলিশ অপহৃতাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা কোর্টে প্রেরন করে। আদালত অপহৃতাকে মেডিকেল টেষ্ট করার ও জবানবন্দি গ্রহন শেষে তাকে মায়ের সাথে থাকার নির্দেশ প্রদান করেন।

তবে অস্ত্রধারী অপহরণকারী চক্রের কোন সদস্যকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে অপহৃত ওই ছাত্রীর মায়ের ভাষ্যমতে পিস্তল ঠেকিয়ে তার মেয়েকে অপহরণ করা হলেও মামলার এজাহারে তা উল্লেখ করেনি পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পিস্তলের কোন সত্যতা পওয়া যায়নি বলে দাবি পুলিশের।

তবে অপহরণের রহস্য ও অস্ত্রের বিষয়টি উদঘাটনের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে বলে জানান থানার ওসি আবুল হাশিম। তিনি জানান, এ ঘটনায় সোমবার রাতে অপহৃতার মা আবিদা সুলতানা বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্ল্যেখ সহ মোট ৭ জনকে আসামী করে মুরাদনগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

অভিযুক্ত আসামীরা হলো- মুরাদনগর সদর ইউনিয়নের করিমপুর গ্রামের মৃত. মতিউর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান সানি (২১), মুরাদনগর মধ্যপাড়ার মো: তকদির এর ছেলে রাব্বি (২৮), মুরাদনগর উত্তর পাড়ার মো: কামরুল ও হাবিবুর রহমান সানির বড় ভাই আজিজুর রহমান রনি।

এসময় মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাশিম আরো বলেন, প্রাথমিক ভাবে জানা যায় ওই ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো হাবিবুর রহমান সানির। এরই সুত্র ধরে সোমবার সকালে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে বিয়ে করেন হাবিবুর রহমান সানি। বিয়ের পর তারা দুজন চট্টগ্রামে চলে যায়। এবং সেখানে স্বামী স্ত্রী পারিচয় দিয়ে একটি ভাড়া বাসায় ওঠে। বাসায় উঠার পর সানি স্ত্রীকে কোনকিছু না বলে তাকে বাসায় রেখে চলে যায়। পরে রাতে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সে বাসায় অভিযান চালিয়ে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। মঙ্গলবার সকালে ওই ছাত্রীর জবানবন্দি প্রদানের জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এদিকে আলোচিত এ অপহরণের ঘটনায় জড়িতরা এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ায় জনমনে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। অবিলম্বে এ ঘটনায় জড়িত আসামীদেরকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার। অন্যথায় সমাজে অপরাধ প্রবণতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাবে। এদিকে ভিকটিম ওই কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করা হলেও অপহরণের ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেফতার হয়নি। অথবা তাদেরকে গ্রেপ্তার না করার পেছনে অন্য কোন রহস্য আছে কিনা এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সচেতন মহলে।

উল্লেখ্য. সোমবার দুপুরে মুরাদনগর উপজেলা সদরের মাস্টার পাড়া এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে পিস্তল ঠেকিয়ে (১৭) নামে এক কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ওই ছাত্রী মাস্টারপাড়ার প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে এবং উপজেলা সদরের কাজী নোমান আহমেদ ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণীর প্রথম বর্ষের ছাত্রী।