ঢাকা ০৯:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে এক ডজন ভূমি কর্মকর্তা যুগ যুগ ধরে একই উপজেলায়

মোঃ মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কোন সরকারি কর্মকর্তা একই কর্মস্থলে তিন বছরের অধিক সময় থাকতে পারবেন না। সরকারের এমন নীতিমালা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর কর্যালয়ে। ৬ থেকে ৩৫ বছর ধরে কর্মরত রয়েছেন ডজন খানেক ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তারা। দীর্ঘদিন চাকরির সুবাধে ডালপালা মেলেছেন তারা! মুরাদনগর উপজেলায় ও পাশর্^বর্তী উপজেলায় ওই সকল কর্মকর্তাদের বাড়ি হওয়ায় সকল প্রকার নিয়ম-বিধি ভঙ্গ করে নিজস্ব নিয়মে ইচ্ছামাফিক দাফতরিক কার্যক্রম পরিচালিত করছেন। এতে করে বাস্তবায়ন হচ্ছে না সরকারের লক্ষ্যমাত্রা। এ সুযোগে অনেকেই আঙুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হয়েছেন। ফলে সহকারী কমিশনার (ভূমির) কার্যক্রমে নেমে এসেছে স্থবিরতা।

তবে ওই সকল কর্মকর্তাদের দাবি কতিৃপক্ষ রাখলে আমাদের কিছু করার নেই। আর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন এমন হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উপজেলার সচেতন নাগরিকরা বলছেন, মাঝে মধ্যে কিছু নায়েবরা নামে মাত্র বদলি হলেও কিছুদিন পর সেই নায়েবরা পূনরায় পূর্বের কর্মস্থলে ফিরে আসে! এসডিজি বাস্তবায়ন এবং দাফতরিক কাজে গতি আনতে হলে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী তিন বছর পর পর বদলি জরুরি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপ-সহকারি (ভূমি) কর্মকর্তা হিসেবে আব্দুল কাদির ও সৈয়দ সগির আহম্মদ ১৯৮৭ সালে উপজেলা সহকারি কমিশনার কার্যালয়ে যোগদান করেন। ৩৫ বছর ধরে এই উপজেলায় কর্মরত রয়েছেন। নজরুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমান ১৯৮৯ সালে যোগদান করে ৩৩ বছর ধরে কর্মরত। আনোয়ারুল হক ১৯৯৪ সালে যোগদান করে ২৮ বছর ধরে কর্মরত। আবুল কালাম আজাদ ২০০৭ সালে যোগদান করে ১৫ বছর ধরে কর্মরত। রাজিব মিত্র, হালিমা আক্তার, মামুনুর রশিদ ও আকছির মিয়া ২০১১ সালে যোগদান করে ১১ বছর ধরে কর্মরত। কামরুল হাসান ভূইয়া ও মুস্তাফিজুর রহমান ২০১৬ সালে যোগদান করে ৬ বছর ধরে এই উপজেলায় কর্মরত রয়েছেন।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা ভূমি অফির্সাস কল্যান সমিতির সাধারন সম্পাদক ও পূর্বধৈইর পূর্ব ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তা রাজীব মিত্র নিজে ও অনেক উপ-সহকারি কর্মকতারা একই স্থানে দীর্ঘদিন কর্মরত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, একই স্থানে দীর্ঘদিন চাকরির সুবাধে কিছু অধিপত্য তৈরী হওয়াটাই স্বাভাবিক! তবে তিনি দাবি করে বলেন কতিৃপক্ষ রাখলে আমাদের কিছু করার নেই। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে চাই মুরাদনগর থেকে চলে যেতে, এখানে আমার অনেক বছর হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাজমুল হাসান জানান, নীতিমালা অনুযায়ী একই স্টেশনে ৩ বছরের অধিক থাকার নিয়ম নেই। সে জন্যই তারা এই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে (স্টেশনে) চাকুরী করতে পারছে। যদি উপজেলা উল্লেখ করা হতো তাহলে তারা এ উপজেলায় দীর্ঘ দিন কাজ করতে পারতোনা। এর পরও ভূমি কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের বদলির বিষয়টি জেলা প্রশাসকে হাতে। এ বিষয়ে যে কোন সিদ্ধানত ওনার বিষয়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগর ভয়াবহ আগুন কয়ক কাটি টাকার ক্ষতি 

মুরাদনগরে এক ডজন ভূমি কর্মকর্তা যুগ যুগ ধরে একই উপজেলায়

আপডেট সময় ০১:৩১:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

মোঃ মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কোন সরকারি কর্মকর্তা একই কর্মস্থলে তিন বছরের অধিক সময় থাকতে পারবেন না। সরকারের এমন নীতিমালা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর কর্যালয়ে। ৬ থেকে ৩৫ বছর ধরে কর্মরত রয়েছেন ডজন খানেক ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তারা। দীর্ঘদিন চাকরির সুবাধে ডালপালা মেলেছেন তারা! মুরাদনগর উপজেলায় ও পাশর্^বর্তী উপজেলায় ওই সকল কর্মকর্তাদের বাড়ি হওয়ায় সকল প্রকার নিয়ম-বিধি ভঙ্গ করে নিজস্ব নিয়মে ইচ্ছামাফিক দাফতরিক কার্যক্রম পরিচালিত করছেন। এতে করে বাস্তবায়ন হচ্ছে না সরকারের লক্ষ্যমাত্রা। এ সুযোগে অনেকেই আঙুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হয়েছেন। ফলে সহকারী কমিশনার (ভূমির) কার্যক্রমে নেমে এসেছে স্থবিরতা।

তবে ওই সকল কর্মকর্তাদের দাবি কতিৃপক্ষ রাখলে আমাদের কিছু করার নেই। আর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন এমন হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উপজেলার সচেতন নাগরিকরা বলছেন, মাঝে মধ্যে কিছু নায়েবরা নামে মাত্র বদলি হলেও কিছুদিন পর সেই নায়েবরা পূনরায় পূর্বের কর্মস্থলে ফিরে আসে! এসডিজি বাস্তবায়ন এবং দাফতরিক কাজে গতি আনতে হলে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী তিন বছর পর পর বদলি জরুরি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপ-সহকারি (ভূমি) কর্মকর্তা হিসেবে আব্দুল কাদির ও সৈয়দ সগির আহম্মদ ১৯৮৭ সালে উপজেলা সহকারি কমিশনার কার্যালয়ে যোগদান করেন। ৩৫ বছর ধরে এই উপজেলায় কর্মরত রয়েছেন। নজরুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমান ১৯৮৯ সালে যোগদান করে ৩৩ বছর ধরে কর্মরত। আনোয়ারুল হক ১৯৯৪ সালে যোগদান করে ২৮ বছর ধরে কর্মরত। আবুল কালাম আজাদ ২০০৭ সালে যোগদান করে ১৫ বছর ধরে কর্মরত। রাজিব মিত্র, হালিমা আক্তার, মামুনুর রশিদ ও আকছির মিয়া ২০১১ সালে যোগদান করে ১১ বছর ধরে কর্মরত। কামরুল হাসান ভূইয়া ও মুস্তাফিজুর রহমান ২০১৬ সালে যোগদান করে ৬ বছর ধরে এই উপজেলায় কর্মরত রয়েছেন।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা ভূমি অফির্সাস কল্যান সমিতির সাধারন সম্পাদক ও পূর্বধৈইর পূর্ব ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তা রাজীব মিত্র নিজে ও অনেক উপ-সহকারি কর্মকতারা একই স্থানে দীর্ঘদিন কর্মরত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, একই স্থানে দীর্ঘদিন চাকরির সুবাধে কিছু অধিপত্য তৈরী হওয়াটাই স্বাভাবিক! তবে তিনি দাবি করে বলেন কতিৃপক্ষ রাখলে আমাদের কিছু করার নেই। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে চাই মুরাদনগর থেকে চলে যেতে, এখানে আমার অনেক বছর হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাজমুল হাসান জানান, নীতিমালা অনুযায়ী একই স্টেশনে ৩ বছরের অধিক থাকার নিয়ম নেই। সে জন্যই তারা এই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে (স্টেশনে) চাকুরী করতে পারছে। যদি উপজেলা উল্লেখ করা হতো তাহলে তারা এ উপজেলায় দীর্ঘ দিন কাজ করতে পারতোনা। এর পরও ভূমি কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের বদলির বিষয়টি জেলা প্রশাসকে হাতে। এ বিষয়ে যে কোন সিদ্ধানত ওনার বিষয়।