ঢাকা ১০:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বদলীর পরও এখনো বহাল তবিয়তে

মুরাদনগর ডেস্কঃ

মুরাদনগর বার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকমঃ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রভাবশালী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কে এম জহিরুল ইসলাম বদলির পরও বহাল তবিয়তে অফিসে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।  অধিনস্ত কর্মচারীদের অহেতুক হয়রানী, বেতন কর্তন, ফান্ড তৈরির নাম করে মোটা অংঙ্কের অর্থ আদায়, ভিজিটর , সিলেকশন ও ডিপ্লোমা উপলক্ষে চাঁদা আদায়, পিকনিকে যাওয়ার নামে লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ একাধিক অভিযোগে গত ৯ ফেব্রুয়ার্রী কর্তৃপক্ষ তাকে বদলী করেন সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায়। বদলির পরও মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহাল থেকে কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া নানান গুনঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে উপজেলার সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর মধ্যে।

অফিস সূত্র জানায় , নানা অভিযোগ মাথায় নিয়ে দীর্ঘদিন একই উপজেলায় চাকুরী করায় একাধিক লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু ওই কর্মকর্তা বদলী ঠেকাতে মরিয়া হয়ে একটি প্রভাবশালী মহল পূর্বের অফিসেই বহাল রাখার পায়তারা করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, একেএম জহিরুল ইসলাম ২০০৭ সালে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হয়ে দীর্ঘ ৯ বছর মুরাদনগর উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা অফিসার হিসেবে কাজ করছেন। একাধিকবার নানান বিতর্কে জড়িয়ে গেলেও নিজের মতো করে কাজকর্ম চালিয়ে যান। ওই কর্মকর্তার বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে অতিষ্ট হয়ে একই  অফিসের অনেক কর্মচারী তার বিরুদ্ধে  উর্ধ্বতন  কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন, অভিযোগ ও দূনীতির ফলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (প্রশাসন) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ ফজলুল হক যুগ্মসচিব গত গত ৯ ফেব্রুয়ারী এ ২৩৩ নং স্মারকে একেএম জহিরুল ইসলামকে সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলায় বদলীর আদেশ করেন।  তিনি ওই আদেশ উপেক্ষা করে বিভিন্ন মহলে তদবির চালিয়ে এখনো এই উপজেলায় বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হয়রানীর স্বীকার ভুক্তভোগী শাহীনা আক্তার মায়া জানায়, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা একেএম জহিরুল ইসলাম, পরিবার কল্যাণ সহকারী ১২৪ জন, পরিদর্শক ১৮জন, ভিজিটর ২০ জন, চেকমো ৫জন, আয়া ২০ জন, পিয়ন ২০ জন, অফিস সহকারী ৫জন এই সর্বমোট ২০৭জন কর্মচারীর নতুন বেতন স্কেল থেকে ১ হাজার টাকা করে কর্তন করে। এছাড়াও কর্মচারীদের সমিতির ফান্ডের নামে ১২০ জন কর্মচারীর কাছ থেকে প্রায় ২৬ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা উত্তোলন তার ঘনিষ্ঠ অফিস সহকারি কিশোয়ারা জাহান টিনা’র মাধ্যমে। ওই টাকার হিসাব কেউ চাইলে তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানীসহ নানা হুমকি প্রদান করে মিথ্যা অজুহাতে বেতন কাটেন মাসের পর মাস।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক স্বাস্থ্য সহকারী জানান, ভিজিটরের সিলেকশন ও ডিপ্লোমা উপলক্ষে কর্মচারীর কাছ থেকে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন একেএম জহিরুল ইসলাম এবং  কর্মচারীদের পিকনিক যাওয়ার বৈধতা না থাকলে ওই কর্মকর্তা প্রতি বছর পিকনিকের আয়োজন করে ৭০ জন কর্মচারীদের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা করে  চাঁদা আদায় করে।

সর্বশেষ তার বদলীর খবরে সকলের মাঝে সস্থি আসলেও পরে বদলী ঠেকিয়ে বহাল তবিয়তে থাকায় আবারও  নতুন করে হয়রানীর হওয়ার আশংকা করছেন  কর্মচারীরা।

এ ব্যাপারে  একেএম জহিরুল ইসলাম যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন এখানে চাকুরীর সুবাধে আমার কর্মকান্ড অনেকেই বাঁকা চোখে দেখে আমাকে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করছে। বদলীর ব্যাপারে জানতে চাইলে , তিনি বলেন , আমাকে বদলীর নোটিশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তবে আমি আবেদন করেছি আমাকে সুবিধাজনক জায়গায় বদলী করার জন্য।

কুমিল্লা জেলা উপ-পরিচালক মাহবুব করিম জানান, এ কর্মকর্তার নানা দূর্নীতির অভিযোগ সর্ম্পকে আমি অবহিত আছি, বদলীর পরও কেন সে ওই কর্মস্থলে যাচ্ছে না তা আমি উর্ধ্বতন  কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করব ।

ট্যাগস

মুরাদনগরে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বদলীর পরও এখনো বহাল তবিয়তে

আপডেট সময় ০৩:১৩:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল ২০১৬

মুরাদনগর ডেস্কঃ

মুরাদনগর বার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকমঃ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রভাবশালী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কে এম জহিরুল ইসলাম বদলির পরও বহাল তবিয়তে অফিসে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।  অধিনস্ত কর্মচারীদের অহেতুক হয়রানী, বেতন কর্তন, ফান্ড তৈরির নাম করে মোটা অংঙ্কের অর্থ আদায়, ভিজিটর , সিলেকশন ও ডিপ্লোমা উপলক্ষে চাঁদা আদায়, পিকনিকে যাওয়ার নামে লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ একাধিক অভিযোগে গত ৯ ফেব্রুয়ার্রী কর্তৃপক্ষ তাকে বদলী করেন সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায়। বদলির পরও মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহাল থেকে কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া নানান গুনঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে উপজেলার সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর মধ্যে।

অফিস সূত্র জানায় , নানা অভিযোগ মাথায় নিয়ে দীর্ঘদিন একই উপজেলায় চাকুরী করায় একাধিক লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু ওই কর্মকর্তা বদলী ঠেকাতে মরিয়া হয়ে একটি প্রভাবশালী মহল পূর্বের অফিসেই বহাল রাখার পায়তারা করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, একেএম জহিরুল ইসলাম ২০০৭ সালে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হয়ে দীর্ঘ ৯ বছর মুরাদনগর উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা অফিসার হিসেবে কাজ করছেন। একাধিকবার নানান বিতর্কে জড়িয়ে গেলেও নিজের মতো করে কাজকর্ম চালিয়ে যান। ওই কর্মকর্তার বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে অতিষ্ট হয়ে একই  অফিসের অনেক কর্মচারী তার বিরুদ্ধে  উর্ধ্বতন  কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন, অভিযোগ ও দূনীতির ফলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (প্রশাসন) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ ফজলুল হক যুগ্মসচিব গত গত ৯ ফেব্রুয়ারী এ ২৩৩ নং স্মারকে একেএম জহিরুল ইসলামকে সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলায় বদলীর আদেশ করেন।  তিনি ওই আদেশ উপেক্ষা করে বিভিন্ন মহলে তদবির চালিয়ে এখনো এই উপজেলায় বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হয়রানীর স্বীকার ভুক্তভোগী শাহীনা আক্তার মায়া জানায়, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা একেএম জহিরুল ইসলাম, পরিবার কল্যাণ সহকারী ১২৪ জন, পরিদর্শক ১৮জন, ভিজিটর ২০ জন, চেকমো ৫জন, আয়া ২০ জন, পিয়ন ২০ জন, অফিস সহকারী ৫জন এই সর্বমোট ২০৭জন কর্মচারীর নতুন বেতন স্কেল থেকে ১ হাজার টাকা করে কর্তন করে। এছাড়াও কর্মচারীদের সমিতির ফান্ডের নামে ১২০ জন কর্মচারীর কাছ থেকে প্রায় ২৬ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা উত্তোলন তার ঘনিষ্ঠ অফিস সহকারি কিশোয়ারা জাহান টিনা’র মাধ্যমে। ওই টাকার হিসাব কেউ চাইলে তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানীসহ নানা হুমকি প্রদান করে মিথ্যা অজুহাতে বেতন কাটেন মাসের পর মাস।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক স্বাস্থ্য সহকারী জানান, ভিজিটরের সিলেকশন ও ডিপ্লোমা উপলক্ষে কর্মচারীর কাছ থেকে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন একেএম জহিরুল ইসলাম এবং  কর্মচারীদের পিকনিক যাওয়ার বৈধতা না থাকলে ওই কর্মকর্তা প্রতি বছর পিকনিকের আয়োজন করে ৭০ জন কর্মচারীদের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা করে  চাঁদা আদায় করে।

সর্বশেষ তার বদলীর খবরে সকলের মাঝে সস্থি আসলেও পরে বদলী ঠেকিয়ে বহাল তবিয়তে থাকায় আবারও  নতুন করে হয়রানীর হওয়ার আশংকা করছেন  কর্মচারীরা।

এ ব্যাপারে  একেএম জহিরুল ইসলাম যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন এখানে চাকুরীর সুবাধে আমার কর্মকান্ড অনেকেই বাঁকা চোখে দেখে আমাকে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করছে। বদলীর ব্যাপারে জানতে চাইলে , তিনি বলেন , আমাকে বদলীর নোটিশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তবে আমি আবেদন করেছি আমাকে সুবিধাজনক জায়গায় বদলী করার জন্য।

কুমিল্লা জেলা উপ-পরিচালক মাহবুব করিম জানান, এ কর্মকর্তার নানা দূর্নীতির অভিযোগ সর্ম্পকে আমি অবহিত আছি, বদলীর পরও কেন সে ওই কর্মস্থলে যাচ্ছে না তা আমি উর্ধ্বতন  কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করব ।