ঢাকা ১০:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগর শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্র থেকে দৈনিক আরো ২ কোটি ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে

এমকে আই জাবেদঃ

কুমিল্লার মুরাদনগরের শ্রীকাইল-২ গ্যাসক্ষেত্র থেকে একটি কূপ থেকে নতুন করে দৈনিক প্রায়  ২০ মিলিয়ন (২কোটি ঘনফুট) গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব বলে জানা গেছে।

শ্রীকাইল-২ (মকলিশপুর) গ্যাসক্ষেত্রের ৪ নম্বর কূপ থেকে পূর্বে দৈনিক প্রায় ৭-৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রীডে  সরোবারহ করা হত।

বাপেক্স তাদের নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার  করে ৫৬ দিন পর  উক্ত কূপের নতুন স্তর থেকে শুক্রবার দুপুর থেকে গ্যাসের চাপ পরীক্ষা (ওয়াকওভার) শুরু করেন। এতে গ্যাস উদগিরণের ফলে অগুনের শিখা ও প্রচন্ড শব্দে আশে-পাশের এলাকা থেকে লক্ষ করা যায়। পরীক্ষা শুরুর ৭২ ঘন্টার মধ্যে ‘ওয়াকওভার’ কাজ শেষ হলে এ সাপ্তাহে জাতীয় গ্রীডে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরোবারহ করা যাবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

শ্রীকাইল-২ এই গ্যাসক্ষেত্রটি ২০১৩ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসে উদ্ধোধনেরর পর   জুন মাস থেকে প্রথম গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে এপর্যন্ত মোট ৩টি কূপ থেকে প্রকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। এই ৪নং কূপটি সম্পূর্ণ বাংলাদেশি প্রযুক্তিতে বাপেক্স খনন করে গ্যাস উত্তোলন ও জাতীয় গ্রীডে সরোবারহ করে।

সূত্রে জানাযায়, শ্রীকাইল-২ এর ৪ নম্বর কূপটির উপরের স্তর থেকে আগেই ৭/৮ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস দৈনিক উত্তোলন করা সম্বব হত। কিন্তু এখন নতুন করে আরও গভীরে নতুন স্তর থেকে একই কূপ দিয়ে  প্রতিদিন প্রায় ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে।

প্রকৌশলী মোঃ শাহজাহান বলেন, এই কূপের নিচের স্তরে কি পরিমাণ গ্যাস থাকতে পারে- তা নিশ্চিত হতে ৫৫ দিন ধরে কাজ করেছে বাপেক্স। শুক্রবার সন্ধ্যায় নতুন গ্যাস স্তরে ৩০-৪০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ থাকার সম্ভাবনা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এখনও বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ এলএনজি আমদানি করে। নতুন কূপের এই গ্যাস এলএনজি খাতে ব্যবহার করা গেলে দেশের বিপুল রাজস্ব আয় সমৃদ্ধ হবে।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে শ্রীকাইল অনুসন্ধান গ্যাস কূপ খনন প্রকল্প (সোনাকান্দা+মোহাম্মদপুর) স্থানে ১নং কূপ খনন করা হলেও অজানা কারনে এই কূপ থেকে আর গ্যাস উত্তোলন করা সম্বব হয়নি। বর্তমানে ১ নাম্বার কূপের গ্যাস ক্ষেত্রটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নের মকলিশপুরে ২০১৩ সালে শ্রীকাইল-২ গ্যাসক্ষেত্রের  ৩টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালে শুরুর দিকে  নবীনগর উপজেলার (হাজীপুর+লাউর ফতেহপুর) শ্রীকাইল ইস্ট- রুপকল্প-১ নতুন একটি গ্যাস ক্ষেত্রের গ্যাস উত্তোলন কাজ সফল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সংযোগ লাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়নি। প্রায় ১০ কি.মিঃ নতুন গ্যাস লাইন সংযোজন করলেই জাতীয় গ্রীডের সাথে শ্রীকাইল পূর্ব গ্যাস ক্ষেত্রটি সংযুক্ত হবে।

এছারাও শ্রীকাইল সরকারি কলেজের পূর্বপাশে বাপেক্সের অনুসন্ধানে একটি গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে গত ৩ বছর হল।  ইতিমধ্যে এই কূপের চারপাশে বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে এবং দের কিলোমিটার সংযোগ সড়কের তৈরী করা চলছে। 

মুরাদনগরে ‘আমাদের গ্যাস আমাদের অধিকার’ শীর্ষক সংগঠনের সক্রিয় কর্মী ও শ্রীকাইল গ্রামের এম কে আই জাবেদ বলেন, প্রকৃতিক গ্যাস আমাদের এলাকা থেকে উত্তোলিত হচ্ছে এবং কৃষি জমির নিচ ও এলাকার উপর দিয়ে জাতীয় গ্রীডে সরোবারহ করা হয় অথছ আমরা অবহেলার শিকার হচ্ছি।

আমাদের গ্যাস সারা দেশে সরোবারহ হচ্ছে তা যেমন গর্বের তেমনি আমাদের গ্যাস আমাদের ভোগ করার অধিকারও ন্যায্যতা রয়েছে। যদি এলাকায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভাবে গ্যাস প্রদান করা হয় তাহলে গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নায় হবে এবং শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে সুযোগ হলে এলাকার বেকারত্ব কমবে এবং অনেক  কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগর শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্র থেকে দৈনিক আরো ২ কোটি ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে

আপডেট সময় ০৬:০৫:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ নভেম্বর ২০২০

এমকে আই জাবেদঃ

কুমিল্লার মুরাদনগরের শ্রীকাইল-২ গ্যাসক্ষেত্র থেকে একটি কূপ থেকে নতুন করে দৈনিক প্রায়  ২০ মিলিয়ন (২কোটি ঘনফুট) গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব বলে জানা গেছে।

শ্রীকাইল-২ (মকলিশপুর) গ্যাসক্ষেত্রের ৪ নম্বর কূপ থেকে পূর্বে দৈনিক প্রায় ৭-৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রীডে  সরোবারহ করা হত।

বাপেক্স তাদের নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার  করে ৫৬ দিন পর  উক্ত কূপের নতুন স্তর থেকে শুক্রবার দুপুর থেকে গ্যাসের চাপ পরীক্ষা (ওয়াকওভার) শুরু করেন। এতে গ্যাস উদগিরণের ফলে অগুনের শিখা ও প্রচন্ড শব্দে আশে-পাশের এলাকা থেকে লক্ষ করা যায়। পরীক্ষা শুরুর ৭২ ঘন্টার মধ্যে ‘ওয়াকওভার’ কাজ শেষ হলে এ সাপ্তাহে জাতীয় গ্রীডে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরোবারহ করা যাবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

শ্রীকাইল-২ এই গ্যাসক্ষেত্রটি ২০১৩ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসে উদ্ধোধনেরর পর   জুন মাস থেকে প্রথম গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে এপর্যন্ত মোট ৩টি কূপ থেকে প্রকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। এই ৪নং কূপটি সম্পূর্ণ বাংলাদেশি প্রযুক্তিতে বাপেক্স খনন করে গ্যাস উত্তোলন ও জাতীয় গ্রীডে সরোবারহ করে।

সূত্রে জানাযায়, শ্রীকাইল-২ এর ৪ নম্বর কূপটির উপরের স্তর থেকে আগেই ৭/৮ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস দৈনিক উত্তোলন করা সম্বব হত। কিন্তু এখন নতুন করে আরও গভীরে নতুন স্তর থেকে একই কূপ দিয়ে  প্রতিদিন প্রায় ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে।

প্রকৌশলী মোঃ শাহজাহান বলেন, এই কূপের নিচের স্তরে কি পরিমাণ গ্যাস থাকতে পারে- তা নিশ্চিত হতে ৫৫ দিন ধরে কাজ করেছে বাপেক্স। শুক্রবার সন্ধ্যায় নতুন গ্যাস স্তরে ৩০-৪০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ থাকার সম্ভাবনা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এখনও বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ এলএনজি আমদানি করে। নতুন কূপের এই গ্যাস এলএনজি খাতে ব্যবহার করা গেলে দেশের বিপুল রাজস্ব আয় সমৃদ্ধ হবে।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে শ্রীকাইল অনুসন্ধান গ্যাস কূপ খনন প্রকল্প (সোনাকান্দা+মোহাম্মদপুর) স্থানে ১নং কূপ খনন করা হলেও অজানা কারনে এই কূপ থেকে আর গ্যাস উত্তোলন করা সম্বব হয়নি। বর্তমানে ১ নাম্বার কূপের গ্যাস ক্ষেত্রটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নের মকলিশপুরে ২০১৩ সালে শ্রীকাইল-২ গ্যাসক্ষেত্রের  ৩টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালে শুরুর দিকে  নবীনগর উপজেলার (হাজীপুর+লাউর ফতেহপুর) শ্রীকাইল ইস্ট- রুপকল্প-১ নতুন একটি গ্যাস ক্ষেত্রের গ্যাস উত্তোলন কাজ সফল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সংযোগ লাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়নি। প্রায় ১০ কি.মিঃ নতুন গ্যাস লাইন সংযোজন করলেই জাতীয় গ্রীডের সাথে শ্রীকাইল পূর্ব গ্যাস ক্ষেত্রটি সংযুক্ত হবে।

এছারাও শ্রীকাইল সরকারি কলেজের পূর্বপাশে বাপেক্সের অনুসন্ধানে একটি গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে গত ৩ বছর হল।  ইতিমধ্যে এই কূপের চারপাশে বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে এবং দের কিলোমিটার সংযোগ সড়কের তৈরী করা চলছে। 

মুরাদনগরে ‘আমাদের গ্যাস আমাদের অধিকার’ শীর্ষক সংগঠনের সক্রিয় কর্মী ও শ্রীকাইল গ্রামের এম কে আই জাবেদ বলেন, প্রকৃতিক গ্যাস আমাদের এলাকা থেকে উত্তোলিত হচ্ছে এবং কৃষি জমির নিচ ও এলাকার উপর দিয়ে জাতীয় গ্রীডে সরোবারহ করা হয় অথছ আমরা অবহেলার শিকার হচ্ছি।

আমাদের গ্যাস সারা দেশে সরোবারহ হচ্ছে তা যেমন গর্বের তেমনি আমাদের গ্যাস আমাদের ভোগ করার অধিকারও ন্যায্যতা রয়েছে। যদি এলাকায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভাবে গ্যাস প্রদান করা হয় তাহলে গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নায় হবে এবং শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে সুযোগ হলে এলাকার বেকারত্ব কমবে এবং অনেক  কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।