ঢাকা ০৪:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রাজধানীসহ সারাদেশে বজ্রপাতে নিহত ৪১

মুরাদনগর বার্তা ডেস্কঃ
বৃষ্টিতে স্বস্তি এলেও দেশজুড়ে বজ্রপাত কেড়ে নিল ৪১টি তাজা প্রাণ।  রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রপাতের পৃথক ঘটনায় ৪১জন নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা সহ কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জে, ডেমরা, নাটোর, পাবনা, নেত্রকোনা, গাজীপুর, নরসিংদী, বি.বাড়ীয়া, না.গঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব নিহতের ঘটনা ঘটেছে।  আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য ভিত্তিতে-

ঢাকা: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে শাহেদ সোহাগ (২১) ও তাহসিন লিংকন (২৩) নামে ২ যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় রায়হান নামে আরো একজন আহত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে যাত্রাবাড়ী কাঠেরপুল এলাকার কনকর্ড বালুর মাঠে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে আহত হয় তারা। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) নেয়া হলে ৬ টার দিকে সোহাগ ও লিংকনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

মোহনপুর (রাজশাহী): রাজশাহীর মোহনপুরে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার ধুরইল ইউনিয়নের পুল্লাকুড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, গোছা গ্রামের রহমত আলী (২৮), হাটরা গ্রামের আব্দুল হাকিম (৫০) ও ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের সত্যেন কুমার সত্য (৩৫)। আহতরা হলেন পুল্লাকুড়ি গ্রামের কামাল (৪৫), মুনাডাঙ্গা গ্রামের জাহানারা (৩৮), ধামিন কৈড় গ্রামের রহিমা খাতুন (৫৫) ও বারউপাড়া গ্রামের আলিমন বেগম (৬৫)। বাকী দুই জনের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

এছাড়া, মোহনপুরে বজ্রপাতের ঘটনায় আরো তিনজন এবং বাগমারায় একজন আহত হয়েছেন। আহতদের মোহনপুর ও বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

গোপালদী বাজার (নারায়ণগঞ্জ): মেঘনা নদীতে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে বলরাম দাস (৫০) নামে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। তিনি নরসিংদীর সদর উপজেলার দোয়ানী গ্রামের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার নরসিংদী ও আড়াইহাজারের সীমানা এলাকায় মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

শেরপুর (বগুড়া): শেরপুরে বজ্রপাতে আনোয়ার হোসেন নামে একজন নিহত ও ছোটভাই আরিফুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়েছে। আরিফুলকে প্রথমে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

পাবনা: পাবনার সুজানগর ও ফরিদপুর উপজেলায় পৃথক স্থানে বজ্রপাতের ঘটনায় ২ স্কুল ছাত্র-ছাত্রীসহ ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলো, ফরিদপুর উপজেলার ডেমরা গ্রামের মোশারফ হোসেন (৩৮) ও আজরত আলী (৪৫)। আহম্মদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণচর গ্রামের মৃত রইছ সরদারের ছেলে শহীদ সর্দার (৫৮), সোনাতলা গ্রামের ইউসুফ সেখ ওরফে এছো সেখ এর ছেলে ও বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র হীরা (১৩) এবং রানীনগর ইউনিয়নের বাঘলপুর গ্রামের ময়েন সরদার (৬৫) এবং তার নাতনী মৃত শিরু সরদারের মেয়ে ও বাঘলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী শিখা খাতুন (১৩)। অপরদিকে জেলার চাটমোহর উপজেলার পাশ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের বাউদকান্দি গ্রামের মল্লিক পাড়ার ইমান প্রামানিকের ছেলে ফজলুর রহমান (৪০) এবং মৃত মহির খানের ছেলে ছকির উদ্দিন (৭০)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, শহীদ সর্দার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ক্ষেতে মাঠে পাট কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান এবং একই সময়ে হীরা মাঠে ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যায়। শহীদ সর্দার ঘটনাস্থলেই আর হীরাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বেড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় মারা যায়। এছাড়া ময়েন সরদার এবং তার নাতনীও বাড়ির পাশে মাঠে গিয়ে বজ্রপাতের কবলে পড়ে মারা যায়।

আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএম তাজুল হুদা ৩ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেন এবং চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুব্রত কুমার দু’জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন।

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর): পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ভারী বর্ষণের সময় বজ্রাঘাতে ইউনুস সিকদার (৬০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকাল চারটার দিকে উপজেলার দাউদখালি ইউনিয়নের বড় হারজী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় নিহত কৃষক ইউনুসের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী গৃহবধূ আয়েশা বেগম (৪৫) বজ্রঘাতে গুরুতর আহত হন। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে বরিশাল শেরে ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত কৃষক ইউনুস উপজেলার বড় হাজী গ্রামের মৃত লাল মিয়া সিকদারের ছেলে।

লালপুর (নাটোর): বৃহস্পতিবার বিকেলে নাটোরের লালপুর উপজেলায় বজ্রপাতে ২জন নিহত এবং ২জন আহত হয়েছে। নিহতরা হলো- উত্তর লালপুর গ্রামের পঞ্চে আলী শেখের স্ত্রী সাহারা বানু (৩২) এবং রঘুনাথপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর পুত্র মোবারক আলী (৩৫)।

নওগাঁ: নওগাঁর আত্রাইয়ে বজ্রপাতে জয়নাল উদ্দিন (৬৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। জয়নাল উদ্দিন উপজেলার বিষা উত্তর গ্রামের মৃত ব্যাঙ্গা প্রামাণিকের ছেলে। বিকেলে সাড়ে ৫টার দিকে বজ্রপাতে তিনি মারা যান।

নেত্রকোনা: নেত্রকোনার পূর্বধলায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বজ্রপাতে রুবেল মিয়া (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। সে উপজেলার বিশকাকুনী ইউনিয়নের ধোবারুহী গ্রামের আ: বারেকের ছেলে। এ সময় রুবেলের চাচী রেজিয়া আক্তার বজ্রপাতে আহত হয়

নরসিংদী: নরসিংদী ও রায়পুরা উপজেলায় একই দিনে বজ্রপাতে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার মহিষাশুরু ইউনিয়নে মহিষাশুরা গ্রামে আব্দুল করিম (৫০) নামে এক কৃষক বজ্রপাতে মারা যান। একই সময় সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়নের চম্পকনগর গ্রামে ফুলি বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধূ বজ্রপাতে মারা যান। একইদিন দুপুরে রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের ফকিরচর গ্রামে বজ্রপাতে নিহত হয়েছে জ্যোসনা বেগম (৩৮) নামে এক গৃহবধূ।

কাপাসিয়া (গাজীপুর): গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বজ্রপাতের দিনমজুর ও এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলো- কুড়িগ্রাম জেলার কচাকাটা থানার সাতআনা গ্রামের সানাউল্লাহ বেপারীর ছেলে আব্দুস সাত্তার আলী (২৬) এবং গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সিঙ্গুয়া পশ্চিম পাড়া গ্রামের কাজল মিয়ার স্ত্রী রুবি (৪০)।

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার প্রতাপপুর হাওরে বজ্রপাতে হাবিব মিয়ার (২৫) মৃত্যু হয়েছে। নিহত হাবিব প্রতাপপুর গ্রামের শেখ তাজুল মিয়ার ছেলে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর ও হোসেনপুরে বজ্রপাতে কলেজছাত্রসহ ৪জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে পৃথক দু্’টি স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো, বাজিতপুর উপজেলার দিলালপুর ইউনিয়নের বাহেরনগর গ্রামের মঞ্জু মিয়ার ছেলে স্বপন মিয়া (২০), একই উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের কইকুরী গ্রামের আবু বক্করের স্ত্রী রিজিয়া বেগম (৫৬), হোসেনপুর উপজেলায় আড়াইবাড়িয়া গ্রামের রহমত আলীর ছেলে ও হোসেনপুর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের ছাত্র শরীফুল ইসলাম শুভ (১৮) এবং তাড়াইল উপজেলার জাওয়ার ইউনিয়নের ইশাবশর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী মমতা বেগম (৪৫)।

দিলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া নভেল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া উপজেলায় বজ্রপাতে নারী ও শিশুসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন, রায়গঞ্জ উপজেলার চকপুর গ্রামের নূর নবীর মেয়ে নূপুর খাতুন (৮), বৈকণ্ঠপুর গ্রামের দারুজ্জামানের ছেলে কৃষক আব্দুল মোতালেব (৪২) ও হাসিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন (৪৫) এবং উল্লাপাড়া উপজেলার শিমলা গ্রামের আব্দুল লতিফ (৩৫) ও বেতুয়া গ্রামের গৃহবধূ শাহিনুর বেগম (৩০)।

উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান কৌশিক আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে বৃষ্টিপাতে দুইজন মারা গেছেন।

বিকেলে বৃষ্টির সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে শিমলা গ্রামের আব্দুল লতিফ ও বেতুয়া গ্রামের শহিনুর বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান।

অপরদিকে, রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মাহে আলম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে শিশু নূপুর বাড়ির পাশে ইটভাটার কাছে খড়ি কুড়াচ্ছিল। হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। একই সময় মোতালেব গ্রামের মাঠে গরু আনতে গেলে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ সময় তার দু’টি গরুও মারা যায়।

অপরদিকে, সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের বেজগাতি গ্রামের বাসিন্দা ও রায়গঞ্জের হাসিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বজ্রপাতে নিজ মাদ্রাসার মাঠে নিহত হন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ও বাঞ্ছারামপুরে পৃথক বজ্রপাতে জাহানারা বেগম (৪৮), শফিকুল ইসলাম (২৮), কবির হোসেন (৪০) ও শামছুল ইসলাম (৪০) নামে ৪জন নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে দুই উপজেলার পৃথক স্থানে এসব ঘটনা ঘটে।

বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অংশু কুমার দেব জানান, দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামে জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে একই গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে শফিকুল ইসলাম নিহত হন। কানাইনগর গ্রামে নদীতে গোসল করে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে সুলতান মিয়ার ছেলে কবির হোসেন নিহত হন। এছাড়া ইছাপুর গ্রামের জোনাব আলীর ছেলে শামছুল ইসলাম জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। ওসি আরও জানান, নিহতদের মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এছাড়া সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রূপক কুমার সাহা জানান, দুপুর ১২টার দিকে নিজ বাড়ির ওঠোনে কাজ করার হঠাৎ বজ্রপাত হয়। এতে জাহানা বেগমের শরীর ঝলসে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এসময় তার সঙ্গে থাকা দুই মেয়ে তাসমিনা আক্তার ও রোমেজা আক্তার দগ্ধ হন। পরে স্থানীয়রা আহতদেরকে উদ্ধার করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

শীর্ নিউজ।
ট্যাগস

রাজধানীসহ সারাদেশে বজ্রপাতে নিহত ৪১

আপডেট সময় ১২:২৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ মে ২০১৬
মুরাদনগর বার্তা ডেস্কঃ
বৃষ্টিতে স্বস্তি এলেও দেশজুড়ে বজ্রপাত কেড়ে নিল ৪১টি তাজা প্রাণ।  রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রপাতের পৃথক ঘটনায় ৪১জন নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা সহ কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জে, ডেমরা, নাটোর, পাবনা, নেত্রকোনা, গাজীপুর, নরসিংদী, বি.বাড়ীয়া, না.গঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব নিহতের ঘটনা ঘটেছে।  আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য ভিত্তিতে-

ঢাকা: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে শাহেদ সোহাগ (২১) ও তাহসিন লিংকন (২৩) নামে ২ যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় রায়হান নামে আরো একজন আহত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে যাত্রাবাড়ী কাঠেরপুল এলাকার কনকর্ড বালুর মাঠে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে আহত হয় তারা। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) নেয়া হলে ৬ টার দিকে সোহাগ ও লিংকনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

মোহনপুর (রাজশাহী): রাজশাহীর মোহনপুরে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার ধুরইল ইউনিয়নের পুল্লাকুড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, গোছা গ্রামের রহমত আলী (২৮), হাটরা গ্রামের আব্দুল হাকিম (৫০) ও ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের সত্যেন কুমার সত্য (৩৫)। আহতরা হলেন পুল্লাকুড়ি গ্রামের কামাল (৪৫), মুনাডাঙ্গা গ্রামের জাহানারা (৩৮), ধামিন কৈড় গ্রামের রহিমা খাতুন (৫৫) ও বারউপাড়া গ্রামের আলিমন বেগম (৬৫)। বাকী দুই জনের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

এছাড়া, মোহনপুরে বজ্রপাতের ঘটনায় আরো তিনজন এবং বাগমারায় একজন আহত হয়েছেন। আহতদের মোহনপুর ও বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

গোপালদী বাজার (নারায়ণগঞ্জ): মেঘনা নদীতে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে বলরাম দাস (৫০) নামে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। তিনি নরসিংদীর সদর উপজেলার দোয়ানী গ্রামের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার নরসিংদী ও আড়াইহাজারের সীমানা এলাকায় মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

শেরপুর (বগুড়া): শেরপুরে বজ্রপাতে আনোয়ার হোসেন নামে একজন নিহত ও ছোটভাই আরিফুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়েছে। আরিফুলকে প্রথমে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

পাবনা: পাবনার সুজানগর ও ফরিদপুর উপজেলায় পৃথক স্থানে বজ্রপাতের ঘটনায় ২ স্কুল ছাত্র-ছাত্রীসহ ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলো, ফরিদপুর উপজেলার ডেমরা গ্রামের মোশারফ হোসেন (৩৮) ও আজরত আলী (৪৫)। আহম্মদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণচর গ্রামের মৃত রইছ সরদারের ছেলে শহীদ সর্দার (৫৮), সোনাতলা গ্রামের ইউসুফ সেখ ওরফে এছো সেখ এর ছেলে ও বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র হীরা (১৩) এবং রানীনগর ইউনিয়নের বাঘলপুর গ্রামের ময়েন সরদার (৬৫) এবং তার নাতনী মৃত শিরু সরদারের মেয়ে ও বাঘলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী শিখা খাতুন (১৩)। অপরদিকে জেলার চাটমোহর উপজেলার পাশ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের বাউদকান্দি গ্রামের মল্লিক পাড়ার ইমান প্রামানিকের ছেলে ফজলুর রহমান (৪০) এবং মৃত মহির খানের ছেলে ছকির উদ্দিন (৭০)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, শহীদ সর্দার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ক্ষেতে মাঠে পাট কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান এবং একই সময়ে হীরা মাঠে ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যায়। শহীদ সর্দার ঘটনাস্থলেই আর হীরাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বেড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় মারা যায়। এছাড়া ময়েন সরদার এবং তার নাতনীও বাড়ির পাশে মাঠে গিয়ে বজ্রপাতের কবলে পড়ে মারা যায়।

আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএম তাজুল হুদা ৩ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেন এবং চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুব্রত কুমার দু’জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন।

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর): পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ভারী বর্ষণের সময় বজ্রাঘাতে ইউনুস সিকদার (৬০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকাল চারটার দিকে উপজেলার দাউদখালি ইউনিয়নের বড় হারজী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় নিহত কৃষক ইউনুসের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী গৃহবধূ আয়েশা বেগম (৪৫) বজ্রঘাতে গুরুতর আহত হন। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে বরিশাল শেরে ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত কৃষক ইউনুস উপজেলার বড় হাজী গ্রামের মৃত লাল মিয়া সিকদারের ছেলে।

লালপুর (নাটোর): বৃহস্পতিবার বিকেলে নাটোরের লালপুর উপজেলায় বজ্রপাতে ২জন নিহত এবং ২জন আহত হয়েছে। নিহতরা হলো- উত্তর লালপুর গ্রামের পঞ্চে আলী শেখের স্ত্রী সাহারা বানু (৩২) এবং রঘুনাথপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর পুত্র মোবারক আলী (৩৫)।

নওগাঁ: নওগাঁর আত্রাইয়ে বজ্রপাতে জয়নাল উদ্দিন (৬৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। জয়নাল উদ্দিন উপজেলার বিষা উত্তর গ্রামের মৃত ব্যাঙ্গা প্রামাণিকের ছেলে। বিকেলে সাড়ে ৫টার দিকে বজ্রপাতে তিনি মারা যান।

নেত্রকোনা: নেত্রকোনার পূর্বধলায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বজ্রপাতে রুবেল মিয়া (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। সে উপজেলার বিশকাকুনী ইউনিয়নের ধোবারুহী গ্রামের আ: বারেকের ছেলে। এ সময় রুবেলের চাচী রেজিয়া আক্তার বজ্রপাতে আহত হয়

নরসিংদী: নরসিংদী ও রায়পুরা উপজেলায় একই দিনে বজ্রপাতে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার মহিষাশুরু ইউনিয়নে মহিষাশুরা গ্রামে আব্দুল করিম (৫০) নামে এক কৃষক বজ্রপাতে মারা যান। একই সময় সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়নের চম্পকনগর গ্রামে ফুলি বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধূ বজ্রপাতে মারা যান। একইদিন দুপুরে রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের ফকিরচর গ্রামে বজ্রপাতে নিহত হয়েছে জ্যোসনা বেগম (৩৮) নামে এক গৃহবধূ।

কাপাসিয়া (গাজীপুর): গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বজ্রপাতের দিনমজুর ও এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলো- কুড়িগ্রাম জেলার কচাকাটা থানার সাতআনা গ্রামের সানাউল্লাহ বেপারীর ছেলে আব্দুস সাত্তার আলী (২৬) এবং গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সিঙ্গুয়া পশ্চিম পাড়া গ্রামের কাজল মিয়ার স্ত্রী রুবি (৪০)।

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার প্রতাপপুর হাওরে বজ্রপাতে হাবিব মিয়ার (২৫) মৃত্যু হয়েছে। নিহত হাবিব প্রতাপপুর গ্রামের শেখ তাজুল মিয়ার ছেলে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর ও হোসেনপুরে বজ্রপাতে কলেজছাত্রসহ ৪জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে পৃথক দু্’টি স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো, বাজিতপুর উপজেলার দিলালপুর ইউনিয়নের বাহেরনগর গ্রামের মঞ্জু মিয়ার ছেলে স্বপন মিয়া (২০), একই উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের কইকুরী গ্রামের আবু বক্করের স্ত্রী রিজিয়া বেগম (৫৬), হোসেনপুর উপজেলায় আড়াইবাড়িয়া গ্রামের রহমত আলীর ছেলে ও হোসেনপুর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের ছাত্র শরীফুল ইসলাম শুভ (১৮) এবং তাড়াইল উপজেলার জাওয়ার ইউনিয়নের ইশাবশর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী মমতা বেগম (৪৫)।

দিলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া নভেল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া উপজেলায় বজ্রপাতে নারী ও শিশুসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন, রায়গঞ্জ উপজেলার চকপুর গ্রামের নূর নবীর মেয়ে নূপুর খাতুন (৮), বৈকণ্ঠপুর গ্রামের দারুজ্জামানের ছেলে কৃষক আব্দুল মোতালেব (৪২) ও হাসিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন (৪৫) এবং উল্লাপাড়া উপজেলার শিমলা গ্রামের আব্দুল লতিফ (৩৫) ও বেতুয়া গ্রামের গৃহবধূ শাহিনুর বেগম (৩০)।

উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান কৌশিক আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে বৃষ্টিপাতে দুইজন মারা গেছেন।

বিকেলে বৃষ্টির সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে শিমলা গ্রামের আব্দুল লতিফ ও বেতুয়া গ্রামের শহিনুর বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান।

অপরদিকে, রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মাহে আলম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে শিশু নূপুর বাড়ির পাশে ইটভাটার কাছে খড়ি কুড়াচ্ছিল। হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। একই সময় মোতালেব গ্রামের মাঠে গরু আনতে গেলে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ সময় তার দু’টি গরুও মারা যায়।

অপরদিকে, সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের বেজগাতি গ্রামের বাসিন্দা ও রায়গঞ্জের হাসিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বজ্রপাতে নিজ মাদ্রাসার মাঠে নিহত হন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ও বাঞ্ছারামপুরে পৃথক বজ্রপাতে জাহানারা বেগম (৪৮), শফিকুল ইসলাম (২৮), কবির হোসেন (৪০) ও শামছুল ইসলাম (৪০) নামে ৪জন নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে দুই উপজেলার পৃথক স্থানে এসব ঘটনা ঘটে।

বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অংশু কুমার দেব জানান, দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামে জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে একই গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে শফিকুল ইসলাম নিহত হন। কানাইনগর গ্রামে নদীতে গোসল করে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে সুলতান মিয়ার ছেলে কবির হোসেন নিহত হন। এছাড়া ইছাপুর গ্রামের জোনাব আলীর ছেলে শামছুল ইসলাম জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। ওসি আরও জানান, নিহতদের মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এছাড়া সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রূপক কুমার সাহা জানান, দুপুর ১২টার দিকে নিজ বাড়ির ওঠোনে কাজ করার হঠাৎ বজ্রপাত হয়। এতে জাহানা বেগমের শরীর ঝলসে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এসময় তার সঙ্গে থাকা দুই মেয়ে তাসমিনা আক্তার ও রোমেজা আক্তার দগ্ধ হন। পরে স্থানীয়রা আহতদেরকে উদ্ধার করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

শীর্ নিউজ।