ঢাকা ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

৫ জানুয়ারি ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে ডিসেম্বর থেকে আন্দোলনে নামবে বিএনপি।

নতুন বছরের জানুয়ারি থেকে আন্দোলন আরও বেগবান করতে চায় দলটি। এ লক্ষ্যে আগামী ৫ জানুয়ারিকে টার্গেট করেছে বিএনপি।
bnp
দশম সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্তির ওই দিনটিকে ‘কালো দিবস’ আখ্যায়িত করে ব্যতিক্রমী শোডাউন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।

দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঘর থেকে রাস্তায় নেমে হাতে হাত ধরে নীরবে দাঁড়িয়ে একদলীয় নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানাবে দলটি।

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন। কোনো কারণে কর্মসূচি পালনে সমস্যা হলে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে ঢাকায় বড় ধরনের প্রতিবাদ সমাবেশ করবে তারা।

ওই দিনের কর্মসূচিকে আন্দোলনের টার্নিং পয়েন্ট করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। দলের একাধিক নীতিনির্ধারক নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে তারা আন্দোলন করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারি একটি একদলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ধূলিসাৎ করে দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনের এক বছর পূর্তিকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালনের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ওই দিনের কর্মসূচি এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। সরকারের আচরণের ওপর কর্মসূচির ধরন নির্ভর করবে। দিনক্ষণ দিয়ে আগাম কিছু বলা যাচ্ছে না।

সূত্র জানায়, আগামী ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্তির দিনকে দাবি আদায়ের আন্দোলন বেগবান করার টার্গেট করেছে।

এ লক্ষ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দলের নীতিনির্ধারক নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই দিন গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে কালো দিবস হিসেবে পালন করবে বিএনপি।

বিএনপি নীতিনির্ধারক সূত্র জানায়, কর্মসূচির ধরন হিসেবে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থক এবং শ্রেণী-পেশার সব মানুষকে রাস্তায় নেমে কিছুক্ষণ হাতে হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।

বিএনপির হাইকমান্ড মনে করেন, শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তায় দাঁড়ালে সরকার কোনো বাধা দেবে না। এতে দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সমর্থকসহ সাধারণ মানুষও যোগ দিতে পারে।

যাতে রাজপথে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম হতে পারে। যা দেশি ও বিদেশি মিডিয়ায় প্রচার হলে জনগণ ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের পক্ষে সায় দিয়েছে বলে দাবি করবে দলটি।

বিদেশে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের শাখার নেতাকর্মী ও সমর্থকদেরও একই কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দেওয়া হবে।

বিদেশের মাটিতে একযোগে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি হলে প্রভাবশালী বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থাগুলোর নজরে আসবে বলে মনে করেন দলটির হাইকমান্ড।

সূত্র জানায়, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সরকারবিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচিতে ‘পরিবর্তন’ আনতে চাইছেন বিএনপি হাইকমান্ড।

এ লক্ষ্যে দলীয় নেতাদের পাশাপাশি দল-সমর্থিত বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের পরামর্শ নিচ্ছেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

ঢাকা মহানগরে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার পাশাপাশি আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

এর আগে আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি, দলের সহসভাপতি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি প্রধান।

তারাও আন্দোলনের আগে ঢাকা মহানগর দলের পুনর্গঠন, জোটের বাইরে দলগুলোকে আন্দোলনে সামিল এবং জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলনে নামার পরামর্শ দিয়েছেন।

বিএনপি সূত্র আরো জানায়, জোট ও দলের নেতা এবং বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শের সঙ্গে নিজের অতীত অভিজ্ঞতাকে সমন্বয় করে এবার আন্দোলনে নামতে চাচ্ছেন বিএনপি নেত্রী।

এবার আন্দোলন সফল না হওয়া পর্যন্ত ঘরে না ফেরার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে কেউ না নামলে নিজেই রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছেন খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়া মনে করেন, দেশের মানুষ বর্তমান সরকারের পরিবর্তন চায়। একই সঙ্গে বিএনপির আন্দোলনের ধরনের পরিবর্তন চায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, একদলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগকে আর সময় দেওয়া হবে না।

দাবি আদায়ে যে ধরনের কর্মসূচি দেওয়া দরকার তা দেওয়া হবে। বিএনপি চেয়ারপারসন ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি নিজেও রাজপথে নামবেন।

সূত্র জানায়, রাজপথে আন্দোলনের পাশাপাশি বিদেশিদের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়াবে বিএনপি। মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবির ব্যাপারে বিদেশিদের সমর্থন আদায়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

এ ব্যাপারে বেশ কয়েকজন নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

৫ জানুয়ারি ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি

আপডেট সময় ১০:১৭:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৪

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে ডিসেম্বর থেকে আন্দোলনে নামবে বিএনপি।

নতুন বছরের জানুয়ারি থেকে আন্দোলন আরও বেগবান করতে চায় দলটি। এ লক্ষ্যে আগামী ৫ জানুয়ারিকে টার্গেট করেছে বিএনপি।
bnp
দশম সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্তির ওই দিনটিকে ‘কালো দিবস’ আখ্যায়িত করে ব্যতিক্রমী শোডাউন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।

দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঘর থেকে রাস্তায় নেমে হাতে হাত ধরে নীরবে দাঁড়িয়ে একদলীয় নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানাবে দলটি।

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন। কোনো কারণে কর্মসূচি পালনে সমস্যা হলে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে ঢাকায় বড় ধরনের প্রতিবাদ সমাবেশ করবে তারা।

ওই দিনের কর্মসূচিকে আন্দোলনের টার্নিং পয়েন্ট করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। দলের একাধিক নীতিনির্ধারক নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে তারা আন্দোলন করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারি একটি একদলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ধূলিসাৎ করে দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনের এক বছর পূর্তিকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালনের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ওই দিনের কর্মসূচি এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। সরকারের আচরণের ওপর কর্মসূচির ধরন নির্ভর করবে। দিনক্ষণ দিয়ে আগাম কিছু বলা যাচ্ছে না।

সূত্র জানায়, আগামী ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্তির দিনকে দাবি আদায়ের আন্দোলন বেগবান করার টার্গেট করেছে।

এ লক্ষ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দলের নীতিনির্ধারক নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই দিন গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে কালো দিবস হিসেবে পালন করবে বিএনপি।

বিএনপি নীতিনির্ধারক সূত্র জানায়, কর্মসূচির ধরন হিসেবে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থক এবং শ্রেণী-পেশার সব মানুষকে রাস্তায় নেমে কিছুক্ষণ হাতে হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।

বিএনপির হাইকমান্ড মনে করেন, শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তায় দাঁড়ালে সরকার কোনো বাধা দেবে না। এতে দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সমর্থকসহ সাধারণ মানুষও যোগ দিতে পারে।

যাতে রাজপথে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম হতে পারে। যা দেশি ও বিদেশি মিডিয়ায় প্রচার হলে জনগণ ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের পক্ষে সায় দিয়েছে বলে দাবি করবে দলটি।

বিদেশে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের শাখার নেতাকর্মী ও সমর্থকদেরও একই কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দেওয়া হবে।

বিদেশের মাটিতে একযোগে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি হলে প্রভাবশালী বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থাগুলোর নজরে আসবে বলে মনে করেন দলটির হাইকমান্ড।

সূত্র জানায়, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সরকারবিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচিতে ‘পরিবর্তন’ আনতে চাইছেন বিএনপি হাইকমান্ড।

এ লক্ষ্যে দলীয় নেতাদের পাশাপাশি দল-সমর্থিত বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের পরামর্শ নিচ্ছেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

ঢাকা মহানগরে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার পাশাপাশি আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

এর আগে আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি, দলের সহসভাপতি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি প্রধান।

তারাও আন্দোলনের আগে ঢাকা মহানগর দলের পুনর্গঠন, জোটের বাইরে দলগুলোকে আন্দোলনে সামিল এবং জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলনে নামার পরামর্শ দিয়েছেন।

বিএনপি সূত্র আরো জানায়, জোট ও দলের নেতা এবং বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শের সঙ্গে নিজের অতীত অভিজ্ঞতাকে সমন্বয় করে এবার আন্দোলনে নামতে চাচ্ছেন বিএনপি নেত্রী।

এবার আন্দোলন সফল না হওয়া পর্যন্ত ঘরে না ফেরার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে কেউ না নামলে নিজেই রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছেন খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়া মনে করেন, দেশের মানুষ বর্তমান সরকারের পরিবর্তন চায়। একই সঙ্গে বিএনপির আন্দোলনের ধরনের পরিবর্তন চায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, একদলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগকে আর সময় দেওয়া হবে না।

দাবি আদায়ে যে ধরনের কর্মসূচি দেওয়া দরকার তা দেওয়া হবে। বিএনপি চেয়ারপারসন ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি নিজেও রাজপথে নামবেন।

সূত্র জানায়, রাজপথে আন্দোলনের পাশাপাশি বিদেশিদের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়াবে বিএনপি। মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবির ব্যাপারে বিদেশিদের সমর্থন আদায়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

এ ব্যাপারে বেশ কয়েকজন নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।