ঢাকা ০৫:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

৭-১০ দিনের আন্দোলনের প্রস্তুতি বিএনপি-জামায়াতের

bnp-20-logo

২৫ ডিসেম্বর (মুরাদনগর বার্তা ডটকম) ডেস্ক রিপোর্ট:

নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি আদায়ে চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সম্ভাব্য এ আন্দোলনে তাদের অন্যতম সঙ্গী হিসেবে থাকবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ২০ দলীয় জোটের এ কর্মসূচির মধ্যে থাকবে সমাবেশ, কালো পতাকা মিছিল। যদি সমাবেশ করতে না দেওয়া হয় তবে হরতাল ও টানা অবস্থান কর্মসূচিও ঘোষণা করা হতে পারে। এ ব্যাপারে জামায়াতও অভ্যন্তরীণ সব প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে।

নির্ভরশীল সূত্রে জানা গেছে, আগামী মার্চ নাগাদ একটি জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে আওয়ামী লীগ সরকারকে বাধ্য করতে নতুন বছরের শুরুতেই রাস্তায় নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি-জামায়াত।

সূত্রমতে, বিএনপি ও জামায়াতের প্রাথমিক লক্ষ্য আগামী ২ অথবা ৩ জানুয়ারি রাজধানীতে সমাবেশ আয়োজন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কিংবা সরকারের ইতিবাচক সাড়া না মিললে ৭২ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এরপর ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সরকার গণতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করলেও ওই দিন কালো পতাকা মিছিলের চেষ্টা করবে বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা। এতে বাধা আসলে সর্বশেষ মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে সংলাপের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেবে বিএনপি। এতেও কাজ না হলেও ৭ অথবা ১০ জানুয়ারি থেকে টানা ৭ থেকে ১০ দিনের অঘোষিত অবস্থান কর্মসূচিতে যাবে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা।

সূত্রমতে, জানুয়ারি মাসের ৭, ৮, ৯ এবং ১১, ১২, ১৩ তারিখ বিশ্ব ইজতেমার সম্ভাব্য দিন হতে পারে। দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমাকেও টার্গেট করে আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে পারে বিএনপি জোট। এতে করে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী, অন্যান্য কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক বিএনপির শরিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের সহজে রাজধানীতে প্রবেশ করানো যাবে।

তবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবদুস সালাম বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘ধর্মকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ। জোটের কর্মসূচি তার নিজস্ব নীতিতে চলবে।’

বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্রমতে, ২ অথবা ৩ জানুয়ারি সমাবেশ করতে না দিলে হরতাল আসবে। এ হরতাল বাস্তবায়নের গতি-প্রকৃতির ওপর নির্ভর করবে চূড়ান্ত কর্মসূচি। হরতাল কর্মসূচি বাস্তবায়নে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ হলেই কেবল সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করা হবে। আর ব্যর্থ হলে আরও সময় নেবেন খালেদা জিয়া।

সূত্রমতে, আন্দোলন কর্মসূচি বাস্তবায়নে রাজধানীকে ২০টি এলাকায় ভাগ করে মাঠে নামবে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এছাড়াও মহানগরীর প্রতিটি থানাভিত্তিক বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে করা হবে সংগ্রাম কমিটি।

আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত এক বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারকে মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বলা হচ্ছে। কারণ, এটি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীরও ওয়াদা ছিল। কিন্তু এখন তিনি অস্বীকার করছেন। তার দলের নেতারা অশ্লীল, অগণতান্ত্রিক উপায়ে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আক্রমণ করছেন। এ অবস্থায় শক্ত কর্মসূচি ছাড়া বিএনপির সামনে কোনও পথ নেই।’

তবে আন্দোলনের বিষয়ে জামায়াত সংশ্লিষ্ট এক সূত্রের দাবি, সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন খালেদা জিয়া। এছাড়া জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানকে এ বিষয়ে জানাতে পারেন তিনি। মূল কর্মসূচি সম্পর্কে বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা এখনও অন্ধকারে। দাবি আদায়ের আন্দোলনে এখন খালেদা নিজ দলের ওপরই ভরসা করতে পারছেন না।

যদিও এ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার সদস্য ডা. রিদওয়ানুল্লাহ শাহেদি। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এ ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত বা বিষয় নেই। পুরো কর্মসূচির বিষয়টি ম্যাডাম ঠিক করছেন জোটের শরিকদের সঙ্গে পরামর্শ করে।’

জোটের আন্দোলনে জামায়াতের সক্রিয়তা ও প্রস্তুতির ব্যাপারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার একজন প্রবীণ সদস্য যিনি বর্তমানে ঢাকা মহানগর জামায়াতের একটি অঞ্চলের দায়িত্বশীল নেতা জানান, বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের অন্যান্য দলগুলো সক্রিয় হওয়ার ওপর নির্ভর করছে জামায়াতের সক্রিয়তা।

গত মঙ্গলবার মোবাইল ফোনে এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গত বছরের মতো ২০১৫ সালে জামায়াত একা মার খেতে চায় না। এখন থেকে বিএনপি শুরু করবে, জামায়াত শেষ করবে। অন্যান্য দলগুলো সহযোগিতা করবে।’

এছাড়া এই জামায়াত নেতার মতে, সরকার পতনের পর নতুন সরকার ২০ দলীয় জোট গঠন করলে ওই সরকারে জামায়াতের কী পরিমাণ অংশগ্রহণ থাকবে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম এবং সাজাপ্রাপ্ত জামায়াত নেতাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে-এসব বিষয়ও ওঠে আসছে।

তবে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘এসব কেবল আপনাদের অনুমান। রাজনৈতিক বাস্তবতায় এ ধরনের অনুমানের কোনও মূল্য নেই। জোট তার নিজস্ব গতিতে চলবে। নির্বাচন হবে, হলে পরে ক্ষমতায় যদি জোট আসে, তখন সেটি আলোচ্য বিষয় হতে পারে। এর বেশি নয়।’  বাংলা ট্রিবিউন

– See more at: http://www.1newsbd.com/2014/12/25/37590#sthash.J2tn6wRn.dpuf

ট্যাগস

৭-১০ দিনের আন্দোলনের প্রস্তুতি বিএনপি-জামায়াতের

আপডেট সময় ০৪:৩৩:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪

bnp-20-logo

২৫ ডিসেম্বর (মুরাদনগর বার্তা ডটকম) ডেস্ক রিপোর্ট:

নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি আদায়ে চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সম্ভাব্য এ আন্দোলনে তাদের অন্যতম সঙ্গী হিসেবে থাকবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ২০ দলীয় জোটের এ কর্মসূচির মধ্যে থাকবে সমাবেশ, কালো পতাকা মিছিল। যদি সমাবেশ করতে না দেওয়া হয় তবে হরতাল ও টানা অবস্থান কর্মসূচিও ঘোষণা করা হতে পারে। এ ব্যাপারে জামায়াতও অভ্যন্তরীণ সব প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে।

নির্ভরশীল সূত্রে জানা গেছে, আগামী মার্চ নাগাদ একটি জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে আওয়ামী লীগ সরকারকে বাধ্য করতে নতুন বছরের শুরুতেই রাস্তায় নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি-জামায়াত।

সূত্রমতে, বিএনপি ও জামায়াতের প্রাথমিক লক্ষ্য আগামী ২ অথবা ৩ জানুয়ারি রাজধানীতে সমাবেশ আয়োজন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কিংবা সরকারের ইতিবাচক সাড়া না মিললে ৭২ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এরপর ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সরকার গণতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করলেও ওই দিন কালো পতাকা মিছিলের চেষ্টা করবে বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা। এতে বাধা আসলে সর্বশেষ মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে সংলাপের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেবে বিএনপি। এতেও কাজ না হলেও ৭ অথবা ১০ জানুয়ারি থেকে টানা ৭ থেকে ১০ দিনের অঘোষিত অবস্থান কর্মসূচিতে যাবে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা।

সূত্রমতে, জানুয়ারি মাসের ৭, ৮, ৯ এবং ১১, ১২, ১৩ তারিখ বিশ্ব ইজতেমার সম্ভাব্য দিন হতে পারে। দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমাকেও টার্গেট করে আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে পারে বিএনপি জোট। এতে করে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী, অন্যান্য কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক বিএনপির শরিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের সহজে রাজধানীতে প্রবেশ করানো যাবে।

তবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবদুস সালাম বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘ধর্মকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ। জোটের কর্মসূচি তার নিজস্ব নীতিতে চলবে।’

বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্রমতে, ২ অথবা ৩ জানুয়ারি সমাবেশ করতে না দিলে হরতাল আসবে। এ হরতাল বাস্তবায়নের গতি-প্রকৃতির ওপর নির্ভর করবে চূড়ান্ত কর্মসূচি। হরতাল কর্মসূচি বাস্তবায়নে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ হলেই কেবল সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করা হবে। আর ব্যর্থ হলে আরও সময় নেবেন খালেদা জিয়া।

সূত্রমতে, আন্দোলন কর্মসূচি বাস্তবায়নে রাজধানীকে ২০টি এলাকায় ভাগ করে মাঠে নামবে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এছাড়াও মহানগরীর প্রতিটি থানাভিত্তিক বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে করা হবে সংগ্রাম কমিটি।

আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত এক বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারকে মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বলা হচ্ছে। কারণ, এটি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীরও ওয়াদা ছিল। কিন্তু এখন তিনি অস্বীকার করছেন। তার দলের নেতারা অশ্লীল, অগণতান্ত্রিক উপায়ে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আক্রমণ করছেন। এ অবস্থায় শক্ত কর্মসূচি ছাড়া বিএনপির সামনে কোনও পথ নেই।’

তবে আন্দোলনের বিষয়ে জামায়াত সংশ্লিষ্ট এক সূত্রের দাবি, সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন খালেদা জিয়া। এছাড়া জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানকে এ বিষয়ে জানাতে পারেন তিনি। মূল কর্মসূচি সম্পর্কে বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা এখনও অন্ধকারে। দাবি আদায়ের আন্দোলনে এখন খালেদা নিজ দলের ওপরই ভরসা করতে পারছেন না।

যদিও এ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার সদস্য ডা. রিদওয়ানুল্লাহ শাহেদি। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এ ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত বা বিষয় নেই। পুরো কর্মসূচির বিষয়টি ম্যাডাম ঠিক করছেন জোটের শরিকদের সঙ্গে পরামর্শ করে।’

জোটের আন্দোলনে জামায়াতের সক্রিয়তা ও প্রস্তুতির ব্যাপারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার একজন প্রবীণ সদস্য যিনি বর্তমানে ঢাকা মহানগর জামায়াতের একটি অঞ্চলের দায়িত্বশীল নেতা জানান, বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের অন্যান্য দলগুলো সক্রিয় হওয়ার ওপর নির্ভর করছে জামায়াতের সক্রিয়তা।

গত মঙ্গলবার মোবাইল ফোনে এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গত বছরের মতো ২০১৫ সালে জামায়াত একা মার খেতে চায় না। এখন থেকে বিএনপি শুরু করবে, জামায়াত শেষ করবে। অন্যান্য দলগুলো সহযোগিতা করবে।’

এছাড়া এই জামায়াত নেতার মতে, সরকার পতনের পর নতুন সরকার ২০ দলীয় জোট গঠন করলে ওই সরকারে জামায়াতের কী পরিমাণ অংশগ্রহণ থাকবে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম এবং সাজাপ্রাপ্ত জামায়াত নেতাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে-এসব বিষয়ও ওঠে আসছে।

তবে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘এসব কেবল আপনাদের অনুমান। রাজনৈতিক বাস্তবতায় এ ধরনের অনুমানের কোনও মূল্য নেই। জোট তার নিজস্ব গতিতে চলবে। নির্বাচন হবে, হলে পরে ক্ষমতায় যদি জোট আসে, তখন সেটি আলোচ্য বিষয় হতে পারে। এর বেশি নয়।’  বাংলা ট্রিবিউন

– See more at: http://www.1newsbd.com/2014/12/25/37590#sthash.J2tn6wRn.dpuf