ঢাকা ১০:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বাঞ্ছারামপুরে অবৈধ  গ্যাস সিলিন্ডার আতংক

ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মনবাড়িয়া) প্রতিনিধি ঃ

বাঞ্ছারামপুরে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার নামে ‘বোমা’। যেকোনো সময় বিস্ফোরণে ঘটতে পারে অনেক প্রাণহানি। সাম্প্রতিক সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে বহু প্রাণহানি ঘটলেও সংশ্লিষ্ট কারো কোনো ভ্রক্ষেপ নেই। হাটবাজার ও খোলা দোকানপাটে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। এসব সিলিন্ডারের বেশির ভাগই পুরনো; যে কারণে ঝুঁকি আরো বেশি। নিয়মানুযায়ী গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে হলে ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স, জ্বালানি অধিদফতরের লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ও পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স অবশ্যই থাকতে হবে।

এমনকি গ্যাস সিলিন্ডার মজুদের স্থানটিও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের প্রয়োজন। কিন্তু কোনো নিয়মই কোথায়ও মানা হচ্ছে না। ফলে বাড়ছে জীবনঝুঁকি।বিস্ফোরক পরিদফতরের নিয়ম অনুযায়ী গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে হলে বিস্ফোরক পরিদফতরের লাইসেন্স বাধ্যতামূলক। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের হাটবাজার ও গ্রামগঞ্জে শতাধিক গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির দোকান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান সরকারি আইন ও নীতিমালার তোয়াক্কা না করে দেদারছে বিক্রি করছে গ্যাস সিলিন্ডার। এর মধ্যে হাতেগোনা মাত্র চার-পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স আছে। ২০০৩ সালের দাহ্য পদার্থ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি যদি লাইসেন্স না নিয়ে বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবসা করে তবে তার তিন বছরের কারাদণ্ড ও অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।

সরেজমিন বাঞ্ছারামপুর উপজেলার হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুদির দোকান, সারের দোকান, আবাসিক ভবন, লাকড়ির দোকান, ওষুধের দোকান, চায়ের দোকানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশসহ জনবহুল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানেও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। বেশির ভাগ দোকানে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নেই। কিছু দোকানে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র টাঙানো থাকলেও জানা নেই তার ব্যবহার। অনেকের যন্ত্রগুলো অকেজো ও মেয়াদোত্তীর্ণ।

গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ক্ষেত্রে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি দেয়ার বিধান থাকলেও কখনো কোনো অভিযান পরিচালনা করতেদেখা যায়নি । নজরদারি না থাকায় যত্রতত্র চলছে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি। ফলে সাধারণ মানুষ মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তা ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে বাসা বাড়িতে ঘটছে দুর্ঘটনা ঘটছে।মাস দুয়েক আগে চকবাজারে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারনে ২ শিশু মারা গেছে।

বাজারের এক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সুমন বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে লাইসেন্স করে ব্যবসা পরিচালনা করছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় বতর্মানে পান দোকান, মুদি দোকান, ওষুধ দোকানসহ বিভিন্ন অনিরাপদ স্থানে গ্যাসের সিলিন্ডার ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তদারকি না থাকায় লাইসেন্স ছাড়া নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে দেদারছে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। তাই আগামী বছর থেকে আমার লাইসেন্সের নবায়ন করব না। নবায়ন করে কী লাভ- যদি লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা করা যায়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

বাঞ্ছারামপুরে অবৈধ  গ্যাস সিলিন্ডার আতংক

আপডেট সময় ০৩:১৬:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ মে ২০২২

ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মনবাড়িয়া) প্রতিনিধি ঃ

বাঞ্ছারামপুরে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার নামে ‘বোমা’। যেকোনো সময় বিস্ফোরণে ঘটতে পারে অনেক প্রাণহানি। সাম্প্রতিক সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে বহু প্রাণহানি ঘটলেও সংশ্লিষ্ট কারো কোনো ভ্রক্ষেপ নেই। হাটবাজার ও খোলা দোকানপাটে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। এসব সিলিন্ডারের বেশির ভাগই পুরনো; যে কারণে ঝুঁকি আরো বেশি। নিয়মানুযায়ী গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে হলে ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স, জ্বালানি অধিদফতরের লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ও পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স অবশ্যই থাকতে হবে।

এমনকি গ্যাস সিলিন্ডার মজুদের স্থানটিও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের প্রয়োজন। কিন্তু কোনো নিয়মই কোথায়ও মানা হচ্ছে না। ফলে বাড়ছে জীবনঝুঁকি।বিস্ফোরক পরিদফতরের নিয়ম অনুযায়ী গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে হলে বিস্ফোরক পরিদফতরের লাইসেন্স বাধ্যতামূলক। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের হাটবাজার ও গ্রামগঞ্জে শতাধিক গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির দোকান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান সরকারি আইন ও নীতিমালার তোয়াক্কা না করে দেদারছে বিক্রি করছে গ্যাস সিলিন্ডার। এর মধ্যে হাতেগোনা মাত্র চার-পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স আছে। ২০০৩ সালের দাহ্য পদার্থ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি যদি লাইসেন্স না নিয়ে বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবসা করে তবে তার তিন বছরের কারাদণ্ড ও অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।

সরেজমিন বাঞ্ছারামপুর উপজেলার হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুদির দোকান, সারের দোকান, আবাসিক ভবন, লাকড়ির দোকান, ওষুধের দোকান, চায়ের দোকানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশসহ জনবহুল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানেও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। বেশির ভাগ দোকানে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নেই। কিছু দোকানে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র টাঙানো থাকলেও জানা নেই তার ব্যবহার। অনেকের যন্ত্রগুলো অকেজো ও মেয়াদোত্তীর্ণ।

গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ক্ষেত্রে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি দেয়ার বিধান থাকলেও কখনো কোনো অভিযান পরিচালনা করতেদেখা যায়নি । নজরদারি না থাকায় যত্রতত্র চলছে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি। ফলে সাধারণ মানুষ মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তা ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে বাসা বাড়িতে ঘটছে দুর্ঘটনা ঘটছে।মাস দুয়েক আগে চকবাজারে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারনে ২ শিশু মারা গেছে।

বাজারের এক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সুমন বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে লাইসেন্স করে ব্যবসা পরিচালনা করছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় বতর্মানে পান দোকান, মুদি দোকান, ওষুধ দোকানসহ বিভিন্ন অনিরাপদ স্থানে গ্যাসের সিলিন্ডার ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তদারকি না থাকায় লাইসেন্স ছাড়া নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে দেদারছে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। তাই আগামী বছর থেকে আমার লাইসেন্সের নবায়ন করব না। নবায়ন করে কী লাভ- যদি লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা করা যায়।