ঢাকা ০৪:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে মুরাদনগর গোমতী নদীর উপর ব্রীজ নির্মানের জট অবসান হচ্ছে!

রায়হান চৌধুরী, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় গোমতী নদীর ওপর বহুল প্রতীক্ষিত সেতু নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে চলমান জটিলতা কাটানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে। ২০ ফুট উচ্চতা নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের টানাপোড়েন থমকে থাকা প্রকল্পটি পুনরায় আলোচনায় এসেছে।

অনলাইন পোর্টাল মুরাদনগর বার্তায় বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সওজ, পাউবো ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে জরুরি বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান জানান, প্রকল্পের নকশা নিয়ে মতবিরোধ নিরসনে আমরা আলোচনায় বসছি। আশা করছি দ্রুত সমাধান আসবে।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেৱার কবি নজরুল মিলনায়তনে এই বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সূত্র জানায়, সওজ ও পাউবো উভয় দপ্তরের প্রকৌশলীরা গোমতী নদীর স্রোতধারা, নাব্যতা ও বন্যার পানি প্রবাহের বাস্তব পরিস্থিতি যাচাই করে নতুন সমন্বিত প্রস্তাব প্রস্তুত করছেন। এতে সেতুর উচ্চতা বিষয়ে একটি মধ্যম সমাধান আসতে পারে বলে আশাবাদী স্থানীয় প্রশাসন।

এর আগে, পাউবো দাবি করে বর্তমান বেইলি সেতুর চেয়ে অন্তত ২০ ফুট উঁচুতে নতুন সেতু নির্মাণ করতে হবে, যাতে নদীর পানি প্রবাহ ব্যাহত না হয়। অন্যদিকে, সওজ জানায়, এত উচ্চতায় সেতু নির্মাণ বাস্তবসম্মত নয় এবং ব্যয়ও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। এ মতবিরোধের জেরেই ৮৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার বরাদ্দ স্থগিত হয়ে যায়।

এদিকে এলাকাবাসী এখনও চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন। ১৯৮৮ সালে নির্মিত জীর্ণ বেইলি সেতুটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। ভারী যানবাহন উঠলেই সেতু কেঁপে ওঠে, যে কোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার টাকা দিয়েছে, কিন্তু দুই অফিসের দ্বন্দ্বে উন্নয়ন আটকে আছে। আমরা উন্নয়ন চাই, ঝগড়া নয়।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ৩৪৮ কোটি ২৬ লাখ টাকার “মুরাদনগর-দাউদকান্দি সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প” একনেকে অনুমোদনের পর তিনটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে প্রথম দুটি প্যাকেজের কাজ এগোলেও তৃতীয় প্যাকেজ—যেটিতে গোমতী সেতু রয়েছে, থেমে গেছে অনুমোদন জটের কারণে।

উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, প্রকাশিত প্রতিবেদনটি উচ্চপর্যায়ে গুরুত্ব পেয়েছে। মন্ত্রণালয় পর্যায় থেকেও বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর আন্তরিকতায় যদি শিগগির সমঝোতা হয়, তাহলে বহু বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে এবং গোমতীর বুকে উঠবে স্বপ্নের সেতু।

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে পতিতাবৃত্তি মানবপাচার ব্যবসার অভিযোগে গ্রেফতার ৬জন

অবশেষে মুরাদনগর গোমতী নদীর উপর ব্রীজ নির্মানের জট অবসান হচ্ছে!

আপডেট সময় ০৪:৩৩:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

রায়হান চৌধুরী, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় গোমতী নদীর ওপর বহুল প্রতীক্ষিত সেতু নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে চলমান জটিলতা কাটানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে। ২০ ফুট উচ্চতা নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের টানাপোড়েন থমকে থাকা প্রকল্পটি পুনরায় আলোচনায় এসেছে।

অনলাইন পোর্টাল মুরাদনগর বার্তায় বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সওজ, পাউবো ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে জরুরি বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান জানান, প্রকল্পের নকশা নিয়ে মতবিরোধ নিরসনে আমরা আলোচনায় বসছি। আশা করছি দ্রুত সমাধান আসবে।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেৱার কবি নজরুল মিলনায়তনে এই বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সূত্র জানায়, সওজ ও পাউবো উভয় দপ্তরের প্রকৌশলীরা গোমতী নদীর স্রোতধারা, নাব্যতা ও বন্যার পানি প্রবাহের বাস্তব পরিস্থিতি যাচাই করে নতুন সমন্বিত প্রস্তাব প্রস্তুত করছেন। এতে সেতুর উচ্চতা বিষয়ে একটি মধ্যম সমাধান আসতে পারে বলে আশাবাদী স্থানীয় প্রশাসন।

এর আগে, পাউবো দাবি করে বর্তমান বেইলি সেতুর চেয়ে অন্তত ২০ ফুট উঁচুতে নতুন সেতু নির্মাণ করতে হবে, যাতে নদীর পানি প্রবাহ ব্যাহত না হয়। অন্যদিকে, সওজ জানায়, এত উচ্চতায় সেতু নির্মাণ বাস্তবসম্মত নয় এবং ব্যয়ও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। এ মতবিরোধের জেরেই ৮৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার বরাদ্দ স্থগিত হয়ে যায়।

এদিকে এলাকাবাসী এখনও চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন। ১৯৮৮ সালে নির্মিত জীর্ণ বেইলি সেতুটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। ভারী যানবাহন উঠলেই সেতু কেঁপে ওঠে, যে কোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার টাকা দিয়েছে, কিন্তু দুই অফিসের দ্বন্দ্বে উন্নয়ন আটকে আছে। আমরা উন্নয়ন চাই, ঝগড়া নয়।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ৩৪৮ কোটি ২৬ লাখ টাকার “মুরাদনগর-দাউদকান্দি সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প” একনেকে অনুমোদনের পর তিনটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে প্রথম দুটি প্যাকেজের কাজ এগোলেও তৃতীয় প্যাকেজ—যেটিতে গোমতী সেতু রয়েছে, থেমে গেছে অনুমোদন জটের কারণে।

উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, প্রকাশিত প্রতিবেদনটি উচ্চপর্যায়ে গুরুত্ব পেয়েছে। মন্ত্রণালয় পর্যায় থেকেও বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর আন্তরিকতায় যদি শিগগির সমঝোতা হয়, তাহলে বহু বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে এবং গোমতীর বুকে উঠবে স্বপ্নের সেতু।