ঢাকা ০৩:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মালয়েশিয়ার কন্টেইনারে পাওয়া কিশোর কুমিল্লার রাতুল

কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ

মালয়েশিয়ার একটি বন্দরে খালি কন্টেইনারে পাওয়া বাংলাদেশি কিশোরের পরিচয় পাওয়া গেছে। গত ১৬ জানুয়ারি ওই কিশোরকে উদ্ধারের পর বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়।

প্রথমে তাকে রোহিঙ্গা শিশু ধারণা করা হলেও অবশেষে মিলেছে কিশোরের পরিচয়। সে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার সাতপুকুরিয়া গ্রামের ফারুক মিয়ার ছেলে রাতুল ইসলাম ফাহিম (১৫)। 

পরিবার দাবি করেছে, রাতুল মানসিক ভারসাম্যহীন। মিডিয়ায় ছবি দেখে ছেলেকে শনাক্ত করেছে রাতুলের বাবা ফারুক মিয়া। বর্তমানে রাতুল মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। রাতুলকে ফিরে পেতে তার বাবা-মা ও স্বজনেরা সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

রাতুলের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফারুক মিয়ার ৩ ছেলে। রাতুল সবার বড়। দিনমজুরের কাজ করে কোনো রকম দিন যাচ্ছে তার পরিবারের। তবে কবে কখন রাতুল কন্টেইনারে করে মালয়েশিয়া গিয়েছে তা জানেন না তার পরিবার।

রাতুলের বাবা ফারুক মিয়া জানান, প্রায় ২ মাস আগে বাসা থেকে বের হয় রাতুল। এর পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। অসুস্থ সন্তানকে হারিয়ে শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারের সদস্যদের মাঝে। সন্তানকে খোঁজে পেতে তার বাবা-মা সব আত্মীয় স্বজনদের বাসায় খোঁজ খবর নেয়, কিন্তু কোথাও কোনো খোঁজ মিলে না রাতুলের। ছেলে হারানোর বিষয়ে তিনি থানায় জিডি করেননি। 

রাতুলের মা রোকেয়া বেগম জানান, আমি আমার সন্তানকে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। আপনারা আমার ছেলেকে ফিরিয়ে এনে দেন। আমি সরকারের কাছে আকুল আবেদন করছি। যেন সরকার আমার ছেলেকে আমার বুকে ফিরিয়ে দেয়। 

শনিবার সন্ধ্যায় মনোহরগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল আলম জানান, রাতুলের বাবা ফারুক মিয়া ১৫-১৬ বছর চট্টগ্রাম শহরে থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ওই সময় রাতুল তার মা-বাবার সঙ্গে চট্টগ্রামে বসবাস করতো। গত ৫ বছর পূর্বে ফারুক মিয়া রাজমিস্ত্রির পেশা ছেড়ে চট্টগ্রাম থেকে স্ব-পরিবারে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। এবং কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এ সময় রাতুল মাঝে মধ্যে তার বাবা-মাকে ছেড়ে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হতো। কয়েকদিন পর আবার নিজেই বাড়ি ফিরে আসতো। আবারও নিখোঁজ হওয়ার পর বাড়ি ফিরে আসবে এমন আশায় তার বাবা ফারুক হোসেন থানায় জিডি করেননি।
 
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গত ১২ জানুয়ারি ছেড়ে যাওয়া ‘এমভি ইন্টেগ্রা’ জাহাজের একটি খালি কন্টেইনারে আটকা পড়ে রাতুল। জাহাজটি মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে যাওয়ার পর ১৬ জানুয়ারি কন্টেইনারের ভেতর থেকে শব্দ শুনতে পান নাবিকেরা। এরপরই কেলাং বন্দরকে অবহিত করা হয়। পরদিন ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় জাহাজটি জেটিতে এনে কন্টেইনার খুলে রাতুলকে উদ্ধার করা হয়। 

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মালয়েশিয়ার কন্টেইনারে পাওয়া কিশোর কুমিল্লার রাতুল

আপডেট সময় ০৩:১৫:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৩

কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ

মালয়েশিয়ার একটি বন্দরে খালি কন্টেইনারে পাওয়া বাংলাদেশি কিশোরের পরিচয় পাওয়া গেছে। গত ১৬ জানুয়ারি ওই কিশোরকে উদ্ধারের পর বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়।

প্রথমে তাকে রোহিঙ্গা শিশু ধারণা করা হলেও অবশেষে মিলেছে কিশোরের পরিচয়। সে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার সাতপুকুরিয়া গ্রামের ফারুক মিয়ার ছেলে রাতুল ইসলাম ফাহিম (১৫)। 

পরিবার দাবি করেছে, রাতুল মানসিক ভারসাম্যহীন। মিডিয়ায় ছবি দেখে ছেলেকে শনাক্ত করেছে রাতুলের বাবা ফারুক মিয়া। বর্তমানে রাতুল মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। রাতুলকে ফিরে পেতে তার বাবা-মা ও স্বজনেরা সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

রাতুলের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফারুক মিয়ার ৩ ছেলে। রাতুল সবার বড়। দিনমজুরের কাজ করে কোনো রকম দিন যাচ্ছে তার পরিবারের। তবে কবে কখন রাতুল কন্টেইনারে করে মালয়েশিয়া গিয়েছে তা জানেন না তার পরিবার।

রাতুলের বাবা ফারুক মিয়া জানান, প্রায় ২ মাস আগে বাসা থেকে বের হয় রাতুল। এর পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। অসুস্থ সন্তানকে হারিয়ে শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারের সদস্যদের মাঝে। সন্তানকে খোঁজে পেতে তার বাবা-মা সব আত্মীয় স্বজনদের বাসায় খোঁজ খবর নেয়, কিন্তু কোথাও কোনো খোঁজ মিলে না রাতুলের। ছেলে হারানোর বিষয়ে তিনি থানায় জিডি করেননি। 

রাতুলের মা রোকেয়া বেগম জানান, আমি আমার সন্তানকে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। আপনারা আমার ছেলেকে ফিরিয়ে এনে দেন। আমি সরকারের কাছে আকুল আবেদন করছি। যেন সরকার আমার ছেলেকে আমার বুকে ফিরিয়ে দেয়। 

শনিবার সন্ধ্যায় মনোহরগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল আলম জানান, রাতুলের বাবা ফারুক মিয়া ১৫-১৬ বছর চট্টগ্রাম শহরে থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ওই সময় রাতুল তার মা-বাবার সঙ্গে চট্টগ্রামে বসবাস করতো। গত ৫ বছর পূর্বে ফারুক মিয়া রাজমিস্ত্রির পেশা ছেড়ে চট্টগ্রাম থেকে স্ব-পরিবারে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। এবং কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এ সময় রাতুল মাঝে মধ্যে তার বাবা-মাকে ছেড়ে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হতো। কয়েকদিন পর আবার নিজেই বাড়ি ফিরে আসতো। আবারও নিখোঁজ হওয়ার পর বাড়ি ফিরে আসবে এমন আশায় তার বাবা ফারুক হোসেন থানায় জিডি করেননি।
 
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গত ১২ জানুয়ারি ছেড়ে যাওয়া ‘এমভি ইন্টেগ্রা’ জাহাজের একটি খালি কন্টেইনারে আটকা পড়ে রাতুল। জাহাজটি মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে যাওয়ার পর ১৬ জানুয়ারি কন্টেইনারের ভেতর থেকে শব্দ শুনতে পান নাবিকেরা। এরপরই কেলাং বন্দরকে অবহিত করা হয়। পরদিন ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় জাহাজটি জেটিতে এনে কন্টেইনার খুলে রাতুলকে উদ্ধার করা হয়।