ঢাকা ০২:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে মাইকে ডাকাত ঘোষনা দিয়ে শ্বশুর বাড়িতে বড়সহ দুই জনকে পিটিয়ে হত্যা, আহত এক

মোঃ মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় মেসজিদের মাইকে ডাকাত ঘোষনা দিয়ে শ্বশুর বাড়িতে বেরাতে আসা বড়সহ ঘর থেকে ডেকে নিয়ে দুই জনকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। তবে নিহতরা ডাকতকিনা সেটি কোন সূত্রেই নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। তবে হতাহতরা কারোর বাড়ীতে ডাকাতি করেছে, এমন কোন সতত্য না পাওয়ায় হত্যার ঘটনাটি কি পরিকল্পিত হত্য়া, না সন্দেহে হত্যা এই নিয়ে সচেতন মহলে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার ভোর রাতে উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের পালসুতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো, উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে নুরু মিয়া(২৮) ও একই উপজেলার পালাসুতা গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ইসমাইল হোসেন(২৭)।

অপর একজন আহত সদর দক্ষিন থানার বাগমারা গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে শাহজাহান মুমূর্ষ অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় সুত্রে জানায়, বোড়ারচর গ্রামে ডাকাতি করতে এসে ধাওয়া খেয়ে ডাকাত দলের ৩ সদস্য পালাসুতা গ্রামের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে এমন খবর এলাকার মাইকে ঘোষনা করলে আশপাশের কয়েক গ্রামের সহ¯্রাধিক লোকজন জড়ো হয়ে ডাকাত সন্দেহে নাবু মিয়ার ঘর থেকে তার মেয়ের স্বামী ও দুই বন্দুদের ডাক সন্দেহে ঘর থেকে ধরে এনে গণপিটুনি দেয়। এতে তিনজনই গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে মুরাদনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজনের মৃত্যু হয়।

নিহত ইসমাইল হোসেনের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার ছেলে টুকিটাকি চুরির সাথে জড়িত থাকলেও ডাকাতির মতো কোন ঘটনার সাথে জড়িত না। গতকাল বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গেছে নুরু মিয়া তার শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য। আমার ছেলে যদি কোন অপরাধ করে থাকে তাহলে তারা আমাকে বলতে পারতো আমার ছেলেকে তো তারা একবারে মেরে ফেলতে পারেনা। আমি এর সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার চাই।

এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, নিহত ও আহতদের পরিচয় সর্ম্পকে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহত নুরু মিয়ার শ্বশুর বাড়ী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে দুইরকম তথ্য পাওয়া যাচ্ছে! কেহই সুনির্দিষ্ট ভাবে তাদেরকে কোথায় ও কার বাড়িতে ডাকাতি বা ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলো তার কোন তথ্য দিতে পারেনি! তাদের অতীত কর্মকান্ড যাচাই করা হচ্ছে। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মর্গে) পাঠানো হয়েছে। আমাদের কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার স্যার বিষয়টি পর্যবেক্ষনে রেখেছেন। তদন্তকরে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, কি কারনে তাদেরকে গনপিটুনি দেয়া হয়েছে সেটা এখনো স্পস্ট নয়। আমরা চিকিৎসাধীন একজনের বক্তব্য নিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে মাইকে ডাকাত ঘোষনা দিয়ে শ্বশুর বাড়িতে বড়সহ দুই জনকে পিটিয়ে হত্যা, আহত এক

আপডেট সময় ০৫:১৪:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৩

মোঃ মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় মেসজিদের মাইকে ডাকাত ঘোষনা দিয়ে শ্বশুর বাড়িতে বেরাতে আসা বড়সহ ঘর থেকে ডেকে নিয়ে দুই জনকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। তবে নিহতরা ডাকতকিনা সেটি কোন সূত্রেই নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। তবে হতাহতরা কারোর বাড়ীতে ডাকাতি করেছে, এমন কোন সতত্য না পাওয়ায় হত্যার ঘটনাটি কি পরিকল্পিত হত্য়া, না সন্দেহে হত্যা এই নিয়ে সচেতন মহলে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার ভোর রাতে উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের পালসুতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো, উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে নুরু মিয়া(২৮) ও একই উপজেলার পালাসুতা গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ইসমাইল হোসেন(২৭)।

অপর একজন আহত সদর দক্ষিন থানার বাগমারা গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে শাহজাহান মুমূর্ষ অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় সুত্রে জানায়, বোড়ারচর গ্রামে ডাকাতি করতে এসে ধাওয়া খেয়ে ডাকাত দলের ৩ সদস্য পালাসুতা গ্রামের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে এমন খবর এলাকার মাইকে ঘোষনা করলে আশপাশের কয়েক গ্রামের সহ¯্রাধিক লোকজন জড়ো হয়ে ডাকাত সন্দেহে নাবু মিয়ার ঘর থেকে তার মেয়ের স্বামী ও দুই বন্দুদের ডাক সন্দেহে ঘর থেকে ধরে এনে গণপিটুনি দেয়। এতে তিনজনই গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে মুরাদনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজনের মৃত্যু হয়।

নিহত ইসমাইল হোসেনের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার ছেলে টুকিটাকি চুরির সাথে জড়িত থাকলেও ডাকাতির মতো কোন ঘটনার সাথে জড়িত না। গতকাল বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গেছে নুরু মিয়া তার শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য। আমার ছেলে যদি কোন অপরাধ করে থাকে তাহলে তারা আমাকে বলতে পারতো আমার ছেলেকে তো তারা একবারে মেরে ফেলতে পারেনা। আমি এর সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার চাই।

এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, নিহত ও আহতদের পরিচয় সর্ম্পকে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহত নুরু মিয়ার শ্বশুর বাড়ী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে দুইরকম তথ্য পাওয়া যাচ্ছে! কেহই সুনির্দিষ্ট ভাবে তাদেরকে কোথায় ও কার বাড়িতে ডাকাতি বা ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলো তার কোন তথ্য দিতে পারেনি! তাদের অতীত কর্মকান্ড যাচাই করা হচ্ছে। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মর্গে) পাঠানো হয়েছে। আমাদের কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার স্যার বিষয়টি পর্যবেক্ষনে রেখেছেন। তদন্তকরে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, কি কারনে তাদেরকে গনপিটুনি দেয়া হয়েছে সেটা এখনো স্পস্ট নয়। আমরা চিকিৎসাধীন একজনের বক্তব্য নিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।