ঢাকা ১১:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিরাপদ থাকার কৌশল

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্কঃ

আমাদের দৈনন্দিন ইন্টারনেট ব্যবহারের বড় একটি অংশজুড়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। বিশেষত ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাটের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। যত দিন যাচ্ছে ইউজার সংখ্যাও বাড়ছে। আর এরইমধ্যে কিছু দুষ্কৃতিকারী নানাভাবে আপনার একাউন্ট নষ্ট করার চক্রান্তে মেতে আছে। মূলত অনলাইনে আপনার তথ্য চুরি কিংবা একাউন্ট চুরি করে নানা অপকর্ম করছে। অনেক সময় অনেকের টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। 

তাই নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো দরকার। অবশ্য আজকাল অনেকেই এসব বিষয়ে সতর্ক হতে শুরু করেছেন। তবু চক্রান্তকারীরা নানা ফাঁদ-কৌশল আবিষ্কারের মাধ্যমে আপনার নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে। অনলাইনে নিজেকে নিরাপদ রাখবেন কিভাবে তবে? প্রতিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমই এখন নিজেদের সেফটি ফিচার চালু করেছে। আবার কিছু কিছু নিরাপত্তা কৌশল আপনাকে নিজের ডিভাইস থেকেই করতে হবে। 

আজ মূলত এসব কৌশল নিয়েই আলোচনা করবো। মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। আপনার কাজে আসবে। 

ফেসবুকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন

সম্ভবত ফেসবুকেই আমরা নিজেদের অধিকাংশ তথ্য দিয়ে থাকি। পরিচিতরা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য জানতেই পারেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরিচিতরাও আপনার তথ্য জেনে যেতে পারে। দেখা গেছে, এসব তথ্য ব্যবহার করে সাইবার হামলা, কিংবা অন্যের আর্থিক ক্ষতির মতো ভয়ানক কাজেও জড়িয়ে পড়ে কিছু চক্র। ফেসবুকের বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করেই তারা এমনটা করে থাকে। ফেসবুকের নিরাপত্তা বিষয়ে ব্যক্তিগত কিছু ভুলেও এমনটা হয়ে থাকে। সেই বিষয়গুলোই এখানে আপনাদের জানিয়ে দেই। 

বন্ধু তালিকা
বন্ধু তালিকায় অপরিচিত কাউকে না রাখাই ভালো। এমনকি নতুন কাউকে ফ্রেন্ডলিস্টে এড করলে তার প্রোফাইল দেখে নিন। আবার সময় অসময়ে একবার ফ্রেন্ডলিস্ট চেক করুন। তাতে বুঝতে পারবেন কোন একাউন্টগুলো ইনেক্টিভ কিংবা বন্ধ। সচরাচর ফ্রেন্ড লিস্টে অপরিচিত, ফেক একাউন্ট রাখবেন না। 

নিরাপদ

ফেসবুকে প্রাইভেসি সেটিংস নির্বাচন
ফেসবুকে আপনার তথ্যগুলো কারা দেখবে, বা আদৌ দেখতে পারবে কিনা তা নির্ধারণ করুন। সেই সুযোগ আপনাকে এখন দেওয়া হয়েছে। আপনি ভালোমতোই জানেন সামাজিক মাধ্যম তথ্যকে গুরুত্ব দেয়। তাই নিজের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে অবহেলা নয়।  

পাসওয়ার্ড সচেতনতা
পাসওয়ার্ড সংরক্ষণে ও নির্ধারণে সতর্ক হন। একেবারে সহজ পাসওয়ার্ড দেওয়া উচিত না। আর সময়ে সময়ে নিজের পাসওয়ার্ড বদল করুন। এক পাসওয়ার্ড দীর্ঘদিন ব্যবহার করবেন না। 

টু-স্টেপ অথেনটিকেশন
দুই ধাপ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে একাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। এতে সহজে আপনার একাউন্টে পাসওয়ার্ড জানা সত্ত্বেও প্রবেশ করতে পারবে না। 

একই একাউন্ট থেকে পেজ ম্যানেজ করা
আজকাল ফেসবুকে ব্যবসা পরিচালনার জন্যে অনেকে একই একাউন্ট দিয়ে পেজ ম্যানেজ করেন। এতে কিন্তু আপনার নিজের একাউন্ট বিপদে পড়তে পারে। ফেসবুকে আপনাকে পেজে বিভিন্ন পদে যোগ করার সুযোগ আছে। তা ব্যবহার করুন। 

গেম বা কুইজ থেকে সতর্ক
ফেসবুকে আজকাল অনেক গেম দেখা যায়। আবার আজকাল কিছু এপ আসে যেগুলোর মাধ্যমে অন্যরা নাম গোপন রেখে আপনায় মেসেজ দিতে পারে। এ ধরণের এপ থেকে সাবধান। এতে গেম খেলার সময় আপনার অনেক তথ্য চুরি হতে পারে। একাউন্টও হারাতে পারেন।  

নিয়মিত চেকাপ
facebook.com/privacy/checkup এই লিংকের মাধ্যমে নিজের প্রোফাইলের নিরাপত্তা আপনি দেখতে পারবেন। 

ইনস্টাগ্রামে  একাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
ফেসবুকে আপনার নিরাপত্তা কিংবা প্রাইভেসি নির্ধারণ অনেক সহজ। কিন্তু ইনস্টাগ্রামে কাজটি এত সহজ নয়। ফেসবুকে প্রতিটি পোস্টে প্রাইভেসি নির্ধারণ করা যায়। ইনস্টাগ্রামে তা নেই। সেক্ষেত্রে আপনার ফলোয়ার এর অবস্থা দেখে নেবেন। অপরিচিতদের যোগ না করাই ভালো। এমনকি আপনার একাউন্ট প্রাইভেট করে রাখুন। এতে যারা আপনার সম্মতিতে যুক্ত আছে তারাই শুধু দেখতে পারবে আপনার দেওয়া ছবি বা ভিডিও।  

রিপোর্ট করুন ঝামেলা দেখলে
অনলাইনে নিজের একাউন্ট নিরাপদ রাখাটাই একমাত্র উপায় নয়। আপনাকে অনলাইনের পরিবেশকেও নিরাপদ রাখতেই হবে। কাজটির জন্যে কখনও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাজে কন্টেন্ট পেলেই রিপোর্ট করুন। আপত্তিকর পোস্ট না সরিয়ে আমরা আজকাল কমেন্টে নানা আজেবাজে তর্কে জড়িয়ে পড়ি। তাতে আপনার নানাবিধ সমস্যা যেমন সাইবার বুলিং এর শিকার হতে হয়। সেজন্যে আপত্তিকর পোস্টে নিজেকে সংযুক্ত না করে রিপোর্ট করুন। 

নিরাপদ

মেসেঞ্জার ব্যবহারে সতর্কতা
ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মেসেজ দেখতে মেসেঞ্জার এখন বহুল জনপ্রিয়। মেসেঞ্জারে কিছু বাড়তি নিরাপত্তা গ্রহণ করতে হয়। যেমন মেসেঞ্জারে যেহেতু আপনার পার্সোনাল ইনবক্স থাকে তাই একে এপলক দিয়ে সিকিউর রাখুন। এমনকি মেসেঞ্জারে চাওয়া ক্যামেরা, অডিও পার্মিশন না দেওয়াই ভালো। এতে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ থাকবে। 

ই-মেইলের নিরাপত্তা
যেকোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইমেইল ব্যবহার বাধ্যতামূলক। তাই ইমেইল নিরাপদ রাখতে প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা। শুধু আপনার ই-মেইল হ্যাক করতে পারলে হারাতে পারে অনেক কিছু। যেকোন ডিভাইসে আপনার ইমেইল দিয়ে লগিন দেবেন না। নিজের রেগুলার ডিভাইসেই মেইল একাউন্ট রাখুন। 

লোকেশন সার্ভিস বন্ধ রাখুন
লোকেশন শেয়ার সার্ভিস অপ্রয়োজনে চালু করবেন না। আবার আমরা আজকাল হুটহাট অনেককে গুগল ম্যাপের লোকেশন দিয়ে রাখি। এতে আপনার ফোনের অনেক প্রাইভেট ডাটাও অন্য কেউ চেক করতে পারে। বিশেষ প্রয়োজনে আপনি লোকেশন শেয়ার করতেই পারেন। কিন্তু লোকেশন সার্ভিস চালু রাখবেনই না। একবার ভেবে দেখুন, আপনি কোন এলাকায় আছেন তা সর্বক্ষণ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আপডেট হয়ে থাকবে। এমনভাবে নিজের প্রাইভেসি বিঘ্নিত করা মোটেও সুখবর নয়। 

অনলাইনে কেনাকাটার সময় সাবধান
একসময় ফিশিং লিংক দিয়ে অনেকের আইডি হ্যাক করা হতো। আজকাল সেই পদ্ধতিতে বদল এসেছে। মানুষ এখন অধিকাংশ কেনাকাটা অনলাইনেই করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পেজ বা লিংকের মাধ্যমে অনলাইন শপে কেনাকাটা করে। অনেক সময় কিছু লিংকে প্রবেশ করে পেমেন্ট করে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয়। পেমেন্ট করার সময় আমরা সচরাচর কার্ড ব্যবহার করি। পেমেন্ট করার পর ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করে আপনার কার্ডের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হোন। বিশেষত ডেবিট কার্ডে কিছু নিরাপত্তার খুত বের করে হ্যাকাররা টাকা চুরি করে। তাই সাবধান থাকুন।  

আর্থিক লেনদেন
ব্যাংকিং ব্যবস্থাও এখন ডিজিটাল হয়ে গেছে। আবার ব্যাংকিং বাদ হয়ে এসেছে এমএফএস। আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সবসময় সবকিছু চেক করে নেবেন। কোথাও টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রেও সবকিছু নিশ্চিত হয়ে দিবেন। আপনার পেমেন্টের প্রতিটি ইনফরমেশন এবং ট্রানজেকশনের মেসেজ সংরক্ষণ করুন। আবার অনেকের আইডি হ্যাক হওয়ার পর হ্যাকাররা পরিচিতদের কাছে টাকা চায়। আপনার সাথে এমন কিছু হলে যে ব্যক্তির আইডি তার সাথে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হোন বিষয়টি। লেনদেনের ক্ষেত্রে সবসময় প্রমাণ ও ট্র্যাকিং প্রমাণ রাখবেন। 

নিরাপদ

একাধিক যন্ত্রে লগিন দেবেন না
একাধিক যন্ত্রে লগিন দিয়ে রাখবেন না। আমরা সচরাচর সবকিছু সহজ রাখতে এমনটাই করি। আবার অফিসের ডিভাইসেও এমনটা করে থাকি। এই কাজ করবেন না। অপরিচিত কোনো ব্রাউজারে যদি প্রবেশ করেন তাহলে ব্রাউজারে ইনকগনিটো চালু করে নেবেন। এতে আপনার সব তথ্য আর রেকর্ড হবে না ব্রাউজারে। এতে আপনার ব্রাউজিং নিরাপদ থাকবে। তাই সহজ হবে অনলাইনে আপনার বিচরণ।  

এছাড়া আরও কিছু নিরাপত্তা কৌশল আছে। অনেকে ফোনে এন্টিভাইরাস ব্যবহার করেন। এমনটার প্রয়োজন নেই। একথা সত্য আজকাল কিছু স্মার্টফোনের সফটওয়ারে প্রচুর বিজ্ঞাপন দেখায়। তবে সেটা সফটওয়ারের কারণে হয়। ফোন কেনার আগে জেনেবুঝে কিনুন। একথা মনে রাখতে হবে। অনলাইনে তথ্য খুব মূল্যবান। তথ্যের মাধ্যমে অনেক কিছুই করা যায়। তাই সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। কাজগুলো কঠিন কিছুই নয়। একটু সবদিক বিবেচনা করতে হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিরাপদ থাকার কৌশল

আপডেট সময় ০২:১৩:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্কঃ

আমাদের দৈনন্দিন ইন্টারনেট ব্যবহারের বড় একটি অংশজুড়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। বিশেষত ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাটের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। যত দিন যাচ্ছে ইউজার সংখ্যাও বাড়ছে। আর এরইমধ্যে কিছু দুষ্কৃতিকারী নানাভাবে আপনার একাউন্ট নষ্ট করার চক্রান্তে মেতে আছে। মূলত অনলাইনে আপনার তথ্য চুরি কিংবা একাউন্ট চুরি করে নানা অপকর্ম করছে। অনেক সময় অনেকের টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। 

তাই নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো দরকার। অবশ্য আজকাল অনেকেই এসব বিষয়ে সতর্ক হতে শুরু করেছেন। তবু চক্রান্তকারীরা নানা ফাঁদ-কৌশল আবিষ্কারের মাধ্যমে আপনার নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে। অনলাইনে নিজেকে নিরাপদ রাখবেন কিভাবে তবে? প্রতিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমই এখন নিজেদের সেফটি ফিচার চালু করেছে। আবার কিছু কিছু নিরাপত্তা কৌশল আপনাকে নিজের ডিভাইস থেকেই করতে হবে। 

আজ মূলত এসব কৌশল নিয়েই আলোচনা করবো। মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। আপনার কাজে আসবে। 

ফেসবুকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন

সম্ভবত ফেসবুকেই আমরা নিজেদের অধিকাংশ তথ্য দিয়ে থাকি। পরিচিতরা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য জানতেই পারেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরিচিতরাও আপনার তথ্য জেনে যেতে পারে। দেখা গেছে, এসব তথ্য ব্যবহার করে সাইবার হামলা, কিংবা অন্যের আর্থিক ক্ষতির মতো ভয়ানক কাজেও জড়িয়ে পড়ে কিছু চক্র। ফেসবুকের বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করেই তারা এমনটা করে থাকে। ফেসবুকের নিরাপত্তা বিষয়ে ব্যক্তিগত কিছু ভুলেও এমনটা হয়ে থাকে। সেই বিষয়গুলোই এখানে আপনাদের জানিয়ে দেই। 

বন্ধু তালিকা
বন্ধু তালিকায় অপরিচিত কাউকে না রাখাই ভালো। এমনকি নতুন কাউকে ফ্রেন্ডলিস্টে এড করলে তার প্রোফাইল দেখে নিন। আবার সময় অসময়ে একবার ফ্রেন্ডলিস্ট চেক করুন। তাতে বুঝতে পারবেন কোন একাউন্টগুলো ইনেক্টিভ কিংবা বন্ধ। সচরাচর ফ্রেন্ড লিস্টে অপরিচিত, ফেক একাউন্ট রাখবেন না। 

নিরাপদ

ফেসবুকে প্রাইভেসি সেটিংস নির্বাচন
ফেসবুকে আপনার তথ্যগুলো কারা দেখবে, বা আদৌ দেখতে পারবে কিনা তা নির্ধারণ করুন। সেই সুযোগ আপনাকে এখন দেওয়া হয়েছে। আপনি ভালোমতোই জানেন সামাজিক মাধ্যম তথ্যকে গুরুত্ব দেয়। তাই নিজের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে অবহেলা নয়।  

পাসওয়ার্ড সচেতনতা
পাসওয়ার্ড সংরক্ষণে ও নির্ধারণে সতর্ক হন। একেবারে সহজ পাসওয়ার্ড দেওয়া উচিত না। আর সময়ে সময়ে নিজের পাসওয়ার্ড বদল করুন। এক পাসওয়ার্ড দীর্ঘদিন ব্যবহার করবেন না। 

টু-স্টেপ অথেনটিকেশন
দুই ধাপ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে একাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। এতে সহজে আপনার একাউন্টে পাসওয়ার্ড জানা সত্ত্বেও প্রবেশ করতে পারবে না। 

একই একাউন্ট থেকে পেজ ম্যানেজ করা
আজকাল ফেসবুকে ব্যবসা পরিচালনার জন্যে অনেকে একই একাউন্ট দিয়ে পেজ ম্যানেজ করেন। এতে কিন্তু আপনার নিজের একাউন্ট বিপদে পড়তে পারে। ফেসবুকে আপনাকে পেজে বিভিন্ন পদে যোগ করার সুযোগ আছে। তা ব্যবহার করুন। 

গেম বা কুইজ থেকে সতর্ক
ফেসবুকে আজকাল অনেক গেম দেখা যায়। আবার আজকাল কিছু এপ আসে যেগুলোর মাধ্যমে অন্যরা নাম গোপন রেখে আপনায় মেসেজ দিতে পারে। এ ধরণের এপ থেকে সাবধান। এতে গেম খেলার সময় আপনার অনেক তথ্য চুরি হতে পারে। একাউন্টও হারাতে পারেন।  

নিয়মিত চেকাপ
facebook.com/privacy/checkup এই লিংকের মাধ্যমে নিজের প্রোফাইলের নিরাপত্তা আপনি দেখতে পারবেন। 

ইনস্টাগ্রামে  একাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
ফেসবুকে আপনার নিরাপত্তা কিংবা প্রাইভেসি নির্ধারণ অনেক সহজ। কিন্তু ইনস্টাগ্রামে কাজটি এত সহজ নয়। ফেসবুকে প্রতিটি পোস্টে প্রাইভেসি নির্ধারণ করা যায়। ইনস্টাগ্রামে তা নেই। সেক্ষেত্রে আপনার ফলোয়ার এর অবস্থা দেখে নেবেন। অপরিচিতদের যোগ না করাই ভালো। এমনকি আপনার একাউন্ট প্রাইভেট করে রাখুন। এতে যারা আপনার সম্মতিতে যুক্ত আছে তারাই শুধু দেখতে পারবে আপনার দেওয়া ছবি বা ভিডিও।  

রিপোর্ট করুন ঝামেলা দেখলে
অনলাইনে নিজের একাউন্ট নিরাপদ রাখাটাই একমাত্র উপায় নয়। আপনাকে অনলাইনের পরিবেশকেও নিরাপদ রাখতেই হবে। কাজটির জন্যে কখনও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাজে কন্টেন্ট পেলেই রিপোর্ট করুন। আপত্তিকর পোস্ট না সরিয়ে আমরা আজকাল কমেন্টে নানা আজেবাজে তর্কে জড়িয়ে পড়ি। তাতে আপনার নানাবিধ সমস্যা যেমন সাইবার বুলিং এর শিকার হতে হয়। সেজন্যে আপত্তিকর পোস্টে নিজেকে সংযুক্ত না করে রিপোর্ট করুন। 

নিরাপদ

মেসেঞ্জার ব্যবহারে সতর্কতা
ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মেসেজ দেখতে মেসেঞ্জার এখন বহুল জনপ্রিয়। মেসেঞ্জারে কিছু বাড়তি নিরাপত্তা গ্রহণ করতে হয়। যেমন মেসেঞ্জারে যেহেতু আপনার পার্সোনাল ইনবক্স থাকে তাই একে এপলক দিয়ে সিকিউর রাখুন। এমনকি মেসেঞ্জারে চাওয়া ক্যামেরা, অডিও পার্মিশন না দেওয়াই ভালো। এতে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ থাকবে। 

ই-মেইলের নিরাপত্তা
যেকোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইমেইল ব্যবহার বাধ্যতামূলক। তাই ইমেইল নিরাপদ রাখতে প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা। শুধু আপনার ই-মেইল হ্যাক করতে পারলে হারাতে পারে অনেক কিছু। যেকোন ডিভাইসে আপনার ইমেইল দিয়ে লগিন দেবেন না। নিজের রেগুলার ডিভাইসেই মেইল একাউন্ট রাখুন। 

লোকেশন সার্ভিস বন্ধ রাখুন
লোকেশন শেয়ার সার্ভিস অপ্রয়োজনে চালু করবেন না। আবার আমরা আজকাল হুটহাট অনেককে গুগল ম্যাপের লোকেশন দিয়ে রাখি। এতে আপনার ফোনের অনেক প্রাইভেট ডাটাও অন্য কেউ চেক করতে পারে। বিশেষ প্রয়োজনে আপনি লোকেশন শেয়ার করতেই পারেন। কিন্তু লোকেশন সার্ভিস চালু রাখবেনই না। একবার ভেবে দেখুন, আপনি কোন এলাকায় আছেন তা সর্বক্ষণ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আপডেট হয়ে থাকবে। এমনভাবে নিজের প্রাইভেসি বিঘ্নিত করা মোটেও সুখবর নয়। 

অনলাইনে কেনাকাটার সময় সাবধান
একসময় ফিশিং লিংক দিয়ে অনেকের আইডি হ্যাক করা হতো। আজকাল সেই পদ্ধতিতে বদল এসেছে। মানুষ এখন অধিকাংশ কেনাকাটা অনলাইনেই করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পেজ বা লিংকের মাধ্যমে অনলাইন শপে কেনাকাটা করে। অনেক সময় কিছু লিংকে প্রবেশ করে পেমেন্ট করে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয়। পেমেন্ট করার সময় আমরা সচরাচর কার্ড ব্যবহার করি। পেমেন্ট করার পর ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করে আপনার কার্ডের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হোন। বিশেষত ডেবিট কার্ডে কিছু নিরাপত্তার খুত বের করে হ্যাকাররা টাকা চুরি করে। তাই সাবধান থাকুন।  

আর্থিক লেনদেন
ব্যাংকিং ব্যবস্থাও এখন ডিজিটাল হয়ে গেছে। আবার ব্যাংকিং বাদ হয়ে এসেছে এমএফএস। আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সবসময় সবকিছু চেক করে নেবেন। কোথাও টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রেও সবকিছু নিশ্চিত হয়ে দিবেন। আপনার পেমেন্টের প্রতিটি ইনফরমেশন এবং ট্রানজেকশনের মেসেজ সংরক্ষণ করুন। আবার অনেকের আইডি হ্যাক হওয়ার পর হ্যাকাররা পরিচিতদের কাছে টাকা চায়। আপনার সাথে এমন কিছু হলে যে ব্যক্তির আইডি তার সাথে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হোন বিষয়টি। লেনদেনের ক্ষেত্রে সবসময় প্রমাণ ও ট্র্যাকিং প্রমাণ রাখবেন। 

নিরাপদ

একাধিক যন্ত্রে লগিন দেবেন না
একাধিক যন্ত্রে লগিন দিয়ে রাখবেন না। আমরা সচরাচর সবকিছু সহজ রাখতে এমনটাই করি। আবার অফিসের ডিভাইসেও এমনটা করে থাকি। এই কাজ করবেন না। অপরিচিত কোনো ব্রাউজারে যদি প্রবেশ করেন তাহলে ব্রাউজারে ইনকগনিটো চালু করে নেবেন। এতে আপনার সব তথ্য আর রেকর্ড হবে না ব্রাউজারে। এতে আপনার ব্রাউজিং নিরাপদ থাকবে। তাই সহজ হবে অনলাইনে আপনার বিচরণ।  

এছাড়া আরও কিছু নিরাপত্তা কৌশল আছে। অনেকে ফোনে এন্টিভাইরাস ব্যবহার করেন। এমনটার প্রয়োজন নেই। একথা সত্য আজকাল কিছু স্মার্টফোনের সফটওয়ারে প্রচুর বিজ্ঞাপন দেখায়। তবে সেটা সফটওয়ারের কারণে হয়। ফোন কেনার আগে জেনেবুঝে কিনুন। একথা মনে রাখতে হবে। অনলাইনে তথ্য খুব মূল্যবান। তথ্যের মাধ্যমে অনেক কিছুই করা যায়। তাই সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। কাজগুলো কঠিন কিছুই নয়। একটু সবদিক বিবেচনা করতে হবে।