ঢাকা ০৬:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এক নারীর ফোনে বাসা থেকে বের হন ফরহাদ মজহার!

জাতীয় ডেস্কঃ
কবি-প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার অপহরণ রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে। এতদিন রহস্য ছিল কার ফোন পেয়ে বাসা থেকে ওই দিন বের হয়েছিলেন তিনি? আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অবশেষে নিশ্চিত হয়েছে একজন নারীর ফোন পেয়েই তিনি বের হন। ওই নারী ফরহাদ মজহারের পূর্বপরিচিত। বাসা থেকে বের হওয়ার পর তাকে অপহরণ করে ওই নারীর ঘনিষ্ট একজন। ওই নারী এবং তার ঘনিষ্টজনকে ইতিমধ্যে সনাক্ত করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের গ্রেফতারের জন্য ঢাকার বাইরে ইতিমধ্যে একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে।

 

পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘আমরা দ্রুত পুরো রহস্য উত্দ্ঘাটন করতে সক্ষম হব। এজন্য পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। কার ফোনে তিনি বের হয়েছিলেন, কে তাকে অপহরণ করে খুলনা নিয়ে যায়, কিভাবে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে? সবকিছু তদন্তে বের হয়ে আসবেই। আশা করছি দু’এক দিনের মধ্যেই আমরা পুরো বিষয়টি দেশবাসীকে জানাতে পারব।’

 

তদন্তকারী একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘গত সোমবার ভোর ৫টা ৫ মিনিটে তিনি বাসা থেকে বের হন। বের হওয়ার সময় তার কাঁধে একটা ব্যাগ ছিল। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। তদন্তে পরিবারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। কিভাবে তাকে মাইক্রোবাসে তোলা হয় তাও নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে খুলনায় নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়ার পর কেন তিনি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেন না, সেটা এখনও পরিস্কার হতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এ কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। এরপরই পুরো রহস্যের জট খুলে যাবে এবং দেশবাসীকেও জানানো হবে।

 

আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে ফরহাদ মজহার বলেন, গত সোমবার ভোরে তিনি ওষুধ কেনার জন্য বাসা থেকে বের হন। এর পরপরই একদল দুর্বৃত্ত তাকে ধরে চোখ বেঁধে একটি গাড়িতে করে তাকে অপহরণ করেন। অপহরণকারীরা তাকে দিয়ে বাসায় ফোন করিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। তবে বিকালে অপহরণকারী তাকে একটা স্থানে নামিয়ে দেন। পরে তিনি এক রিকশাওয়ালার কাছ থেকে জানতে পারেন ওই এলাকাটি খুলনা। এরপর খুলনার একটি হোটেলে তিনি ৫ শ’ টাকা ভাঙ্গিয়ে রাতে খাবার খান। পরে তিনি বাসের টিকিট কেটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বাসে ওঠার পর তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর যশোর থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

 

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, বাসা থেকে বের হবার সময় তার সঙ্গে থাকা ব্যাগে মোবাইল ফোনের চার্জার, একটি পোশাক ছিল। বাসা থেকে বের হবার সময় তার কাছে সাড়ে ১২ হাজার টাকা ছিল। এ থেকে অনুমান করা যায় তার বাসা থেকে বের হওয়ার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে। সেটাই এখন পরিস্কার হতে চলেছে।

 

প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে যশোরের অভয়নগরের একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে ফরহাদ মজহারকে উদ্ধারের পর মঙ্গলবার সকালে তাকে নেয়া হয় আদাবর থানায়। সেখান থেকে তেজগাঁওয়ের ডিসি কার্যালয়ে নেয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তাকে নেয়া হয় মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার জবানবন্দি নেয়ার জন্য সিএমএম আদালতে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাকে নিজের জিম্মায় দেয়া হয়। সোমবার রাতে ফরহাদ মজহারের নিখোঁজের ঘটনায় তার স্ত্রী ফরিদা আক্তার বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এর আগে তিনি জিডি করেছিলেন।
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মুরাদনগরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

এক নারীর ফোনে বাসা থেকে বের হন ফরহাদ মজহার!

আপডেট সময় ০৬:২৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুলাই ২০১৭
জাতীয় ডেস্কঃ
কবি-প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার অপহরণ রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে। এতদিন রহস্য ছিল কার ফোন পেয়ে বাসা থেকে ওই দিন বের হয়েছিলেন তিনি? আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অবশেষে নিশ্চিত হয়েছে একজন নারীর ফোন পেয়েই তিনি বের হন। ওই নারী ফরহাদ মজহারের পূর্বপরিচিত। বাসা থেকে বের হওয়ার পর তাকে অপহরণ করে ওই নারীর ঘনিষ্ট একজন। ওই নারী এবং তার ঘনিষ্টজনকে ইতিমধ্যে সনাক্ত করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের গ্রেফতারের জন্য ঢাকার বাইরে ইতিমধ্যে একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে।

 

পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘আমরা দ্রুত পুরো রহস্য উত্দ্ঘাটন করতে সক্ষম হব। এজন্য পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। কার ফোনে তিনি বের হয়েছিলেন, কে তাকে অপহরণ করে খুলনা নিয়ে যায়, কিভাবে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে? সবকিছু তদন্তে বের হয়ে আসবেই। আশা করছি দু’এক দিনের মধ্যেই আমরা পুরো বিষয়টি দেশবাসীকে জানাতে পারব।’

 

তদন্তকারী একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘গত সোমবার ভোর ৫টা ৫ মিনিটে তিনি বাসা থেকে বের হন। বের হওয়ার সময় তার কাঁধে একটা ব্যাগ ছিল। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। তদন্তে পরিবারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। কিভাবে তাকে মাইক্রোবাসে তোলা হয় তাও নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে খুলনায় নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়ার পর কেন তিনি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেন না, সেটা এখনও পরিস্কার হতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এ কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। এরপরই পুরো রহস্যের জট খুলে যাবে এবং দেশবাসীকেও জানানো হবে।

 

আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে ফরহাদ মজহার বলেন, গত সোমবার ভোরে তিনি ওষুধ কেনার জন্য বাসা থেকে বের হন। এর পরপরই একদল দুর্বৃত্ত তাকে ধরে চোখ বেঁধে একটি গাড়িতে করে তাকে অপহরণ করেন। অপহরণকারীরা তাকে দিয়ে বাসায় ফোন করিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। তবে বিকালে অপহরণকারী তাকে একটা স্থানে নামিয়ে দেন। পরে তিনি এক রিকশাওয়ালার কাছ থেকে জানতে পারেন ওই এলাকাটি খুলনা। এরপর খুলনার একটি হোটেলে তিনি ৫ শ’ টাকা ভাঙ্গিয়ে রাতে খাবার খান। পরে তিনি বাসের টিকিট কেটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বাসে ওঠার পর তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর যশোর থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

 

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, বাসা থেকে বের হবার সময় তার সঙ্গে থাকা ব্যাগে মোবাইল ফোনের চার্জার, একটি পোশাক ছিল। বাসা থেকে বের হবার সময় তার কাছে সাড়ে ১২ হাজার টাকা ছিল। এ থেকে অনুমান করা যায় তার বাসা থেকে বের হওয়ার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে। সেটাই এখন পরিস্কার হতে চলেছে।

 

প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে যশোরের অভয়নগরের একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে ফরহাদ মজহারকে উদ্ধারের পর মঙ্গলবার সকালে তাকে নেয়া হয় আদাবর থানায়। সেখান থেকে তেজগাঁওয়ের ডিসি কার্যালয়ে নেয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তাকে নেয়া হয় মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার জবানবন্দি নেয়ার জন্য সিএমএম আদালতে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাকে নিজের জিম্মায় দেয়া হয়। সোমবার রাতে ফরহাদ মজহারের নিখোঁজের ঘটনায় তার স্ত্রী ফরিদা আক্তার বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এর আগে তিনি জিডি করেছিলেন।