জাতীয় ডেস্কঃ
এ বছর অষ্টম শ্রেণির শিক্ষা সমাপনী জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা থেকে নম্বর ও বিষয় কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।সভা শেষে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের সংগঠন আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সুপারিশের আলোকে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা থেকে সাতটি বিষয়ে মোট ৬৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাব করেছে। সেটি আমরা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বর্তমানে চতুর্থ বিষয়সহ ১০টি বিষয়ে মোট ৮৫০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। এরমধ্যে বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র মিলে ১৫০ নম্বরে এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে ১৫০ নম্বরে পরীক্ষা হতো। সেখান থেকে বাংলায় ৫০ এবং ইংরেজিতে ৫০ কমিয়ে ১০০ নম্বরে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আর চতুর্থ বিষয় ১০০ নম্বরকে শ্রেণিকক্ষে ধারাবাহিক মূল্যায়নে নেয়া হয়। ফলে এখন থেকে জেএসসিতে ২০০ নম্বর কমে ৬৫০ নম্বরে পরীক্ষা হবে। আর জেডিসিতে আগে ১০৫০ নম্বরের পরীক্ষা হতো। এখন থেকে ৮৫০ নম্বর পরীক্ষা হবে। সর্বমোট ২০০ নম্বর কমানো হয়েছে জেএসসি ও জেডিসিতে।
শিক্ষাসচিব বলেন, জেএসসিতে বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র মিলে ১০০ নম্বরের একটি পরীক্ষা হবে। ইংরেজিতেও দুই পত্র মিলে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এখন দুই পত্রের জন্য দুটি পরীক্ষা হয়, দুটি পত্র মিলিয়ে মোট নম্বর থাকে ১৫০। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চতুর্থ বিষয়ের পরীক্ষা এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ধারাবাহিকভাবে মূল্যায়ন করা হবে। তবে গণিত, ধর্ম, বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা আগের মতো আগের নম্বরে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের উপর লেখাপড়ায় চাপ দেয়া হচ্ছে। এসব বিষয় আমলে নিয়ে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় বিষয় ও নম্বর কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এখানে শিখন ফলাফল অক্ষুণ্ন রেখে নম্বর এবং বিষয় কমানো হয়েছে, যাতে একজন শিক্ষার্থী সঠিক শিক্ষাটা আয়ত্ব করতে পারে। শিক্ষার লক্ষ্য যেন ব্যাহত না হয়। বিভিন্ন বোর্ড চেয়ারম্যানদের সুপারিশের ভিত্তিতে বিষয় এবং নম্বর কমানো হয়েছে। সে অনুযায়ী সিলেবাসও তৈরি করা হবে। যেহেতু বিষয় এবং নম্বর কমানো হয়েছে তাই শিক্ষার্থীদের উপর এর কোনো চাপ পড়বে না।
শিক্ষাসচিব বলেন, ২০১৯ সালে আমরা কারিকুলামে হাত দেবো। তখন আরও বড় আকারে বিষয় কমবে। কারণ তখন আমরা সবকিছু ভাবনা চিন্তায় রেখেই কারিকুলাম করবো। যাতে শিক্ষার্থীরা চাপে না পড়ে।
চলতি বছরে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় এমসিকিউ থাকবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষাসচিব বলেন, হঠাৎ করে এমসিকিউ বাদ দেয়া যাবে না। তবে আমরা সিস্টেমে পরিবর্তন আনবো। হয়তো শিক্ষার্থীদের একলাইন লেখা লাগতে পারে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পযায়ের কর্মকর্তা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচায অধ্যাপক আক্তারুজ্জামান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রমুখ।