ঢাকা ১২:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় ডিআইজি পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে আটক ২

কুমিল্লা প্রতিনিধি:

কুমিল্লা ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের ডিআইজি, এসপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ আজাদ নামে এক ব্যক্তি ও তার সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিও তার সহযোগী মিলে বিভিন্ন সময় দেশের নানা শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ ছিল কুমিল্লা পুলিশের কাছে।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় কুমিল্লা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

পুলিশ জানায়, বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার রাতে ঢাকার খিলগাঁও এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ আজাদকে আটক করে পুলিশ। তার সহযোগী ও গাড়ি চালক রুবেল নামের অপর ব্যক্তিকেও আটক করে পুলিশ। ফখরুদ্দিন কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার হরিচর ইউনিয়নের বাকুই গ্রামের মৃত আবদুল হামিদের ছেলে। এসময় খিলগাঁওয়ের ওই বাসা থেকে পুলিশের পোশাক, ব্যাজ, স্টিকারযুক্ত প্রাইভেটকার, কর্মকর্তাদের সীল স্বাক্ষর সম্বলিত নিয়োগপত্রসহ অফিসিয়াল নানা ভুয়া ডকুমেন্ট জব্দ করা হয়।

পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারক ফখরুদ্দিন জানিয়েছে-সে ১৯৯১ সালে পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) পদে যোগদান করে। শিক্ষানবিশ অবস্থায় এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অপরাধে সে চাকুরী হারায়। এরপর ২০০০ সালে সে ঢাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকালে তৎকালীন ডিএমপি ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল এবং ৭ মাস জেলহাজতে ছিল। পরে কারাগার থেকে বের হয়ে সে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নানা পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, ইতোপূর্বে কনস্টেবল নিয়োগে কুমিল্লায় চাকুরী পাইয়ে দেয়ার কথা বলে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির নকল স্বাক্ষরযুক্ত চিঠি দেখিয়ে আশফাক আহমেদ নামে এক প্রার্থীর পিতা সাইদুল ইসলামের কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ফখরুদ্দিন। এ ধরণের প্রতারণার শিকার হয়েছেন পুলিশে কনস্টেবল পদে চাকুরী প্রার্থী রেজাউল করিম ও মো. আনোয়ারুল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তি। এপর্যন্ত অন্তত ১১ জন তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার অভিযোগ করেছে।

পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, আটকের সময় ফখরুদ্দিনের ওই বাসা থেকে একটি পুলিশের স্টিকারযুক্ত প্রাইভেটকার, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পোশাক ও পোশাক পরিহিত ছবি, ব্যাজ, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সীল এবং সীল স্বাক্ষর সম্বলিত নিয়োগপত্রসহ অফিসিয়াল নানা ভুয়া ডকুমেন্ট জব্দ করা হয়েছে। সে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগ, বদলী, দেশে বিদেশে প্রেরণের বিভিন্ন ভুয়া সনদপত্র, মামলা থেকে অব্যাহতি, মামলায় জড়ানোসহ গ্রেফতার ও বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে গাড়ি, জায়গা-জমিসহ লাখ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিতো।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মো. আবদুল্লাহ-আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন ও তানভীর সালেহীন ইমনসহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরর উপজেলায় জরায়ুমুখ ক্যান্সার রোধে টিকাদান ক্যাম্পেইন

কুমিল্লায় ডিআইজি পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে আটক ২

আপডেট সময় ০২:৪৬:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২০

কুমিল্লা প্রতিনিধি:

কুমিল্লা ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের ডিআইজি, এসপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ আজাদ নামে এক ব্যক্তি ও তার সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিও তার সহযোগী মিলে বিভিন্ন সময় দেশের নানা শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ ছিল কুমিল্লা পুলিশের কাছে।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় কুমিল্লা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

পুলিশ জানায়, বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার রাতে ঢাকার খিলগাঁও এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ আজাদকে আটক করে পুলিশ। তার সহযোগী ও গাড়ি চালক রুবেল নামের অপর ব্যক্তিকেও আটক করে পুলিশ। ফখরুদ্দিন কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার হরিচর ইউনিয়নের বাকুই গ্রামের মৃত আবদুল হামিদের ছেলে। এসময় খিলগাঁওয়ের ওই বাসা থেকে পুলিশের পোশাক, ব্যাজ, স্টিকারযুক্ত প্রাইভেটকার, কর্মকর্তাদের সীল স্বাক্ষর সম্বলিত নিয়োগপত্রসহ অফিসিয়াল নানা ভুয়া ডকুমেন্ট জব্দ করা হয়।

পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারক ফখরুদ্দিন জানিয়েছে-সে ১৯৯১ সালে পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) পদে যোগদান করে। শিক্ষানবিশ অবস্থায় এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অপরাধে সে চাকুরী হারায়। এরপর ২০০০ সালে সে ঢাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকালে তৎকালীন ডিএমপি ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল এবং ৭ মাস জেলহাজতে ছিল। পরে কারাগার থেকে বের হয়ে সে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নানা পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, ইতোপূর্বে কনস্টেবল নিয়োগে কুমিল্লায় চাকুরী পাইয়ে দেয়ার কথা বলে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির নকল স্বাক্ষরযুক্ত চিঠি দেখিয়ে আশফাক আহমেদ নামে এক প্রার্থীর পিতা সাইদুল ইসলামের কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ফখরুদ্দিন। এ ধরণের প্রতারণার শিকার হয়েছেন পুলিশে কনস্টেবল পদে চাকুরী প্রার্থী রেজাউল করিম ও মো. আনোয়ারুল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তি। এপর্যন্ত অন্তত ১১ জন তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার অভিযোগ করেছে।

পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, আটকের সময় ফখরুদ্দিনের ওই বাসা থেকে একটি পুলিশের স্টিকারযুক্ত প্রাইভেটকার, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পোশাক ও পোশাক পরিহিত ছবি, ব্যাজ, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সীল এবং সীল স্বাক্ষর সম্বলিত নিয়োগপত্রসহ অফিসিয়াল নানা ভুয়া ডকুমেন্ট জব্দ করা হয়েছে। সে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগ, বদলী, দেশে বিদেশে প্রেরণের বিভিন্ন ভুয়া সনদপত্র, মামলা থেকে অব্যাহতি, মামলায় জড়ানোসহ গ্রেফতার ও বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে গাড়ি, জায়গা-জমিসহ লাখ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিতো।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মো. আবদুল্লাহ-আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন ও তানভীর সালেহীন ইমনসহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।