ঢাকা ০৭:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতীয় দলে খেলার স্বপ হোমনার ক্ষুদে মেসি দরিদ্র ইশিতার

তপন সরকার, হোমনার (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ 

কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় আসাদপুর ইউনিয়নের পাথালিয়াকান্দি গ্রামের এক অজোপাড়াগায়ে বেড়ে উঠা হত দরিদ্র পরিবারের মেয়ে ইশিতা। তার বাবা মো. ইকবাল হোসেন একজন সামান্য রিকশা চালক। শত প্রতিকুলতার মাঝেও যার রয়েছে লেখা পড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রচন্ড ইচ্ছা। আর

এই কারণেই দারিদ্রতাও তাকে রুখে দিতে পারেনী প্রিয় খেলা ফুটবল থেকে। ইতিমধ্যেই সে জয় করেছে স্বর্ণপদকসহ একাধিক পুরস্কার।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়া অবস্থাতেই সে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা গোল্ডকাপ প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সব ক’টি পুরস্কার উঠেছে তার ঝুলিতে। সে সাথে শ্রেষ্ঠ খেলোয়ারের তকমা নিয়েছেন নিজেই। তার নেতৃত্বেই উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিটি প্রতিযোগিতায় হয়েছেন চ্যাম্পিয়ন।

জানা যায়, গত ২০১৪, ১৫ ও ১৬ইং মৌসুমে হোমনা উপজেলা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ বিজয়ী হয় তার নেতৃত্বে পাথালিয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়াও তার নেতৃত্ব্বে পাথালিয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১৪ সালে কুমিল্লা জেলা পর্যায়ের টুর্নামেন্টে অংশ গ্রহণ করে রানার্সআপ হয় এবং ২০১৫ সালে জেলা পর্যায়ে অংশ গ্রহন করে চ্যাম্পিয়ন হয় তার স্কুল। তবে চট্ট্রগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে সে অংশগ্রহণ করে তার দল কে ফাইনালে তুললেও প্রাথমিক সমাপনি অতিক্রম করে উচ্চ মাধ্যমিকে চলে যাওয়ার ফলে আর ফাইনালে খেলা হয়নি এলাকার ক্ষুদে মেসি খ্যাত ইশিতার। ফলে রানার্স আপ ট্রফি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় পাথালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে।এই ছোট মেয়েটির চোখে মুখে এখন স্বপ্ন সে বিশ্ব নন্দিত ফুটবলার মেসির মতো করে ফুটবলার । কারণ সে জানায়, মেসিই তার একমাত্র আদর্শ। খেলার সকল কৌশল শিখেছে মেসিকেই অনুকরণ করেই। ইশিতা বর্তমানে উপজেলার দুলালপুর চন্দ্রমনি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী।

এলাকাবাসী জানান, এই মেয়েটির অদম্য ফুটবল নেশা। খাওয়া দাওয়া ফেলে লেখা পড়ার পাশাপাশি ফুটবল নিয়ে মেতে থাকে। তার প্রতিভাকে বিকশিত করতে জাতীয় প্রর্যায়ের কোন কোচ এর অধিনে যেতে পারলে ইশিতা হবে বাংলাদেশের জন্য ভিন্ন আরেক গল্প। যা নিয়ে ছালমাদের কাতারে এমনটাই বিশ্বাস এলাকাবাসীর।গ্রামবাসীদের মধ্যে অনেকের আশংকা সংশ্লিষ্টদের নজরদারি না পেলে দারিদ্রতার করাল গ্রাসে এই প্রতিভাটি হারিয়ে যাবে।

গ্রামবাসী অনেকে বলেন, ইশিতার বাবা মো. ইকবাল একজন সামান্য রিকশা চালক। তার সংসারে ইশিতা ছাড়াও আরো দু’টি সন্তান আছে। তাদের লেখা পড়ার খরচ চালিয়ে ইশিতার খেলাধুলার খরচের জোগান দেয়া সম্ভবপর হয়ে উঠবে না। অর্থভাবে একসময় হয়তো ইশিতার প্রতিভা হারিয়ে যাবে। কেউ কি নেই ইশিতার প্রতিভাবে বিকশিত করার জন্যে এগিয়ে আসার জন্য। ৩নং দুলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন সওদাগর বলেন, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনসহ সমাজের বিত্ত্ববানরা এগিয়ে আসলে এই প্রতিভাটি হয়তো আরো বিকশিত হতে পারবে। সেও জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখবে। বয়ে আনবে সুনাম। আমারও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ইশিতাকে নিয়ে ফুটবল সংশ্লিষ্টদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন অনেকে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মুরাদনগরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

জাতীয় দলে খেলার স্বপ হোমনার ক্ষুদে মেসি দরিদ্র ইশিতার

আপডেট সময় ০৩:০২:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ এপ্রিল ২০১৭
তপন সরকার, হোমনার (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ 

কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় আসাদপুর ইউনিয়নের পাথালিয়াকান্দি গ্রামের এক অজোপাড়াগায়ে বেড়ে উঠা হত দরিদ্র পরিবারের মেয়ে ইশিতা। তার বাবা মো. ইকবাল হোসেন একজন সামান্য রিকশা চালক। শত প্রতিকুলতার মাঝেও যার রয়েছে লেখা পড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রচন্ড ইচ্ছা। আর

এই কারণেই দারিদ্রতাও তাকে রুখে দিতে পারেনী প্রিয় খেলা ফুটবল থেকে। ইতিমধ্যেই সে জয় করেছে স্বর্ণপদকসহ একাধিক পুরস্কার।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়া অবস্থাতেই সে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা গোল্ডকাপ প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সব ক’টি পুরস্কার উঠেছে তার ঝুলিতে। সে সাথে শ্রেষ্ঠ খেলোয়ারের তকমা নিয়েছেন নিজেই। তার নেতৃত্বেই উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিটি প্রতিযোগিতায় হয়েছেন চ্যাম্পিয়ন।

জানা যায়, গত ২০১৪, ১৫ ও ১৬ইং মৌসুমে হোমনা উপজেলা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ বিজয়ী হয় তার নেতৃত্বে পাথালিয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়াও তার নেতৃত্ব্বে পাথালিয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১৪ সালে কুমিল্লা জেলা পর্যায়ের টুর্নামেন্টে অংশ গ্রহণ করে রানার্সআপ হয় এবং ২০১৫ সালে জেলা পর্যায়ে অংশ গ্রহন করে চ্যাম্পিয়ন হয় তার স্কুল। তবে চট্ট্রগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে সে অংশগ্রহণ করে তার দল কে ফাইনালে তুললেও প্রাথমিক সমাপনি অতিক্রম করে উচ্চ মাধ্যমিকে চলে যাওয়ার ফলে আর ফাইনালে খেলা হয়নি এলাকার ক্ষুদে মেসি খ্যাত ইশিতার। ফলে রানার্স আপ ট্রফি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় পাথালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে।এই ছোট মেয়েটির চোখে মুখে এখন স্বপ্ন সে বিশ্ব নন্দিত ফুটবলার মেসির মতো করে ফুটবলার । কারণ সে জানায়, মেসিই তার একমাত্র আদর্শ। খেলার সকল কৌশল শিখেছে মেসিকেই অনুকরণ করেই। ইশিতা বর্তমানে উপজেলার দুলালপুর চন্দ্রমনি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী।

এলাকাবাসী জানান, এই মেয়েটির অদম্য ফুটবল নেশা। খাওয়া দাওয়া ফেলে লেখা পড়ার পাশাপাশি ফুটবল নিয়ে মেতে থাকে। তার প্রতিভাকে বিকশিত করতে জাতীয় প্রর্যায়ের কোন কোচ এর অধিনে যেতে পারলে ইশিতা হবে বাংলাদেশের জন্য ভিন্ন আরেক গল্প। যা নিয়ে ছালমাদের কাতারে এমনটাই বিশ্বাস এলাকাবাসীর।গ্রামবাসীদের মধ্যে অনেকের আশংকা সংশ্লিষ্টদের নজরদারি না পেলে দারিদ্রতার করাল গ্রাসে এই প্রতিভাটি হারিয়ে যাবে।

গ্রামবাসী অনেকে বলেন, ইশিতার বাবা মো. ইকবাল একজন সামান্য রিকশা চালক। তার সংসারে ইশিতা ছাড়াও আরো দু’টি সন্তান আছে। তাদের লেখা পড়ার খরচ চালিয়ে ইশিতার খেলাধুলার খরচের জোগান দেয়া সম্ভবপর হয়ে উঠবে না। অর্থভাবে একসময় হয়তো ইশিতার প্রতিভা হারিয়ে যাবে। কেউ কি নেই ইশিতার প্রতিভাবে বিকশিত করার জন্যে এগিয়ে আসার জন্য। ৩নং দুলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন সওদাগর বলেন, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনসহ সমাজের বিত্ত্ববানরা এগিয়ে আসলে এই প্রতিভাটি হয়তো আরো বিকশিত হতে পারবে। সেও জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখবে। বয়ে আনবে সুনাম। আমারও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ইশিতাকে নিয়ে ফুটবল সংশ্লিষ্টদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন অনেকে।