ঢাকা ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিতাসে পৈত্রিক ভিটে থেকে অসহায় পরিবারকে উচ্ছেদের পায়তারা

নাজমুল করিম ফারুক, তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার তিতাসে অসহায় পরিবারকে পৈত্রিক ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা করছে একটি প্রভাবশালী মহল। এমন অভিযোগ করেছে ভূক্তভোগি দিনমজুর শেখ ফরিদ ও তার স্ত্রী নূরনাহার। প্রতিপক্ষের লোকজন বসতঘর ভেঙ্গে নিয়ে যাওয়া দু’সন্তানকে নিয়ে খোলা আকাশে বসবাস করেছে অসহায় পরিবারটি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনমজুর শেখ ফরিদ, তার স্ত্রী নূরনাহার, ১১ বছরের মেয়ে ফাতেমা আক্তার ও ৭ বছরের ছেলে বিল্লাল হোসেনকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। পরিত্যক্ত বাঁশের বেড়া, সিমেন্টের বস্তার চট ও পলিথিন দিয়ে নির্মাণাধীন প্রায় ৬ফুট উঁচু একচালার মতো একটি কুঁড়ে ঘরে প্রচন্ড শীতের মধ্যে জীবনযাপন করছেন। রান্না ও শৌচাগারের কোন ব্যবস্থা নেই।

এলাকাবাসী জানায়, মৃত নোয়াব মিয়ার ছেলে শেখ ফরিদের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ পার্শ্ববর্তী রায়পুর গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার মুন্সির ছেলে আঃ রহমানের বাড়ির মালিকানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। কিছুদিন পূর্বে শেখ ফরিদ তার পৈত্রিক ভিটায় একটি ঘর নির্মাণের প্রস্তুতি নিলে প্রতিপক্ষের লোকজন ভাড়াটিয়া বাহিনীর সহায়তায় নির্মাণ সামগ্রীসহ বসবাসকৃত ছাপরা ঘরটি ভেঙ্গে ট্রলারে করে নিয়ে যায়। এসময় তারা তাদের ব্যবহৃত শৌচাগারটিও ভেঙ্গে ফেলে। এঘটনায় নূরনাহার বাদী হয়ে তিতাস থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করলেও গত এক মাসে পুলিশ লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি।

ভূক্তভোগি শেখ ফরিদ ও নূরনাহার অভিযোগ তুলেন, গ্রামের প্রভাবশালী নুরুল হক সরকারের নির্দেশে ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের লক্ষ্যে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। এখন আমরা কোথায় যাবো? পলিথিন ও ছালা দিয়ে কোন রকম জীবনযাপন করছি। আমাদের মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

titas-photo-20-dec-16

এব্যাপারে নুরুল হক সরকার বলেন, শেখ ফরিদের পিতা নোয়াব মিয়া তার বসত বাড়িটি বিক্রির সুবাদে  একাধিকবার হাতবদলের পর প্রায় ২৩ বছর আগে রায়পুর গ্রামের আঃ রহমান মুন্সি জায়গাটি কিনেছেন। আঃ রহমান আমার আত্মীয় হয়। পরিত্যক্ত ঘরটি শেখ ফরিদ নাকি অন্য কেউ নিয়ে গেছে আমি জানি না। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা, তবে শেখ ফরিদের স্ত্রী নূরনাহার আমাকেসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে প্রকাশ্যে গালমন্দ করে এবং দেখে নেয়ার হুমকি দেন।

এবিষয়ে বাড়ির অপর মালিক দাবীকারী আঃ রহমানের ছেলে জসিম উদ্দিন লুটপাটের কথা অস্বীকার করে বলেন, মৃত নোয়াব মিয়া ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজন জাগায়টি বিক্রির পর একাধিকবার ক্রয়-বিক্রয় হয়। তারপর পরবর্তীতে আমার বাবা দুটি দাগের ২৬ শতক বাড়ি কিনে নেয়। যার বিএস আমাদের নামে অন্তর্ভূক্ত। কিন্তু এতবছর পর শেখ ফরিদ মালিকানা বাদী করলে আমরা স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করি। বিষয়টি অমিমাংসীত রেখেই শেখ ফরিদ একটি কুচক্রি মহলের ইন্ধনে জোড়পূর্বক ঘর নির্মাণ করতে চাইলে আমরা বাধা দিয়েছি মাত্র।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মুরাদনগরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

তিতাসে পৈত্রিক ভিটে থেকে অসহায় পরিবারকে উচ্ছেদের পায়তারা

আপডেট সময় ০২:১৫:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬
নাজমুল করিম ফারুক, তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার তিতাসে অসহায় পরিবারকে পৈত্রিক ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা করছে একটি প্রভাবশালী মহল। এমন অভিযোগ করেছে ভূক্তভোগি দিনমজুর শেখ ফরিদ ও তার স্ত্রী নূরনাহার। প্রতিপক্ষের লোকজন বসতঘর ভেঙ্গে নিয়ে যাওয়া দু’সন্তানকে নিয়ে খোলা আকাশে বসবাস করেছে অসহায় পরিবারটি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনমজুর শেখ ফরিদ, তার স্ত্রী নূরনাহার, ১১ বছরের মেয়ে ফাতেমা আক্তার ও ৭ বছরের ছেলে বিল্লাল হোসেনকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। পরিত্যক্ত বাঁশের বেড়া, সিমেন্টের বস্তার চট ও পলিথিন দিয়ে নির্মাণাধীন প্রায় ৬ফুট উঁচু একচালার মতো একটি কুঁড়ে ঘরে প্রচন্ড শীতের মধ্যে জীবনযাপন করছেন। রান্না ও শৌচাগারের কোন ব্যবস্থা নেই।

এলাকাবাসী জানায়, মৃত নোয়াব মিয়ার ছেলে শেখ ফরিদের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ পার্শ্ববর্তী রায়পুর গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার মুন্সির ছেলে আঃ রহমানের বাড়ির মালিকানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। কিছুদিন পূর্বে শেখ ফরিদ তার পৈত্রিক ভিটায় একটি ঘর নির্মাণের প্রস্তুতি নিলে প্রতিপক্ষের লোকজন ভাড়াটিয়া বাহিনীর সহায়তায় নির্মাণ সামগ্রীসহ বসবাসকৃত ছাপরা ঘরটি ভেঙ্গে ট্রলারে করে নিয়ে যায়। এসময় তারা তাদের ব্যবহৃত শৌচাগারটিও ভেঙ্গে ফেলে। এঘটনায় নূরনাহার বাদী হয়ে তিতাস থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করলেও গত এক মাসে পুলিশ লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি।

ভূক্তভোগি শেখ ফরিদ ও নূরনাহার অভিযোগ তুলেন, গ্রামের প্রভাবশালী নুরুল হক সরকারের নির্দেশে ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের লক্ষ্যে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। এখন আমরা কোথায় যাবো? পলিথিন ও ছালা দিয়ে কোন রকম জীবনযাপন করছি। আমাদের মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

titas-photo-20-dec-16

এব্যাপারে নুরুল হক সরকার বলেন, শেখ ফরিদের পিতা নোয়াব মিয়া তার বসত বাড়িটি বিক্রির সুবাদে  একাধিকবার হাতবদলের পর প্রায় ২৩ বছর আগে রায়পুর গ্রামের আঃ রহমান মুন্সি জায়গাটি কিনেছেন। আঃ রহমান আমার আত্মীয় হয়। পরিত্যক্ত ঘরটি শেখ ফরিদ নাকি অন্য কেউ নিয়ে গেছে আমি জানি না। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা, তবে শেখ ফরিদের স্ত্রী নূরনাহার আমাকেসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে প্রকাশ্যে গালমন্দ করে এবং দেখে নেয়ার হুমকি দেন।

এবিষয়ে বাড়ির অপর মালিক দাবীকারী আঃ রহমানের ছেলে জসিম উদ্দিন লুটপাটের কথা অস্বীকার করে বলেন, মৃত নোয়াব মিয়া ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজন জাগায়টি বিক্রির পর একাধিকবার ক্রয়-বিক্রয় হয়। তারপর পরবর্তীতে আমার বাবা দুটি দাগের ২৬ শতক বাড়ি কিনে নেয়। যার বিএস আমাদের নামে অন্তর্ভূক্ত। কিন্তু এতবছর পর শেখ ফরিদ মালিকানা বাদী করলে আমরা স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করি। বিষয়টি অমিমাংসীত রেখেই শেখ ফরিদ একটি কুচক্রি মহলের ইন্ধনে জোড়পূর্বক ঘর নির্মাণ করতে চাইলে আমরা বাধা দিয়েছি মাত্র।