নাজমুল করিম ফারুকঃ
কুমিল্লার তিতাসে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। রোববার রাত ৯টায় উপজেলার বাতাকান্দি-মোহনপুর সড়কের বারকাউনিয়া গ্রাম সংলগ্ন বড় সেতুর পাশে এক ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তি বারকাউনিয়া গ্রামের জালু মিয়ার প্রবাসী ছেলে সুমন (৩৮)। এসময় নিহতের ছোট ভাই সাইদুল ইসলামকেও কুপিয়ে ও মা মোসাঃ কালি বেগমকে মারধর করে আহত করা হয়। উক্ত ঘটনায় ঐ রাতেই অভিযান চালিয়ে ঘটনা সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ৬জনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। নিহতের ৩ মাসের অন্তসত্তা স্ত্রী রয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সাতানী ইউনিয়নের বারকাউনিয়া গ্রামের জালু মিয়া ও মৃত আঃ জলিল চাচাতো ভাই হয়। জালু মিয়ার পরিবারের সাথে তার চাচাতো ভাই মৃত আঃ জলিলের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একটি জমি ক্রয় করাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছে। রোববার রাত প্রায় ৯টায় বারকাউনিয়া বাজার থেকে জালু মিয়ার ছেলে সুমন বাড়ি ফেরার পথে মৃত জলিলের ছেলে আলাউদ্দিন ও তার লোকজন হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুমনকে কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় বাতাকান্দি বাজার থেকে সুমনের ছোট ভাই সাইদুল ইসলাম বাড়ি ফিরছিল। সন্ত্রাসীরা তাকে ও তার মা মোসাঃ কালি বেগমকে কুপিয়ে আহত করে। রাতেই এলাকার লোকজন আলাউদ্দিনসহ অন্যান্য আসামীদের বসতঘরে আটক করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাশ এবং আটককৃতদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আটককৃত হলো- বারকাউনিয়া গ্রামের মৃত আঃ জলিলের ছেলে ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আলাউদ্দিন (২৮), মোঃ লিটন (৩৫) ও মোঃ রিপন (৩২), ধনু মিয়ার ছেলে অনিক (২৫) ও মোহাম্মদ আলী (২৩) এবং মৃত গণি মিয়ার ছেলে ধনু মিয়া (৫৫)। এদিকে রোববার রাতেই সাইদুল ও তার মাকে গুরুত্বর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়। অপরদিকে সোমবার বিকালে নিহতের লাশ কুমিল্লায় ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, বারকাউনিয়া গ্রামের জালু মিয়ার ছেলে সুমন প্রায় ৪ মাস পূর্বে মালয়েশিয়া থেকে ছুটিতে বাড়িতে আসে। আসার পর জমি সংক্রান্ত বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। উক্ত জের ধরে আলাউদ্দিনের দেয়া একটি মামলায় জালু মিয়া ও তার ছেলে সুমন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যায়। গত ১১ জুন পিতা-পুত্র জামিনে বের হয়ে আসে। এদিকে গত ৪/৫ দিন পূর্বে জালু মিয়ার আরেক ছেলে সৌদি প্রবাসী মোঃ রিপন বাড়িতে আসলে উক্ত বিরোধ আরো চরম আকার ধারণ করে।
নিহতের মামাতো ভাই একই গ্রামের আবুল কালামের ছেলে বিল্লাল হোসেন বাবুল জানান, জমি সংক্রান্তের জের ধরেই আলাউদ্দিন ও তারলোকজন আমার ভাইদের কুপিয়ে হত্যা ও আহত করেছে। লাশ দাফন সম্পন্ন হলে মামলার এজাহার দেয়া হবে।
তিতাস থানার ওসি (তদন্ত) আ.স.ম আব্দুন নূর জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধে জের ধরেই এ ঘটনা ঘটতে পারে। আটককৃত অভিযুক্তরা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।