ঢাকা ০৩:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিতাসে যুবককে বেঁধে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পুরুষ শূন্য দড়িকান্দি গ্রাম আতংকে মহিলারা

কবির হোসেন সওদাগর , তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:

কুমিল্লার তিতাসে পূর্বশত্রুতার জেরে গরু চুরির অভিযোগ এনে এক যুবককে গাছে বেঁধে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার এড়াতে পুরুষ শূন্য রয়েছে দড়িকান্দি গ্রাম। প্রতিটি পরিবারের ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে ও গবাদি পশু নিয়ে বহিরাগতের হামলার আতংকে আছেন মহিলারা।

শুক্রবার সকালে সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রতিপক্ষের লোকজন একই গ্রামের নজিমুদ্দিন মোল্লা ওরফে এসডু মোল্লার ছেলে শাহরিয়া হোসেন (৩২) কে হত্যা করে। রাত ১০টায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং ঘটনাস্থল থেকে ২জনকে আটক করে। ওদিন রাত ৩টায় নিহতের বড় ভাই গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে ১০/১২জনকে অজ্ঞাত রেখে ২৯জনকে আসামী করে তিতাস থানায় মামলা করেন। বৃহস্পতিবার লাশ ময়না তদন্তের পর বাদ মাগরিব নিহতের বাড়ির পাশে খোলা মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আটক ২জন এজাহারভূক্ত আসামী হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকালে তাদের কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে দড়িকান্দি গ্রামের ওয়াসিমের ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়–য়া খালেদকে অপহরণ করার অভিযোগে ৯ ফেব্রুয়ারি শাহরিয়ার বিভিন্ন অত্যাচারের বিরুদ্ধে আসমানিয়া-জাহাপুর সড়কে গ্রামবাসী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। ওই সভায় স্থানীয় লোকজন শাহরিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ তুলেন। এরপর থেকে শাহরিয়ার সাথে স্থানীয় গ্রামবাসীর মতবিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন গরু চুরি করেছে এমন অভিযোগ এনে শাহরিয়াকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে।

দড়িকান্দি গ্রামের রহিমা খাতুন, আফিয়া খাতুন ও সালমা আক্তার জানান, শাহরিয়াকে হত্যার পর মামলা হওয়ায় গ্রেফতার এড়াতে আসামী ও অন্যান্য পুরুষ লোকজন গ্রামের বাহিরে রয়েছে। তবে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত বহিরাগত লোকজনদের হামলার ভয়ে আতংকে আছি।

নিহতের বড় ভাই ও মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা বলেন, গ্রাম্য আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে আমাদের সাথে গ্রামের কিছু লোকদের বিরোধ ছিল। বুধবার সন্ধ্যায় আমার ভাই কালিপুর যাওয়ার পথে দড়িকান্দি গ্রামের আব্দুর রহিমের বাড়ির উত্তর পাশে পথরোধ করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে চোর আখ্যা দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। আমার ভাই কোন অপকর্মের সাথে জড়িত থাকতে পারে না, আমি এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।

তিতাস থানার অফিসার ইনচার্জ সৈদয় আহসানুল ইসলাম জানান, শাহরিয়া হত্যার এজাহারভূক্ত ২ আসামীকে গ্রেফতার করা হাজতে পাঠানো হয়েছে। শাহরিয়ার বিরুদ্ধে তিতাস থানায় চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতন ও চুরির ঘটনায় ৩টি মামলা রয়েছে। উক্ত ঘটনায় জড়িত আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ

তিতাসে যুবককে বেঁধে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পুরুষ শূন্য দড়িকান্দি গ্রাম আতংকে মহিলারা

আপডেট সময় ১২:৫৫:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৯
কবির হোসেন সওদাগর , তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:

কুমিল্লার তিতাসে পূর্বশত্রুতার জেরে গরু চুরির অভিযোগ এনে এক যুবককে গাছে বেঁধে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার এড়াতে পুরুষ শূন্য রয়েছে দড়িকান্দি গ্রাম। প্রতিটি পরিবারের ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে ও গবাদি পশু নিয়ে বহিরাগতের হামলার আতংকে আছেন মহিলারা।

শুক্রবার সকালে সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রতিপক্ষের লোকজন একই গ্রামের নজিমুদ্দিন মোল্লা ওরফে এসডু মোল্লার ছেলে শাহরিয়া হোসেন (৩২) কে হত্যা করে। রাত ১০টায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং ঘটনাস্থল থেকে ২জনকে আটক করে। ওদিন রাত ৩টায় নিহতের বড় ভাই গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে ১০/১২জনকে অজ্ঞাত রেখে ২৯জনকে আসামী করে তিতাস থানায় মামলা করেন। বৃহস্পতিবার লাশ ময়না তদন্তের পর বাদ মাগরিব নিহতের বাড়ির পাশে খোলা মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আটক ২জন এজাহারভূক্ত আসামী হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকালে তাদের কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে দড়িকান্দি গ্রামের ওয়াসিমের ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়–য়া খালেদকে অপহরণ করার অভিযোগে ৯ ফেব্রুয়ারি শাহরিয়ার বিভিন্ন অত্যাচারের বিরুদ্ধে আসমানিয়া-জাহাপুর সড়কে গ্রামবাসী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। ওই সভায় স্থানীয় লোকজন শাহরিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ তুলেন। এরপর থেকে শাহরিয়ার সাথে স্থানীয় গ্রামবাসীর মতবিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন গরু চুরি করেছে এমন অভিযোগ এনে শাহরিয়াকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে।

দড়িকান্দি গ্রামের রহিমা খাতুন, আফিয়া খাতুন ও সালমা আক্তার জানান, শাহরিয়াকে হত্যার পর মামলা হওয়ায় গ্রেফতার এড়াতে আসামী ও অন্যান্য পুরুষ লোকজন গ্রামের বাহিরে রয়েছে। তবে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত বহিরাগত লোকজনদের হামলার ভয়ে আতংকে আছি।

নিহতের বড় ভাই ও মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা বলেন, গ্রাম্য আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে আমাদের সাথে গ্রামের কিছু লোকদের বিরোধ ছিল। বুধবার সন্ধ্যায় আমার ভাই কালিপুর যাওয়ার পথে দড়িকান্দি গ্রামের আব্দুর রহিমের বাড়ির উত্তর পাশে পথরোধ করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে চোর আখ্যা দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। আমার ভাই কোন অপকর্মের সাথে জড়িত থাকতে পারে না, আমি এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।

তিতাস থানার অফিসার ইনচার্জ সৈদয় আহসানুল ইসলাম জানান, শাহরিয়া হত্যার এজাহারভূক্ত ২ আসামীকে গ্রেফতার করা হাজতে পাঠানো হয়েছে। শাহরিয়ার বিরুদ্ধে তিতাস থানায় চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতন ও চুরির ঘটনায় ৩টি মামলা রয়েছে। উক্ত ঘটনায় জড়িত আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।