নাজমুল করিম ফারুক, তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার তিতাসে সুপ্রিম কোর্টের মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশে খলিলাবাদ-রঘুনাথপুর খালের উপর অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। মঙ্গলবার জেলার সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আঃ রউফ তালুকদার উপজেলার আসমানিয়া বাজারে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নারান্দিয়া ইউনিয়নের আসমানিয়া বাজার সংলগ্ন খলিলাবাদ রঘুনাথপুর খাল ভরাট করে একটি মহল মার্কেট নির্মাণ করে। উত্তর নারান্দিয়া মৌজার ১০৯২ দাগের প্রায় ২২ শতক খাল প্রভাবশালী মহল ভরাট করায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে আসমানিয়া বাজার কমিটি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ব্যবসায়ীদের জোরালো দাবিতে নারান্দিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন সেলিম গত বছর বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে বেআইনী ইজারা প্রদান চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট পিটিশন করেন যার নং-১০৬৩। পিটিশনটি আমলে নিয়ে আর.এস খতিয়ান ১০৯২ এবং বি.এস খতিয়ান ৩১৪২ এবং সকল প্রকার প্রমাণাদি পর্যালোচনা সাপেক্ষে মহামান্য হাইকোর্ট উক্ত স্থানে যেকোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণে স্থগিতাদেশ দেন। কিন্তু বিবাদীগণ হাইকোর্টের আদেশ অম্যান্য করে খাস জমি থেকে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ না করায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর এবং ০২ নভেম্বরের দুটি পত্রের মাধ্যমে হাইকোর্ট বিভাগের উপরোক্ত আদেশ এবং নির্দেশনা অনুসারে দোকান এবং কাঠামো সমূহের অবৈধ নির্মাণ অপসারন না করে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ এবং নির্দেশ প্রতিপালন না করে আদালতের অবমাননা করায় হাইকোর্ট উক্ত স্থান থেকে সকল প্রকার স্থাপনা অপসারনের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। উক্ত নির্দেশের আলোকে মঙ্গলবার এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। বর্তমান বিএস খতিয়ানে ১০৯২ দাগের ২২শতক খাল হিসেবে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি জানান, নারান্দিয়া ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান খোকা ও সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শামছুল হক শান্তিসহ ৪৪জনের একটি সিন্ডিকেট উক্ত ভূমিটি আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে একশনা লিজ নিয়ে এখানে মুক্তিযোদ্ধা সুপার মার্কেট নামে একটি মার্কেট নির্মাণ করেন। এসময় স্থানীয় জনসাধারণের দাবির প্রেক্ষিতে এবং আসমানিয়া বাজারের রাজস্ব বাড়াতে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জি. সালাউদ্দিনসহ অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় এ উচ্ছেদ অভিযান দেখে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে আনন্দ এবং প্রশাসনের প্রতি সন্তোষ লক্ষ্য করা যায়।
নারান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ইঞ্জি. সালাহ উদ্দিন বলেন, অনেক পর্যালোচনার পর মহামান্য হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে এর বাইরে আমার কোন মন্তব্য নেই।
মার্কেটের দোকান মালিক সামছুল হক শান্তি বলেন, পেরিফেরিভূক্ত খাস বাজার ভূমির বৈধ লীজকৃত ভিটিতে প্রশাসনের অনুমোদন সাপেক্ষে কাঁচা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এতে আমাদের প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
জেলা সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আঃ রউফ তালুকদার বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।