শহীন আলম, দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা দেবিদ্বার সুজাত আলী সরকারি কলেজ হোস্টেল নানা সমস্যায় দিন দিন অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। হোস্টেলের কিচেন, ডাইনিং, টয়লেট, সিঁড়ি, নামাযের ঘর, টিভি রুমে অপরিস্কার-অপরিচ্ছন্নতায় ভোগছে দীর্ঘদিন। ছাত্রদের প্রতিটি কক্ষ যেন ময়লা আর বালির স্তুপে একাকার। অধিকাংশ বাথরুম, টয়লেটের দরজা, পয়:নিষ্কাশনের পাইপ, কমেড, বেসিন, পানির টেপ ভেঙ্গে অকেজো হয়ে পড়ে আছে র্দীঘদিন। যেগুলো ব্যবহার উপযোগী সেগুলোও এখন স্যাতেস্যাতে, অপরিস্কার হওয়ায় ব্যবহারের অনুপোযোগী। দীর্ঘদিন দেয়াল মেরামত ও রংয়ের ছোঁয়া না পড়ায় খসে পড়ছে ছাদ ও দেয়ালের প্লাস্টার। হোস্টেলের সীট, চেয়ার ও বেঞ্চ ভেঙ্গে পড়ে আছে এদিক – সেদিক। বৃষ্টির পানি ও পয়:নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় কাঁদাপানিতে হাটুজল থাকে হোস্টেলের মাঠ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ছাত্রদের কক্ষে ময়লা-আর্বজনা পড়ে স্তুপ হয়ে আছে র্দীঘদিন, হোস্টেলের পিছনে জানালার গ্রীল ঝোপ ঝাড় ও আগাছার দখলে। অধিকাংশ জানালার গ্লাস নেই, গ্রীলে আগাছা বেঁয়ে উঠে প্রবেশ করছে ছাত্রদের রুমে, পাশ্ববর্তী বাড়ির খোলা টয়লেটের বর্জ্য,মল-মুত্র, ডাস্টবিনের ময়লা-আর্বজনা কর্দমাক্ত, নর্দমার পানিতে মিশে পঁচে র্দূগন্ধ ছড়ায় আশপাশসহ ছাত্রদের কক্ষে যা পরিবেশ দূষনসহ ছড়ায় নানা রোগ জীবানু। হোস্টেলের পূর্বপাশে দেয়াল কেটে রাস্তায় হওয়ায় সাধারণ মানুষ চলাচল করে হোস্টেলের ভিতর দিয়ে। হোস্টেলের মাঠের দুই কোনায় অস্থায়ী ডাস্টবিন বানিয়ে ময়লা ফেলছে স্থানীয় দোকানীরা। বিশুদ্ধ পানি পানের নেই কোন ব্যবস্থা,বাহিরে একটি টিউবওয়েল ছিলো কে-বা কারা সেটিও ভেঙ্গে নিয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনেইচ্ছুক একাধিক আবাসিক ছাত্র জানায়, হোস্টেলে নেই মানসম্মত খাওয়ার ব্যবস্থা, অপরিচ্ছন্ন, নোংরা পরিবেশে রান্না হয় খাবার, তাও রান্নার পর খোলাস্থানে পড়ে থাকে প্রায় সবসময়ই ফলে অধিকাংশ ছাত্রই বাহিরে হোটেল-রেস্টুরেন্টে খেয়ে আক্রান্ত হচ্ছে গ্যাস্ট্রিকসহ নানা রোগ জীবানুতে। হোস্টেল ভবনের পিছনে নর্দমা ও ঝোপঝাড় থাকায় দিনের বেলাও মশার উৎপাতে কক্ষে বসে পড়া লেখা করা সম্ভব হয়না আর রাতে মশারীর ভিতরে বসে পড়া লেখা করতে হয়। ¬¬অভিযোগ রয়েছে, কলেজ কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু তদারকির অভাবে দেখা দিয়েছে এসব সমস্যা। একজন প্রভাষককে হোস্টেল পরিদর্শকের দায়িত্ব দেয়া হলেও তিনি ছাত্রদের পড়া লেখাসহ আনুসাঙ্গিক খোজ-খবর রাখেন অনিয়মিত।
এ ব্যাপারে সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর রুহুল আমিন বলেন, হোস্টেলের ঝুকিপূর্ণ ভবন মেরামত ও পানি নিষ্কাশনের করা জরুরী হয়ে পড়েছে। দ্রুত সমস্যা নিরশনে ব্যবস্থা গ্রহন করব। হোস্টেল সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হোস্টেল পুন:সংস্কারের জন্য শিক্ষা প্রকৌশলী অফিসে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। নতুন হোস্টেল সুপারকে সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে অবহিত করা হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল হোস্টেলের উন্নয়নমূলক কাজে কয়েকবার আর্থিক সহায়তা করেন এবং হোস্টেলের সামনে একটি পাকা রাস্তার টেন্ডার হয়েছে। হোস্টেল সংস্কারের জন্য তিনি আরও কিছু অনুদান দিবেন বলেও জানান।
উল্লেখ্য, দেবিদ্বার এসএ সরকারি কলেজ হোস্টেল ১৯৯৫ ইং সালের ১০ ই জুন শনিবার ফ্যাসিলিটিজ ডির্পাটমেন্ট’র সহায়তায় নির্মাণ করা হয় হোস্টেলটি।