ঢাকা ১১:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেহঘড়ি : সুস্থ থাকবেন কিভাবে

লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
স্বাস্থ্য ও কুশল বিষয়ে যখন আমার সঙ্গে আলোচনা হয় তখন আমি একটা বিষয় জোর দিয়ে বলে থাকি যে, কেবল জ্ঞান থাকলে সুস্বাস্থ্য হবেনা, মূল হচ্ছে কাজে পরিণত করা। ভালো থাকার জন্য নিজে কতটুকু উদ্যোগী হবেন, আর সেজন্য একটি কর্মসূচী মেনে চলবেন দিনরাত। সে রকম একটি দিন-রাতের কর্ম-পরিকল্পনা পেশ করি আপনাদের কাছে, আপনাদের জন্য।
৬.৩০-৭.০০ সকাল
প্রতি সকালে দুই কাপ লেবুজল পান করুন। এই সহজ সরল অভ্যাস শরীরকে রাখবে সতেজ। কোষ্ট পরিষ্কার থাকবে। লেবুর রসের পুষ্টি উপকরণ দেহের হিতে লাগবে। এতে আছে ফাইটোকেমিক্যালস্।
৭.০০ -৭.৩০ সকাল
৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন। খালিপেটে কার্ডিও ওয়ার্কআউট। সকালে জোরে হাটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালালে কোর্টিসল হরমোন এতে কমে, দেহের বাড়তি মেদ পুড়ে। ব্রিটিশ জার্নাল অব নিউট্রিশনে প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধে দেখা যায়, সকালে খালিপেটে ব্যায়াম করলে, পরবর্তী অন্য সময়ে ব্যায়াম করার তুলনায় ২০% মেদ বেশি পোড়ানো সম্ভব। তাই সময় জ্ঞান বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
৭.৩০- ৭.৪৫ সকাল
প্রাত:রাশ। ফ্রুট স্মুথি। ঘোলের শরবত, ডিমপোচ, আটার রুটি, সবজি, খই-দই কলা। অংকুরিত ছোলা, কিচুড়ি ও ডিম সিদ্ধ। রুটি ও হালকা চিকেন ঝোল।
মধ্য সকালে নাস্তা ও মধ্য বিকেল
দুটো স্ন্যাকস ও একটি লাঞ্চ প্যাকেট করে নিয়ে যান অফিসে। স্ন্যাকস হতে পারে ফলের টুকরো, বাদাম, ছোলা, দধি, পনির, মুড়ি, ওটমিল, ডিমসিদ্ধ, টমেটো ও শশা স্যান্ডউইচ, ফুড স্যালাড ইত্যাদি। লাঞ্চ প্যাকে থাকবে ভাত ১.৫ কাপ/ রুটি ২/৩টি আটার রুটি/ ডাল এক কাপ, শাক সবজি, মাছ/মাংস/ডিম একটুকরা/একটি এবং স্যালাড ও লেবু। তিন ঘন্টা পর পর খেতে হবে কিছু না কিছু। সকালের নাস্তায় অবশ্য থাকবে প্রোটিন, তাহলে দিন যাবে কর্ম মুখর। প্রচুর পানি পান করতে হবে। বিকেলে নাস্তা অবশ্য খাবেন। বিস্কুট, র’টি, মুড়ি/পপকর্ন/ ছোলা। যারা কম কম করে বেশি বার খান তাদের ওজন হ্রাস হয় বেশি কার্যকর। নিয়মিত খেলে রক্তের সুগার বাড়ে না।  খুব কমেওনা। মন-মেজাজ ও এনার্জির উপর এর প্রভাব পড়ে। ডেস্কে একটি বড় বোতলে পানি রাখুন। প্রতি সকালে ভরে রাখবেন। মনে রাখবেন দিনের শেষে পানির বোতল শেষ করতে হবে। ফ্লাক্স বা টিপটে পূর্ণ থাকবে গরম পানি, এতে দিবেন তিন/চারটি গ্রীনটি ব্যাগ। সারা দিন চুমুকে চুমুকে পান করবেন গ্রীনটি।
শরীর চর্চা করতে হবে
৩০ মিনিট প্রতিদিন সারা সপ্তাহ শরীর চর্চা করতে হবে। ১৫০ মিনিট ব্যায়াম, মাঝারি ব্যায়াম এক সপ্তাহ করলে যথেষ্ট। হাটা, জোরে হাটা, সাইকেল চালানো, সাতার, স্কিপিং, খেলাধূলা, ভারউত্তোলন, রেজিস্ট্যান্স ব্যাড, উঠবস করা, ইয়োগা করলে আরো ভালো। প্রাণায়াস, ডিপব্রিদিং ব্যায়াম, ধ্যানাভ্যাস ভালো। প্রচুর পানি পান করুন। কোমল পানীয়, ফাস্টফুড, ভাজা পোড়া, রাস্তার খাবার, জাংক ফুড, চিনি-মিষ্টি যত কম খাবেন স্বাস্থ্য তত ভালো থাকবে।
সন্ধ্যা ৬- রাত ৮ টা
ডিনার খেতে হবে শুতে যাবার ঘন্টা দুই আগে। যাতে ভালো ঘুম হয়। প্লেটে থাকবে আঁশযুক্ত শ্বেতসার, এক তৃতীয়াংশ স্যালাড, এক তৃতীয়াংশ সবজি। অন্য তৃতীয়াংশ আমিষ। জলপাই তেলের ড্রেসং স্যালাডে। লাল চাল/লাল আটার রুটি ডিনারে কম পরিমাণে খেতে হবে।
রাত ৯.৩০ – ১০.০০ টা
একা কিছু সময় কাটান অন্তত ১৫ মিনিট। গাঢ় অন্ধকার ঘরে নয়ত নীরবে বসে থাকুন চোখ বুজে। শরীর দিনের টানাপোডেন কাটিয়ে উঠবে। মেলাটনিন নি:সৃত হবে। নিদ্রা বিশেষজ্ঞরা বলেন ৭-৮ ঘন্টা ঘুম যথেষ্ট। কারো কারো কম বেশি ঘুম প্রয়োজন হয়। এলার্ম ছাড়াই ঘুম থেকে উঠলে, সতেজ হয়ে উঠবেন। ঠিক ঠিক ঘুম হবে। বেশি স্ট্রেস হলে যদি ঘুমের ব্যাঘাত হয়, তাহলে পরামর্শ ডাক্তারের। দেখুন একে অনুসরণ করে। অদল-বদল করেও দেখতে পারেন।
লেখক : পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেসবারডেম, ঢাকা
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগর সেন্ট্রাল স্কুলের পরীক্ষার ফল প্রকাশ ও পুরষ্কার বিতরণ

দেহঘড়ি : সুস্থ থাকবেন কিভাবে

আপডেট সময় ০৯:০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ মার্চ ২০১৮
লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
স্বাস্থ্য ও কুশল বিষয়ে যখন আমার সঙ্গে আলোচনা হয় তখন আমি একটা বিষয় জোর দিয়ে বলে থাকি যে, কেবল জ্ঞান থাকলে সুস্বাস্থ্য হবেনা, মূল হচ্ছে কাজে পরিণত করা। ভালো থাকার জন্য নিজে কতটুকু উদ্যোগী হবেন, আর সেজন্য একটি কর্মসূচী মেনে চলবেন দিনরাত। সে রকম একটি দিন-রাতের কর্ম-পরিকল্পনা পেশ করি আপনাদের কাছে, আপনাদের জন্য।
৬.৩০-৭.০০ সকাল
প্রতি সকালে দুই কাপ লেবুজল পান করুন। এই সহজ সরল অভ্যাস শরীরকে রাখবে সতেজ। কোষ্ট পরিষ্কার থাকবে। লেবুর রসের পুষ্টি উপকরণ দেহের হিতে লাগবে। এতে আছে ফাইটোকেমিক্যালস্।
৭.০০ -৭.৩০ সকাল
৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন। খালিপেটে কার্ডিও ওয়ার্কআউট। সকালে জোরে হাটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালালে কোর্টিসল হরমোন এতে কমে, দেহের বাড়তি মেদ পুড়ে। ব্রিটিশ জার্নাল অব নিউট্রিশনে প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধে দেখা যায়, সকালে খালিপেটে ব্যায়াম করলে, পরবর্তী অন্য সময়ে ব্যায়াম করার তুলনায় ২০% মেদ বেশি পোড়ানো সম্ভব। তাই সময় জ্ঞান বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
৭.৩০- ৭.৪৫ সকাল
প্রাত:রাশ। ফ্রুট স্মুথি। ঘোলের শরবত, ডিমপোচ, আটার রুটি, সবজি, খই-দই কলা। অংকুরিত ছোলা, কিচুড়ি ও ডিম সিদ্ধ। রুটি ও হালকা চিকেন ঝোল।
মধ্য সকালে নাস্তা ও মধ্য বিকেল
দুটো স্ন্যাকস ও একটি লাঞ্চ প্যাকেট করে নিয়ে যান অফিসে। স্ন্যাকস হতে পারে ফলের টুকরো, বাদাম, ছোলা, দধি, পনির, মুড়ি, ওটমিল, ডিমসিদ্ধ, টমেটো ও শশা স্যান্ডউইচ, ফুড স্যালাড ইত্যাদি। লাঞ্চ প্যাকে থাকবে ভাত ১.৫ কাপ/ রুটি ২/৩টি আটার রুটি/ ডাল এক কাপ, শাক সবজি, মাছ/মাংস/ডিম একটুকরা/একটি এবং স্যালাড ও লেবু। তিন ঘন্টা পর পর খেতে হবে কিছু না কিছু। সকালের নাস্তায় অবশ্য থাকবে প্রোটিন, তাহলে দিন যাবে কর্ম মুখর। প্রচুর পানি পান করতে হবে। বিকেলে নাস্তা অবশ্য খাবেন। বিস্কুট, র’টি, মুড়ি/পপকর্ন/ ছোলা। যারা কম কম করে বেশি বার খান তাদের ওজন হ্রাস হয় বেশি কার্যকর। নিয়মিত খেলে রক্তের সুগার বাড়ে না।  খুব কমেওনা। মন-মেজাজ ও এনার্জির উপর এর প্রভাব পড়ে। ডেস্কে একটি বড় বোতলে পানি রাখুন। প্রতি সকালে ভরে রাখবেন। মনে রাখবেন দিনের শেষে পানির বোতল শেষ করতে হবে। ফ্লাক্স বা টিপটে পূর্ণ থাকবে গরম পানি, এতে দিবেন তিন/চারটি গ্রীনটি ব্যাগ। সারা দিন চুমুকে চুমুকে পান করবেন গ্রীনটি।
শরীর চর্চা করতে হবে
৩০ মিনিট প্রতিদিন সারা সপ্তাহ শরীর চর্চা করতে হবে। ১৫০ মিনিট ব্যায়াম, মাঝারি ব্যায়াম এক সপ্তাহ করলে যথেষ্ট। হাটা, জোরে হাটা, সাইকেল চালানো, সাতার, স্কিপিং, খেলাধূলা, ভারউত্তোলন, রেজিস্ট্যান্স ব্যাড, উঠবস করা, ইয়োগা করলে আরো ভালো। প্রাণায়াস, ডিপব্রিদিং ব্যায়াম, ধ্যানাভ্যাস ভালো। প্রচুর পানি পান করুন। কোমল পানীয়, ফাস্টফুড, ভাজা পোড়া, রাস্তার খাবার, জাংক ফুড, চিনি-মিষ্টি যত কম খাবেন স্বাস্থ্য তত ভালো থাকবে।
সন্ধ্যা ৬- রাত ৮ টা
ডিনার খেতে হবে শুতে যাবার ঘন্টা দুই আগে। যাতে ভালো ঘুম হয়। প্লেটে থাকবে আঁশযুক্ত শ্বেতসার, এক তৃতীয়াংশ স্যালাড, এক তৃতীয়াংশ সবজি। অন্য তৃতীয়াংশ আমিষ। জলপাই তেলের ড্রেসং স্যালাডে। লাল চাল/লাল আটার রুটি ডিনারে কম পরিমাণে খেতে হবে।
রাত ৯.৩০ – ১০.০০ টা
একা কিছু সময় কাটান অন্তত ১৫ মিনিট। গাঢ় অন্ধকার ঘরে নয়ত নীরবে বসে থাকুন চোখ বুজে। শরীর দিনের টানাপোডেন কাটিয়ে উঠবে। মেলাটনিন নি:সৃত হবে। নিদ্রা বিশেষজ্ঞরা বলেন ৭-৮ ঘন্টা ঘুম যথেষ্ট। কারো কারো কম বেশি ঘুম প্রয়োজন হয়। এলার্ম ছাড়াই ঘুম থেকে উঠলে, সতেজ হয়ে উঠবেন। ঠিক ঠিক ঘুম হবে। বেশি স্ট্রেস হলে যদি ঘুমের ব্যাঘাত হয়, তাহলে পরামর্শ ডাক্তারের। দেখুন একে অনুসরণ করে। অদল-বদল করেও দেখতে পারেন।
লেখক : পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেসবারডেম, ঢাকা