জাতীয় ডেস্কঃ
পাঠ্যপুস্তকের বাংলা বই থেকে প্রখ্যাত কিছু লেখকের লেখা বাদ দিয়ে অন্য লেখকদের লেখা অন্তর্ভুক্ত করাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি নাইমা হায়দার এবং বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ রুল জারি করেন।
শিক্ষা সচিব, পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যানকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলেছেন আদালত। একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে শিক্ষাবিদ মোমতাজ জাহান ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আনোয়ার হোসেন রিট আবেদনটি করেন।
রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, মামুন মাহবুব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।অনুসন্ধানে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে ১৭টি লেখা বাদ পড়েছে। ওই ১৭টি লেখা পাঠ্যবইয়ে যুক্ত করার দাবি জানায় হেফাজতে ইসলাম। অন্যদিকে নতুন করে যুক্ত ১২টি লেখা বাদ দিতে বলে তারা। এই ১২টি লেখা ২০১৩ সালে পাঠ্যবইয়ে যুক্ত করা হয়েছিল।
পঞ্চম শ্রেণিতে তিনটি লেখা যুক্ত করে একটি লেখা বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছিল হেফাজতে ইসলাম। এনসিটিবি তা-ই করেছে। হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা যৌথ বিবৃতি ও স্মারকলিপি দিয়ে পঞ্চম শ্রেণি থেকে হুমায়ুন আজাদের লেখা ‘বই’ কবিতাটি বাদ দিতে বলেছিলেন। হেফাজতের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘স্বঘোষিত নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ লিখিত “বই” নামক একটি কবিতা, যা মূলত মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ পবিত্র কোরআন বিরোধী।’
হেফাজতের পক্ষ থেকে পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বইয়ে তিনটি নতুন বিষয় যুক্ত করার দাবি ছিল, যা এনসিটিবি মেনে নিয়েছে। এ বছরের বইয়ে নতুন যুক্ত করা হয়েছে ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’, ‘বিদায় হজ’ ও ‘শহিদ তিতুমীর’। হেফাজতের দাবি মেনে এই তিনটি বিষয় যুক্ত করে বইটি থেকে হুমায়ুন আজাদের ‘বই’ কবিতা এবং গোলাম মোস্তফার ‘প্রার্থনা’ কবিতা (অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি/ বিচার দিনের স্বামী…) বাদ দেওয়া হয়েছে।
চতুর্থ শ্রেণির বাংলা বইয়ে যুক্ত করা হয়েছে ‘খলিফা হযরত উমর (রা.)’। এটি ২০০৫ সালের পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বই থেকে নেওয়া হয়েছে। লেখাটি কার বা কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে, তার উল্লেখ নেই। ২০১৬ সালে চতুর্থ শ্রেণির একই বইয়ে ২২টি গদ্য ও পদ্য ছিল। ২০১৭ সালে হয়েছে ২৩টি, এর মধ্যে ২৩তম লেখা হযরত উমর (রা.)-কে নিয়ে। হেফাজতে ইসলাম এই লেখাটি যুক্ত করার সুপারিশ করেছিল।
২০১৬ সালের ৮ এপ্রিল পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেয় হেফাজতে ইসলাম। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছিল সংগঠনটি।