ঢাকা ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রয়োজন হলে আমরা পায়ে গুলি করি, বিএসএফ করে মাথা’

জাতীয় পেস্ক রির্পোটঃ

সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সমালোচনা করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ।

তিনি বলেন, বিএসএফ বাংলাদেশের কোনো নাগরিককে হত্যার পর কেবল একটি কথাই বলে- তারা আক্রান্ত হয়েছেন বলেই গুলি চালিয়েছেন। কিন্তু তাদের এ যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত না হলেও তারা গুলি চালায়।

বিজিবি ডিজি বলেন, ‘আমরাও (বিজিবির সদস্যরা) আক্রান্ত হই, কিন্তু কখনও মানুষ হত্যা করি না। প্রয়োজন হলে আমরা পায়ে গুলি করি। কিন্তু বিএসএফ গুলি চালায় মাথা, বুক ও পেটে।’

বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যকার সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ৪৩তম সীমান্ত সম্মেলনের বিষয়ে শুক্রবার আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দফতরে এ প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি ডিজি আরও অভিযোগ করেন, বিএসএফ প্রায়ই শূন্যরেখা অতিক্রম করে এদেশে ঢুকে পড়ে। তাই মাঝে-মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা হয়। ভবিষ্যতে যাতে তারা এ ধরনের কাজ না করে সে বিষয়টি সদ্য সমাপ্ত সীমান্ত সম্মেলনে তুলে ধরা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সীমান্তে কাঁটাতারের পাশাপাশি বিএসএফ প্রায়ই বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চালায়। আমরা বলেছি- তোমরা যদি বাঁধ নির্মাণ কর, তাহলে কাঁটা তারের বেড়া নির্মাণ করতে দেব না।’

এ সময় মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, আগে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসলেও এখন তা আসছে ভারত থেকে।

তিনি বলেন, গরু চোরাচালানের কারণেই সীমান্তে ৯৫ ভাগ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। তাই গরু চোরাচালান রোধ করা না গেলে সীমান্ত হত্যাসহ অন্যান্য সমস্যা রোধ করাও সম্ভব হবে না।

বিজিবি ডিজি বলেন, গরু চোরাচালান শুধু একটি সমস্যা নয়, এর সঙ্গে স্বর্ণ, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের বিষয়টিও জড়িত। তাই গরু চোরাচালান রোধ করা না গেলে সীমান্ত হত্যাসহ অন্যান্য সমস্যা রোধ করা সম্ভব হবে না।

তিনি জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী ২৬ জন সীমান্তে হত্যার শিকার হয়েছেন।

চোরাচালান ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিএসএফকেই ভূমিকা নিতে হবে উল্লেখ করে মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকেই গরু প্রথমে সীমান্তে আসে। এরপর আসে বাংলাদেশে।

তিনি জানান, সম্মেলনে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক দ্রব্যের চোরাচালান বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

ভারত থেকেও ইয়াবা আসছে জানিয়ে বিজিবি ডিজি বলেন, ভারতে ইয়াবা তৈরি হচ্ছে নাকি মিয়ানমার থেকে তৈরিকৃত ইয়াবা ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসছে সে বিষয়টি বিএসএফকে খতিয়ে দেখতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বাংলাদেশের পলাতক ২৩০ অপরাধীর তালিকা বিএসএফ কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতের দিল্লিতে ৪৩তম সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বিজিবি ডিজির নেতৃত্বে ২২ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। অন্যদিকে বিএসএফ মহাপরিচালক একে শর্মার নেতৃত্বে ২৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেয়।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মুরাদনগরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

প্রয়োজন হলে আমরা পায়ে গুলি করি, বিএসএফ করে মাথা’

আপডেট সময় ০৩:০১:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অক্টোবর ২০১৬
জাতীয় পেস্ক রির্পোটঃ

সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সমালোচনা করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ।

তিনি বলেন, বিএসএফ বাংলাদেশের কোনো নাগরিককে হত্যার পর কেবল একটি কথাই বলে- তারা আক্রান্ত হয়েছেন বলেই গুলি চালিয়েছেন। কিন্তু তাদের এ যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত না হলেও তারা গুলি চালায়।

বিজিবি ডিজি বলেন, ‘আমরাও (বিজিবির সদস্যরা) আক্রান্ত হই, কিন্তু কখনও মানুষ হত্যা করি না। প্রয়োজন হলে আমরা পায়ে গুলি করি। কিন্তু বিএসএফ গুলি চালায় মাথা, বুক ও পেটে।’

বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যকার সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ৪৩তম সীমান্ত সম্মেলনের বিষয়ে শুক্রবার আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দফতরে এ প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি ডিজি আরও অভিযোগ করেন, বিএসএফ প্রায়ই শূন্যরেখা অতিক্রম করে এদেশে ঢুকে পড়ে। তাই মাঝে-মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা হয়। ভবিষ্যতে যাতে তারা এ ধরনের কাজ না করে সে বিষয়টি সদ্য সমাপ্ত সীমান্ত সম্মেলনে তুলে ধরা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সীমান্তে কাঁটাতারের পাশাপাশি বিএসএফ প্রায়ই বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চালায়। আমরা বলেছি- তোমরা যদি বাঁধ নির্মাণ কর, তাহলে কাঁটা তারের বেড়া নির্মাণ করতে দেব না।’

এ সময় মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, আগে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসলেও এখন তা আসছে ভারত থেকে।

তিনি বলেন, গরু চোরাচালানের কারণেই সীমান্তে ৯৫ ভাগ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। তাই গরু চোরাচালান রোধ করা না গেলে সীমান্ত হত্যাসহ অন্যান্য সমস্যা রোধ করাও সম্ভব হবে না।

বিজিবি ডিজি বলেন, গরু চোরাচালান শুধু একটি সমস্যা নয়, এর সঙ্গে স্বর্ণ, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের বিষয়টিও জড়িত। তাই গরু চোরাচালান রোধ করা না গেলে সীমান্ত হত্যাসহ অন্যান্য সমস্যা রোধ করা সম্ভব হবে না।

তিনি জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী ২৬ জন সীমান্তে হত্যার শিকার হয়েছেন।

চোরাচালান ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিএসএফকেই ভূমিকা নিতে হবে উল্লেখ করে মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকেই গরু প্রথমে সীমান্তে আসে। এরপর আসে বাংলাদেশে।

তিনি জানান, সম্মেলনে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক দ্রব্যের চোরাচালান বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

ভারত থেকেও ইয়াবা আসছে জানিয়ে বিজিবি ডিজি বলেন, ভারতে ইয়াবা তৈরি হচ্ছে নাকি মিয়ানমার থেকে তৈরিকৃত ইয়াবা ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসছে সে বিষয়টি বিএসএফকে খতিয়ে দেখতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বাংলাদেশের পলাতক ২৩০ অপরাধীর তালিকা বিএসএফ কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতের দিল্লিতে ৪৩তম সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বিজিবি ডিজির নেতৃত্বে ২২ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। অন্যদিকে বিএসএফ মহাপরিচালক একে শর্মার নেতৃত্বে ২৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেয়।