ঢাকা ০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঞ্ছারামপুরে যাত্রাপালা ও একটি লাইব্রেরীর গল্প

ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর (বি-বাড়িয়া) থেকেঃ

সেদিনের কথা মাত্র।স্থৃতিগুলো চোখে জ্বলজ্বল করছে।গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর পৌর এলাকায় পুলিশ প্রহরায় সমাজের হোমরা-চোমরাদের সমন্ধয়ে যাত্রাপালার নামে অশ্লীল নৃত্য কাহিনী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল।

যাত্রাটির নাম ছিলো আপন দুলাল।যাত্রাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে মাইকিং, পোষ্টারিং তথা প্রকাশ্য ঘোষনা দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।পুলিশ প্রহরা ছিলো এই কারনে সেখানে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের বাঞ্ছারামপুর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক,উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মিসেস জলি আমীরকে প্রধান অতিথি করা নিয়ে কমিটির মধ্যে অভ্যন্তরীন কোন্দল সৃষ্টি হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে,নগর পিতা  (মেয়র) খলিলুর রহমান টিপু মোল্লার নাম পোষ্টার তথা প্রচারনায় না থাকলেও যাত্রাপালাটি যেহেতু মেয়রের বাড়ির সন্নিকটে অনুষ্ঠিত হচ্ছে,প্রেষ্টিজ ইস্যু হিসেবে শেষ মূহুর্তে আয়োজক কমিটিকে চেপে ধরেন মেয়র ও মেয়রের লোকজন।পরে,জলি আমীর কে প্রধান অতিথি হতে বাদ করে মেয়রকে প্রধান অতিথি ও ভাইস চেয়ারম্যানকে বিশেষ অতিথি করা হয়।এই নিয়ে বাধে মনকষাকষি,রেষারেসি।জলী আমীর যাত্রার প্যান্ডেল ত্যাগ তথা রীতিমতো অপমানিত হয়ে চলে আসেন।

আসার আগে হাটে হাড়ি ভেঙ্গে দেন তিনি।তিনি অভিযোগ করেন,আমাকে প্রধান অতিথি করা হবে এই মর্মে-১০ হাজার টাকা নগর যাত্রা কিিমটির লোকজন আনেন।তারা কথা রাখেনি।

খোজ নিয়ে জানা গেছে,রুপসদীর আলহাজ¦ হেলাল মিয়া ব্যাপারী আমানত শাহ লুঙ্গীর স্পন্সরে প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা যাত্রাটি সফলতার সাথে শেষ করার জন্য অনুদান দেন।

এ ছাড়া মেয়র,উপজেলা আওয়ামীলীগ-বিএনপি নেতাগন,ধন্যাঢ্য ব্যবসায়ী বৃন্দ আরো লক্ষাধিক টাকা যাত্রার আয়োজক কমিটিকে প্রদান করেন।

এ ছাড়া-আয়োজক কমিটির পক্ষে জনৈকা এক গঙ্গুয়া নামে পাতি নেতা উপজেলার বিভিন্ন দোকান থেকে টাকা উত্তোলন করে।এ বিষয়ে সাঈদ ইলেকট্রনিক্সের মালিক সাঈদ অভিযোগ করে বলেন,-‘গঙ্গুয়া আমার কাছ থেকে রীতিমতো জোর করে ক্যাশ ৩ হাজার টাকা নিয়েছে।প্রথমে দাবী করেছিলো ১০ হাজার।সেখান থেকে কমিয়ে ৩ হাজার দিতে পেরেছি’।অর্থাৎ সবমিলিয়ে ধারনা করা যায় ৪/৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে ব্যায় হয়েছে যাত্রাপালাটি করতে যেয়ে।

এই বিষয়ে সমাজের কেউ,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারনা চালানো হলেও ফেসবুকেও কেউ টু শব্দটি করেনি।ফেসবুকে যাত্রাটি লাইভ দেখানো হলেও আমার দেখার সৌভাগ্য ! হয়নি।প্রশাসন,হুজুর-মৌলানা,সচেতন নাগরিক সবাই বলতে গেলে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেছেন বলে জানা গেছে।
১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার পর এলাকার যুবসমাজের ঢল নামে উপজেলার বটতলী মোড়ের যাত্রানুষ্ঠানে।

কারন,ঢাকা ও নরসিংদী হতে ডানাকাটা পরী নামক সুন্দরী নর্তকীদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে অশ্লীল নৃর্তের মাধ্যমে যুব সমাজকে শিহরিত করতে চুক্তিতে আনা হয়।

এসব ভূইফোড় নৃর্ত্যশিল্পীরা সারা রাতভর কি ধরনের অশ্লীলতা করেছে তা যারা দেখেছেন তারা পরদিন মুখরচকভাবে চা’য়ের আড্ডায় বলেছেন।
লাইব্রেরী পর্ব :

আমি সহ আমরা কয়েকজন বছর ধরে বাঞ্ছারামপুর সদর উপজেলায় একটি পাঠাগার নির্মান তথা উপজেলায় প্রথম গণগ্রন্থাগার তৈরীর উদ্যোগ নেয়ার জন্য বিভিন্ন মহলে ছুটাছুটি করছি।বাংলাদেশের সব উপজেলায় একটি পাবলিক লাইব্রেরী থাকলেও বাঞ্ছারামপুর সদর উপজেলায় তা অনুপস্থিত।

আমরা ‘বাঞ্ছারামপুর সদরে পাবলিক লাইব্রেরী’ নাই এ কথাটি যেনো কেউ কোন দিন বলতে না পারে,সে চেষ্টা শুরু করি ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে।
আমাদের উন্নয়নের রুপকারখ্যাত মাননীয় এমপি মহোদয় সব কিছুর উন্নয়ন করলেও লাইব্রেরী গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন।শিক্ষানগরী করতে চান বাঞ্ছারামপুরকে।অথচ-লাইব্রেরী করতে তিনি হয়তো চান না।

এমপি মহোদয়ের ভাগিনা উজানচর ইউনিয়নের প্রভাবশালী চেয়ারম্যান কাজী জাদিদ আল রহমান জনি’র কথা আমরা কমবেশী সবাই জানি।বয়সে আমার চেয়ে ছোট,সেই তার কাছে লাইব্রেরীর জন্য বার-বার ধর্না দিয়েছি।আকুতি-মিনতি করে বলেছি,-‘এলাকার সবাই জানে, ক্যা.তাজের পর এলাকায় ক্ষমতাধর ব্যক্তি না-কি আপনি।আপনার কথা প্রশাসন-বেসরকারি পর্যায়ে সবাই শোনেন, রাখেন।আপনার মামাকে (ক্যা.তাজ এমপি)বলে একটি লাইব্রেরী স্থাপনের ব্যবস্থা করুন।আমি ব্যক্তিগত ভাবে অর্ধেক ব্যয় বহন করবো।’’

গত বছর তিনি শুরুতে আশ্বাস দেন।দেই-করে দিবো,বলে দিবো,বাজেট আসলো বলে…ইত্যাদি ইত্যাদি বলে সময় ক্ষেপন করেন।দিন যায়,মাস যায়,বছর যায়।জনি চেয়ারম্যান লাইব্রেরীর কথা ভুলে যান।তিনি মনোযোগী হ’ন উজানচর কেএন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি পদটিকে আরো উজ্জ্বল করে তোলার জন্য।

প্রশাসনের এমন কোন ব্যক্তি নেই,যার কাছে সর্বসাধারনের জন্য একটি পাঠাগারের জন্য যাই নি।সবার কাছে গিয়েছি।
এক এক করে সরকারি উদ্যোগে পাঠাগারের কথা সবাই ইচ্ছে করে ভুলে যেতে থাকে যেনো ! কারন,এর মধ্যে আমার লিখিত আবেদনকৃত (গণস্বাক্ষর)পত্রটি- সাবেক ইউএনও মো.শওকত ওসমান মাসিক সমন্ধয় সভায়  লাইব্রেরী স্থাপনের আবেদনটি তুলে ধরা হবে বলে কথা দেন।তিনি আর তুলে ধরেন নি।উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামকে বার বার অনুরোধ করি।তিনি পাত্তা দেন নি।বর্তমান ইউএনও মো.শরিফুল ইসলামকে বলি,-‘স্যার আমাকে এক চিলতে জায়গা দেন,একটি লাইব্রেরী করার জন্য।বইয়ের টাকা আমি দেবো।’।ইউএনও সাহেব একই কথা-‘চেষ্টা করবো,দেখি’ ইত্যাদি।

শেষমেষ উপায় অন্তর না পেয়ে,শেষ ভরসা ফেসবুকের দ্বারস্থ হলাম।এর আগে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় আমার শ্রদ্ধাভাজন স্যার আলহাজ¦ দুধ মিয়া স্যারের সাথে কথা বলি।তিনি বিভিন্ন পরামর্শ দেন।
ফেসবুকে বন্ধুদের আহবান করলাম ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্য পদ বাবদ ১’শ টাকা নির্দিষ্টি বিকাশ নাম্বারে পাঠান।মানে লাইব্রেরী স্থাপনের জন্য শেয়ার বিক্রি করার মতো।মার্চের ৩০ তারিখ শুরু হয় সবার সহযোগিতা।আশা বাড়তে থাকে।আলো দেখতে পাই।দীর্ঘশ^াস কমতে থাকে।আশায় বুক বাধি।বন্ধুদের সাড়া পেয়ে।
যদিও আপন দুলালের মতো বড় অংকের টাকা নিয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি।জলি আমীর নয়,ষ্ট্যান্ডার্ড লুঙ্গীর মালিক হেলাল সাব,নেতা,চেয়ারম্যান কেউ না। এসেছে বেকার বন্ধুরা।যারা বাবা মার কাছ থেকে হাত খরচার টাকা এখনো চাইতে হয়।তারা পাঠাচ্ছে লাইব্রেরীর টাকা।অল্প অল্প করে জমা হচ্ছে, যা আজো চলমান।রমযানের পর শেয়ারের  টাকায় পাঠাগার হবে।যা-এলাকায় আলো ছড়াবো।

বইয়ের আলো।যুবক-তরুনরা মোবাইল টিপাটিপি বাদ দিয়ে বইতে মনোযোগ দিবে।জ্ঞান বাড়াবে।স্বপ্ন সত্যি হবে।বাঞ্ছারামপুর উপজেলাটি সারাদেশে মুখ উচু করে বলবে ‘‘আমাদের উপজেলায় লাইব্রেরী আছে’’।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মুরাদনগরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

বাঞ্ছারামপুরে যাত্রাপালা ও একটি লাইব্রেরীর গল্প

আপডেট সময় ০১:২৮:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ এপ্রিল ২০১৮

ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর (বি-বাড়িয়া) থেকেঃ

সেদিনের কথা মাত্র।স্থৃতিগুলো চোখে জ্বলজ্বল করছে।গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর পৌর এলাকায় পুলিশ প্রহরায় সমাজের হোমরা-চোমরাদের সমন্ধয়ে যাত্রাপালার নামে অশ্লীল নৃত্য কাহিনী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল।

যাত্রাটির নাম ছিলো আপন দুলাল।যাত্রাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে মাইকিং, পোষ্টারিং তথা প্রকাশ্য ঘোষনা দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।পুলিশ প্রহরা ছিলো এই কারনে সেখানে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের বাঞ্ছারামপুর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক,উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মিসেস জলি আমীরকে প্রধান অতিথি করা নিয়ে কমিটির মধ্যে অভ্যন্তরীন কোন্দল সৃষ্টি হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে,নগর পিতা  (মেয়র) খলিলুর রহমান টিপু মোল্লার নাম পোষ্টার তথা প্রচারনায় না থাকলেও যাত্রাপালাটি যেহেতু মেয়রের বাড়ির সন্নিকটে অনুষ্ঠিত হচ্ছে,প্রেষ্টিজ ইস্যু হিসেবে শেষ মূহুর্তে আয়োজক কমিটিকে চেপে ধরেন মেয়র ও মেয়রের লোকজন।পরে,জলি আমীর কে প্রধান অতিথি হতে বাদ করে মেয়রকে প্রধান অতিথি ও ভাইস চেয়ারম্যানকে বিশেষ অতিথি করা হয়।এই নিয়ে বাধে মনকষাকষি,রেষারেসি।জলী আমীর যাত্রার প্যান্ডেল ত্যাগ তথা রীতিমতো অপমানিত হয়ে চলে আসেন।

আসার আগে হাটে হাড়ি ভেঙ্গে দেন তিনি।তিনি অভিযোগ করেন,আমাকে প্রধান অতিথি করা হবে এই মর্মে-১০ হাজার টাকা নগর যাত্রা কিিমটির লোকজন আনেন।তারা কথা রাখেনি।

খোজ নিয়ে জানা গেছে,রুপসদীর আলহাজ¦ হেলাল মিয়া ব্যাপারী আমানত শাহ লুঙ্গীর স্পন্সরে প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা যাত্রাটি সফলতার সাথে শেষ করার জন্য অনুদান দেন।

এ ছাড়া মেয়র,উপজেলা আওয়ামীলীগ-বিএনপি নেতাগন,ধন্যাঢ্য ব্যবসায়ী বৃন্দ আরো লক্ষাধিক টাকা যাত্রার আয়োজক কমিটিকে প্রদান করেন।

এ ছাড়া-আয়োজক কমিটির পক্ষে জনৈকা এক গঙ্গুয়া নামে পাতি নেতা উপজেলার বিভিন্ন দোকান থেকে টাকা উত্তোলন করে।এ বিষয়ে সাঈদ ইলেকট্রনিক্সের মালিক সাঈদ অভিযোগ করে বলেন,-‘গঙ্গুয়া আমার কাছ থেকে রীতিমতো জোর করে ক্যাশ ৩ হাজার টাকা নিয়েছে।প্রথমে দাবী করেছিলো ১০ হাজার।সেখান থেকে কমিয়ে ৩ হাজার দিতে পেরেছি’।অর্থাৎ সবমিলিয়ে ধারনা করা যায় ৪/৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে ব্যায় হয়েছে যাত্রাপালাটি করতে যেয়ে।

এই বিষয়ে সমাজের কেউ,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারনা চালানো হলেও ফেসবুকেও কেউ টু শব্দটি করেনি।ফেসবুকে যাত্রাটি লাইভ দেখানো হলেও আমার দেখার সৌভাগ্য ! হয়নি।প্রশাসন,হুজুর-মৌলানা,সচেতন নাগরিক সবাই বলতে গেলে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেছেন বলে জানা গেছে।
১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার পর এলাকার যুবসমাজের ঢল নামে উপজেলার বটতলী মোড়ের যাত্রানুষ্ঠানে।

কারন,ঢাকা ও নরসিংদী হতে ডানাকাটা পরী নামক সুন্দরী নর্তকীদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে অশ্লীল নৃর্তের মাধ্যমে যুব সমাজকে শিহরিত করতে চুক্তিতে আনা হয়।

এসব ভূইফোড় নৃর্ত্যশিল্পীরা সারা রাতভর কি ধরনের অশ্লীলতা করেছে তা যারা দেখেছেন তারা পরদিন মুখরচকভাবে চা’য়ের আড্ডায় বলেছেন।
লাইব্রেরী পর্ব :

আমি সহ আমরা কয়েকজন বছর ধরে বাঞ্ছারামপুর সদর উপজেলায় একটি পাঠাগার নির্মান তথা উপজেলায় প্রথম গণগ্রন্থাগার তৈরীর উদ্যোগ নেয়ার জন্য বিভিন্ন মহলে ছুটাছুটি করছি।বাংলাদেশের সব উপজেলায় একটি পাবলিক লাইব্রেরী থাকলেও বাঞ্ছারামপুর সদর উপজেলায় তা অনুপস্থিত।

আমরা ‘বাঞ্ছারামপুর সদরে পাবলিক লাইব্রেরী’ নাই এ কথাটি যেনো কেউ কোন দিন বলতে না পারে,সে চেষ্টা শুরু করি ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে।
আমাদের উন্নয়নের রুপকারখ্যাত মাননীয় এমপি মহোদয় সব কিছুর উন্নয়ন করলেও লাইব্রেরী গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন।শিক্ষানগরী করতে চান বাঞ্ছারামপুরকে।অথচ-লাইব্রেরী করতে তিনি হয়তো চান না।

এমপি মহোদয়ের ভাগিনা উজানচর ইউনিয়নের প্রভাবশালী চেয়ারম্যান কাজী জাদিদ আল রহমান জনি’র কথা আমরা কমবেশী সবাই জানি।বয়সে আমার চেয়ে ছোট,সেই তার কাছে লাইব্রেরীর জন্য বার-বার ধর্না দিয়েছি।আকুতি-মিনতি করে বলেছি,-‘এলাকার সবাই জানে, ক্যা.তাজের পর এলাকায় ক্ষমতাধর ব্যক্তি না-কি আপনি।আপনার কথা প্রশাসন-বেসরকারি পর্যায়ে সবাই শোনেন, রাখেন।আপনার মামাকে (ক্যা.তাজ এমপি)বলে একটি লাইব্রেরী স্থাপনের ব্যবস্থা করুন।আমি ব্যক্তিগত ভাবে অর্ধেক ব্যয় বহন করবো।’’

গত বছর তিনি শুরুতে আশ্বাস দেন।দেই-করে দিবো,বলে দিবো,বাজেট আসলো বলে…ইত্যাদি ইত্যাদি বলে সময় ক্ষেপন করেন।দিন যায়,মাস যায়,বছর যায়।জনি চেয়ারম্যান লাইব্রেরীর কথা ভুলে যান।তিনি মনোযোগী হ’ন উজানচর কেএন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি পদটিকে আরো উজ্জ্বল করে তোলার জন্য।

প্রশাসনের এমন কোন ব্যক্তি নেই,যার কাছে সর্বসাধারনের জন্য একটি পাঠাগারের জন্য যাই নি।সবার কাছে গিয়েছি।
এক এক করে সরকারি উদ্যোগে পাঠাগারের কথা সবাই ইচ্ছে করে ভুলে যেতে থাকে যেনো ! কারন,এর মধ্যে আমার লিখিত আবেদনকৃত (গণস্বাক্ষর)পত্রটি- সাবেক ইউএনও মো.শওকত ওসমান মাসিক সমন্ধয় সভায়  লাইব্রেরী স্থাপনের আবেদনটি তুলে ধরা হবে বলে কথা দেন।তিনি আর তুলে ধরেন নি।উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামকে বার বার অনুরোধ করি।তিনি পাত্তা দেন নি।বর্তমান ইউএনও মো.শরিফুল ইসলামকে বলি,-‘স্যার আমাকে এক চিলতে জায়গা দেন,একটি লাইব্রেরী করার জন্য।বইয়ের টাকা আমি দেবো।’।ইউএনও সাহেব একই কথা-‘চেষ্টা করবো,দেখি’ ইত্যাদি।

শেষমেষ উপায় অন্তর না পেয়ে,শেষ ভরসা ফেসবুকের দ্বারস্থ হলাম।এর আগে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় আমার শ্রদ্ধাভাজন স্যার আলহাজ¦ দুধ মিয়া স্যারের সাথে কথা বলি।তিনি বিভিন্ন পরামর্শ দেন।
ফেসবুকে বন্ধুদের আহবান করলাম ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্য পদ বাবদ ১’শ টাকা নির্দিষ্টি বিকাশ নাম্বারে পাঠান।মানে লাইব্রেরী স্থাপনের জন্য শেয়ার বিক্রি করার মতো।মার্চের ৩০ তারিখ শুরু হয় সবার সহযোগিতা।আশা বাড়তে থাকে।আলো দেখতে পাই।দীর্ঘশ^াস কমতে থাকে।আশায় বুক বাধি।বন্ধুদের সাড়া পেয়ে।
যদিও আপন দুলালের মতো বড় অংকের টাকা নিয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি।জলি আমীর নয়,ষ্ট্যান্ডার্ড লুঙ্গীর মালিক হেলাল সাব,নেতা,চেয়ারম্যান কেউ না। এসেছে বেকার বন্ধুরা।যারা বাবা মার কাছ থেকে হাত খরচার টাকা এখনো চাইতে হয়।তারা পাঠাচ্ছে লাইব্রেরীর টাকা।অল্প অল্প করে জমা হচ্ছে, যা আজো চলমান।রমযানের পর শেয়ারের  টাকায় পাঠাগার হবে।যা-এলাকায় আলো ছড়াবো।

বইয়ের আলো।যুবক-তরুনরা মোবাইল টিপাটিপি বাদ দিয়ে বইতে মনোযোগ দিবে।জ্ঞান বাড়াবে।স্বপ্ন সত্যি হবে।বাঞ্ছারামপুর উপজেলাটি সারাদেশে মুখ উচু করে বলবে ‘‘আমাদের উপজেলায় লাইব্রেরী আছে’’।