ঢাকা ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে আজ গণহত্যা দিবস

মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

আজ ৩১ অক্টোবর। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রাজা চাপিতলা গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক হানাদারদের অত্যাধুনিক অস্ত্রে সু-সজ্জিত একটি বিশাল বাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে ৩ মুক্তিযোদ্ধাসহ ৫১ জন নারী-পুরুষ শহীদ হয়েছেন। স্বাধীনতার সাড়ে ৩ যুগের পরও ওই রনাঙ্গনে শহীদদের স্মরণে জাতি তেমন কোন খোজ-খবর রাখেনি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস ও বীরত্বে গাঁথা রাজা চাপিতলা গ্রামে পাক হানাদারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মূখ সমরের স্মৃতি রক্ষার্থে স্বাধীনতার ৪৩ বছরেও কোন স্মৃতিসৌধ নির্মাণ হয়নি। উপেক্ষিত স্থানীয়দের গণদাবী রাজা চাপিতলা গ্রামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, শহীদদের কবর সংরক্ষণ, যুদ্ধাহত ও শহীদ পরিবারদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ পূণর্বাসন করা হোক।

সরেজমিন পরিদর্শনকালে মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকাবাসী জানায়, ১৯৭১ সালের ৩১ অক্টোবর (৩ কার্তিক, ১০ রমজান) সকাল ৭টায় রাজা চাপিতলাস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে হানা দিতে কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনম্যান্ট (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান সেনা ছাউনি) থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সুসজ্জিত এক ব্যাটালিয়নের পাক সেনাদল কোম্পানীগঞ্জ বাজার হয়ে নবীনগর রোডে বিশাল গাড়ি বহর নিয়ে চাপিতলা পৌঁছার পর মুক্তিযোদ্ধারা কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল গুলি বিনিময় হয়। এতে চাপিতলা গ্রামের আকবর আলী, মজিদের নেছা, আবদুল জলিল, অহিদ উদ্দিন কেরানী, আবদুল গফুর, সুলতান আহম্মেদ, সন্দর আলী, হারুন রশিদ, আবদুল কাদির, ওহাব আলী, আবদুল জব্বার, মর্তুজ আলী, মনিরুল হক, আমির আলী, আবু তাহের, জোহর আলী, আবদুল মালেক, আবদু মিয়া, সুর্যমোহন নাথ, আবদুর রাজ্জাক, তালেব হোসেন, আবদুস ছামাদ, সুবেদ আলী, পিয়ারী নাথ, সোনা মিয়া, অলঙ্গ নাথ, আবদু মিয়া, আবদুর রশিদ, ইদ্রিস মিয়া, চিহনী বেগম, ছিদ্দিকুর রহমান, মমিনা খাতুন, কানু মিয়া, সাদত আলী, চিন্তাহরন সিংহ রায়, টনকি গ্রামের আবুল কাশেম, কচুয়ার নুরু মিয়া শহীদ হন। ঐ দিন বিকেলে পাক সেনারা সাবেক এম এন এ হাজী আবুল হাসেম এর মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত চাপিতলা অজিফা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করে। অপর দিকে মুক্তিযোদ্ধারা খামার গ্রাম মাদ্রাসা ও গোরস্তানে ব্যাংকার তৈরী করে যুদ্ধ পরিচালনার পর মুক্তিযোদ্ধাদের গোলাবারুদ শেষ হয়ে আসে। তখন মুক্তিযোদ্ধারা ইত্যবসরে পিছু হটে নিরাপদে চলে গেলে মুক্তিযোদ্ধাদের ছোট একটি দল তাদের ক্যাম্পের ব্যাংকারে অবস্থান নেয়। এ সময় পাকহানাদারদের সাথে সম্মুখসমরে শহীদ হন বলিঘর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার, কদমতলী গ্রামের বাচ্চু মিয়া, পুস্কুরিনীর পাড়র গ্রামের রমিজ উদ্দিন ছাড়্াও ফজলুর রহমান, সুরুজ বেপারী, শ্রীরামপুর গ্রামের মনু মিয়া, শুক্কুর আলী ফকির, খামার গ্রামের-নজিব আলী দরবেশ, কফিল উদ্দিন, শের আলী, শাহজাহান মিয়া, মিন্নত আলী, জোহর আলী, রহিমা খাতুন। উক্ত দু’টি ঘটনায় পাকহানাদাররা ২০ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ অর্ধশত নারী-পুরুষ আহত, ২১ নারীর শ্লীলতাহানী ২০৬টি বাড়ী ও অর্ধশতাধিক গবাদি পশু জ্বালিয়ে দেয়াসহ ব্যাপক লুন্ঠন করা হয়।

শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে স্মৃতিসৌধ নির্মানের জন্য ২০০৬ সালের ১২ মার্চ ততকালিন ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেন। বিষয়টির প্রতিবেদন দেয়ার জন্য তিনি উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন (যার স্মারক নং ৩৯৭, তারিখ-৩০-০৩-২০০৬ইং)। ঐ বছরের ২৫ এপ্রিল উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা সরেজমিন পরিদর্শন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন (যার স্মারক নং ১১২, তারিখ-২০-০৪-২০০৬ইং)। এখানেই বিষয়টি ফাইল বন্দি হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব এর নিকট আবেদন করেন। সে মতে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা সেলিম রেজা পূনরায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন (যার স্মারক নং ৪১৭, তারিখ-২৯-১১-২০০৭ইং)। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করেন (যার স্মারক নং ১৩২৬, তারিখ-৩১-১২-২০০৭ইং)। জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুর রহমান বিষয়টির সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব এর নিকট প্রতিবেদন পাঠান (যার স্মারক নং ৪৮৭, তারিখ-০২-০৩-২০০৮ইং)। বিষয়টি এখানেই ফাইল বন্দি হয়ে পড়েছিল। বাধ্য হয়ে গত ৩১ আগষ্ট চেয়ারম্যান স্মৃতিসৌধ নির্মানের জন্য আবারো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নিকট আবেদন করেন। সে মতে মন্ত্রী আ হ ম মোজাম্মেল হক বিষয়টি তালিকাভূক্ত করার জন্য সচিবকে নির্দেশ দেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এ, এম, মোক্তার হোসেন মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সমূহ সংরক্ষণ শীর্ষক প্রনয়ানাধীন প্রকল্পে বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করার জন্য এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেন (যার স্মারক নং ৪৫০, তারিখ-১২-১০-২০১৪ইং)।

স্বাধীনতাযুদ্ধে পিতা-মাতা হারা চাপিতলা গ্রামের হাবিবুর রহমান জাফর জানান, ৭১ সালের ৩১ অক্টোবর পাক হানাদাররা তার পিতা-মাতাকে হত্যাসহ বাড়ীঘর লুট-পাট ও অগ্নিসংযোগে সর্বশান্ত করে দেয়। শহীদ পরিবারের একজন সদস্য হওয়া সত্বেও স্বাধীনতার ৪৩ বছরেও কেউ তার খোঁজ নেয়নি। বাধ্য হয়ে জীবিকা নির্বাহে ঢাকায় সংবাদপত্রের হকারী করে আসছেন। তার দাবী কেউ তার খোজ না নিলেও শহীদদের কবরগুলো যেন সরকারি ভাবে সংরক্ষণ করা হয়।

মুুরাদনগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন অর রশিদ জানান, শহীদদের স্মরণে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কার্যালয থেকে স্মৃতিসৌধ নির্মানের কোন প্রদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শুনেছি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান  শহীদদের সামরণে চাপিতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে স্মৃতিসৌধ হওয়ার কথা ছিল তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মুরাদনগরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

মুরাদনগরে আজ গণহত্যা দিবস

আপডেট সময় ০১:০৩:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৬
মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

আজ ৩১ অক্টোবর। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রাজা চাপিতলা গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক হানাদারদের অত্যাধুনিক অস্ত্রে সু-সজ্জিত একটি বিশাল বাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে ৩ মুক্তিযোদ্ধাসহ ৫১ জন নারী-পুরুষ শহীদ হয়েছেন। স্বাধীনতার সাড়ে ৩ যুগের পরও ওই রনাঙ্গনে শহীদদের স্মরণে জাতি তেমন কোন খোজ-খবর রাখেনি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস ও বীরত্বে গাঁথা রাজা চাপিতলা গ্রামে পাক হানাদারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মূখ সমরের স্মৃতি রক্ষার্থে স্বাধীনতার ৪৩ বছরেও কোন স্মৃতিসৌধ নির্মাণ হয়নি। উপেক্ষিত স্থানীয়দের গণদাবী রাজা চাপিতলা গ্রামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, শহীদদের কবর সংরক্ষণ, যুদ্ধাহত ও শহীদ পরিবারদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ পূণর্বাসন করা হোক।

সরেজমিন পরিদর্শনকালে মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকাবাসী জানায়, ১৯৭১ সালের ৩১ অক্টোবর (৩ কার্তিক, ১০ রমজান) সকাল ৭টায় রাজা চাপিতলাস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে হানা দিতে কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনম্যান্ট (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান সেনা ছাউনি) থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সুসজ্জিত এক ব্যাটালিয়নের পাক সেনাদল কোম্পানীগঞ্জ বাজার হয়ে নবীনগর রোডে বিশাল গাড়ি বহর নিয়ে চাপিতলা পৌঁছার পর মুক্তিযোদ্ধারা কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল গুলি বিনিময় হয়। এতে চাপিতলা গ্রামের আকবর আলী, মজিদের নেছা, আবদুল জলিল, অহিদ উদ্দিন কেরানী, আবদুল গফুর, সুলতান আহম্মেদ, সন্দর আলী, হারুন রশিদ, আবদুল কাদির, ওহাব আলী, আবদুল জব্বার, মর্তুজ আলী, মনিরুল হক, আমির আলী, আবু তাহের, জোহর আলী, আবদুল মালেক, আবদু মিয়া, সুর্যমোহন নাথ, আবদুর রাজ্জাক, তালেব হোসেন, আবদুস ছামাদ, সুবেদ আলী, পিয়ারী নাথ, সোনা মিয়া, অলঙ্গ নাথ, আবদু মিয়া, আবদুর রশিদ, ইদ্রিস মিয়া, চিহনী বেগম, ছিদ্দিকুর রহমান, মমিনা খাতুন, কানু মিয়া, সাদত আলী, চিন্তাহরন সিংহ রায়, টনকি গ্রামের আবুল কাশেম, কচুয়ার নুরু মিয়া শহীদ হন। ঐ দিন বিকেলে পাক সেনারা সাবেক এম এন এ হাজী আবুল হাসেম এর মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত চাপিতলা অজিফা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করে। অপর দিকে মুক্তিযোদ্ধারা খামার গ্রাম মাদ্রাসা ও গোরস্তানে ব্যাংকার তৈরী করে যুদ্ধ পরিচালনার পর মুক্তিযোদ্ধাদের গোলাবারুদ শেষ হয়ে আসে। তখন মুক্তিযোদ্ধারা ইত্যবসরে পিছু হটে নিরাপদে চলে গেলে মুক্তিযোদ্ধাদের ছোট একটি দল তাদের ক্যাম্পের ব্যাংকারে অবস্থান নেয়। এ সময় পাকহানাদারদের সাথে সম্মুখসমরে শহীদ হন বলিঘর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার, কদমতলী গ্রামের বাচ্চু মিয়া, পুস্কুরিনীর পাড়র গ্রামের রমিজ উদ্দিন ছাড়্াও ফজলুর রহমান, সুরুজ বেপারী, শ্রীরামপুর গ্রামের মনু মিয়া, শুক্কুর আলী ফকির, খামার গ্রামের-নজিব আলী দরবেশ, কফিল উদ্দিন, শের আলী, শাহজাহান মিয়া, মিন্নত আলী, জোহর আলী, রহিমা খাতুন। উক্ত দু’টি ঘটনায় পাকহানাদাররা ২০ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ অর্ধশত নারী-পুরুষ আহত, ২১ নারীর শ্লীলতাহানী ২০৬টি বাড়ী ও অর্ধশতাধিক গবাদি পশু জ্বালিয়ে দেয়াসহ ব্যাপক লুন্ঠন করা হয়।

শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে স্মৃতিসৌধ নির্মানের জন্য ২০০৬ সালের ১২ মার্চ ততকালিন ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেন। বিষয়টির প্রতিবেদন দেয়ার জন্য তিনি উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন (যার স্মারক নং ৩৯৭, তারিখ-৩০-০৩-২০০৬ইং)। ঐ বছরের ২৫ এপ্রিল উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা সরেজমিন পরিদর্শন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন (যার স্মারক নং ১১২, তারিখ-২০-০৪-২০০৬ইং)। এখানেই বিষয়টি ফাইল বন্দি হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব এর নিকট আবেদন করেন। সে মতে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা সেলিম রেজা পূনরায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন (যার স্মারক নং ৪১৭, তারিখ-২৯-১১-২০০৭ইং)। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করেন (যার স্মারক নং ১৩২৬, তারিখ-৩১-১২-২০০৭ইং)। জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুর রহমান বিষয়টির সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব এর নিকট প্রতিবেদন পাঠান (যার স্মারক নং ৪৮৭, তারিখ-০২-০৩-২০০৮ইং)। বিষয়টি এখানেই ফাইল বন্দি হয়ে পড়েছিল। বাধ্য হয়ে গত ৩১ আগষ্ট চেয়ারম্যান স্মৃতিসৌধ নির্মানের জন্য আবারো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নিকট আবেদন করেন। সে মতে মন্ত্রী আ হ ম মোজাম্মেল হক বিষয়টি তালিকাভূক্ত করার জন্য সচিবকে নির্দেশ দেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এ, এম, মোক্তার হোসেন মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সমূহ সংরক্ষণ শীর্ষক প্রনয়ানাধীন প্রকল্পে বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করার জন্য এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেন (যার স্মারক নং ৪৫০, তারিখ-১২-১০-২০১৪ইং)।

স্বাধীনতাযুদ্ধে পিতা-মাতা হারা চাপিতলা গ্রামের হাবিবুর রহমান জাফর জানান, ৭১ সালের ৩১ অক্টোবর পাক হানাদাররা তার পিতা-মাতাকে হত্যাসহ বাড়ীঘর লুট-পাট ও অগ্নিসংযোগে সর্বশান্ত করে দেয়। শহীদ পরিবারের একজন সদস্য হওয়া সত্বেও স্বাধীনতার ৪৩ বছরেও কেউ তার খোঁজ নেয়নি। বাধ্য হয়ে জীবিকা নির্বাহে ঢাকায় সংবাদপত্রের হকারী করে আসছেন। তার দাবী কেউ তার খোজ না নিলেও শহীদদের কবরগুলো যেন সরকারি ভাবে সংরক্ষণ করা হয়।

মুুরাদনগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন অর রশিদ জানান, শহীদদের স্মরণে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কার্যালয থেকে স্মৃতিসৌধ নির্মানের কোন প্রদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শুনেছি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান  শহীদদের সামরণে চাপিতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে স্মৃতিসৌধ হওয়ার কথা ছিল তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।