ঢাকা ১০:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে ইউএনও’র ঘুষ কেলেংকারীর প্রতিবাদে জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয় সভা বর্জন

আবুল খায়ের, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লা মুরাদনগরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেলুল কাদেরের ঘুষ কেলেংকারী, অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মাসিক সমন্বয় সভা বর্জন করেছে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ উপজেলার সকল ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। এ দিকে ইউএনও রাসেলুল কাদের তার নিজের ফেসবুকে মুরাদনগরের জনপ্রতিনিধিদেরকে নর্দমার কিট, বেজন্মা, সর্বনিন্মস্তরের দুর্বৃত্ত এবং সাংবাদিকদেরকে জারজ, কুলাঙ্গার বলে স্ট্যাটাস দেয়ায় এলাকায় ব্যপক তোলপাড় সৃস্টি হয়েছে। এ বিতর্কিত এ কর্মকর্তাকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে উপজেলার জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজন।

জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেলুল কাদের যোগদানের পর থেকেই ব্যপক ঘুষ কেলেংকারী এবং অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে বলে বেশ কিছু দিন যাবত জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সম্পাদন করে বিল এবং চেক গ্রহনের সময় তাকে ১০% হারে ঘুষ দিতে হয় বলে অভিযোগ জনপ্রতিনিধিদের। এতে অতিষ্ট হয়ে গত মঙ্গলবার ৫ ইউপি চেয়ারম্যানসহ বেশ কিছু জনপ্রতিনিধি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরেন। ইউএনও রাসেলুল কাদেরের অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মাসিক সমন্বয় সভায় অংশ গ্রহন করেনি উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ইউপি চেয়ারম্যান, সাংবাদিক এবং ইউপি সদস্যরা। এতে বিগত দিনের সিদ্ধান্ত অনুমোদন, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা, উপজেলার বিভিন্ন দফতরের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা,সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ আইন শৃংখলার কার্যক্রম ব্যহত হওয়ার আশংকা করছেন সংশ্লিস্টরা।

টনকি ইউপির চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ইউএনও রাসেলুল কাদের একটা চিহ্নিত ঘুষ খোর এবং দুর্নীতিবাজ। আমরা তার আহবানে কোন সভা সেমিনারে আর যোগদান করব না। তিনি বলেন, অবিলম্বে তাকে প্রত্যাহার না করা হলে আমরা আন্দোলনে নামবো।

নবীপুর পশ্চিম ইউপির চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বলেন, ফেসবুকে ইউএনও’র অশালীন মন্তব্য, জনপ্রতিনিধিদেরকে কটুক্তি অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে আমরা সকল চেয়ারম্যানগণ মাসিক সমন্বয় সভা বর্জন করেছি। নবীপুর পুর্ব ইউপির চেয়ারম্যান কাজী আবুল খায়ের বলেন, ইউএনও রাসেলুল কাদেরের ঘুষ কেলেংকারী, অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে আমরা অতিষ্ট। এ ধরনের দুর্নীতিবাজ আমরা চাই না। তাই আমরা সকল চেয়ারম্যানরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমন্বয় সভা বর্জন করেছি।

মুরাদনগর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার নির্ধারিত সমন্বয় সভা হওয়ার কথা ছিল কিন্ত সভাস্থলে গিয়ে দেখি উপজেলা চেয়ারম্যানসহ কোন চেয়ারম্যান মেম্বাররাই সভায় আসেনি। তাই কোরাম সংকটের কারণে এ সভা স্থগিত করা হয়েছে।

অভিযুক্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেলুল কাদের বলেন, কি কারণে জনপ্রতিনিধিরা সমন্বয় সভায় আসেনি সেটা আমার জানা নেই। কোরাম সংকটের কারণেই সভা স্থগিত করেছি।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল কাইয়ুম খসরু বলেন, ইউএনও রাসেলুল কাদেরের অনিয়ম-দুর্নীতির বেশ কিছু তথ্য চেয়ারম্যান মেম্বারগণ আমাকে জানিয়েছে। উপজেলার সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধিরা সমন্বয় সভা বর্জন করায় আমিও অংশ গ্রহন করিনি। তিনি বলেন, ইউএনও’র এসব কর্মকান্ড তদন্ত করে তাকে প্রত্যাহারের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আমি কথা বলবো।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মুরাদনগরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

মুরাদনগরে ইউএনও’র ঘুষ কেলেংকারীর প্রতিবাদে জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয় সভা বর্জন

আপডেট সময় ০২:০১:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০১৭
আবুল খায়ের, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লা মুরাদনগরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেলুল কাদেরের ঘুষ কেলেংকারী, অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মাসিক সমন্বয় সভা বর্জন করেছে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ উপজেলার সকল ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। এ দিকে ইউএনও রাসেলুল কাদের তার নিজের ফেসবুকে মুরাদনগরের জনপ্রতিনিধিদেরকে নর্দমার কিট, বেজন্মা, সর্বনিন্মস্তরের দুর্বৃত্ত এবং সাংবাদিকদেরকে জারজ, কুলাঙ্গার বলে স্ট্যাটাস দেয়ায় এলাকায় ব্যপক তোলপাড় সৃস্টি হয়েছে। এ বিতর্কিত এ কর্মকর্তাকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে উপজেলার জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজন।

জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেলুল কাদের যোগদানের পর থেকেই ব্যপক ঘুষ কেলেংকারী এবং অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে বলে বেশ কিছু দিন যাবত জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সম্পাদন করে বিল এবং চেক গ্রহনের সময় তাকে ১০% হারে ঘুষ দিতে হয় বলে অভিযোগ জনপ্রতিনিধিদের। এতে অতিষ্ট হয়ে গত মঙ্গলবার ৫ ইউপি চেয়ারম্যানসহ বেশ কিছু জনপ্রতিনিধি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরেন। ইউএনও রাসেলুল কাদেরের অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মাসিক সমন্বয় সভায় অংশ গ্রহন করেনি উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ইউপি চেয়ারম্যান, সাংবাদিক এবং ইউপি সদস্যরা। এতে বিগত দিনের সিদ্ধান্ত অনুমোদন, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা, উপজেলার বিভিন্ন দফতরের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা,সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ আইন শৃংখলার কার্যক্রম ব্যহত হওয়ার আশংকা করছেন সংশ্লিস্টরা।

টনকি ইউপির চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ইউএনও রাসেলুল কাদের একটা চিহ্নিত ঘুষ খোর এবং দুর্নীতিবাজ। আমরা তার আহবানে কোন সভা সেমিনারে আর যোগদান করব না। তিনি বলেন, অবিলম্বে তাকে প্রত্যাহার না করা হলে আমরা আন্দোলনে নামবো।

নবীপুর পশ্চিম ইউপির চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বলেন, ফেসবুকে ইউএনও’র অশালীন মন্তব্য, জনপ্রতিনিধিদেরকে কটুক্তি অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে আমরা সকল চেয়ারম্যানগণ মাসিক সমন্বয় সভা বর্জন করেছি। নবীপুর পুর্ব ইউপির চেয়ারম্যান কাজী আবুল খায়ের বলেন, ইউএনও রাসেলুল কাদেরের ঘুষ কেলেংকারী, অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে আমরা অতিষ্ট। এ ধরনের দুর্নীতিবাজ আমরা চাই না। তাই আমরা সকল চেয়ারম্যানরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমন্বয় সভা বর্জন করেছি।

মুরাদনগর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার নির্ধারিত সমন্বয় সভা হওয়ার কথা ছিল কিন্ত সভাস্থলে গিয়ে দেখি উপজেলা চেয়ারম্যানসহ কোন চেয়ারম্যান মেম্বাররাই সভায় আসেনি। তাই কোরাম সংকটের কারণে এ সভা স্থগিত করা হয়েছে।

অভিযুক্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেলুল কাদের বলেন, কি কারণে জনপ্রতিনিধিরা সমন্বয় সভায় আসেনি সেটা আমার জানা নেই। কোরাম সংকটের কারণেই সভা স্থগিত করেছি।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল কাইয়ুম খসরু বলেন, ইউএনও রাসেলুল কাদেরের অনিয়ম-দুর্নীতির বেশ কিছু তথ্য চেয়ারম্যান মেম্বারগণ আমাকে জানিয়েছে। উপজেলার সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধিরা সমন্বয় সভা বর্জন করায় আমিও অংশ গ্রহন করিনি। তিনি বলেন, ইউএনও’র এসব কর্মকান্ড তদন্ত করে তাকে প্রত্যাহারের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আমি কথা বলবো।