ঢাকা ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে এসএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ

মোঃ মোশাররফ হোসেন মনির:

এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্তি ফি জোগাতে অপারগত হয়ে চড়া সুদে ঋণ নিতে হচ্ছে অভিভাবকদের। এমনটাই ঘটেছে কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। উপজেলার ৫৪টি বিদ্যালয়ের মধ্যে বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে বোর্ড ফির চাইতে তিন-চার গুণ অতিরিক্তি অর্থ আদায় করায় এই অবস্থায় পড়তে হয়েছে বলে অভিভাবকদের অভিযোগ। রহস্যজনক কারণে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করছে এমন অভিযোগ উঠেছে স্থানী উপজেলা প্রশাসন ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরোদ্ধে। এ ব্যাপারে কোনো প্রশাসন কোন প্রকার পদপে না নেওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের তৈরী হয়েছে।

জানা যায়, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের আওতায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য নির্ধারিত ফি সর্বউচ্চ এক হাজার ৫৫০ টাকা। কিন্তু উপজেলার ৫৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলো সেই নির্ধারিত ফি তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। এতে করে নিম্ম মধ্যবৃত্ত পরিবারের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ধার কর্যা করে ফরম পূরণ করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মুরাদনগর ডি আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, রামচন্দ্রপুর রামকান্ত উচ্চ বিদ্যালয় ও দারোরা দীনেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩ হাজার ৫’শ, কামাল্লা ডি আর উচ্চ বিদ্যালয়, পাচঁকিত্তা উচ্চ বিদ্যালয়, বাঙ্গরা উমালোচন উচ্চ বিদ্যালয়, কোরবানপুর জিএম উচ্চ বিদ্যালয়, হাটাশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাইড়া এম আরিফ স্কুল এন্ড কলেজ, আলিরচর তায়মোম বেগম উচ্চ বিদ্যালয়, ভূবনঘর নহল আ: বাতেন উচ্চ বিদ্যালয়, পরমতলা শব্দর খাঁন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩ হাজার করে,  কোম্পানীগঞ্জ বদিউল আলম উচ্চ বিদ্যালয় ২ হাজার ৯’শ, মোচাগড়া আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয় ২ হাজার ৯’শ,জাহাপুর কেকে স্কুল এন্ড কলেজ ২ হাজার ৫’শ টাকা  করে প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরন ফি আদায় করছে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমপক্ষে ১৫টি স্কুলের অভিভাকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বোর্ডে নির্ধারিত ফি এর সঙ্গে আনুষাঙ্গীক খরচ মিলে দুই হাজার টাকা নিলেই যথেষ্ট। কিন্তু স্কুল গুলো কোন কথাই মানছে না। একেক স্কুল একেক ভাবে ছাত-ছাত্রীদের কাছ থেকে মনগড়া টাকা আদায় করছে। ছেলে পরীা দিতে পারবে না শুনে যখন খারাপ লাগে তখন কি আর করব, সুদের টাকা হলেও ছেলের ফরম পূরণ করতে আমরা বাধ্য হচ্ছি।

ডিআর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহজাহান জানান, ১৬৪৫-১৭৯০ টাকা করে ফরম পূরনের জন্য নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত টাকা অভিভাবকদের অনুমতিক্রমে কোচিং বাবদ নেওয়া হয়েছে।

রামচন্দ্রপুর রামকান্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম বলেন, বোর্ড ফি ১৪৯০-১৫৮০ টাকা নেওয়া হচ্ছে আরা বাকী টাকা বিভিন্ন বকেয়া বাবদ নেওয়া হচ্ছে।

কামাল্লা ডি আর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাষার খান বলেন, বোর্ড ফি বাবদ ১৬৫০ টাকা নেওয়া হয়েছে। বাকি অকিরিক্তি টাকা মসজিদের জন্য ২’শ ও হোসটেলের বাবদ ১,১৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিা কর্মকর্তা সফিউল আলম তালুকদার জানান, একবার জেএসসি পরীক্ষা চলার কারনে ফরম পূরনের বিষয়টি মনিটর করা যায়নি। অতিরিক্ত টাকা যদি কোন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নেয়, তা কোন ছাত্র বা অভিভাবক আমার কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ করে তা তদন্ত করে প্রমান পেলে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, কোচিং এর নামে টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই কারন পরীক্ষার্থীদের কোচিং করা সম্পূর্ন অবৈধ্য তাদের জন্য অতিরিক্তি কাস নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারে স্কুল কতৃপক্ষ।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মুরাদনগরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

মুরাদনগরে এসএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ

আপডেট সময় ০৬:২৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৭
মোঃ মোশাররফ হোসেন মনির:

এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্তি ফি জোগাতে অপারগত হয়ে চড়া সুদে ঋণ নিতে হচ্ছে অভিভাবকদের। এমনটাই ঘটেছে কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। উপজেলার ৫৪টি বিদ্যালয়ের মধ্যে বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে বোর্ড ফির চাইতে তিন-চার গুণ অতিরিক্তি অর্থ আদায় করায় এই অবস্থায় পড়তে হয়েছে বলে অভিভাবকদের অভিযোগ। রহস্যজনক কারণে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করছে এমন অভিযোগ উঠেছে স্থানী উপজেলা প্রশাসন ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরোদ্ধে। এ ব্যাপারে কোনো প্রশাসন কোন প্রকার পদপে না নেওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের তৈরী হয়েছে।

জানা যায়, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের আওতায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য নির্ধারিত ফি সর্বউচ্চ এক হাজার ৫৫০ টাকা। কিন্তু উপজেলার ৫৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলো সেই নির্ধারিত ফি তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। এতে করে নিম্ম মধ্যবৃত্ত পরিবারের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ধার কর্যা করে ফরম পূরণ করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মুরাদনগর ডি আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, রামচন্দ্রপুর রামকান্ত উচ্চ বিদ্যালয় ও দারোরা দীনেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩ হাজার ৫’শ, কামাল্লা ডি আর উচ্চ বিদ্যালয়, পাচঁকিত্তা উচ্চ বিদ্যালয়, বাঙ্গরা উমালোচন উচ্চ বিদ্যালয়, কোরবানপুর জিএম উচ্চ বিদ্যালয়, হাটাশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাইড়া এম আরিফ স্কুল এন্ড কলেজ, আলিরচর তায়মোম বেগম উচ্চ বিদ্যালয়, ভূবনঘর নহল আ: বাতেন উচ্চ বিদ্যালয়, পরমতলা শব্দর খাঁন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩ হাজার করে,  কোম্পানীগঞ্জ বদিউল আলম উচ্চ বিদ্যালয় ২ হাজার ৯’শ, মোচাগড়া আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয় ২ হাজার ৯’শ,জাহাপুর কেকে স্কুল এন্ড কলেজ ২ হাজার ৫’শ টাকা  করে প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরন ফি আদায় করছে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমপক্ষে ১৫টি স্কুলের অভিভাকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বোর্ডে নির্ধারিত ফি এর সঙ্গে আনুষাঙ্গীক খরচ মিলে দুই হাজার টাকা নিলেই যথেষ্ট। কিন্তু স্কুল গুলো কোন কথাই মানছে না। একেক স্কুল একেক ভাবে ছাত-ছাত্রীদের কাছ থেকে মনগড়া টাকা আদায় করছে। ছেলে পরীা দিতে পারবে না শুনে যখন খারাপ লাগে তখন কি আর করব, সুদের টাকা হলেও ছেলের ফরম পূরণ করতে আমরা বাধ্য হচ্ছি।

ডিআর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহজাহান জানান, ১৬৪৫-১৭৯০ টাকা করে ফরম পূরনের জন্য নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত টাকা অভিভাবকদের অনুমতিক্রমে কোচিং বাবদ নেওয়া হয়েছে।

রামচন্দ্রপুর রামকান্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম বলেন, বোর্ড ফি ১৪৯০-১৫৮০ টাকা নেওয়া হচ্ছে আরা বাকী টাকা বিভিন্ন বকেয়া বাবদ নেওয়া হচ্ছে।

কামাল্লা ডি আর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাষার খান বলেন, বোর্ড ফি বাবদ ১৬৫০ টাকা নেওয়া হয়েছে। বাকি অকিরিক্তি টাকা মসজিদের জন্য ২’শ ও হোসটেলের বাবদ ১,১৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিা কর্মকর্তা সফিউল আলম তালুকদার জানান, একবার জেএসসি পরীক্ষা চলার কারনে ফরম পূরনের বিষয়টি মনিটর করা যায়নি। অতিরিক্ত টাকা যদি কোন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নেয়, তা কোন ছাত্র বা অভিভাবক আমার কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ করে তা তদন্ত করে প্রমান পেলে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, কোচিং এর নামে টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই কারন পরীক্ষার্থীদের কোচিং করা সম্পূর্ন অবৈধ্য তাদের জন্য অতিরিক্তি কাস নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারে স্কুল কতৃপক্ষ।