ঢাকা ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে গৃহবধুকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচারের অভিযোগ

মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের রানীমূহুরী গ্রামে বুধবার রাতে তিন সন্তানের জননী গৃহবধূ  সাজিদা আক্তার সুমিকে (২৭) যৌতুকের দাবীতে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারের  অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপর দিকে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য রাতেই নিহত সুমির সন্তানদেও নামে জমি লিখে দিয়ে এবং অর্থ প্রদানের মাধ্যমে চেষ্ঠা চালায় স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল।

নিহত সাজিদা আক্তার সুমি উপজেলার রানীমূহরি পূর্ব পাড়া গ্রামের মুকবল হোসেনের স্ত্রী।

ঘটনাটি বুধবার রাতে রানীমুহরি গ্রামে এঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রায় ১৬ বছর পূর্বে ঘোষকান্দি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে সাজিদা আক্তার সুমি ও রানীমূহরি গ্রামের ধনু মিয়ার ছেলে মুকবল হোসেনের সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর থেকে শ্বাশুরি ঝরনা খাতুনও ননদ ছালমা প্রায় সময় একটু কথা কাটাকাটি হলেই সুমির উপর চালাতো নির্যাতন। নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বাড়তেই থাকে। কিছু দিন পূবে স্বামী মুকবল হোসেন বিদেশ যাওয়ার জন্য শ্বশুর বাড়ীর লোকজনের কাছে আড়াই লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে। টাকা আদায়ের জন্য সুমির সাথে প্রায় সময় শ্বাশুরি, ননদ ও স্বামীর ঝগড়া হতো। এদিকে হঠাৎ করে সুমির মা অসুস্থ্য হলে সুমি ও তার স্বামী মুকবল তার মাকে দেখতে গেলে সেখানেও বিদেশ যাওয়ার টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে স্বামী মুকবল গত রোববার ওখান থেকে ঢাকা চলে গেলে সোমবার সকালে সুমি শ্বশুর বাড়ি চলে আসে। এরই জের ধরে শ্বাশুরী ঝরনা খাতুন ও ননদ ছালমা তার উপর শুরু অমানুষিক নির্যাতন। নিষ্ঠুর নির্যাতনের এক পর্যায়ে বুধবার দুপুরে সুমির মৃত্যু হয়।

এ নিয়ে রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহাজ উদ্দিন ও মহিলা সদস্য মমতাজ বেগমসহ স্থানীয় প্রভাবশালীদের মধ্যস্থতায় অর্থ ও জমি লিখে দেওয়ার মাধ্যমে বিষযটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়। হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা রাতেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি মুরাদনগর থানা পুলিশকে অবহিত করে। পরে মুরাদনগর থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃতে একদল পুলিশ রাতে ১০টায় ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (কুমেক) মর্গে প্রেরন করে।

নিহত সুমির ভাই রুস্তম ও ভাবি আছমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, সুমির উপর প্রায় সময় শ্বশুর বাড়ির লোকেরা নির্যাতন চালাতো। ৫দিন পর্যন্ত সুকিকে কোন প্রকান খাবার না দিয়েও নির্যাতন চালানো হয়েছে। তারা আরো বলেন, বিদেশ যাওয়ার জন্য আড়াই লক্ষা টাকা দাবি করলে আমরা এক লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা জানালে এতে শুশুর বাড়ির লোকেরা ক্ষিপ্ত হয়। তারই জের ধরেই সুমিকে নির্যাতন করে  হত্যা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, এ ঘটনায় সুমির বড় ভাই রুস্ততম আলী একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। ময়না তদন্ত রির্পোট পেলে জানা যাবে  এটি হত্যা না অত্মহত্যা।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মুরাদনগরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

মুরাদনগরে গৃহবধুকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচারের অভিযোগ

আপডেট সময় ০১:৪১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৬
মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের রানীমূহুরী গ্রামে বুধবার রাতে তিন সন্তানের জননী গৃহবধূ  সাজিদা আক্তার সুমিকে (২৭) যৌতুকের দাবীতে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারের  অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপর দিকে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য রাতেই নিহত সুমির সন্তানদেও নামে জমি লিখে দিয়ে এবং অর্থ প্রদানের মাধ্যমে চেষ্ঠা চালায় স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল।

নিহত সাজিদা আক্তার সুমি উপজেলার রানীমূহরি পূর্ব পাড়া গ্রামের মুকবল হোসেনের স্ত্রী।

ঘটনাটি বুধবার রাতে রানীমুহরি গ্রামে এঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রায় ১৬ বছর পূর্বে ঘোষকান্দি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে সাজিদা আক্তার সুমি ও রানীমূহরি গ্রামের ধনু মিয়ার ছেলে মুকবল হোসেনের সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর থেকে শ্বাশুরি ঝরনা খাতুনও ননদ ছালমা প্রায় সময় একটু কথা কাটাকাটি হলেই সুমির উপর চালাতো নির্যাতন। নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বাড়তেই থাকে। কিছু দিন পূবে স্বামী মুকবল হোসেন বিদেশ যাওয়ার জন্য শ্বশুর বাড়ীর লোকজনের কাছে আড়াই লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে। টাকা আদায়ের জন্য সুমির সাথে প্রায় সময় শ্বাশুরি, ননদ ও স্বামীর ঝগড়া হতো। এদিকে হঠাৎ করে সুমির মা অসুস্থ্য হলে সুমি ও তার স্বামী মুকবল তার মাকে দেখতে গেলে সেখানেও বিদেশ যাওয়ার টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে স্বামী মুকবল গত রোববার ওখান থেকে ঢাকা চলে গেলে সোমবার সকালে সুমি শ্বশুর বাড়ি চলে আসে। এরই জের ধরে শ্বাশুরী ঝরনা খাতুন ও ননদ ছালমা তার উপর শুরু অমানুষিক নির্যাতন। নিষ্ঠুর নির্যাতনের এক পর্যায়ে বুধবার দুপুরে সুমির মৃত্যু হয়।

এ নিয়ে রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহাজ উদ্দিন ও মহিলা সদস্য মমতাজ বেগমসহ স্থানীয় প্রভাবশালীদের মধ্যস্থতায় অর্থ ও জমি লিখে দেওয়ার মাধ্যমে বিষযটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়। হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা রাতেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি মুরাদনগর থানা পুলিশকে অবহিত করে। পরে মুরাদনগর থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃতে একদল পুলিশ রাতে ১০টায় ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (কুমেক) মর্গে প্রেরন করে।

নিহত সুমির ভাই রুস্তম ও ভাবি আছমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, সুমির উপর প্রায় সময় শ্বশুর বাড়ির লোকেরা নির্যাতন চালাতো। ৫দিন পর্যন্ত সুকিকে কোন প্রকান খাবার না দিয়েও নির্যাতন চালানো হয়েছে। তারা আরো বলেন, বিদেশ যাওয়ার জন্য আড়াই লক্ষা টাকা দাবি করলে আমরা এক লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা জানালে এতে শুশুর বাড়ির লোকেরা ক্ষিপ্ত হয়। তারই জের ধরেই সুমিকে নির্যাতন করে  হত্যা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, এ ঘটনায় সুমির বড় ভাই রুস্ততম আলী একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। ময়না তদন্ত রির্পোট পেলে জানা যাবে  এটি হত্যা না অত্মহত্যা।