ঢাকা ১২:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে ছড়িয়ে পরছে ‘কিশোর গ্যাং’ এর আতঙ্ক

মাহবুব আলম আরিফ, বিশেষ প্রতিনিধি:

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় দিন দিন ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে উঠতি কিশোরদের ‘গ্যাং কালচার’। স্কুর-কলেজের গন্ডি পেরোনোর আগেই উপজেলা সদরের কিশোররে একটা অংশের বেপরোয়া অচরন এখন পরড়া-মহল্লাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে অতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক সময় স্কুলের সামনে দাড়িয়ে ইভটিজিং, নিজেদের মধ্যে মারধরে সীমাবদ্ধ থাকলেও সম্প্রতি উপজেলা সদরের ডিআর উচ্চ বিদ্যালয় ও কাজী নোমান আহম্মেদ ডিগ্রী কলেজকে ঘিরে বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

সম্প্রতি কিশোর গ্যাং গুলো জন্মদিনের নামে জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে গাছ অথবা ল্যাম্পপোষ্টের সাথে হাত পা বেঁধে ডিম, আটা মাথায় মাখিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় স্কুল কলেজে পড়–য়া সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অতঙ্কে দিন কাটাছেন।

গত ১২ ডিসেম্বর ১০ম শ্রেনিতে পড়–য়া তারেকুল ইসলাম নামের স্কুল ছাত্রকে গোমতী নদীর পাড়ে গাছে সাথে হাত পা বেঁধে মাথায় ডিম আটা মাখিয়ে চালায় শারীরিক নির্যাতন। পরে তারেকুলের চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। শুধু তারেকুল নয় গত ২২ দিনে একই ভাবে জন্মদিনের নামে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১০ম শ্রেণীতে পড়–য়া রুহুল আমিন, নাইম, মাহাদি, ছাব্বির, রাজবির হোসেন রবিন, ৯ম শ্রেণীতে পড়–য়া মাহিদুল ও কলেজ পড়–য়া হৃদয়, নিজাম, নিশাত। নির্যাতনের শিকার সকলেই মুরাদনগর ডি.আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কাজী নোমান আহম্মেদ ডিগ্রী কলেজের ছাত্র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মরাদনগর ডি.আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র সিয়াম, রাহিল, মাহিদুল, শাকিল, রাজু, করিম, ১০ম শ্রেণীর মাহমুদ, ফাহিম, আশিক, নাইম, ইয়াছিন, রাজা, রাব্বি, ছোট ইয়াছিন ও কাজী নোমান আহম্মেদ ডিগ্রী কলেজের ছাত্র সাব্বির ইলিয়াস, হৃদয়, নাইম, মারুফ, সবুজ, জিসান, একে ফয়সাল, নিশাত দের নেতৃত্বে তৈরী গ্যাং গ্রুপের মাধ্যমে অনেক দিন থেকেই সাদার শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। গ্যাং গ্রুপের কোন অভিভাবকেরা প্রভাবশালী ও পরিচিত মুখ। আবার অনেকে রাজনীতির সাথে জড়িত। ফলে অপরাধ করলেও কেউ এদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পান না। আইনের আশ্রয় নিতেও ভয় পান। অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এসব কিশোর ধরা পড়লেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায় রাজনৈতিক দলের নেতারা।

এ বিষয়ে ডিআর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শাহজাহান ও কাজী নোমান আহম্মেদ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সাদেকুল ইসলাম বলেন, কিশোর গ্যাং এর বিষয়টি আমাদের জানান নেই। খোঁজ খবনেওয়া হচ্ছে। যদি সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনিয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার অভিষেক দাশ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে যদি কেউ এ ধরনের ঘটনার সাথে জরিত থাকে তাহলে অবশ্যই এটি একটি ফৌজদারী অপরাধ। আমরা স্কুল ও কলেজ প্রধানদের সাথে কথা বলে এ ঘটনা বন্ধে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার আমরা তাই করবো।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরর উপজেলায় জরায়ুমুখ ক্যান্সার রোধে টিকাদান ক্যাম্পেইন

মুরাদনগরে ছড়িয়ে পরছে ‘কিশোর গ্যাং’ এর আতঙ্ক

আপডেট সময় ০২:০৮:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২০

মাহবুব আলম আরিফ, বিশেষ প্রতিনিধি:

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় দিন দিন ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে উঠতি কিশোরদের ‘গ্যাং কালচার’। স্কুর-কলেজের গন্ডি পেরোনোর আগেই উপজেলা সদরের কিশোররে একটা অংশের বেপরোয়া অচরন এখন পরড়া-মহল্লাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে অতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক সময় স্কুলের সামনে দাড়িয়ে ইভটিজিং, নিজেদের মধ্যে মারধরে সীমাবদ্ধ থাকলেও সম্প্রতি উপজেলা সদরের ডিআর উচ্চ বিদ্যালয় ও কাজী নোমান আহম্মেদ ডিগ্রী কলেজকে ঘিরে বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

সম্প্রতি কিশোর গ্যাং গুলো জন্মদিনের নামে জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে গাছ অথবা ল্যাম্পপোষ্টের সাথে হাত পা বেঁধে ডিম, আটা মাথায় মাখিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় স্কুল কলেজে পড়–য়া সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অতঙ্কে দিন কাটাছেন।

গত ১২ ডিসেম্বর ১০ম শ্রেনিতে পড়–য়া তারেকুল ইসলাম নামের স্কুল ছাত্রকে গোমতী নদীর পাড়ে গাছে সাথে হাত পা বেঁধে মাথায় ডিম আটা মাখিয়ে চালায় শারীরিক নির্যাতন। পরে তারেকুলের চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। শুধু তারেকুল নয় গত ২২ দিনে একই ভাবে জন্মদিনের নামে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১০ম শ্রেণীতে পড়–য়া রুহুল আমিন, নাইম, মাহাদি, ছাব্বির, রাজবির হোসেন রবিন, ৯ম শ্রেণীতে পড়–য়া মাহিদুল ও কলেজ পড়–য়া হৃদয়, নিজাম, নিশাত। নির্যাতনের শিকার সকলেই মুরাদনগর ডি.আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কাজী নোমান আহম্মেদ ডিগ্রী কলেজের ছাত্র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মরাদনগর ডি.আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র সিয়াম, রাহিল, মাহিদুল, শাকিল, রাজু, করিম, ১০ম শ্রেণীর মাহমুদ, ফাহিম, আশিক, নাইম, ইয়াছিন, রাজা, রাব্বি, ছোট ইয়াছিন ও কাজী নোমান আহম্মেদ ডিগ্রী কলেজের ছাত্র সাব্বির ইলিয়াস, হৃদয়, নাইম, মারুফ, সবুজ, জিসান, একে ফয়সাল, নিশাত দের নেতৃত্বে তৈরী গ্যাং গ্রুপের মাধ্যমে অনেক দিন থেকেই সাদার শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। গ্যাং গ্রুপের কোন অভিভাবকেরা প্রভাবশালী ও পরিচিত মুখ। আবার অনেকে রাজনীতির সাথে জড়িত। ফলে অপরাধ করলেও কেউ এদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পান না। আইনের আশ্রয় নিতেও ভয় পান। অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এসব কিশোর ধরা পড়লেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায় রাজনৈতিক দলের নেতারা।

এ বিষয়ে ডিআর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শাহজাহান ও কাজী নোমান আহম্মেদ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সাদেকুল ইসলাম বলেন, কিশোর গ্যাং এর বিষয়টি আমাদের জানান নেই। খোঁজ খবনেওয়া হচ্ছে। যদি সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনিয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার অভিষেক দাশ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে যদি কেউ এ ধরনের ঘটনার সাথে জরিত থাকে তাহলে অবশ্যই এটি একটি ফৌজদারী অপরাধ। আমরা স্কুল ও কলেজ প্রধানদের সাথে কথা বলে এ ঘটনা বন্ধে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার আমরা তাই করবো।