বেলাল উদ্দিন আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার সোনাকান্দা কামিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রে অসুদোপায় ও নকল করতে বাধা দেওয়ায় কেন্দ্রে কক্ষ পরিদর্শক হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী ৬ শিক্ষককে পরীক্ষা শেষে কেন্দ্রের বাহিরে লাঞ্চিত করা হয়েছে। বিষয়টি উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে উপজেলার শিক্ষক মহলসহ সর্বস্তরের লোকজনের মাঝে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি মামলা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে শ্রীকাইল-মেটেংঘর সড়কের সোনাকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেলুল কাদের বিষয়টি জানার পর দ্রুত দায়িত্ব প্রাপ্ত কেন্দ্র সচিবকে কর্তব্য কাজে অবহেলার দায়ে প্রত্যাহার করে উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা মো: আবদুর রহিমকে কেন্দ্র সচিব হিসাবে নিয়োগ করেন। ওই কেন্দ্রটি ঝুকিপূর্ন হওয়ায় আদৌ সেখানে বাকী পরীক্ষাগুলো নেয়া যাবে কিনা এ বিষয়ে সিদ্বান্ত নেয়া হচ্ছে বলে জানা যায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ মাদ্রসা শিক্ষা বোর্ডের দাখিল পরীক্ষায় সোমবার বাংলা ১ম পত্রের পরীক্ষা চলাকালে উপজেলার সোনাকান্দা কামিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালে অসুদোপায় অবলম্বন ও নকল করতে বাধা দেয়ার কারনে বখাটে দাখিল পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা শেষে কেন্দ্র হতে সামান্য দূরে প্রায় ৪০/৫০জন লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তার মোড়ে উৎপেতে থাকে। শিক্ষকরা পরীক্ষা শেষে খাতা জমা দিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিক্সায় বাড়ী ফেরার পথে অতর্কিত ভাবে লাঠিসোটা দিয়ে আক্রমন করে। এ সময় বখাটেদের লাঠিপেটা ও কিলঘুসিতে কামাল্লা হাই স্কুলের ৬ শিক্ষক আহত হয়। আহত শিক্ষকরা হলেন এ বি এম সামছুল হক,কামরুল হাসান, রবিউল আলম, সাইয়েদুল ইসলাম, আবু হানিফ ও রবিউল ইসলাম।
হামলার স্বীকার শিক্ষকরা জানায় নকলে বাধা দেওয়ায় ওই কেন্দ্রের ছাত্ররা এর আগেও শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল।
এ বিষয়ে কামাল্লা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবুল বাসার খান জানান শিক্ষকদের উপর এ ধরনের হামলা তীব্র নিন্দা জানাই। বিভিন্ন সময়ে হুমকির বিষয়টি আমি সোনাকান্দা দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিবকে রোববার অবগত করেছি। আজকে শিক্ষকদের উপর হামলায় শিক্ষক সমাজ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েক জন ওই কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ জানান নকল অসুদোপায় অবলম্বন করতে বাধা দিলে টেলিফোনে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সোনাকান্দা দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব ও খামার গ্রাম সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ জানান, কেন্দ্রের বাহিরে শিক্ষকদের উপর হামলা হয়েছে। শিক্ষকদের উপর হামলা হওয়ায় আমি মর্মাহত।
মুরাদনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও রামচন্দ্রপুর রামকান্ত হাই স্কুলের সভাপতি মো: তাজুল ইসলাম জানান শিক্ষক সমাজ শিক্ষকদের উপর এ সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং হামলা কারীদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করছি।
এ বিষয়ে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ মনোয়ার হোসেন জানান সোনাকন্দায় শিক্ষকদের উপর হামলায় থানায় মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রাসেলুল কাদের বলেন, সোনাকান্দায় শিক্ষকদের উপর হামলার পর কেন্দ্র সচিব হারুনুর রশিদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ও নতুন কেন্দ্র সচিব হিসাবে প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা আবদুর রহিমকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানায় মামলা একটি মামলা হয়েছে।