ঢাকা ০৯:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে প্রবাসী ময়নল অপহরন ঘটনার ৭মাস পর লাশ উদ্ধার

মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকবপুর ইউনিয়নের নোয়াহাটি গ্রামে সৌদি প্রবাসী ময়নল হোসেন(৩৬) অপহরনের সাড়ে সাত মাস পর মরদেহ ডোবা থেকে উত্তোলন করা হবে। এদিকে ওই ডোবা পাহারার জন্য গত দুইদিন ধরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর ডোবার পানির নিচ থেকে প্রবাসী ময়নালের লাশ উত্তোলন করা হয়। এ সময় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার সকাল পোনে ১১টায় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আজগর আলীর উপস্থিতিতে ময়নলের লাশ উদ্ধারের কাজ শুরু হলে দুপুর ১টায় লাশ উত্তোলন করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

অন্যদের মধে উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার , জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) ওসি একেএম মঞ্জুরুল আলম, বাঙ্গরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির এসআই সহিদুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মামলা ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার আকাবপুর নোহাটি গ্রামের মৃত: আব্দুল কাদিরের সৌদি প্রবাসী ছেলে ময়নাল হোসেনের সাথে প্রায় ১১ বছর আগে একই উপজেলার জাড্ডা হাহাতি গ্রামের মেয়ে তাছলিমা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের ২টি সন্তান রয়েছে। সৌদি যাওয়ার পর সকল অর্থ স্ত্রী তাছলিমার কাছে পাঠায় ময়নাল। এদিকে প্রবাসী স্বামীর অনুপস্থিতিতে তাছলিমা বেগম একই গ্রামের শরীফুল ইসলাম নামের এক যুবকের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। গত বছরের ৩০ অক্টোবর ময়নাল হোসেন দেশে আসার পর শ্বশুর বাড়ীতে গিয়ে অবস্থান করে বিদেশে থেকে পাঠানো অর্থের হিসাব এবং স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। এতে তার স্ত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ৬ জন সন্ত্রাসীর সাথে চুক্তি করে। পরিকল্পনা মোতাবেক গত বছরের ১ নভেম্বর রাতে ঘাতকরা প্রবাসী ময়নালকে খুন করে লাশ একটি খালে গুম করে। এ বিষয়ে প্রবাসীর স্ত্রী গত ৭ নভেম্বর মুরাদনগর থানায় স্বামী নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরী করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন ‘তার স্বামী ঢাকার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরেননি।
পরবর্তীতে ময়নল হোসেনের মা আমেনা খাতুন ৮ ডিসেম্বর বাদী হয়ে কুমিল্লা আদালতে স্ত্রীসহ ৭জনকে আসামি করে হত্যা করে লাশ গুম করে রাখার অভিযোগে একটি মামলা করেন। একপর্যায়ে গত ৮ মার্চ প্রবাসীর স্ত্রী এবং পর দিন তার প্রেমিক শরীফুল ইসলামকে গ্রেফতারের পরই বেড়িয়ে আসে ওই হত্যাকান্ডের রহস্য।

এদিকে ডিবি পুলিশ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকার একটি ডোবায় ময়নালের লাশ পুঁতে রাখার স্থান শনাক্ত করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির এসআই সহিদুল ইসলাম জানান, সাড়ে সাত মাস পর অপহ্নত প্রবাসী ময়নালের লাশ ফেলে দেয়ার স্থান শনাক্ত করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে ডোবার তিন ফুট পানির নিচে থেকে মঙ্গলবার লাশটি উত্তোলন করা হয়।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মুরাদনগরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

মুরাদনগরে প্রবাসী ময়নল অপহরন ঘটনার ৭মাস পর লাশ উদ্ধার

আপডেট সময় ০৯:১০:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০১৬

মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকবপুর ইউনিয়নের নোয়াহাটি গ্রামে সৌদি প্রবাসী ময়নল হোসেন(৩৬) অপহরনের সাড়ে সাত মাস পর মরদেহ ডোবা থেকে উত্তোলন করা হবে। এদিকে ওই ডোবা পাহারার জন্য গত দুইদিন ধরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর ডোবার পানির নিচ থেকে প্রবাসী ময়নালের লাশ উত্তোলন করা হয়। এ সময় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার সকাল পোনে ১১টায় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আজগর আলীর উপস্থিতিতে ময়নলের লাশ উদ্ধারের কাজ শুরু হলে দুপুর ১টায় লাশ উত্তোলন করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

অন্যদের মধে উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার , জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) ওসি একেএম মঞ্জুরুল আলম, বাঙ্গরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির এসআই সহিদুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মামলা ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার আকাবপুর নোহাটি গ্রামের মৃত: আব্দুল কাদিরের সৌদি প্রবাসী ছেলে ময়নাল হোসেনের সাথে প্রায় ১১ বছর আগে একই উপজেলার জাড্ডা হাহাতি গ্রামের মেয়ে তাছলিমা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের ২টি সন্তান রয়েছে। সৌদি যাওয়ার পর সকল অর্থ স্ত্রী তাছলিমার কাছে পাঠায় ময়নাল। এদিকে প্রবাসী স্বামীর অনুপস্থিতিতে তাছলিমা বেগম একই গ্রামের শরীফুল ইসলাম নামের এক যুবকের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। গত বছরের ৩০ অক্টোবর ময়নাল হোসেন দেশে আসার পর শ্বশুর বাড়ীতে গিয়ে অবস্থান করে বিদেশে থেকে পাঠানো অর্থের হিসাব এবং স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। এতে তার স্ত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ৬ জন সন্ত্রাসীর সাথে চুক্তি করে। পরিকল্পনা মোতাবেক গত বছরের ১ নভেম্বর রাতে ঘাতকরা প্রবাসী ময়নালকে খুন করে লাশ একটি খালে গুম করে। এ বিষয়ে প্রবাসীর স্ত্রী গত ৭ নভেম্বর মুরাদনগর থানায় স্বামী নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরী করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন ‘তার স্বামী ঢাকার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরেননি।
পরবর্তীতে ময়নল হোসেনের মা আমেনা খাতুন ৮ ডিসেম্বর বাদী হয়ে কুমিল্লা আদালতে স্ত্রীসহ ৭জনকে আসামি করে হত্যা করে লাশ গুম করে রাখার অভিযোগে একটি মামলা করেন। একপর্যায়ে গত ৮ মার্চ প্রবাসীর স্ত্রী এবং পর দিন তার প্রেমিক শরীফুল ইসলামকে গ্রেফতারের পরই বেড়িয়ে আসে ওই হত্যাকান্ডের রহস্য।

এদিকে ডিবি পুলিশ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকার একটি ডোবায় ময়নালের লাশ পুঁতে রাখার স্থান শনাক্ত করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির এসআই সহিদুল ইসলাম জানান, সাড়ে সাত মাস পর অপহ্নত প্রবাসী ময়নালের লাশ ফেলে দেয়ার স্থান শনাক্ত করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে ডোবার তিন ফুট পানির নিচে থেকে মঙ্গলবার লাশটি উত্তোলন করা হয়।