রায়হান চৌধুরী:
ফাগুনের আগুনে গত কয়েকদিন ধরেই তপ্ত হচ্ছিল প্রকৃতি। শীতের শেষে আবহাওয়ার উত্তাপ টের পাওয়া যাচ্ছিলো ভালোভাবেই। এমন দিনে আবহাওয়াকে আবারও সহনীয় করে দিলো এক পশলা বৃষ্টি। জনজীবনে স্বস্তি এনে দিলেও কুমিল্লার মুরাদনগরে নামে শিলা বৃষ্টি।
ঝড়ো আর সংকটপূর্ণ আবহাওয়াতে যখন শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ উপরের দিকে উঠতে থাকে, তখন শিলা তৈরী হয়। কৃষক যখন পাকা ধান ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছেন ঠিক তখনি মাথার উপর থেকে নেমে আসে হঠাৎ বৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি।
শনিবার সন্ধায় কাল বৈশাখী ঝড়ের সাথে একটানা মুষল ধারে শিলা বৃষ্টি বর্ষিত হয়। এতে ঘরবাড়ি ,দোকান পাটের টিনের চালা, ফসলি মাঠ, ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
কৃষিস্প্রসারন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এক খন্ড মাটি যেন খালি না থাকে। এই মাটিতে ফলানো ফসলই চলমান দূর্ভিক্ষ থেকে পরিত্রান পেতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।ইরি বোরো এদেশের কৃষকের একটি বড় স্বপ্ন। এই ফসলটা ঘরে তোলার জন্য কৃষক যখন তীর্থের কাক হয়ে অপেক্ষা করছিল ঠিক তখনই কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টির তান্ডব লিলায় নষ্ট হয়ে যায় কৃষকের ফসলি মাঠ।
মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারনে ঢেউটিন ছিদ্র হয়ে ঘরে পানি পড়েছে। গাছপালা ভেঙ্গে বাড়ি-ঘর রাস্তার ওপর পড়ে আছে। হঠাৎ শিলা বৃষ্টি পরে এই সব এলাকার বিঘার পর বিঘা জমির ফসল মাটির সঙ্গে মিশে যায়। গাছ থেকে ঝড়ে গেছে ধান। এগুলোর বাহিরেও কোন কোন এলাকায় তিল, মোগডাল, ভোট্রা ও পাটের কিছু ক্ষতি হয়েছে।এছাড়াও উপজেলার যাত্রাপুর , মোচাগড়া, নেয়ামতপুর. কামাল্লা. বাঙ্গরা, দৌলতপুর, ১৪নং নবীপুরপূর্ব, ১৫নং নবীপুরপশ্চিম, টনকী ,চাপিতলা , রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বিভিন্নগ্রামে কৃষি ও ঘরবাড়ীর ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
মুরাদনগর উপজেলা কৃষি অফিসার মাইন উদ্দিন বলেন, আমাদের মাঠে এখন হারভেস্টার করার মত ফসল আছে ধান ও ভূট্টা । গত কালের শিলা বৃষ্টির কারনে মুরাদনগর উপজেলায় ৫% বোরো ধানের ক্ষতি হতে পারে। শাক সবজিসহ অন্যান্য ফসল ১-২% ক্ষতি হয়েছে। এদিকে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যেই জমির ৮০% ধান পাকা ধরেছে তা কেটে ফেলার জন্য।