ঢাকা ০৯:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে ভূয়া দলিল দিতে এসে দালালসহ শ্রীঘরে, অতপর……..

মো. হাবিবুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

জমির ভূয়া দাতা সেজে দলিল দিতে এসে দালাল নুরুল ইসলাম মেম্বারসহ দুই জনকে আটক করে মুরাদনগর থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। রোববার দুপুরে উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে এ ঘটনা ঘটে। তবে উক্ত ঘটনায় কেউ অভিযোগ না করায় পুলিশ সোমবার দুপুরে তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বমহলে তোলপাড় শুরু হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন আন্দিকুট ইউনিয়নের ডালপা গ্রামের মৃত আলী আজ্জমের ছেলে জিল্লুর রহমান তার চাচাতো ভাই ইব্রাহিম মিয়াকে ২০ শতক জমি দানপত্র রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার জন্য রোববার মুরাদনগর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে আসে। জমির অন্যান্য কাগজপত্রের সাথে মালিকানার একটি সই মুহুরী নকল দলিল লিখক আব্দুর রউফ মেম্বারের নিকট জমা দেয়। দলিল রেজিষ্ট্রি করার জন্য রোববার দুপুরে ওই দলিলের মালিকানার কাগজপত্র সাব রেজিষ্ট্রারের নিকট উপস্থাপন করে। তখন দলিলের সাথে দেওয়া মালিকানার সইমুহুরী নকলের স্বাক্ষরটি সাব রেজিষ্ট্রারের নয় বলে খতিয়ে দেখার জন্য অফিস সহকারীদের নির্দেশ দেয়। পরে বালাম খুঁজিয়া উক্ত দলিল রেজিষ্ট্রির কোন হদিস না পেয়ে ভূয়া জমি দাতা জিল্লুর রহমানকে আটক করে। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে রেজিষ্ট্রি অফিসের দালাল পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম মেম্বারের মাধ্যমে এক হাজার দুইশত টাকা দিয়ে সইমুহুরী নকল সংগ্রহ করেছে বলে জানায়। সে সময় অন্যান্য দলিল লিখকদের সহায়তায় রেজিষ্ট্রি অফিসের দালাল নুরুল ইসলাম মেম্বারকেও ডেকে নিয়ে সাব রেজিষ্ট্রারের এজলাসে আটকে রাখে। সাব রেজিষ্ট্রার আনিছুর রহমান বিষয়টির ব্যাপারে দলিল লিখক সমিতির সভাপতি শাহজাহান মুন্সী, সদস্য আব্দুর রউফ মেম্বার ও সাইফুল ইসলাম মতিসহ সমিতির অন্যান্য লোকজনকে ডেকে নিয়ে বৈঠক বসে। পরে সর্বসম্মতিক্রমে আটককৃতদের পুলিশে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ তাদের ধৃত করে থানায় নিয়ে যায়। তাদেরকে আটক করার ২৪ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে আটককৃতদের বিরুদ্ধে থানায় কেউ কোন লিখিত অভিযোগ না করায় সোমবার দুপুরে পুলিশ তাদেরকে ছেড়ে দেয়।

জানা যায়, দালাল নুরুল ইসলাম মেম্বার দীর্ঘদিন যাবত দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে বিতর্কিত দলিল লিখক ইউনুছ মিয়ার সহকারী হিসেবে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। ইতিমধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র জ্বাল করতে গিয়ে ধরা খায় দালাল নুরুল ইসলাম মেম্বার। তখন সাব রেজিষ্ট্রার আনিছুর রহমান তাকে উক্ত অফিস থেকে বিতারিত করার জন্য দলিল লিখক সমিতিকে নির্দেশ দিলেও কোন কাজ হয়নি। এ দিকে বিতর্কিত দলিল লিখক ইউনুছ মিয়া ইতিপূর্বে ভূয়া খতিয়ান ও বিভিন্ন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের সীলসহ ধরা পড়ে। তখন একটি জালিয়াতি মামলায় সে কয়েক মাস জেল খেটে পুনরায় এসে প্রভাবশালী ভেন্ডার, দলিল লিখক ও সমিতির ২/৩ জন নেতৃবৃন্দের ছত্রছায়ায় থেকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তখনও বিতর্কিত দলিল লিখক ইউনুছ মিয়াকে উক্ত অফিস থেকে বিতারিত করার নির্দেশ দিলেও অদৃশ্য কারণে কোন কাজ হয়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার আনিছুর রহমান ঘটনার সত্যতা শিকার করে জানান, আমি বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে উক্ত জ্বাল দলিলের সাথে জড়িতদের পুলিশে দিয়েছি। যারা ক্ষতিগ্রস্ত তারা যদি উক্ত জ্বালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে কোন মামলা না দেয়, তাহলে আমার কিছুই করার নেই।
মুরাদনগর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে ২৪ ঘন্টার মধ্যেও কেউ কোন লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় তাদেরকে ছেড়ে দিতে হয়েছে। পরবর্তীতে কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।  # #

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে ভূয়া দলিল দিতে এসে দালালসহ শ্রীঘরে, অতপর……..

আপডেট সময় ০১:৪২:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০১৭
মো. হাবিবুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

জমির ভূয়া দাতা সেজে দলিল দিতে এসে দালাল নুরুল ইসলাম মেম্বারসহ দুই জনকে আটক করে মুরাদনগর থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। রোববার দুপুরে উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে এ ঘটনা ঘটে। তবে উক্ত ঘটনায় কেউ অভিযোগ না করায় পুলিশ সোমবার দুপুরে তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বমহলে তোলপাড় শুরু হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন আন্দিকুট ইউনিয়নের ডালপা গ্রামের মৃত আলী আজ্জমের ছেলে জিল্লুর রহমান তার চাচাতো ভাই ইব্রাহিম মিয়াকে ২০ শতক জমি দানপত্র রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার জন্য রোববার মুরাদনগর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে আসে। জমির অন্যান্য কাগজপত্রের সাথে মালিকানার একটি সই মুহুরী নকল দলিল লিখক আব্দুর রউফ মেম্বারের নিকট জমা দেয়। দলিল রেজিষ্ট্রি করার জন্য রোববার দুপুরে ওই দলিলের মালিকানার কাগজপত্র সাব রেজিষ্ট্রারের নিকট উপস্থাপন করে। তখন দলিলের সাথে দেওয়া মালিকানার সইমুহুরী নকলের স্বাক্ষরটি সাব রেজিষ্ট্রারের নয় বলে খতিয়ে দেখার জন্য অফিস সহকারীদের নির্দেশ দেয়। পরে বালাম খুঁজিয়া উক্ত দলিল রেজিষ্ট্রির কোন হদিস না পেয়ে ভূয়া জমি দাতা জিল্লুর রহমানকে আটক করে। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে রেজিষ্ট্রি অফিসের দালাল পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম মেম্বারের মাধ্যমে এক হাজার দুইশত টাকা দিয়ে সইমুহুরী নকল সংগ্রহ করেছে বলে জানায়। সে সময় অন্যান্য দলিল লিখকদের সহায়তায় রেজিষ্ট্রি অফিসের দালাল নুরুল ইসলাম মেম্বারকেও ডেকে নিয়ে সাব রেজিষ্ট্রারের এজলাসে আটকে রাখে। সাব রেজিষ্ট্রার আনিছুর রহমান বিষয়টির ব্যাপারে দলিল লিখক সমিতির সভাপতি শাহজাহান মুন্সী, সদস্য আব্দুর রউফ মেম্বার ও সাইফুল ইসলাম মতিসহ সমিতির অন্যান্য লোকজনকে ডেকে নিয়ে বৈঠক বসে। পরে সর্বসম্মতিক্রমে আটককৃতদের পুলিশে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ তাদের ধৃত করে থানায় নিয়ে যায়। তাদেরকে আটক করার ২৪ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে আটককৃতদের বিরুদ্ধে থানায় কেউ কোন লিখিত অভিযোগ না করায় সোমবার দুপুরে পুলিশ তাদেরকে ছেড়ে দেয়।

জানা যায়, দালাল নুরুল ইসলাম মেম্বার দীর্ঘদিন যাবত দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে বিতর্কিত দলিল লিখক ইউনুছ মিয়ার সহকারী হিসেবে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। ইতিমধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র জ্বাল করতে গিয়ে ধরা খায় দালাল নুরুল ইসলাম মেম্বার। তখন সাব রেজিষ্ট্রার আনিছুর রহমান তাকে উক্ত অফিস থেকে বিতারিত করার জন্য দলিল লিখক সমিতিকে নির্দেশ দিলেও কোন কাজ হয়নি। এ দিকে বিতর্কিত দলিল লিখক ইউনুছ মিয়া ইতিপূর্বে ভূয়া খতিয়ান ও বিভিন্ন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের সীলসহ ধরা পড়ে। তখন একটি জালিয়াতি মামলায় সে কয়েক মাস জেল খেটে পুনরায় এসে প্রভাবশালী ভেন্ডার, দলিল লিখক ও সমিতির ২/৩ জন নেতৃবৃন্দের ছত্রছায়ায় থেকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তখনও বিতর্কিত দলিল লিখক ইউনুছ মিয়াকে উক্ত অফিস থেকে বিতারিত করার নির্দেশ দিলেও অদৃশ্য কারণে কোন কাজ হয়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার আনিছুর রহমান ঘটনার সত্যতা শিকার করে জানান, আমি বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে উক্ত জ্বাল দলিলের সাথে জড়িতদের পুলিশে দিয়েছি। যারা ক্ষতিগ্রস্ত তারা যদি উক্ত জ্বালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে কোন মামলা না দেয়, তাহলে আমার কিছুই করার নেই।
মুরাদনগর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে ২৪ ঘন্টার মধ্যেও কেউ কোন লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় তাদেরকে ছেড়ে দিতে হয়েছে। পরবর্তীতে কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।  # #