অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
বিলিয়নিয়ার। অর্থাৎ যাদের আর্থিক সম্পত্তির পরিমাণ ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৮ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক যে ধনকুবেররা, তাদের সংখ্যা কোন দেশে বেশি- এই নিয়ে একটি প্রতিবেদন সামনে এনেছে প্রাইসওয়াটার কুপার্স এবং ইউবিএস।
পৃথিবীর ইতিহাসে ২০১৭ সালেই ধনকুবেররা সব থেকে বেশি টাকা রোজগার করেছেন। শুধু তাই নয়, রথসচাইল্ড, রকফেলারের পর আরও অনেক নতুন ধনকুবের পরিবারের জন্ম নেওয়ার কথা জানা যাচ্ছে এই বছরেই। পৃথিবীর গতিপথ ঠিক করতে এই মুষ্টিমেয় ধনকুবেরদের প্রভাব আরও বাড়বে বলে জানানো হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
২০১৭ সালে ধনকুবেররা তাদের সম্পত্তি বৃদ্ধি করেছেন প্রায় ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার। এই বৃদ্ধি স্পেন বা অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত দেশের অর্থনীতির থেকেও অনেকটাই বেশি। নতুন ১৭৯ জন ধনকুবেরের মধ্যে ৪০ জন্যই উত্তরাধিকার সূত্রে পারিবারিক সম্পত্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে ধনকুবের হয়েছেন।
সব থেকে বেশি বিত্তশালী লোকের বাস আমেরিকাতেই। অধিকাংশ প্রযুক্তি কোম্পানির আঁতুড়ঘরই হল আমেরিকা। আমাজন, ফেসবুক, মাইক্রোসফট, গুগল, প্রতিটি সংস্থার মালিকই আছেন মার্কিন ধনকুবেরের তালিকায়। পৃথিবীর দুই হাজার ১৫৮ জন ধনকুবেরের মধ্যে ৫৮৫ জনই মার্কিন।
তালিকায় উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি চীনের। গত কয়েক বছর ধরেই কমিউনিস্ট চীনে বাড়ছে ধনকুবেরদের সংখ্যা। এই মুহূর্তে আমেরিকার পরই সব থেকে বেশি ধনকুবের আছে চীনে। ২০১৭ সালের হিসেবে চীনে ধনকুবেরের সংখ্যা ৩৭৩। তাদের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১,১২০ বিলিয়ন ডলার। পৃথিবীর প্রতি পাঁচ জন ধনকুবেরের একজন চীনা।
চীনের পরই এই তালিকায় আছে জার্মানি। জার্মানিতে মোট ধনকুবেরের সংখ্যা ১২৩। তাদের মোট সম্পত্তির পরিমান ৫৮০ বিলিয়ন ডলার।
ধনকুবেরের সংখ্যার নিরিখে আমেরিকা, চীন এবং জার্মানির পরই আছে ভারত। ভারতে মোট ধনকুবেরের সংখ্যা ১১৯। সেই তালিকার শীর্ষে আছেন মুকেশ অম্বানি। এ ছাড়া আছেন আজিজ প্রেমজি, হিন্দুজা গোষ্ঠীর সদস্যরা, লক্ষ্মী মিত্তালের মতো ধনকুবেররা। ভারতের পরে আছে রাশিয়া। সাবেক কমিউনিস্ট এই দেশে আছেন মোট ১০১ জন।
পৃথিবীর আর কোনো দেশে একশোর বেশি ধনকুবের নেই। হংকং-এ ৬৭, ইংল্যান্ডে ৫৪, কানাডাতে ৪৬, দক্ষিণ কোরিয়াতে ৪৪, ইতালিতে ৪৩, অস্ট্রেলিয়া৪৩, ব্রাজিলে ৪২, ফ্রান্সে ৪০, তুরস্কে ৩৬, সুইজারল্যান্ডে ৩৬, তাইওয়ানে ৩৫, জাপানে ৩৫, সুইডেনে ৩২, থাইল্যান্ডে ৩০ এবং স্পেনে ২৯ জন ধনকুবের থাকেন।
মহাদেশভিত্তিক ধনকুবেরের তালিকায় তাৎপর্যপূর্ণ অনুপস্থিতি হলো আরব এবং পূর্ব আফ্রিকা। তেল উৎপাদনের কারণে এই এলাকা বিপুল বিত্তশালী হলেও সেই ভাবে ধনকুবের পাওয়া যাচ্ছে না এই অঞ্চলে। মনে করা হচ্ছে, এসব তেল উৎপাদক সংস্থাগুলো সরকারি কোম্পানি হিসেবে নথিভূক্ত। সেই কারণেই ব্যক্তিগত সম্পত্তির হিসাব পাওয়া যায়নি।