ঢাকা ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হোমনায় মাদ্রাসা ছাত্রী বিথি হত্যার বিচারের জন্য আদালতে মা

রায়হান চৌদুরী, হোমনা (কুমিল্লা):

কুমিল্লার হোমনায় মাদ্রাসা ছাত্রী সুমাইয়া জাহান বিথি (১৪) হত্যা মামলার সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে বিচারের জন্য বিত্তবানদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে নিরাশ হয়ে। এখন নিহত বিথির দুঃখিনী মায়ের শেষ ভরসা আদালত। হত্যায় জড়িত আসামীদের অর্থের কাছে গত দুই বছরেও তদন্ত প্রতিবেদনে রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় সুশিল সমাজ ও এলাকাবাসীর মাঝে নানাহ জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে,তারা দাবি করছেন। রহস্যজনকভাবে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে পরিকল্পিত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছেন।

নিহত বিথি উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের দড়িকান্দির প্রবাসী জহিরুল ইসলামের মেয়ে ও অনন্তপুর দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্রী।

এলাকাবাসী ও মামলা সুত্রে জানা যায়, হোমনা উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের দড়িকান্দি গ্রামের প্রবাসী জহিরুল ইসলাম বাদলের মেয়ে ও অনন্তপুর দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া জাহান বিথিকে প্রেম সংক্রান্ত বিবাহে অনিহা থাকায় একই গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে বজলু মিয়াসহ তার পরিবারের লোকজন মিলে বিষপানে হত্যা করে। আর ঘটনা রাতারাতি ধামাচাপা দিতে পুলিশের কতিপয় দুর্নীতি পরায়ন কর্মকর্তার সাথে আতাত করে দড়িকান্দি গ্রামের আলমগীর হোসেন নামের স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা ৩/১১, তাং ১৯.০৩.১৫ইং দায়ের করে। যেখানে সুস্থ্য একটি মেয়েকে পেটের পিড়ার রোগী উল্লেখ্য করা হয়। এরপর নিহতের মা রহিমা ইসলাম সন্তান শোকে পাগল প্রায় থাকার সুযোগে সুষ্ঠ বিচারের কথা বলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয় স্থানীয় চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে হোমনা থানা পুলিশের এস.আই সফিউদ্দিন আহাম্মেদ সোহেল। এরপর দীর্ঘ ৬মাস পেরিয়ে গেলেও কোন বিচার না পেয়ে এবং উল্টো নিহতের পিতাকে দেশে আসলে হত্যা করা হবে এমন হুমকি প্রদান করা হলে অবশেষে রহিমা ইসলাম বাদী হয়ে পেনাল কোডের ৩০২/৩৪ ধারায় গত ১০আগষ্ট১৫ সালে জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, কুমিল্লায় সি.আর মামলা নং ২৯৬/১৫ইং দায়ের করা হয়। অভিযোগটি আমলে নিয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজেষ্ট্রেট, কুমিল্লার বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট শুভ্রা চক্রকর্তী বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য অফিসার ইনচার্জ হোমনাকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। এরপর হোমনা থানা আসামীদের কাছ থেকে সন্তুষ্ট হয়ে সাদা কাগজে নেয়া রহিমা ইসলামের স্বাক্ষর জালিয়াতি মনগড়া কিছু তথ্য উপস্থাপন করে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন প্রদান করেন। এরপর মামলাটি বাংলাদেশ পুলিশ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কুমিল্লাকে অধিকতর তদন্ত করার জন্য আদালত নির্দেশ প্রদান করেন। পিবিআই’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে এলাকাবাসী ও স্বাক্ষীদের আলাপ করে দীর্ঘদিন তদন্তের পর বিজ্ঞ আদালতে কিছু মন গড়া তথ্য উল্লেখ্য করে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাদীর সাথে পুর্ব মনোমালিন্য ও বিরোধের জেরে এই মামলা যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কাল্পনিক। বাদীর সাথে পূর্বে কোন মামলা বা মনোমানিলন্য ছিলো না বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়। এছাড়াও লাশটি উত্তলন করে ময়না তদন্ত করলেই ঘটনার সত্যতা বেড়িয়ে আসবে বলে লাশটি কবর থেকে উত্তলনের ব্যবস্থা করা হয়নি বলে বাদী রহিমা ইসলাম জানায়। উক্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে কুমিল্লা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, আমলী আদালত নং-৪ এর বিজ্ঞ সিনিয়র ম্যাজিষ্ট্রেট বিপ্লব দেবনাথের আদালতে বাদী রহিমা ইসলাম হাজির হয়ে নারাজি প্রার্থনা করলে আদালত প্রার্থনা মঞ্জুর করে আগামী ১১জানুয়ারী পরবর্তী দিন ধার্য করেন। বাদি পক্ষের আইনজীবি সিনিঃ এ্যাড. আতিকুল ইসলাম ও এ্যাড. আক্তার হামিদ সোহেল বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বাদী রহিমা ইসলাম জানান, আদালতে আমি উকিলের মাধ্যমে সময় প্রার্থনা করে নারাজির আবেদন করেছি, আদালত সময় দিয়েছে। আশা করছি বিজ্ঞ আদালত নারাজি আমলে নিয়ে আমার নিষ্পাপ মেয়ে হত্যার বিষয়টি লাশ উত্তোলনের মাধ্যমে সুষ্ট বিচারের ব্যবস্থা করে দিবেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মুরাদনগরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

হোমনায় মাদ্রাসা ছাত্রী বিথি হত্যার বিচারের জন্য আদালতে মা

আপডেট সময় ০৯:৩৮:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী ২০১৭
রায়হান চৌদুরী, হোমনা (কুমিল্লা):

কুমিল্লার হোমনায় মাদ্রাসা ছাত্রী সুমাইয়া জাহান বিথি (১৪) হত্যা মামলার সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে বিচারের জন্য বিত্তবানদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে নিরাশ হয়ে। এখন নিহত বিথির দুঃখিনী মায়ের শেষ ভরসা আদালত। হত্যায় জড়িত আসামীদের অর্থের কাছে গত দুই বছরেও তদন্ত প্রতিবেদনে রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় সুশিল সমাজ ও এলাকাবাসীর মাঝে নানাহ জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে,তারা দাবি করছেন। রহস্যজনকভাবে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে পরিকল্পিত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছেন।

নিহত বিথি উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের দড়িকান্দির প্রবাসী জহিরুল ইসলামের মেয়ে ও অনন্তপুর দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্রী।

এলাকাবাসী ও মামলা সুত্রে জানা যায়, হোমনা উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের দড়িকান্দি গ্রামের প্রবাসী জহিরুল ইসলাম বাদলের মেয়ে ও অনন্তপুর দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া জাহান বিথিকে প্রেম সংক্রান্ত বিবাহে অনিহা থাকায় একই গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে বজলু মিয়াসহ তার পরিবারের লোকজন মিলে বিষপানে হত্যা করে। আর ঘটনা রাতারাতি ধামাচাপা দিতে পুলিশের কতিপয় দুর্নীতি পরায়ন কর্মকর্তার সাথে আতাত করে দড়িকান্দি গ্রামের আলমগীর হোসেন নামের স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা ৩/১১, তাং ১৯.০৩.১৫ইং দায়ের করে। যেখানে সুস্থ্য একটি মেয়েকে পেটের পিড়ার রোগী উল্লেখ্য করা হয়। এরপর নিহতের মা রহিমা ইসলাম সন্তান শোকে পাগল প্রায় থাকার সুযোগে সুষ্ঠ বিচারের কথা বলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয় স্থানীয় চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে হোমনা থানা পুলিশের এস.আই সফিউদ্দিন আহাম্মেদ সোহেল। এরপর দীর্ঘ ৬মাস পেরিয়ে গেলেও কোন বিচার না পেয়ে এবং উল্টো নিহতের পিতাকে দেশে আসলে হত্যা করা হবে এমন হুমকি প্রদান করা হলে অবশেষে রহিমা ইসলাম বাদী হয়ে পেনাল কোডের ৩০২/৩৪ ধারায় গত ১০আগষ্ট১৫ সালে জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, কুমিল্লায় সি.আর মামলা নং ২৯৬/১৫ইং দায়ের করা হয়। অভিযোগটি আমলে নিয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজেষ্ট্রেট, কুমিল্লার বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট শুভ্রা চক্রকর্তী বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য অফিসার ইনচার্জ হোমনাকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। এরপর হোমনা থানা আসামীদের কাছ থেকে সন্তুষ্ট হয়ে সাদা কাগজে নেয়া রহিমা ইসলামের স্বাক্ষর জালিয়াতি মনগড়া কিছু তথ্য উপস্থাপন করে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন প্রদান করেন। এরপর মামলাটি বাংলাদেশ পুলিশ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কুমিল্লাকে অধিকতর তদন্ত করার জন্য আদালত নির্দেশ প্রদান করেন। পিবিআই’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে এলাকাবাসী ও স্বাক্ষীদের আলাপ করে দীর্ঘদিন তদন্তের পর বিজ্ঞ আদালতে কিছু মন গড়া তথ্য উল্লেখ্য করে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাদীর সাথে পুর্ব মনোমালিন্য ও বিরোধের জেরে এই মামলা যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কাল্পনিক। বাদীর সাথে পূর্বে কোন মামলা বা মনোমানিলন্য ছিলো না বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়। এছাড়াও লাশটি উত্তলন করে ময়না তদন্ত করলেই ঘটনার সত্যতা বেড়িয়ে আসবে বলে লাশটি কবর থেকে উত্তলনের ব্যবস্থা করা হয়নি বলে বাদী রহিমা ইসলাম জানায়। উক্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে কুমিল্লা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, আমলী আদালত নং-৪ এর বিজ্ঞ সিনিয়র ম্যাজিষ্ট্রেট বিপ্লব দেবনাথের আদালতে বাদী রহিমা ইসলাম হাজির হয়ে নারাজি প্রার্থনা করলে আদালত প্রার্থনা মঞ্জুর করে আগামী ১১জানুয়ারী পরবর্তী দিন ধার্য করেন। বাদি পক্ষের আইনজীবি সিনিঃ এ্যাড. আতিকুল ইসলাম ও এ্যাড. আক্তার হামিদ সোহেল বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বাদী রহিমা ইসলাম জানান, আদালতে আমি উকিলের মাধ্যমে সময় প্রার্থনা করে নারাজির আবেদন করেছি, আদালত সময় দিয়েছে। আশা করছি বিজ্ঞ আদালত নারাজি আমলে নিয়ে আমার নিষ্পাপ মেয়ে হত্যার বিষয়টি লাশ উত্তোলনের মাধ্যমে সুষ্ট বিচারের ব্যবস্থা করে দিবেন।