ঢাকা ০১:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হোমনায় হানাদারমুক্ত দিবস পালিত

তপন সরকার, হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার হোমনায় হানাদারমুক্ত দিবস বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও কম্বল বিতরন আলোচনা সভা পালিত হয়েছে। 

শুক্রবার সকাল ১০ টায় মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ ঘাগুটিয়া হানাদারমুক্ত হয়। ১৬ ডিসেম্বর যখন সারা দেশ বিজয়ের আনন্দে উদ্বেলিত তখনও হোমনবাসী শত্রুমুক্ত হতে পারেনি। অংশীদার হতে পারেনি বিজয়ের আনন্দ মিছিলে। ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত হোমনা উপজেলার ঘাগুটিয়া গ্রামে পাক বাহিনীর সঙ্গে তুমুল যুদ্ধে করে হোমনাবাসী। অবশেষে ১৯৭১ সালের ২৩ ডিসেম্বর পার্শ্ববর্তী বাঞ্ছারামপুর, দাউদকান্দি, মুরাদনগর ও কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট থেকে আগত মুক্তিযোদ্ধা ও যৌথ বাহিনীর ট্যাংক আক্রমণের পর সম্পূর্ণরূপে শত্রুমুক্ত হয় ঘাগুটিয়া গ্রাম তথা হোমনা উপজেলা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঘাগুটিয়া গ্রামের হাজী আবু তাহের, সিদ্দিকুর রহমান মুন্সী, মুক্তিযোদ্ধা সোবহান মিয়াসহ কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, ১৪ ডিসেম্বর সকালে সূর্যোদয়ের সময় ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার বাঞ্ছারামপুর ক্যাম্প থেকে লঞ্চযোগে পালিয়ে যাচ্ছিল শতাধিক পাক সেনার একটি দল। পাক সেনাদের পালানোর সংবাদ পেয়ে ঘাগুটিয়া লঞ্চঘাটের নিকটে অবস্থান নেয় মুক্তিযোদ্ধারা। তাদের লঞ্চ ঘাটের কাছে আসামাত্র বাঞ্ছারামপুর ও হোমনার মুক্তিসেনারা একযোগে আক্রমণ করে। বাধা পেয়ে পাক বাহিনী হোমনার ঘাগুটিয়া মসজিদে আশ্রয় নেয়। পাকবাহিনী মসজিদের পাশে আশেপাশের ৪০/৫০টি বাড়িতে আগুন দেয় এবং উপর্যুপরি গুলি বর্ষণ করতে থাকে। পাক বাহিনী গ্রামে প্রবেশ করার পর ঘাগুটিয়া ও ভবানীপুর গ্রামেবাসী বাড়িঘর ফেলে রেখে পার্শ্ববর্তী মাধবপুর, রামপুর ও নালাদক্ষিণ গ্রামে আশ্রয় নেয়,ঘাগুটিয়া গ্রামবাসি তখন অনেক কস্টে জিবন জাপন করতে হয়েছে।ঘাগুটিয়া যুদ্ধে দুই জন মুক্তিযোদ্ধাসহ গ্রামের ১৮ জন নারী- পুরুষ শহীদ হন। শতাধিক গ্রামবাসী ও এফ এফ কমান্ডার আব্দুল আউয়ালসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা এ যুদ্ধে আহত হন। পাক বাহিনীর কত সদস্য নিহত হয়েছে তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের মতে, কিছু পাক সেনা পালাতে গিয়ে গণ পিটুনিতে বিচ্ছিন্নভাবে মারা যায়। বাকীরা যৌথ বাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে। যে কারণে আজকের এই দিনটি আগৈলঝাড়া মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মুরাদনগরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

হোমনায় হানাদারমুক্ত দিবস পালিত

আপডেট সময় ০১:৫৯:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬
তপন সরকার, হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার হোমনায় হানাদারমুক্ত দিবস বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও কম্বল বিতরন আলোচনা সভা পালিত হয়েছে। 

শুক্রবার সকাল ১০ টায় মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ ঘাগুটিয়া হানাদারমুক্ত হয়। ১৬ ডিসেম্বর যখন সারা দেশ বিজয়ের আনন্দে উদ্বেলিত তখনও হোমনবাসী শত্রুমুক্ত হতে পারেনি। অংশীদার হতে পারেনি বিজয়ের আনন্দ মিছিলে। ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত হোমনা উপজেলার ঘাগুটিয়া গ্রামে পাক বাহিনীর সঙ্গে তুমুল যুদ্ধে করে হোমনাবাসী। অবশেষে ১৯৭১ সালের ২৩ ডিসেম্বর পার্শ্ববর্তী বাঞ্ছারামপুর, দাউদকান্দি, মুরাদনগর ও কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট থেকে আগত মুক্তিযোদ্ধা ও যৌথ বাহিনীর ট্যাংক আক্রমণের পর সম্পূর্ণরূপে শত্রুমুক্ত হয় ঘাগুটিয়া গ্রাম তথা হোমনা উপজেলা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঘাগুটিয়া গ্রামের হাজী আবু তাহের, সিদ্দিকুর রহমান মুন্সী, মুক্তিযোদ্ধা সোবহান মিয়াসহ কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, ১৪ ডিসেম্বর সকালে সূর্যোদয়ের সময় ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার বাঞ্ছারামপুর ক্যাম্প থেকে লঞ্চযোগে পালিয়ে যাচ্ছিল শতাধিক পাক সেনার একটি দল। পাক সেনাদের পালানোর সংবাদ পেয়ে ঘাগুটিয়া লঞ্চঘাটের নিকটে অবস্থান নেয় মুক্তিযোদ্ধারা। তাদের লঞ্চ ঘাটের কাছে আসামাত্র বাঞ্ছারামপুর ও হোমনার মুক্তিসেনারা একযোগে আক্রমণ করে। বাধা পেয়ে পাক বাহিনী হোমনার ঘাগুটিয়া মসজিদে আশ্রয় নেয়। পাকবাহিনী মসজিদের পাশে আশেপাশের ৪০/৫০টি বাড়িতে আগুন দেয় এবং উপর্যুপরি গুলি বর্ষণ করতে থাকে। পাক বাহিনী গ্রামে প্রবেশ করার পর ঘাগুটিয়া ও ভবানীপুর গ্রামেবাসী বাড়িঘর ফেলে রেখে পার্শ্ববর্তী মাধবপুর, রামপুর ও নালাদক্ষিণ গ্রামে আশ্রয় নেয়,ঘাগুটিয়া গ্রামবাসি তখন অনেক কস্টে জিবন জাপন করতে হয়েছে।ঘাগুটিয়া যুদ্ধে দুই জন মুক্তিযোদ্ধাসহ গ্রামের ১৮ জন নারী- পুরুষ শহীদ হন। শতাধিক গ্রামবাসী ও এফ এফ কমান্ডার আব্দুল আউয়ালসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা এ যুদ্ধে আহত হন। পাক বাহিনীর কত সদস্য নিহত হয়েছে তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের মতে, কিছু পাক সেনা পালাতে গিয়ে গণ পিটুনিতে বিচ্ছিন্নভাবে মারা যায়। বাকীরা যৌথ বাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে। যে কারণে আজকের এই দিনটি আগৈলঝাড়া মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হয়।