তপন সরকার, হোমনা প্রতিনিধিঃ
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৪ টায় কুমিল্লার হোমনা উপজেলা প্রশাসন মুক্তিযুদ্ধা আওয়ামীলীগ ছাত্র শিক্ষকসহ সর্বস্তরের জনতা দুলালপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে র্যালি করে ঘগিুটিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্প স্তবক অর্পণ ও আলোচনা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সংবর্ধনা মধ্যে দিয়ে হানাদারমুক্ত দিবস পালিত হয়েছে।
জানাযায় ১৬ ডিসেম্বর যখন সারা দেশ বিজয়ের আনন্দে উদ্বেলিত তখনও হোমনবাসী শত্রুমুক্ত হতে পারেনি। অংশীদার হতে পারেনি বিজয়ের আনন্দ মিছিলে। ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত হোমনা উপজেলার ঘাগুটিয়া গ্রামে পাক বাহিনীর সঙ্গে তুমুল যুদ্ধে করে হোমনাবাসী। অবশেষে ১৯৭১ সালের ২৩ ডিসেম্বর পার্শ্ববর্তী বাঞ্ছারামপুর, দাউদকান্দি, মুরাদনগর ও কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট থেকে আগত মুক্তিযোদ্ধা ও যৌথ বাহিনীর ট্যাংক আক্রমণের পর সম্পূর্ণরূপে শত্রুমুক্ত হয় ঘাগুটিয়া গ্রাম তথা হোমনা উপজেলা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৪ ডিসেম্বর সকালে সূর্যোদয়ের সময় ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার বাঞ্ছারামপুর ক্যাম্প থেকে লঞ্চযোগে পালিয়ে যাচ্ছিল শতাধিক পাক সেনার একটি দল। পাক সেনাদের পালানোর সংবাদ পেয়ে ঘাগুটিয়া লঞ্চঘাটের নিকটে অবস্থান নেয় মুক্তিযোদ্ধারা। তাদের লঞ্চ ঘাটের কাছে আসামাত্র বাঞ্ছারামপুর ও হোমনার মুক্তিসেনারা একযোগে আক্রমণ করে। বাধা পেয়ে পাক বাহিনী হোমনার ঘাগুটিয়া মসজিদে আশ্রয় নেয়। পাকবাহিনী মসজিদের পাশে আশেপাশের ৪০/৫০টি বাড়িতে আগুন দেয় এবং উপর্যুপরি গুলি বর্ষণ করতে থাকে। পাক বাহিনী গ্রামে প্রবেশ করার পর ঘাগুটিয়া ও ভবানীপুর গ্রামেবাসী বাড়িঘর ফেলে রেখে পার্শ্ববর্তী মাধবপুর, রামপুর ও নালাদক্ষিণ গ্রামে আশ্রয় নেয়,ঘাগুটিয়া গ্রামবাসি তখন অনেক কস্টে জিবন জাপন করতে হয়েছে।ঘাগুটিয়া যুদ্ধে দুই জন মুক্তিযোদ্ধাসহ গ্রামের ১৮ জন নারী- পুরুষ শহীদ হন। শতাধিক গ্রামবাসী ও এফ এফ কমান্ডার আব্দুল আউয়ালসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা এ যুদ্ধে আহত হন। পাক বাহিনীর কত সদস্য নিহত হয়েছে তার সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের মতে, কিছু পাক সেনা পালাতে গিয়ে গণ পিটুনিতে বিচ্ছিন্নভাবে মারা যায়। বাকীরা যৌথ বাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে।