খেলাধূলা ডেস্কঃ
চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা শেষে ইনিংস পরাজয়ের শংকা এসে ভর করেছিল। কারন বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের অতীত ইতিহাস। সেই ইতিহাস আজ নতুন করে লিখল টিম টাইগার। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, নতুন ইতিহাস লিখলেন মুমিনুল হক এবং লিটন দাস। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে করা ৫১৩ রানের জবাবে ৯ উইকেটে ৭১৩ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে বিপদে পড়া বাংলাদেশকে টেনে তুলেন এই দুজন। ৫ উইকেটে ৩০৭ রান আসার পর ড্র মেনে নেয় দুই পক্ষ।
৩ উইকেটে ৮১ রান নিয়ে আজ রবিবার পঞ্চম দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। প্রচণ্ড চাপের মধ্যে থেকে অসাধারণ নৈপূণ্যে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন অপরাজিত মুমিনুল হক এবং নতুন ব্যাটসম্যান লিটন দাস। ধীরে ধীরে তারা উইকেটে সেট হয়ে যান। ৭৮ বলে ১ চার ১ ছক্কায় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার প্রথম ইনিংসে বাজেভাবে আউট হয়ে সমালোচিত লিটন দাস ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন ৯৩ বলে ৬ বাউন্ডারিতে। কিন্তু দুজনের ‘আসল ব্যাটিং’ তখন কেবল শুরু হয়।
রঙ্গনা হেরাথের বলে একবার জীবন পেয়ে দারুণ ব্যাটিংয়ে তিন অংকের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন মুমিনুল হক। নার্ভাস নাইন্টিতে বেশ স্নায়ুচাপ ছিল। শেষ পর্যন্ত সব শংকা কাটিয়ে ১৫৪ বলে ৫ চার এবং ২ ছক্কায় ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নেন ‘লিটল মাস্টার’। নেচে উঠল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের গ্যালারি। এর সাথে সাথে বাংলাদেশের হয়ে একই টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করা একমাত্র ব্যাটসম্যান হয়ে ইতিহাস গড়লেন ‘টেস্ট স্পেশালিস্ট’।
প্রথম ইনিংসে ১৭৫ রান করলেও আজকের ইনিংসটা বেশি বড় করতে পারেননি মুমিনুল। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার বলে করুনারত্নের তালুবন্দি হয়ে ফেরার আগে তার নামের পাশে ১৭৪ বলে ৫ চার ২ ছক্কায় ১০৫ রানের ঝলমলে ইনিংস। মুমিনুলের বিদায়ের সাথে সাথেই ভাঙে লিটন দাসের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ১৮০ রানের ম্যাচ বাঁচানো জুটি।
মুমিনুলের বিদায়ের পর প্রথম ইনিংসে ০ রানে আউট হওয়া লিটন দাস এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিন অংকের দিকে। ৯৪ রানে ব্যাট করার সময় হঠাৎ তার কী হলো, রঙ্গনা হেরাথের মত বোলারকে এগিয়ে এসে তুলে মারতে গেলেন। পেরেরার তালুবন্দি হয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি মিস করলেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। ১৮২ বলের ইনিংসে মেরেছেন ১১টি বাউন্ডারি।
অল-রাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়ে ইনিস গড়ায় মনযোগ দেন অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহ। পরিস্কার টেস্ট খেলতে থাকা মোসাদ্দেক প্রথম রান নেন ১৯তম বলে। এই জুটিতে ২৮ রান আসার পর ড্র মেনে নেয় দুই দল। মাহমুদ উল্লাহ ২৮ এবং মোসাদ্দেক ৮ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৩০৭ রান।
এর আগে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে করা ৫১৩ রানের জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসেই ৭১৩/৯ রানের পাহাড় গড়ে দিনেশ চান্দিমালের দল। শ্রীলঙ্কার চেয়ে ২০০ রানে পিছিয়ে থেকে চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে দিনের শেষ সময়টুকুতেই তিন শীর্ষ ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল (৪১), ইমরুল কায়েস (১৯) এবং মুশফিকুর রহিম (২)।