তথ্য প্রযুক্তি ডেস্কঃ
বিভিন্ন কাজের জন্য আপনার ওয়াই-ফাই সিগন্যাল বুস্টার বা রিপিটারের প্রয়োজন হতে পারে। হতে পারে আপনার ওয়াই-ফাই রাউটারটি আপনার বাড়ি সম্পূর্ণ সিগন্যাল কভারেজ দিতে পারে না। হতে পারে ওয়াই-ফাই সিগন্যাল আপনার ঘরের দরজা পর্যন্ত আসে কিন্তু পিসির টেবিল পর্যন্ত পৌঁছায় না। এছড়াও, হোটেলে বা কোনো পাবলিক ওয়াই-ফাই প্লেসে কেবল একটি ডিভাইজ অ্যালাউ করে তখন আলাদা ডিভাইজগুলো আপনার ফোন থেকেই কানেক্ট পারবেন এই পদ্ধতিতে।
আমাদের এবারের আয়োজনে কীভাবে ফোনে কানেক্ট থাকা ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট পোর্টেবল ওয়াই-ফাই হটস্পট দিয়ে আলাদা ডিভাইসগুলোর সঙ্গে শেয়ার করবেন। মূলত এরকম করা গেলে আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনটি ওয়াই-ফাই সিগন্যাল বুস্টার বা ওয়াই-ফাই রিপিটারের মতো কাজ করবে। তবে আসল ওয়াই-ফাই রিপিটার ডিভাইজ কিনতে অনেক খরচ রয়েছে, এখানে এটা ফ্রিতেই হয়ে যাচ্ছে।
স্যামসাং-এর লেটেস্ট ফোনগুলোতে এই ফিচারটি বিল্ডইনভাবেই থাকে। হুয়াওয়ের লেটেস্ট ফোনগুলোতেও এই ফিচারটি ‘Wi-Fi Bridge’ নামে দেখতে পাওয়া যায়। যেটা এক ওয়াই-ফাই থেকে কানেক্ট হয়ে নিজের সম্পূর্ণ নতুন ওয়াই-ফাই হটস্পট তৈরি করে সিগন্যাল রিপিট করে বা ওয়াই-ফাই সিগন্যাল এক্সটেন্ড করে।
যেভাবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে ওয়াই-ফাই সিগন্যাল বুস্টার এ পরিণত করবেন
‘NetShare – no-root-tethering’ অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিন অথবা অলস ভায়েরা https://play.google.com/store/apps/details?id=kha.prog.mikrotik&hl=en এ প্রবেশ করলেও পাবেন অ্যাপটি। অ্যাপটির নাম থেকেই বুঝা যাচ্ছে, ফোন রুট থাকা জরুরি নয়।
অ্যাপটি ডাউনলোড শেষ হলে এটিকে ওপেন করুন। এখান থেকে ‘Start WiFi Hotspot’ অপশনটিতে মার্ক করে দিলেই কানেক্ট থাকা ওয়াই-ফাই সিগন্যালটি ফোন রিপিট করতে শুরু করে দেবে।
তবে একটা বিষয় মাথায় রাখবেন আর তা হলো-অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের লিমিটেশনের জন্য আপনি SSID এবং Password এডিট করতে পারবেন না। SSID এর পাশের EDIT অপশন-এ ক্লিক করে RESET করতে পারবেন। এতে অ্যান্ড্রয়েড আবার নতুন ক্রেডিনশিয়াল জেনারেট করবে।
এবার আসবে এই এক্সটেন্ডেড নেটওয়ার্কের সঙ্গে নতুন ডিভাইজ কানেক্ট করার পালা। আপনি যদি আরেকটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন কানেক্ট করতে চান, সেক্ষেত্রে এই একই অ্যাপ ফোনটিতেও থাকতে হবে। এরপর ফোনে অ্যাপটি ওপেন করুন এবং ‘Connect’ -এ ট্যাপ করুন। এক্সটেন্ডার হিসেবে ইউজ করা ফোনটির পাসওয়ার্ড-এর পাশে দেখুন WPS অপশন রয়েছে। এখানে প্রেস করে অন করে দিন। এতে করে নতুন অ্যান্ড্রয়েড কানেক্ট করার সময় পাসওয়ার্ড ম্যানুয়ালভাবে প্রবেশ করাতে হবে না।
যাইহোক, কানেক্ট হওয়ার পরে দেখবেন আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ভিপিএন রিকোয়েস্ট এনাবল করতে বলবে। এনাবল অ্যাক্সেপ্ট করে দিলেই অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ইন্টারনেট আক্সেস পেয়ে যাবে। এভাবেই তৈরি হয়ে গেল আপনার ওয়াই-ফাই সিগন্যাল বুস্টার।
যেভাবে উইন্ডোজ পিসিতে কানেক্ট করবেন
আপনার উইন্ডোজ পিসিতে ওয়াই-ফাই অন করুন এবং অ্যাপের পাসওয়ার্ড ইউজ করে কানেক্ট করুন। কিন্তু ওয়াই-ফাই রিপিটার কানেক্ট হওয়ার পরেও দেখবেন পিসিতে কোনো ইন্টারনেট কানেকশন নেই। কেননা আপনাকে প্রক্সি সেট করতে হবে।
পিসির Control Panel > Network and Internet এ প্রবেশ করুন। তারপরে Internet Options থেকে Connections ট্যাবটিতে ক্লিক করুন। তারপরে LAN Setting অপশনটিতে ক্লিক করুন।
Proxy Server অপশন থেকে ‘Use a proxy Server for you LAN’ এই অপশনটি টিক মার্ক দিন। এবার অ্যাড্রেস বক্সে ১৯২.১৬৮.৪৯.১ ও পোর্ট বক্সে ৮২৮২ প্রবেশ করান। সেটিংসটি সেভ করুন ও ইন্টারনেট ইউজ করার চেষ্টা করুন।
এবার দেখবেন আপনার পিসিতে ইন্টারনেট চলা শুরু হয়ে গেছে। মানে অ্যান্ড্রয়েড রিপিটার পারফেক্ট কাজ করছে। তবে আমি খেয়াল করে দেখেছি অ্যান্ড্রয়েড ওয়াই-ফাই সিগন্যাল বুস্টারটি ল্যাপটপের সঙ্গে কানেক্ট হওয়ার পরে কিছু সময় পরপর সিগন্যাল ড্রপ করে, তবে সঙ্গে সঙ্গে আবার কানেক্টও হয়ে যায়। আর হ্যাঁ, পুরাতন ডিভাইসগুলোতে একটু সমস্যা রয়েছে। কোনোটাতে আবার সম্পূর্ণ কাজ নাও করতে পারে। নতুন ডিভাইসগুলো স্মুথলি কাজ করে।