ঢাকা ০৭:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আজ মুরাদনগরের বাখরাবাদ গণহত্যা দিবস

মো: মোশাররফ হোসেন মনির/বেলাল উদ্দিন আহম্মদ:

আজ ২৪ মে। কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার ইতিহাসে এক নৃশংস, ভযংকর, মর্মান্তিক বিভীষিকাময় কাল দিবস আজ।

উপজেলার রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের বাখরাবাদ গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞের এ দিনটিকে উপজেলা বাসি ”গনহত্যা দিবস” হিসেবে পালন করে। অপর দিকে এখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করার জন্য এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রানের দাবি থাকলেও স্বাধীনতার ৫০ বছরেও তা পূরণ হয়নি। এ উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি সংরক্ষন পরিষদ ১৯৯৬ ও ৯৭ সালে পর পর ২ বছর আলোচনা সভা, চিত্র প্রদর্শনী ও স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র স্টপ জেনোসাইড প্রদর্শিত হলেও উদ্যোগের অভাবে এখন আর হচ্ছে না। ফলে ভূক্তভোগী পরিবার গুলোর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৪ মে এই দিনে পাক হানাদার বাহিনী রাজাকারদের সহযোগিতায় উপজেলার রামচন্দ্রপুর বাজার সংলগ্ন হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম বাখরাবাদে নৃশংস গণহত্যা চালিয়ে প্রায় দেড় শতাধিক হিন্দু নারী পুরুষ পাক হানাদার বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা শেষে বাড়িঘরে আগুন দিয়ে লুটপাট করে। পাক হানাদার বাহিনী হত্যাযজ্ঞের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের ২১ জন ব্যক্তিকে পার্শ্ববর্তী দেবিদ্বার ক্যাম্পে ধরে নিয়ে পরদিন ১৮ জনকে এক সাথে গুলি চালিয়ে হত্যা করে।

এদের মধ্যে দক্ষিণ বাখরাবাদ গ্রামের শহীদ হরেন্দ্র চন্দ্র সাহার ছেলে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া হরেকৃষ্ণ সাহা জানান, ৭১’র ২৪ মে সোমবার ভোর ৫টায় পাক হানাদার বাহিনী আমাদের গ্রামে প্রবেশ করে হত্যাকান্ড চালায়, হত্যাকান্ড চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। বাড়ী ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাটসহ নারী ধর্ষণ করে।

তিনি আক্ষেপ করে জানান, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও বাখরাবাদ গণহত্যার স্মৃতি স্বরূপ কোন স্মৃতি সৌধ নির্মান হয়নি। তাছাড়া আমরা ক্ষতিগ্রস্ত শহীদ পরিবারেরা সরকার থেকে এ পর্যন্ত সাহায্য সহযোগিতা পাইনি। তিনি উক্ত হত্যাকান্ডের বিচার প্রার্থনা করেন। তার সাথে বেঁচে যাওয়া অপর ২জন হলো দক্ষিন বাখরাবাদ গ্রামের শহীদ গোপাল শীলের ছেলে তারক শীল (তারক মাস্টার) ও শহীদ মনোমোহন সাহার ছেলে ঢাকা ওয়াসায় চাকরিরত দুলাল চন্দ্র সাহা।

মুরাদনগর উপজেলার বাখরাবাদ গ্রামে এ নির্মম গণ-হত্যাকান্ড সম্পর্কে মুরাদনগর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো: হারুনুর রশিদ জানান ২৪ মে বাখরাবাদে বহু মানুষকে গুলি করে হত্যা করে পাক হানাদার বাহিনী। এখানে একটি শহীদ স্মৃতি সৌধ নির্মান করা দাবী করছি।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশ ও উপদেষ্টার ভাইয়ের মিথ্যা মামলা থেকে জামিন পেৱেন মুরাদনগর বিএনপির ১৩ নেতাকর্মী

আজ মুরাদনগরের বাখরাবাদ গণহত্যা দিবস

আপডেট সময় ০২:৪৯:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩

মো: মোশাররফ হোসেন মনির/বেলাল উদ্দিন আহম্মদ:

আজ ২৪ মে। কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার ইতিহাসে এক নৃশংস, ভযংকর, মর্মান্তিক বিভীষিকাময় কাল দিবস আজ।

উপজেলার রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের বাখরাবাদ গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞের এ দিনটিকে উপজেলা বাসি ”গনহত্যা দিবস” হিসেবে পালন করে। অপর দিকে এখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করার জন্য এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রানের দাবি থাকলেও স্বাধীনতার ৫০ বছরেও তা পূরণ হয়নি। এ উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি সংরক্ষন পরিষদ ১৯৯৬ ও ৯৭ সালে পর পর ২ বছর আলোচনা সভা, চিত্র প্রদর্শনী ও স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র স্টপ জেনোসাইড প্রদর্শিত হলেও উদ্যোগের অভাবে এখন আর হচ্ছে না। ফলে ভূক্তভোগী পরিবার গুলোর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৪ মে এই দিনে পাক হানাদার বাহিনী রাজাকারদের সহযোগিতায় উপজেলার রামচন্দ্রপুর বাজার সংলগ্ন হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম বাখরাবাদে নৃশংস গণহত্যা চালিয়ে প্রায় দেড় শতাধিক হিন্দু নারী পুরুষ পাক হানাদার বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা শেষে বাড়িঘরে আগুন দিয়ে লুটপাট করে। পাক হানাদার বাহিনী হত্যাযজ্ঞের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের ২১ জন ব্যক্তিকে পার্শ্ববর্তী দেবিদ্বার ক্যাম্পে ধরে নিয়ে পরদিন ১৮ জনকে এক সাথে গুলি চালিয়ে হত্যা করে।

এদের মধ্যে দক্ষিণ বাখরাবাদ গ্রামের শহীদ হরেন্দ্র চন্দ্র সাহার ছেলে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া হরেকৃষ্ণ সাহা জানান, ৭১’র ২৪ মে সোমবার ভোর ৫টায় পাক হানাদার বাহিনী আমাদের গ্রামে প্রবেশ করে হত্যাকান্ড চালায়, হত্যাকান্ড চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। বাড়ী ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাটসহ নারী ধর্ষণ করে।

তিনি আক্ষেপ করে জানান, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও বাখরাবাদ গণহত্যার স্মৃতি স্বরূপ কোন স্মৃতি সৌধ নির্মান হয়নি। তাছাড়া আমরা ক্ষতিগ্রস্ত শহীদ পরিবারেরা সরকার থেকে এ পর্যন্ত সাহায্য সহযোগিতা পাইনি। তিনি উক্ত হত্যাকান্ডের বিচার প্রার্থনা করেন। তার সাথে বেঁচে যাওয়া অপর ২জন হলো দক্ষিন বাখরাবাদ গ্রামের শহীদ গোপাল শীলের ছেলে তারক শীল (তারক মাস্টার) ও শহীদ মনোমোহন সাহার ছেলে ঢাকা ওয়াসায় চাকরিরত দুলাল চন্দ্র সাহা।

মুরাদনগর উপজেলার বাখরাবাদ গ্রামে এ নির্মম গণ-হত্যাকান্ড সম্পর্কে মুরাদনগর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো: হারুনুর রশিদ জানান ২৪ মে বাখরাবাদে বহু মানুষকে গুলি করে হত্যা করে পাক হানাদার বাহিনী। এখানে একটি শহীদ স্মৃতি সৌধ নির্মান করা দাবী করছি।