আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
পুলিশ সদস্য হিসাবে আফগানিস্তানের পুলিশে যোগ দিয়ে অন্যদের নিরাপত্তা দেয়ার কথা। দেশটির সরকারও আরও বেশি নারীদের পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়ে আসছে। কিন্তু দেশটিতে নারী পুলিশ সদস্যদের জন্য বাস্তবতা ভিন্ন।
জানা যায়, আফগানিস্তানের পুলিশ বাহিনীতে নারী সদস্যের সংখ্যা মাত্র ৪ হাজার। এই সংখ্যা বাড়াতে সরকার থেকে নানা বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা অব্যাহত থাকলেও কর্মরত নারী পুলিশ সদস্যরা বলছে ভিন্ন এক কথা।
দেশটির নারী পুলিশ সদস্য মোমেনার বরাতে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তান সরকার পুলিশে নারী সংখ্যা বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নিলেও একটি বিষয় বরাবরের মতো এড়িয়ে চলছে। চার বছর আগে সরকারি বিজ্ঞাপন দেখে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন মোমেনা। কিন্তু তার অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
মোমেনা
মোমেনা বলেন, এক রাতে আফগান পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তার উপর হামলা চালায়। সে আমার পোশাক ছিড়ে ফেলে। দরজা বন্ধ ছিলো। আমি চিৎকার করছিলাম। কিন্তু কেউ সাহায্য করতে আসেনি। কারণ সে ছিলো থানার প্রধান। অন্যান্যরা তাকে ভয় করে। এক পর্যায়ে ওই কর্মকর্তা আমাকে ধর্ষণ করে। সেই ঘটনার ছয় মাস কেটে যায় শুধু বিচার চেয়ে। কিন্তু আদালাত অভিযুক্তকে নির্দোষ বলে রায় দেয়।
আদালতের বিচারক জানান, বিচারকার্যে মোমেনা যথেষ্ট প্রমাণ হাজির করতে পারেননি।
অভিযুক্ত ওই পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, মোমেনা যে দাবি করেছে তা ভিত্তিহীন।
বিবিসি জানায়, আদালতের রায়ের পর মোমেনা সিদ্ধান্ত নেন আত্মহত্যা করছেন। নিজের শরীরে আগুন দিয়ে মরতে চেয়েছিলেন তিনি। গত মার্চে রাস্তায় প্রকাশ্যে গায়ে পেট্রোল দিয়ে সে প্রস্তুতিও সেরেছিলেন মোমেনা। পরে মানুষের বাধায় তা আর করতে পারেননি।
আফগানিস্তানে মোমেনা একা পুলিশ সদস্য নন যিনি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তবে মান সম্মানের ভয়ে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে নারাজ। দেশটি সরকারও দাবি করছে পুলিশ বাহিনী নারী সদস্যদের যৌন হয়রানি বড় একটি সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আফগান সরকারের মুখপাত্র হুসনা জলিল জানান, সরকারকে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পুলিশ কর্মকর্তারা এসব অপকর্ম করে পার পেয়ে গেলে এরকম কার্যক্রম তারা আরও করবে। তাই পুলিশ বাহিনী থেকে এসব আবর্জনা দূর করতে হবে।