খেলাধূলা ডেস্কঃ
এ সফরটাকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের বড় দল হয়ে ওঠার পরের ধাপ।
বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধরে দেশের মাটিতে পরাশক্তি হয়ে উঠেছে। ওয়ানডের পর দেশের মাটিতে এখন নিয়মিত টেস্ট জিতছে তারা। কিন্তু সেই সাফল্যটাই দেশের বাইরে এখনো অনুবাদ শুরু হয়নি। গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের অনেকেই বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকেই দেশের বাইরে ভালো পারফরম্যান্স শুরু করতে চান তারা।
অবশেষে আজ শুরু হচ্ছে সেই চ্যালেঞ্জের প্রথম ধাপ। আজ বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা থেকে শুরু হবে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের এ লম্বা সফরের প্রথম ম্যাচ— পচেফস্ট্রম টেস্ট। লম্বা এ সফরে বাংলাদেশ দুটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে।
দৃশ্যত এ সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারার কথা নয় বাংলাদেশের। নিজেদের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রায় অপরাজেয় একটা দল। দুই দলের ইতিহাস, পরিসংখ্যান; সবকিছুই কথা বলবে স্বাগতিকদের হয়ে। বাংলাদেশ এর আগে দুইবার দক্ষিণ আফ্রিকায় পূর্ণাঙ্গ সফর করেছে। দুইবারে চারটি টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে তারা।
তবে এ বাংলাদেশ ঠিক এতো পেছনের ইতিহাসে ভর করছে না। তাদের অনুপ্রেরণা বরং নিকট অতীতে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দলকে হারাতে পারা। এর সাথে সাথে আছে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে আসার স্মৃতি। সে সব অনুপ্রেরণা কাজে লাগাতে পারলে আফ্রিকান অঞ্চলে ইতিহাসটা নতুন করে লেখা সম্ভব।
বাংলাদেশের জন্য এ সিরিজ শুরুর আগেই একটা বড় ধাক্কা হলো সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতি। ক্লান্তিজনিত কারণে ছুটিতে আছেন তিনি। তাকে খুব মিস করবে বাংলাদেশ দল। বিশেষ করে সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বিরূপ কন্ডিশনে তার দারুণ বোলিং আফসোসে ভোগাবে বাংলাদেশকে।
সাকিবের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের ব্যাটিংটা একেবারেই তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম এ দুই সিনিয়রের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠবে। পাশাপাশি তরুণ সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মুমিনুল হক এবং অভিজ্ঞ ইমরুল কায়েস ও মাহমুদউল্লাহকে কিছুটা হলেও দায়িত্ব নিতে হবে।
বাংলাদেশের ফাস্ট বোলারদের জন্য এটা নতুন একটা অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। সারা বছর তারা দেশে প্রতিকূল উইকেটে বল করে থাকেন। কোনো সহায়তা উইকেট থেকে পান না। অবশেষে তাদের সামনে ভালো উইকেটে বল করার একটা সুযোগ এসেছে। সেটা তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেনরা কতোটা কাজে লাগাতে পারেন, দেখার বিষয়।
তবে বাংলাদেশি স্পিনারদের জন্যও ব্যাপারটা শুধু হতাশার নাও হতে পারে। পচেফস্ট্রমের উইকেট কখনোই দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যান্য ভেন্যুর মতো দুরন্ত ফাস্ট ও বাউন্সি নয়। বরং কয়েক মাস আগে এখানে একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে দেখা গেছে ধীরগতির বোলাররা ভালো করছেন। তেমন হলে বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল, মিরাজদের জন্য সেটা সুখবরই হয়ে উঠবে।
বাংলাদেশের জন্য শেষ দুশ্চিন্তাটা হলো প্রস্তুতি ম্যাচে পাওয়া তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের ইনজুরি। দুজনই সামান্য চোট কাটিয়ে নেটে ফিরেছেন। ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু এ চোটের কারণে অনুশীলন ম্যাচ ও অনুশীলনের বড় একটা অংশ মিস করায় তাদের ওপর প্রভাব পড়ার ভয় থেকে যাচ্ছে।
তবে এ সব নেতিবাচক খবর, সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে নতুন কিছু করাই তো আসল চ্যালেঞ্জ।