ঢাকা ০৮:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমি অপরাজনীতির শিকার : মওদুদ

জাতীয় ডেস্কঃ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, আমি অপরাজনীতির শিকার হয়েছি। বেআইনিভাবে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এটা প্রতিহিংসার চরম দৃষ্টান্ত। আমি আইনের আশ্রয় নেব।
৩৬ বছর ধরে বসবাস করা গুলশান-২ এর ১৫৯ নম্বর প্লটের বাড়িটি রাজউক দখল নেয়ার পর বুধবার দুপুরে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
মওদুদ আহমদ বলেন,  ৩৬ বছর ধরে আমি এই বাড়িতে আছি। আমি এখন নিরূপায়। আমি রাজনীতি করি। বর্তমানে বিরোধী দলে আছি বলে এই অবস্থা। বিরোধী দলে না থাকলে এমন হতো না।
এর আগে বুধবার দুপুরে  বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের গুলশান-২ এর ১৫৯ নম্বর প্লটের বাড়ির দখল নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। সংস্থাটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বাড়ির ভেতর রক্ষিত আসবাবপত্রসহ অন্যান্য মালামাল জব্দ করে তা ট্রাক যোগে অন্যত্র সরিয়ে ফেলে।  অভিযানের নেতৃত্ব দেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওয়ালিউর রহমান।
রাজউকের ম্যাজিস্ট্রেট ওয়ালিউর রহমান ইত্তেফাককে বলেন,অভিযানের শুরুতে বাড়িটির গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিফোন লাইন ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বাসার  আসবাবপত্রসহ অন্যান্য মালামাল সরিয়ে ফেলা হয়েছে। দোতলা বাড়িটির পুরো নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে রাজউক।
রাজউকের চেয়ারম্যান এম বজলুল করিম চৌধুরী ইত্তেফাককে বলেন, গুলশানের এই বাড়িটি মূলত রাজউকের সম্পত্তি। রাজউক উচ্চ আদালতের নির্দেশে বাড়ির দখল বুঝে নিয়েছে। এখন থেকে এই বাড়ির মালিক রাজউক।
তিনি বলেন, ‘আদালতের রায় অনুযায়ী বুধবার দুপুর থেকে আমরা ওই বাড়িটিতে অভিযান শুরু করেছি। অভিযানে পুলিশসহ রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে রাজউকের অথরাইজড অফিসার -৪ আদিলুজ্জামান ইত্তেফাককে বলেন, মওদুদের বাড়ির সকল মালামাল জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মালামালের একটি তালিকা করা হয়েছে। মালামালগুলো রাজউকের জিম্মায় আছে।
উলে­খ্য, গত ৪ জুন (রবিবার) গুলশানের এই বাড়িটি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
গত বছরের আগস্টে গুলশান-২ নম্বরের বাড়িটি মওদুদের ভাই মনজুর আহমদের নামে মিউটেশন (নামজারি) ও ডিক্রি জারি করতে হাইকোর্টের দেয়া রায় আপিল বিভাগে বাতিল হয়। সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের ফলে রাজউক বাড়িটি নিজেদের তত্ত্বাবধানে নেবে বলে দীর্ঘদিন ধরে শোনা যাচ্ছিল।
রাজউকের এস্টেট বিভাগ থেকে জানানো হয়, এক বিঘা ১৩ কাঠা জমির উপর দোতলা ওই বাড়ি অবৈধভাবে দখল ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর গুলশান থানায় মওদুদ ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুনুর রশীদ।
অভিযোগে বলা হয়, গুলশানের যে বাড়িটিতে মওদুদ আহমদ ও তার পরিবার থাকছেন, তার প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসান। ১৯৬০ সালে তৎকালীন ডিআইটির কাছ থেকে এই বাড়ির মালিকানা এহসান পান। ১৯৬৫ সালে বাড়ির মালিকানার কাগজপত্র এহসানের স্ত্রী অস্ট্রিয়ার নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের নামে নিবন্ধন করা হয়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এহসান স্ত্রীসহ ঢাকা ত্যাগ করেন। তারা আর ফিরে না আসায় ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়। ওই বছরই মওদুদ ওই বাড়ির দখল নেন। এরপর ১৯৭৩ সালের ২ অগাস্ট তারিখে তিনি ইনজে মারিয়া প্লাজের নামে একটি ভুয়া আমমোক্তারনামা তৈরি করান এবং নিজেকে তার ভাড়াটিয়া হিসেবে দেখিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন।
ইত্তেফাক
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ: স্বাগত জানাতে মুরাদনগরে ব্যাপক প্রস্ততি

আমি অপরাজনীতির শিকার : মওদুদ

আপডেট সময় ০২:১৬:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০১৭
জাতীয় ডেস্কঃ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, আমি অপরাজনীতির শিকার হয়েছি। বেআইনিভাবে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এটা প্রতিহিংসার চরম দৃষ্টান্ত। আমি আইনের আশ্রয় নেব।
৩৬ বছর ধরে বসবাস করা গুলশান-২ এর ১৫৯ নম্বর প্লটের বাড়িটি রাজউক দখল নেয়ার পর বুধবার দুপুরে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
মওদুদ আহমদ বলেন,  ৩৬ বছর ধরে আমি এই বাড়িতে আছি। আমি এখন নিরূপায়। আমি রাজনীতি করি। বর্তমানে বিরোধী দলে আছি বলে এই অবস্থা। বিরোধী দলে না থাকলে এমন হতো না।
এর আগে বুধবার দুপুরে  বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের গুলশান-২ এর ১৫৯ নম্বর প্লটের বাড়ির দখল নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। সংস্থাটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বাড়ির ভেতর রক্ষিত আসবাবপত্রসহ অন্যান্য মালামাল জব্দ করে তা ট্রাক যোগে অন্যত্র সরিয়ে ফেলে।  অভিযানের নেতৃত্ব দেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওয়ালিউর রহমান।
রাজউকের ম্যাজিস্ট্রেট ওয়ালিউর রহমান ইত্তেফাককে বলেন,অভিযানের শুরুতে বাড়িটির গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিফোন লাইন ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বাসার  আসবাবপত্রসহ অন্যান্য মালামাল সরিয়ে ফেলা হয়েছে। দোতলা বাড়িটির পুরো নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে রাজউক।
রাজউকের চেয়ারম্যান এম বজলুল করিম চৌধুরী ইত্তেফাককে বলেন, গুলশানের এই বাড়িটি মূলত রাজউকের সম্পত্তি। রাজউক উচ্চ আদালতের নির্দেশে বাড়ির দখল বুঝে নিয়েছে। এখন থেকে এই বাড়ির মালিক রাজউক।
তিনি বলেন, ‘আদালতের রায় অনুযায়ী বুধবার দুপুর থেকে আমরা ওই বাড়িটিতে অভিযান শুরু করেছি। অভিযানে পুলিশসহ রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে রাজউকের অথরাইজড অফিসার -৪ আদিলুজ্জামান ইত্তেফাককে বলেন, মওদুদের বাড়ির সকল মালামাল জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মালামালের একটি তালিকা করা হয়েছে। মালামালগুলো রাজউকের জিম্মায় আছে।
উলে­খ্য, গত ৪ জুন (রবিবার) গুলশানের এই বাড়িটি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
গত বছরের আগস্টে গুলশান-২ নম্বরের বাড়িটি মওদুদের ভাই মনজুর আহমদের নামে মিউটেশন (নামজারি) ও ডিক্রি জারি করতে হাইকোর্টের দেয়া রায় আপিল বিভাগে বাতিল হয়। সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের ফলে রাজউক বাড়িটি নিজেদের তত্ত্বাবধানে নেবে বলে দীর্ঘদিন ধরে শোনা যাচ্ছিল।
রাজউকের এস্টেট বিভাগ থেকে জানানো হয়, এক বিঘা ১৩ কাঠা জমির উপর দোতলা ওই বাড়ি অবৈধভাবে দখল ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর গুলশান থানায় মওদুদ ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুনুর রশীদ।
অভিযোগে বলা হয়, গুলশানের যে বাড়িটিতে মওদুদ আহমদ ও তার পরিবার থাকছেন, তার প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসান। ১৯৬০ সালে তৎকালীন ডিআইটির কাছ থেকে এই বাড়ির মালিকানা এহসান পান। ১৯৬৫ সালে বাড়ির মালিকানার কাগজপত্র এহসানের স্ত্রী অস্ট্রিয়ার নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের নামে নিবন্ধন করা হয়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এহসান স্ত্রীসহ ঢাকা ত্যাগ করেন। তারা আর ফিরে না আসায় ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়। ওই বছরই মওদুদ ওই বাড়ির দখল নেন। এরপর ১৯৭৩ সালের ২ অগাস্ট তারিখে তিনি ইনজে মারিয়া প্লাজের নামে একটি ভুয়া আমমোক্তারনামা তৈরি করান এবং নিজেকে তার ভাড়াটিয়া হিসেবে দেখিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন।
ইত্তেফাক